Connect with us

রোগব্যাধি

মশাবাহিত আরও ৮ ভয়াবহ রোগ আতঙ্ক

Published

on

বর্ষাকাল হলো মশার প্রজননের জন্য শ্রেষ্ঠ সময়। তাই এ সময় মশার উপদ্রবও বাড়ে। শুধু ডেঙ্গু নয়, এ ছাড়াও মশার কামড়ে ভয়াবহ সব রোগের সৃষ্টি হতে পারে। বর্তমানে দেশে ডেঙ্গু রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন অনেকেই। শিশু থেকে বয়স্ক, সবাই এখন ডেঙ্গু আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছে। 

মশার কামড়ে শুধু ডেঙ্গু নয় হতে পারে চিকনগুনিয়া, ম্যালেরিয়া-সহ নানা ভয়াবহ রোগ। তাই কোভিড-১৯ করোনাভাইরাসের মহামারির এ সময় মশাবাহিত রোগ থেকে দূরে থাকতে সবাইকে সচেতন ও সাবধান হতে হবে। 

জেনে নিন মশাবাহিত ভয়াবহ ৮টি রোগ-

লাইশম্যানিয়াসিস
গর্ভবতী নারী মশাদের কামড়ে এই রোগ ছড়ায়। ৩০ ধরনের ভিন্ন প্রজাতির লাইশম্যানিয়াসিস জীবাণু আছে। এর মধ্যে ১০টি মানবদেহে রোগ ছড়ায়। এ রোগের লক্ষণ হিসেবে প্রাথমিক পর্যায়ে জ্বর ও মাথা ব্যাথা দেখা দেয়।

কিছু কিছু ক্ষেত্রে স্কিন আলসার হয়ে ক্ষত সৃষ্টি হয়। এই রোগটি এতোই ভয়াবহ যে দ্রুত ডাক্তার না দেখালে যকৃত, বৃক্কসহ বিভিন্ন অভ্যন্তরীণ অঙ্গে তা ছড়িয়ে পড়তে পারে। চিকিৎসার অভাবে মশাবাহিত এ রোগ মৃত্যুও ডেকে আনতে পারে।

Advertisement

সিন্ডবিস
কুলেক্স নামের নিশাচর মশা এই রোগের ভাইরাস বহন করে। মূলত আফ্রিকায় পাওয়া গেলেও সম্প্রতি ইউরোপের বিভিন্ন স্থানে মানবশরীরে এই জীবাণুর অস্তিত্ব পেয়েছেন। এই মশার কামড়ে তীব্র জ্বর ও মস্তিষ্কে প্রদাহ দেখা দেয়।

পুরো শরীরে এই রোগের জীবাণু ছড়িয়ে পড়লে বিভিন্ন হাড়ের সংযোগেও প্রদাহের সৃষ্টি হয়। কয়েক সপ্তাহ পর যদিও এ রোগ সেরে যায়। এখনও এ রোগের কোনো ওষুধ নেই।

ইয়েলো ফিভার

টাইগার মশা এবং এডিস প্রজাতির আরো কিছু মশার মাধ্যমে ইয়েলো ফিভার ছড়ায়। সাধারণভাবে একে ফ্লাভিবাইরাসও বলা হয়ে থাকে। আফ্রিকার ৩৪টি এবং দক্ষিণ ও মধ্য অ্যামেরিকার ১৩টি দেশে ইয়েলো ফিভারে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বেশি।

এ রোগের লক্ষণ হিসেবে শুরুতে জ্বর এলেও পরে তা বমি দেখা দেয়। একসময় মেনিনজাইটিসে রূপ নেয়। গুরুত্বপূর্ণ প্রত্যঙ্গ আক্রান্ত হওয়া, এমনকি সম্পূর্ণ নষ্ট হওয়ার ঝুঁকিও বেড়ে যায় এই রোগে।

Advertisement

ডেঙ্গু

বর্তমানে ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাব বেড়েছে। এডিস ইজিপ্টাই নামের মশার কামড়ে ডেঙ্গু রোগের সৃষ্টি হয়। এ রোগে আক্রান্ত হলে শরীরে ব্যাথা হয়, লাল গুটি দেখা দেয়, মাংসপেশী ও হাড়ের জোড়াতেও ব্যাথা হয়।

