রংপুর
গাইবান্ধায় গৃহহীন হয়ে পড়েছে তিন হাজার পরিবার
গাইবান্ধার নদী ভাঙনে গৃহহীন হয়ে পড়েছে তিন হাজার পরিবার। আবাদী জমি ও বসতভিটা হারানো এসব পরিবার চরম বিপাকে পড়েছেন। ভাঙন অব্যাহত থাকায় হুমকির মুখে রয়েছেন নদী পাড়ের লোকজন।
সরকারি হিসেবে এবারের বন্যায় গাইবান্ধায় ৩ হাজার ৪২ টি পরিবার ব্রহ্মপুত্র,তিস্তা,যমুনা,ঘাঘট নদের ভাঙনের শিকার হয়ে তাদের বসতভিটা হারিয়েছেন।
ফুলছড়ি উপজেলার সবচেয়ে বেশি ভাঙন প্রবণ এলাকাগুলো হচ্ছে, উড়িয়া ইউনিয়নের ভুষিরভিটা, মধ্য উড়িয়া, গজারিয়া ইউনিয়নের গলনা, ঝানঝাইর, ভাজনডাঙা, ফুলছড়ি ইউনিয়নের পিপুলিয়া, পূর্ব গাবগাছি, টেংরাকান্দি, বাজে ফুলছড়ি, বাগবাড়ি, ফজলুপুর ইউনিয়নের খাটিয়ামারী, কুচখালী, এরেন্ডাবাড়ী ইউনিয়নের ডাকাতিয়ার চর ও জিগাবাড়ী গ্রাম। ব্রহ্মপুত্র নদের বুকে এসব এলাকার অবস্থান হওয়ায় তীব্র স্রোতে চোখের নিমিষেই বিলীন হচ্ছে আবাদী জমি ও বসতভিটা।
গজারিয়া ইউনিয়নের গলনা গ্রামে গিয়ে দেখা গেল অন্যরকম দৃশ্য। বন্যার পানি নেমে গেলেও মানুষজনের মধ্যে বড় আতংক হয়ে দাঁড়িয়েছে নদী ভাঙন। গজারিয়া ইউনিয়নের আলমাজ মিয়া (৩৫) জানান, প্রায় ২০ বছর আগে নদী ভাঙনে বসতভিটা হারিয়ে গলনা গ্রামে আশ্রয় নিয়েছিলাম। চরের মধ্যে যেটুকু জমি ছিল তা দিয়ে ভালই সংসার চলতো। কিন্তু ভাঙনে এবারের আর শেষ রক্ষা হলো না। তিনি বলেন, ঘরের সব জিনিস নিতে পারি নাই। হাতের কাছে যা পেয়েছি তাই নৌকায় তুলে নিয়েছি। পরিবারের সদস্যদের নিয়ে কোথায় গিয়ে উঠবো ভেবে পাচ্ছি না।
জেলার সুন্দগঞ্জ উপজেলার হরিপুর,বেলকা, কাপাসিয়া, দন্ডিপুর ইউনিয়নের রাগব, গান্দিররাম, চর-হরিপুর,মধ্য বেলাকা, নবাবগঞ্জ, কাপাসিয়া জিগাবাড়ি, চরবেলাকা, উজান বোগাতি, উজান সরাইল, ভাটি বুড়াইল, কালাই মোতার চর, উজান শ্রীপুর চরে ব্যাপক তিস্তা ও ব্রাহ্মপুত্র নদী ভাঙনে মানুষ গৃহহীন হয়েছে।
এছাড়াও সদর উপজেলার কামারজানি ও মোল্লার চরে বেশ কয়েকটি চরে নদী ভাঙনে কয়েক”শ পরিবার গৃহহীন হয়েছে।
ভাঙনে বসতভিটা হারিয়ে গজারিয়া গ্রামে জামাল সরদারের বাড়িতে আশ্রয় নেয়া গলনা গ্রামের হাশেম মিয়া স্ত্রী মমেনা বেওয়া (৬৫) বলেন, এই বয়সে পাঁচ বার নদী ভাঙনে বাড়িঘর হারিয়েছি। চারিদিকে থইথই পানি, তাই এবার আর যাওয়ার জায়গা না থাকায় এই বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছি।
ফজলুপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আবু হানিফ প্রমানিক বলেন, এবছর নদীর পানি বাড়া ও কমার সাথে সাথেই ভাঙন শুরু হয়েছে । কয়েকদিন আগে ভাঙনের তীব্রতা বেড়ে গেছে। এরই মধ্যে একটি গুচ্ছগ্রাম সহ ২শ’ পরিবার ভাঙনের শিকার হয়েছেন। অন্য বছরেও তুলনায় বন্যা কম হলেও নদী ভাঙনের তীব্রতা দেখা দিয়েছে। এমন পরিস্থিতি লোকজন তাদের বাড়িঘর সরানোয় সময় পায়নি।
মোল্লাচর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আব্দুল হাই বলেন, যেভাবে নদী ভাঙন শুরু হয়েছে জেলার মানচিত্র থেকে এ ইউনিয়ন মুছে যাওয়ার মত। এ ইউনিয়নের মানুষ ও মানচিত্র রক্ষার জন্য জরুরী পদক্ষেপ কামনা করে সরকারের কাছে দাবি জানান।
মুনিয়া
জাতীয়
রংপুরে আন্দোলনকারীদের সংঘর্ষে কাউন্সিলরসহ নিহত ৫