চূড়ান্ত পর্যায়ে গেলে রক্তক্ষরণের ফলে এ রোগে মৃত্যুও হতে পারে। প্রথমবারের ধাক্কা সামলে উঠলেই যে মুক্তি তা কিন্তু নয়। ডেঙ্গু রোগে কেউ দ্বিতীয়বার আক্রান্ত হলে তা প্রথমবারের চেয়েও মারাত্মক হতে পারে৷।

জিকা

এডিস ইজিপ্টাই, টাইগার মস্কিউটো এবং এডিস আলবোপিকটাস জিকা ভাইরাস ছড়ায়। ২০১৫ সালে মহামারি আকারে ছড়িয়ে পড়ে এই রোগ। জিকার আক্রমণে ব্রাজিলে অসংখ্য শিশু ক্ষতিগ্রস্থ হয়।

Advertisement

মাইক্রোসিফেলি নামের ভয়াবহ প্রতিবন্ধিত্ব নিয়ে জন্মায় তারা। এর ফলে শিশুদের মাথার আকৃতি বিকৃত হয়ে যায়। বিশেষ করে গর্ভবতী মায়েরা জিকায় আক্রান্ত হলে শিশুদের ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা থাকে বেশি।

ওয়েস্ট নাইল ফিভার

বয়স্ক বা দুর্বল রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার মানুষের শরীরে এই রোগ ভয়াবহ ক্ষতি করে। এর ফলে মেনিনজাইটিস ও মায়োকার্ডিটিস হতে পারে।

অন্যান্য মশাবাহী রোগের মতো কাঁপুনি, ঠান্ডা লাগা, জ্বর, মাথা ব্যাথা, ঝিমুনি এবং ব়্যাশ দেখা দিতে পারে। এর কোনো ওষুধ এখনো আবিষ্কার হয়নি।

চিকুনগুনিয়া

Advertisement

কয়েক বছর আগেও চিকুনগুনিয়া রোগটি দেশে মারাত্মকভাবে ছড়িয়ে পড়েছিল। এ রোগের প্রভাবে জ্বর কাটিয়ে উঠতে তিন-চার দিন লাগে। তবে এরপর হাড়ের জোড়ায় ভয়াবহ ব্যথা কয়েক সপ্তাহ স্থায়ী হতে পারে।

কোনো কোনো ক্ষেত্রে চামড়ায় ক্ষত দেখা দিতে পারে। তবে আশার কথা, একবার চিকুনগুনিয়া হয়ে গেলে দ্বিতীয়বার এই রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা একেবারেই কমে যায়।

ম্যালেরিয়া

মশাবাহী রোগের মধ্যে ম্যালেরিয়া সবচেয়ে বেশি পরিচিত। খুবই মারাত্মক এই রোগটি। অ্যানোফিলিস নামের মশার মাধ্যমে এই রোগ ছড়ায়।

এই রোগে আক্রান্ত হলে স্নায়ুতন্ত্রের ক্ষতি হতে পারে। ম্যালেরিয়ার কার্যকর ওষুধ এখনো আবিষ্কার হয়নি। তবে আগে থেকে সতর্ক থাকলে এতে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা কমানো যেতে পারে।

Advertisement

সূত্র: ডয়েচে ভেলে

এস 

Advertisement

রোগব্যাধি

পায়ের গোড়ালি ব্যথা কেন হয়, ব্যথা কমাতে করণীয় 

Published

on

অনেকের সকালে ঘুম থেকে ওঠার পর মেঝেতে পা ফেলার সময় ব্যথা লাগে। অথবা সারাদিনের কাজের পর রাতে পায়ের গোড়ালি ব্যথায় ঘুমাতে কষ্ট হয়। অনেকের আবার অনেকক্ষণ বসে কাজ করার পর দাঁড়ালেও গোড়ালি ব্যথা করে। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে এ রকম ব্যথার কারণ পায়ের পাতার নিচে প্রদাহ বা প্লান্টার ফ্যাসাইটিস।

পায়ের গোড়ালিতে ব্যথা কেন হয়?

আমাদের পায়ের সামনের দিকে ছোট ছোট কিছু হাড় আছে যেগুলো ব্যান্ডের মতো লিগামেন্ট দিয়ে পেছনের দিকে গোড়ালির হাড়ের সাথে সংযুক্ত থাকে। এই লিগামেন্টকে প্লান্টার ফাসা বলে। শরীরের ওজন যেন সরাসরি পায়ের হাড়ের উপর চাপ প্রয়োগ করতে না পারে, সে জন্য এই ব্যান্ড কাজ করে। এই ব্যান্ডে প্রদাহ হলে গোড়ালিতে ব্যথা হয়। তখন এটিকে বলে প্লান্টার ফ্যাসাইটিস।

প্লান্টার ফ্যাসাইটিসে ভুগছেন কিনা যেভাবে বুঝবেন

# সকালে বিছানা থেকে নেমে পা ফেলার সাথে সাথেই গোড়ালিতে ব্যথা হলে

Advertisement

# দীর্ঘসময় বসে থাকার পর হাঁটার সময় ব্যথা হলে

# সকালে গোড়ালি শক্ত হয়ে প্রচন্ড ব্যথা হলে

# সিঁড়ি দিয়ে ওঠানামা করার সময় ব্যথা বেড়ে গেলে

# কখনও কখনও গোড়ালি ফুলে যেতে পারে

# অনেকক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকার পর ব্যথা বেড়ে গেলে

Advertisement

# পায়ের গোড়ালিতে ব্যথা বা প্লান্টার ফ্যাসাইটিস

কোন কারণে এ সমস্যা হয়?

প্লান্টার ফাসাতে অতিরিক্ত টান পড়লে প্লান্টার ফ্যাসাইটিস হয়। সাধারণত পুরুষদের চেয়ে মহিলাদের এই সমস্যা বেশি হয়। এছাড়াও আরও নানা কারণে এমনটি হতে পারে। যেমন-

১. কোনো কারণে প্লান্টার ফাসা মচকে গেলে

২. অতিরিক্ত ওজন

Advertisement

৩. হঠাৎ করেই বেশি ব্যায়াম করলে

৪. প্রতিদিন কয়েক ঘন্টা পায়ের পাতার উপর দাঁড়িয়ে থাকলে

৫. অন্য কোনো শারীরিক সমস্যা, যেমন- রিউমাটয়েড আর্থ্রাইটিস থাকলে

৬. উঁচু হিল পরে অভ্যাস থাকার পর হঠাৎ করে ফ্ল্যাট জুতা পরলে

৭. পায়ের পাতা সমতল থাকলে কিংবা অস্বাভাবিক বাঁকা থাকলে

Advertisement

৮. পায়ের পাতা অস্বাভাবিক অবস্থানে রাখলে

এই সমস্যার ঝুঁকিতে কারা আছেন?

১. ৪০-৬০ বছর বয়সী মানুষের মধ্যে এই সমস্যা বেশি দেখা যায়। বিশেষ করে নারীরা বেশি ঝুঁকিতে থাকেন।

২. দৌড়, নৃত্য ইত্যাদির কারণে গোড়ালিতে চাপ পড়ে। নিয়মিত যারা এগুলো করেন তাদের মধ্যে পায়ের গোড়ালিতে ব্যথা হওয়ার প্রবণতা বেশি থাকে।

৩. ওজন বেশি হলে, দীর্ঘ সময় কোনো পেশাতে দাঁড়িয়ে কাজ করতে হলে এবং গর্ভবতী নারীদের ডেলিভারি হওয়ার কিছুদিন আগে এই সমস্যা হতে পারে।

Advertisement

৪. এছাড়া যারা আর্থ্রাইটিস বা এনকাইলোজিং স্পন্ডেলাইটিসে ভুগছেন, দীর্ঘদিন শক্ত হিলের জুতো ব্যবহার করছেন এমন ব্যক্তিও প্লান্টার ফ্যাসাইটিসের ঝুঁকিতে আছেন।

৫. অনেকের পায়ে গঠনগত সমস্যা থাকে, যেমন- ফ্ল্যাট ফুট সমস্যা। এটিও গোড়ালি ব্যথার ঝুঁকি বাড়ায়।

সহজ কয়েকটি ব্যায়াম

রাতে ঘুমানোর আগে কয়েক মিনিটের এই ব্যায়ামগুলো করলে বেশ আরাম পাওয়া যাবে। সেই সাথে গোড়ালিতে ব্যথা হওয়ার চান্সও কমে যাবে অনেকটাই।

১. মেঝেতে একটা তোয়ালে বা কাপড় রাখুন। এবার ওটার উপর পা দিয়ে সামনের আঙুলগুলো দিয়ে তোয়ালেটিকে আঁকড়ে ধরুন এবং নিজের দিকে আনতে চেষ্টা করুন। অন্য পা দিয়েও ব্যায়ামটি করুন।