রংপুরে অসহযোগ আন্দোলনে সরকার দলীয় নেতাকর্মীদের সাথে আন্দোলনকারীদের সংঘর্ষে রংপুর সিটি করপোরেশনের কাউন্সিলরসহ পাঁচজন নিহত হয়েছেন। সাংবাদিকসহ প্রায় ৫০ জন আহত হয়েছেন। এরমধ্যে কয়েকজন গুরুতর অবস্থায় মেডিকেলে ভর্তি রয়েছেন।
রোববার (৪ আগস্ট) দুপুরের দিকে রংপুর নগরীতে সংঘর্ষ চলাকালে এই ঘটনা ঘটে।
নিহত হারাধন রায় হারা রংপুর সিটি করপোরেশনের ৪নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর, পশুরাম থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও মহানগর পূজা উদযাপন কমিটির সভাপতি। নিহতের বিষয়টি গণমাধ্যমে নিশ্চিত করেছেন রসিক কাউন্সিলর শাহাজাদা আরমান শাহাজাদা।
নিহত অন্য চারজন হলেন নগরীর গুড়াতিপাড়ার স্বেচ্ছাসেবক লীগের নেতা খরশু মিয়া, যুবলীগ নেতা মাসুম, হারাধন রায়ের ভাগ্নে এবং অপরজনের পরিচয় এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
জানা যায়, সকাল থেকেই লাঠিসোটা নিয়ে রংপুর মহানগর ও জেলা আওয়ামী লীগের দলীয় কার্যালয় ঘিরে অবস্থান নেন আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ, যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগসহ অন্যান্য নেতাকর্মীরা। অন্যদিকে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থী, অভিভাবকসহ অবস্থান নেন নগরীর টাউনহল চত্বরে। এতে মুখোমুখি সংঘর্ষ শুরু হয়। ঘটনাস্থলে কয়েকজন গুরুতর আহত হন। তাদের উদ্ধার করে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হলে দুজনকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসক।
পরে জাহাজ কোম্পানি মোড় থেকে পায়রা চত্বরে পুনরায় অবস্থান নেওয়া শিক্ষার্থীদের ধাওয়া করতে গিয়ে আটকে পড়েন পশুরাম থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও কাউন্সিলর হারাধন রায় হারা। পরে পায়রা চত্বর থেকে পালিয়ে কালিবাড়ি মন্দিরে প্রবেশ করার সময় আন্দোলনকারীদের হাতে ধরা পড়েন হারাধন রায় হারা। সেখানেই এলোপাতাড়ি দেশীয় অস্ত্র দিয়ে তাকে কোপাতে শুরু করেন। একপর্যায়ে মৃত্যু নিশ্চিত হলেও পুনরায় এলোপাতাড়ি আঘাত করেন তারা। পরে পরিবারের লোকজন ঘটনা জানার পর হারাধনের মরদেহ উদ্ধার করে বাড়িতে নিয়ে যান।
এদিকে রংপুর সিটি করপোরেশনের সামনে অবস্থান করা এনটিভির ক্যামেরাপারসন আরমান, চ্যানেল টোয়েন্টি ফোরের রিপোর্টার ফখরুল শাহীন, নিউজ টোয়েন্টিফোরের রিপোর্টার রেজাউল ইসলাম মানিক, একুশে টিভির ক্যামেরাম্যান আলী হায়দার রনি, ইত্তেফাকের ফটো সাংবাদিক রাশেদ রাব্বি, অনলাইনের মিজানসহ ১০ জন গণমাধ্যম কর্মীকে মারধর করেছেন আন্দোলনকারীরা।
উল্লেখ্য, রংপুর জেলার বিভিন্ন উপজেলায় আওয়ামী লীগের দলীয় কার্যালয়ে আগুন দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। রংপুর-২ (বদরগঞ্জ) আসনের আওয়ামী লীগের এমপি ডিউক চৌধুরীর বাড়িতে ভাঙচুর চালিয়ে আগুন ও পীরগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের দলীয় কার্যালয়ে আগুন, গংগাচড়া আওয়ামী লীগের দলীয় কার্যালয় ভাঙচুর ও আগুন, মিঠাপুকুর উপজেলার পরিষদ চত্বরে ইউএনও অফিস, বেগম রোকেয়া অডিটোরিয়াম, আনসার ভিডিপিসহ বিভিন্ন দফতরে ও আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কোষাধ্যক্ষ এইচ এন আশিকুর রহমানের বাড়িতে আগুন দেয় দুর্বৃত্তরা।
এএম/
দেশজুড়ে
রংপুরে আ.লীগের এমপির বাসায় আগুন, লুটপাট