Advertisement

২. ব্যায়ামের পর একটা স্বস্তিকর আরামদায়ক ঘুমের জন্য খানিকক্ষণ পায়ের পাতায় মালিশ (ফুট ম্যাসাজ) করে নিন। সবচেয়ে ভালো পদ্ধতি হলো, ছোট্ট একটা প্লাস্টিকের বল মেঝেতে রেখে তার ওপর পায়ের পাতা দিয়ে চেপে ধরে নাড়ানো। দুই পায়ে ৩০ সেকেন্ড এই ব্যায়াম করুন। এতে পায়ের পাতা রিলাক্সড হবে।

ব্যথা কমাতে করণীয় 

১) ঘরোয়াভাবে ব্যথা কমাতে তেল দিয়ে পায়ের পাতায় ম্যাসাজ করুন। একটি সমীক্ষা অনুসারে, ল্যাভেন্ডার অয়েলের প্রদাহরোধী বৈশিষ্ট্য রয়েছে, যা ব্যথার জন্য ভালো কাজ করে। অলিভ বা নারকেল তেলের সাথে এক বা দুই ফোঁটা এই অয়েল মিশিয়ে পায়ের তলায় ম্যাসাজ করুন। তারপর একটি পাত্রে উষ্ণ পানিতে কয়েক ফোঁটা ল্যাভেন্ডার অয়েল দিয়ে পা ডুবিয়ে রাখুন।

২) এমন জুতা পরার চেষ্টা করুন যেটা পায়ের গোড়ালিকে ভালো সাপোর্ট দেয়, বিশেষ করে যদি আপনার পায়ে চলাচল বেশি হয়ে থাকে।

৩) প্লান্টার ফ্যাসাইটিস এর সমস্যা কমাতে নাইট স্প্লিন্ট (night splint) বেশ কার্যকর। রাতভর পায়ের গোড়ালিকে নিউট্রাল পজিশনে রাখতে এটি হেল্প করে। কমপক্ষে ছয় মাস ধরে প্ল্যান্টার ফ্যাসাইটিস আছে এমন রোগীদের জন্য এটি সবচেয়ে ভালো কাজ করে। বেশিরভাগই এক থেকে তিন মাসের জন্য ব্যবহার করা হয় এবং নাইট স্প্লিন্ট হার্ড ও সফট দুটো মডেলেই পাওয়া যায়।

Advertisement

চিকিসা

  • ব্যথা হলে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী ব্যথানাশক ওষুধ গ্রহণ করতে হবে
  • প্রয়োজন অনুসারে ফিজিওথেরাপি, যেমন-­ ওয়াক্স, হাইড্রোথেরাপি, আলট্রাসাউন্ড থেরাপি দিতে হবে
  • ফিজিওথেরাপিস্টের দেখানো এক্সারসাইজ, স্ট্রেচিং করতে হবে
  • বরফের ব্যবহারে ঘরোয়াভাবে ব্যথা কমানো যায়
  • প্রয়োজন অনুসারে অনেক সময় অর্থোটিকস ব্যবহার করতে হয়
  • যদি কোনোটাতেই ব্যথা না কমে, তাহলে অপারেশন করতে হতে পারে

পায়ের গোড়ালিতে ব্যথা হলে হাঁটতে কষ্ট হতে পারে। তাই চেষ্টা করতে হবে যেন এই ব্যথা না হয়। এজন্য প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা নিতে হবে আগে থেকেই। আর ব্যথা হলে ঘরোয়া উপায়ে চেষ্টা করুন কমানোর জন্য। যদি কোনোভাবেই ব্যথা কমানো না যায়, তাহলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।

জেএইচ

পুরো পরতিবেদনটি পড়ুন

আন্তর্জাতিক

আবারও ভয়ংকর রূপে করোনা, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সতর্কতা

Published

on

করোনা

আবারও ভয়ংকর রূপ ধারণ করতে যাচ্ছে করোনা ভাইরাস। সংক্রামক এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে গেলো সপ্তাহে বিশ্বজুড়ে মৃত্যু হয়েছে প্রায় ১৭০০ মানুষের। করোনাভাইরাস এর এমন ভয়াবহ রূপ তুলে ধরেছেন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) মহাপরিচালক টেড্রোস আধানম গেব্রেইয়েসুস।

শুক্রবার (১২ জুলাই) এক প্রতিবেদনে বিষয়টি নিশ্চিত করেছে  বার্তাসংস্থা এএফপি।

প্রতিবেদনে বলা হয়,হঠাৎ এমন মৃত্যুর পর ঝুঁকিপূর্ণ জনগোষ্ঠীকে অতিদ্রুত করোনারোধী টিকা নেয়ার জন্য আহ্বান জানিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা।এছাড়া ডব্লিউএইচওর মহাপরিচালক কোভিড-১৯ ভ্যাকসিন গ্রহণের হার হ্রাসের বিষয়েও সতর্কবার্তা দিয়েছেন।

সংস্থাটির মহাপরিচালক জানান,  ক্রমাগত মৃত্যুর সংখ্যা সামনে আসা সত্ত্বেও  দেখা যাচ্ছে, স্বাস্থ্যকর্মী এবং ৬০ বছরের বেশি বয়সী ব্যক্তিদের মধ্যে ভ্যাকসিনের কভারেজ হ্রাস পেয়েছে, সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ জনগোষ্ঠীর মধ্যে তারাও রয়েছেন।

তিনি আরও বলেন, সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে থাকা লোকদের  শেষ ডোজ নেয়ার ১২ মাসের মধ্যে আবারও কোভিড-১৯ ভ্যাকসিন নিতে ডব্লিউএইচও সুপারিশ করছে।

Advertisement

একইসঙ্গে ভাইরাস নজরদারি এবং সিকোয়েন্সিং বজায় রাখতে ও সাশ্রয়ী মূল্যে এবং নির্ভরযোগ্য পরীক্ষা, চিকিৎসা এবং সবার জন্য ভ্যাকসিন নিশ্চিত করার জন্য বিশ্বের সরকারগুলোর প্রতি আহ্বানও জানিয়েছে সংস্থাটি।

আই/এ

পুরো পরতিবেদনটি পড়ুন

রোগব্যাধি

স্ট্রোক এর কারণ ও লক্ষণ, প্রতিরোধ জেনে নিন

Published

on

স্ট্রোক শব্দটি আমাদের খুব পরিচিত, তাই না? প্রায়ই আমরা পরিচিত মানুষের মাঝে কেউ স্ট্রোক করেছে শুনতে পাই। এই রোগটি সম্পর্কে কতটা জানেন? স্ট্রোক কী, কেন হয়, প্রতিকার ও প্রতিরোধ সম্পর্কে জানা থাকলে আপনি কিংবা আপনার পরিবারের প্রিয় মানুষটিকে খুব সহজেই বাঁচাতে পারবেন। আসুন জেনে নেই এই রোগের আদ্যোপান্ত।

স্ট্রোক আসলে কী?

এটি একটি ভয়াবহ স্বাস্থ্য সমস্যা। মস্তিষ্কে রক্ত সঞ্চালন বাঁধা পেলে বা ব্যাহত হলে, যখন রক্ত জমাট বেধে ধমনীকে ব্লক করে দেয়, তখন অক্সিজেনের অভাবে মস্তিষ্কের কোষগুলো ডেড হয়ে যায় এবং মস্তিষ্কের কার্যকরী ক্ষমতা নষ্ট হয়ে যায়। এটিই হচ্ছে স্ট্রোক।

স্ট্রোক এর কারণ

স্ট্রোক কোথায় হচ্ছে, মস্তিষ্কের কতটুকু আক্রান্ত হচ্ছে তার উপর নির্ভর করে পরবর্তী ব্যবস্থাপনা। এই ঘটনাটি যেকোনো বয়সের যেকোনো মানুষের সাথে হতে পারে। নারীদের তুলনায় পুরুষরা এ রোগে বেশি আক্রান্ত হয়ে থাকে। মাইল্ড স্ট্রোক অর্থাৎ স্ট্রোকের পরিমাণ যদি কম হয়, তবে শুধুমাত্র হাত ও পায়ে দুর্বলতা দেখা দিতে পারে। কিন্তু স্ট্রোকের পরিমাণ বেশি হলে শরীরের একাংশ প্যারালাইসিস বা অবশ হয়ে যেতে পারে। এই সময় রোগী কথা বলার ক্ষমতাও হারিয়ে ফেলে। এবার কখনও কখনও এই অবস্থায় রোগীর মৃত্যুও হতে পারে।