রংপুরের বদরগঞ্জে আওয়ামী লীগ সংসদ সদস্য আবুল কালাম মো. আহসানুল হক চৌধুরী (ডিউক) ও পৌরসভার মেয়র আহসানুল হক চৌধুরীর (টুটুল) বাসায় আগুন দিয়েছে বিক্ষোভকারীরা। আগুন দেওয়ার পর লুটপাটের ঘটনা ঘটেছে।
প্রথমে ছাত্রলীগ ও যুবলীগের নেতাকর্মীরা বিক্ষোভকারীদের লাঠিপেটা ও ধাওয়া দিয়েছেন। পরে বিক্ষোভকারীরা একত্রিত হয়ে স্থানীয় দুপুর ১২টার দিকে আগুন দেয়। বিক্ষোভকারীরা লাঠি হাতে ওই দুই বাড়ি ঘেরাও করে বিক্ষোভ করছে।
অন্যদিকে রংপুর শহরের সুপার মার্কেটের সামনে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের সংঘর্ষ, ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ায় দুইজন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন অন্তত ৩০ জন। রোববার (৪ আগস্ট) সকালে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
রংপুর মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের (রমেক) উপ-পরিচালক আক্তারুজ্জামান গণমাধ্যমকে নিহতের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
জানা গেছে, সকালে আন্দোলনকারীরা শহরের সুপার মার্কেট এলাকায় জড়ো হন। এ সময় আকস্মিকভাবে আওয়ামী লীগের ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা তাদের ধাওয়া দেন। আন্দোলনকারীরাও তাদের পাল্টা ধাওয়া দিলে শুরু হয় সংঘর্ষ। এতে উভয়পক্ষের ৩২ জন আহত হন। তাদের উদ্ধার করে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হলে চিকিৎসক দুজনকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।
এ বিষয়ে রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ-কমিশনার আবু মারুফ হোসেন (অপরাধ) গণমাধ্যমকে বলেন, ঘটনাস্থলে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। উত্তপ্ত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা চলছে।
এনএস/
দেশজুড়ে
সংঘর্ষে রণক্ষেত্র রংপুর, নিহত ২
রংপুরে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের সংঘর্ষ, ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ায় দুইজন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন অন্তত ৩০ জন।
রোববার (৪ আগস্ট) সকালে শহরের সুপার মার্কেটের সামনে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। আহত ও নিহতদের পরিচয় তাৎক্ষণিকভাবে জানা যায় নি।
রংপুর মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের (রমেক) উপ-পরিচালক আক্তারুজ্জামান গণমাধ্যমকে নিহতের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
জানা গেছে, সকালে আন্দোলনকারীরা শহরের সুপার মার্কেট এলাকায় জড়ো হন। এ সময় আকস্মিকভাবে আওয়ামী লীগের ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা তাদের ধাওয়া দেন। আন্দোলনকারীরাও তাদের পাল্টা ধাওয়া দিলে শুরু হয় সংঘর্ষ। এতে উভয়পক্ষের ৩২ জন আহত হন। তাদের উদ্ধার করে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হলে চিকিৎসক দুজনকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।
এ বিষয়ে রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ-কমিশনার আবু মারুফ হোসেন (অপরাধ) গণমাধ্যমকে বলেন, ঘটনাস্থলে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। উত্তপ্ত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা চলছে।
এনএস/