Advertisement

স্ট্রোক এর প্রকারভেদ

স্ট্রোক এর দু’টি প্রাথমিক প্রকার রয়েছে-

১. ইস্কেমিক স্ট্রোক: মস্তিষ্কে অক্সিজেনের অভাবে রক্ত সঞ্চলনে ব্যাহত হওয়ার কারণে যে স্ট্রোক দেখা দেয় তা হলো ইস্কেমিক স্ট্রোক। সাধারণত এই ধরনের স্ট্রোক বেশি হতে দেখা যায়। এক গবেষণায় জানা গেছে প্রায় ৮৭% ক্ষেত্রেই ইস্কেমিক স্ট্রোক হয়।

২. হেমোরেজিক স্ট্রোক: এই ক্ষেত্রে মস্তিষ্কে রক্তনালী ফেটে যেয়ে রক্তক্ষরণ হলে তাকে হেমোরেজিক স্ট্রোক বলা হয়। এই ধরনের স্ট্রোক সাধারণত কম হলেও এটি কিন্তু বেশ গুরুতর। এটি যখন ঘটে তখন রক্তপাত মস্তিষ্কের টিস্যুকে সংকুচিত করে এবং মস্তিষ্কের স্বাভাবিক কার্যকারিতা ব্যাহত করে।

স্ট্রোক এর কারণ

Advertisement

১. উচ্চ রক্তচাপ: অনিয়ন্ত্রিত উচ্চ রক্তচাপ স্ট্রোকের প্রধান ঝুঁকির কারণ। এটি রক্তনালীগুলোর ক্ষতি করে এবং এগুলোর ব্লকেজ বা ফেটে যাওয়ার জন্য আরও সংবেদনশীল করে তোলে।

২. ধূমপান: ধূমপান রক্তনালীগুলোর ক্ষতি করে এবং রক্ত জমাট বাঁধার কারণে স্ট্রোকের ঝুঁকি বাড়ে।

৩. ডায়াবেটিস: রক্তনালী ও স্নায়ুর সম্ভাব্য ক্ষতির কারণে ডায়াবেটিস রোগীদের স্ট্রোকের ঝুঁকি বেশি থাকে।

৪. উচ্চ কোলেস্টেরল: এলডিএল কোলেস্টেরলের উচ্চমাত্রা ধমনীতে প্লাগ তৈরি করতে পারে এবং ব্লকেজ এর ঝুঁকি বাড়ায়।

৫. অ্যাট্রিয়াল ফাইব্রিলেশন: অ্যাট্রিয়াল ফাইব্রিলেশনের মতো অনিয়মিত হার্টের ছন্দের কারণে হৃৎপিণ্ডে রক্ত জমাট বাঁধতে পারে, যা মস্তিষ্কে পৌঁছে স্ট্রোকের কারণ হতে পারে।

Advertisement

৬. স্থূলতা: অতিরিক্ত ওজন ও শারীরিকভাবে নিষ্ক্রিয় হওয়া ডায়াবেটিস ও উচ্চ রক্তচাপের মতো পরিস্থিতি তৈরি করে, যা স্ট্রোকের ঝুঁকি বাড়ায়।

 

৭. পারিবারিক ইতিহাস: স্ট্রোক বা হৃদরোগের পারিবারিক ইতিহাস থাকলে কিছুটা হলেও ঝুঁকি থাকে।

৮. এছাড়াও অতিরিক্ত মানসিক চাপ, হতাশা, ডিপ্রেশনের কারণেও স্ট্রোক হতে পারে।

স্ট্রোক এর লক্ষণ

Advertisement

স্ট্রোক এর লক্ষণগুলো শনাক্ত করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। রোগ নির্ণয়ে ‘FAST’ সাহায্য করতে পারে-

F: Face (মুখ)- মুখের একপাশে হঠাৎ দুর্বলতা বা ঝুঁকে পড়া

A: Arm (হাত)- উভয় হাত বাড়াতে বা উঁচু রাখতে অক্ষমতা

S: Speech (কথা বলা)- কথা জড়িয়ে যাওয়া অথবা সুসংগতভাবে কথা বলতে অসুবিধা

T: Time (সময়)- যদি কেউ এই লক্ষণগুলো অনুভব করে থাকে, অবিলম্বে তাকে হাসপাতালে নিয়ে চিকিৎসা শুরু করতে হবে

Advertisement

অন্যান্য সাধারণ লক্ষণগুলোর মধ্যে রয়েছে- গুরুতর মাথা ব্যথা, মাথা ঘোরা, হাঁটার ভারসাম্য বা সমন্বয় নষ্ট হওয়া এবং হঠাৎ করে দৃষ্টি সমস্যা বা চোখে ঝাপসা দেখা।

রোগ নির্ণয়

স্ট্রোকের ক্ষতি কমানোর জন্য প্রাথমিক রোগ নির্ণয় এবং দ্রুত চিকিৎসা অপরিহার্য। চিকিৎসকরা স্ট্রোকের ধরন ও তীব্রতা নির্ধারণ করতে বিভিন্ন পরীক্ষা ও ইমেজিং কৌশল ব্যবহার করেন।

১. সিটি স্ক্যান: একটি কম্পিউটেড টমোগ্রাফি (CT) স্ক্যান দ্রুত মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ এবং মস্তিষ্কের ক্ষতির পরিমাণ শনাক্ত করতে পারে।

২. এমআরআই: ম্যাগনেটিক রেজোন্যান্স ইমেজিং (এমআরআই) মস্তিষ্কের বিশদ চিত্র প্রদান করে, ক্ষতিগ্রস্ত জায়গা নির্ণয় করতে সাহায্য করে।

Advertisement

চিকিসা পদ্ধতি

স্ট্রোকের চিকিৎসা নির্ভর করে এটি ইস্কেমিক স্ট্রোক (রক্ত জমাট বাঁধার কারণে) নাকি হেমোরেজিক স্ট্রোক (মস্তিষ্কে রক্তপাতের কারণে), সেটার উপরে।

ইস্কেমিক স্ট্রোক

১. উপসর্গ শুরু হওয়ার কয়েক ঘণ্টার মধ্যে রোগী হাসপাতালে আসার পর চিকিৎসক শিরায় থ্রম্বোলাইটিক্স (টিপিএ-এর মতো ক্লট-বাস্টিং ওষুধ) দিতে পারে।

২. কিছু ক্ষেত্রে শারীরিকভাবে ক্লট অপসারণের জন্য থ্রম্বেক্টমি করতে পারেন।

Advertisement

৩. ভবিষ্যতে জমাট বাঁধা প্রতিরোধ করার জন্য অ্যান্টিপ্লেটলেট বা অ্যান্টিকোয়াগুল্যান্ট ওষুধ নির্ধারিত করে দিতে পারেন।

৪. উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিস ও হাই কোলেস্টেরল থাকলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।

উচ্চ রক্তচাপ এর মেডিসিন

হেমোরেজিক স্ট্রোক

১. রক্তপাত বন্ধ করতে, জমাট বাঁধা অপসারণ বা ক্ষতিগ্রস্ত রক্তনালী রিপেয়ারের জন্য অস্ত্রোপচারের প্রয়োজন হতে পারে।

Advertisement

২. রক্তপাত রোধ, খিঁচুনি কমিয়ে আনার জন্য প্রয়োজনীয় ওষুধ দিতে হবে।

৩. নিবিড় পর্যবেক্ষণের প্রয়োজন হতে পারে।

উভয় ধরনের স্ট্রোকের ট্রিটমেন্টের জন্য প্রয়োজন অনুসারে ফিজিওথেরাপি, স্পিচ থেরাপি ও অকুপেশনাল থেরাপি অন্তর্ভুক্ত থাকতে পারে।

আপনি বা আপনার পরিচিত কেউ যদি স্ট্রোকের লক্ষণগুলো অনুভব করেন, যেমন হঠাৎ অসাড়তা, বিভ্রান্তি, কথা বলতে সমস্যা, দৃষ্টি সমস্যা, তীব্র মাথা ব্যথা, বা হাঁটতে সমস্যা হলে অবিলম্বে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া অপরিহার্য। মস্তিষ্কের ক্ষতি কমাতে স্ট্রোকের চিকিৎসা নেওয়া খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

ফিজিওথেরাপি

Advertisement

স্ট্রোকের রোগীকে ২৪ ঘন্টার মধ্যে চিকিৎসকের পরামর্শে ফিজিওথেরাপি দেওয়া হলে রোগী দ্রুত উন্নতির পথে আসতে পারে। স্ট্রোকের ধরন ও মাত্রা, বয়স, রক্তচাপ, ডায়াবেটিস ইত্যাদি প্যারামিটারের উপর নির্ভর করে কোন রোগী কতদিনে ভালো হবে। কিছু রোগী ভালো কন্ডিশনে থাকেন। যেমন- কথা বলতে পারেন, নিজে খেতে পারেন। অনেকে কোনো একদিকের হাত-পা নাড়াতে পারেন না, এক্ষেত্রে ফিজিওথেরাপিস্ট দিয়ে ব্যায়াম করাতে হবে অথবা তাদের কাছ থেকে ব্যায়াম শিখে নিতে হবে।

স্ট্রোক প্রতিরোধ করা যায় কীভাবে?

বিশেষ করে যদি ঝুঁকির কারণ বা স্ট্রোকের পারিবারিক ইতিহাস থাকে, সেক্ষেত্রে বাড়তি সতর্কতা মেনে চলা উচিত। স্ট্রোক এর কারণ তো আমরা আগেই জেনে নিয়েছি। ঝুঁকি কমাতে নিচের পদক্ষেপ অনুসরণ করতে পারেন।

স্বাস্থ্যকর খাবার বেছে নিন

ফল, সবজি, শস্যদানা, লো স্যাচুরেটেড ফ্যাট ও সোডিয়াম সমৃদ্ধ সুষম খাদ্য গ্রহণ করুন।

Advertisement

রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করুন

নিয়মিত আপনার রক্তচাপ পরীক্ষা করুন এবং উচ্চ রক্তচাপ ব্যবস্থাপনার জন্য আপনার চিকিৎসকের পরামর্শ অনুসারে মেডিসিন গ্রহণ করুন।

ধূমপান ত্যাগ করুন

ধূমপান পরিত্যাগ স্ট্রোকের ঝুঁকি উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস করে। অতিরিক্ত অ্যালকোহল গ্রহণ রক্তচাপ বাড়াতে পারে এবং স্ট্রোকের ঝুঁকিও থাকে এক্ষেত্রে। তাই এই অভ্যাস বাদ দিতে হবে।

ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করুন

Advertisement

প্রয়োজনে খাদ্য, ব্যায়াম ও ওষুধের মাধ্যমে রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখুন।

নিয়মিত ব্যায়াম করুন

সঠিক ওজন ধরে রাখতে ও ফিট থাকতে প্রতি সপ্তাহে কমপক্ষে ১৫০ মিনিট ব্যায়াম করুন।

প্রয়োজনীয় মেডিসিন গ্রহণ করুন

উচ্চ রক্তচাপ অথবা হাই কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণের জন্য নির্দেশিত মেডিসিন গ্রহণ করুন। অনেকে আছেন ঠিকমতো ওষুধ সেবন করেন না, গাফিলতি করেন! এই অভ্যাস পরিহার করুন।

Advertisement

অনেকেই স্ট্রোক আর হার্ট অ্যাটাককে সেইম মনে করেন। আসলে স্ট্রোক হলো ব্রেনের অসুখ আর হার্ট অ্যাটাক হৃৎপিণ্ডের সাথে রিলেটেড। স্ট্রোক এর কারণ আজ জেনে নিলেন। ধরন অনুযায়ী চিকিৎসার ক্ষেত্রেও ভিন্নতা আছে। সঠিক সময়ে সঠিক সিদ্ধান্ত নিয়ে রোগীর জীবন বাঁচাতে সহায়তা করুন। স্ট্রোক এর ঝুঁকির কারণগুলো প্রতিরোধ করে, হেলদি লাইফস্টাইল মেনটেইন করে স্ট্রোক হওয়ার সম্ভাবনা কমিয়ে আনতে পারেন। আসুন সবাই সচেতন হই, সুস্থ থাকি।

জেএইচ

পুরো পরতিবেদনটি পড়ুন

সর্বাধিক পঠিত

প্রধান সম্পাদক : সৈয়দ আশিক রহমান

সম্পাদকীয় ও বাণিজ্যিক কার্যালয়: বেঙ্গল টেলিভিশন লিমিটেড , ৪৩৭ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২১৫
ফোন : 01878-184154, ই-মেইল : contact.bayannotv@gmail.com
© 2023 bayanno.tv

কারিগরি সহায়তায় Build it