বাংলাদেশ
অনুপস্থিত শিক্ষকদের তালিকা চাইল অধিদপ্তর
করোনা মহামারিতে প্রায় দেড় বছর বন্ধ থাকার পর রোববার খুলেছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো। খোলার প্রথম দিন প্রাথমিক বিদ্যালয়ের অনেক শিক্ষকই উপস্থিত ছিলেন না । বিনা অনুমতিতেই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে অনুপস্থিত ছিলেন তারা। – যারা প্রতিষ্ঠানে অনুপস্থিত ছিলেন, এমন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের তালিকা তৈরির নির্দেশ দিয়েছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর।
রোববার (১২ সেপ্টেম্বর) রাতে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য চাওয়া হয়েছে। সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মচারী ও তাদের পরিবারের সদস্যদের করোনা সংক্রমণের তথ্য প্রতিদিন বিকেল ৪টার মধ্যে ‘করোনা আপডেট’ সফটওয়্যারে এন্ট্রির নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। বিভাগীয় উপপরিচালক ও জেলা শিক্ষা কর্মকর্তাদের তালিকা পাঠানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
নির্ধারিত ছকে শিক্ষকের নাম ও পদবি, বিদ্যালয়ের ঠিকানা, অনুপস্থিতির তারিখ, অনুপস্থিতির কারণ এবং কী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে- আদেশে তাও উল্লেখ করতে বলা হয়েছে।
আদেশে বলা হয়, কভিড-১৯ সংক্রান্ত কারিগরি পরামর্শক কমিটির শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার বিষয়ে স্বাস্থ্যবিধিসংক্রান্ত সুপারিশ অনুসারে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মচারী ও তাদের পরিবারের সদস্যদের মধ্যে করোনা সংক্রমণসংক্রান্ত দৈনিক ভিত্তিতে মনিটরিং করা প্রয়োজন।
উপজেলা ও থানা শিক্ষা কর্মকর্তারা তার আওতাধীন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের মাধ্যমে পূরণ করা স্বাস্থ্য তথ্য নির্ধারিত ছকে সংগ্রহ করবেন এবং প্রতিদিন বিকেল ৪টার মধ্যে আবশ্যিকভাবে ‘করোনা আপডেট’ সফটওয়্যারে হালনাগাদ তথ্য এন্ট্রি দেবেন।
এদিকে, শিক্ষকদের অনুপস্থিতির পাশাপাশি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের প্রতিদিনের উপস্থিতি সংক্রান্ত তথ্যও পাঠাতে বলেছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর (ডিপিই)। রোববার (১২ সেপ্টেম্বর) প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের পরিচালক মনীষ চাকমার স্বাক্ষর করা অফিস আদেশে বিভাগীয় উপপরিচালকদের তথ্য পাঠানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
এতে বলা হয়, কোভিড-১৯ সংক্রমণ পরিস্থিতিতে আন্তঃমন্ত্রণালয় সভার সিদ্ধান্তের আলোকে জনস্বাস্থ্য ও স্বাস্থ্যবিধি মেনে বিদ্যালয়গুলোয় রোববার থেকে রুটিন অনুযায়ী সরাসরি শ্রেণি পাঠদান শুরু হয়েছে। প্রতিদিন বিদ্যালয়ে কতজন শিক্ষার্থী সরাসরি পাঠদানে উপস্থিত রয়েছে সে সম্পর্কিত তথ্য প্রয়োজন। প্রত্যেক বিভাগের জেলাভিত্তিক তথ্য সমন্বয় করে নির্ধারিত ছক অনুযায়ী পাঠানোর জন্য অনুরোধ করা হলো।
এর আগে ৫৪৪ দিন পর রোববার (১২ সেপ্টেম্বর) সব অপেক্ষার অবসান হয়ে গেছে। সরকারের ঘোষণা অনুযায়ী রোববার খুলেছে স্কুল-কলেজ ও মাদ্রাসা। ফলে অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করা শিক্ষকরা শিক্ষার্থীদের স্বাগত জানিয়েছেন।
গত বছরের ৮ মার্চ দেশে প্রথম করোনার রোগী শনাক্ত হয়। এর ১০ দিন পর ১৭ মার্চ বন্ধ করা হয় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। এরপর এখন পর্যন্ত ২৩ দফায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ছুটি বাড়ানো হয়েছে।
সবশেষ স্কুল-কলেজ খোলার চূড়ান্ত ঘোষণা আসার পর থেকেই ব্যস্ত সময় পার করেছেন শিক্ষক-শিক্ষার্থী-অভিভাবকরা। একদিকে স্কুল কর্তৃপক্ষ পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রম চালান। আরেক দিকে সরকারি নির্দেশনা মোতাবেক রুটিন তৈরির পাশাপাশি ক্লাসরুমে শারীরিক দূরত্ব নিশ্চিত করা, হাত ধোয়াসহ সব নির্দেশনাই মানা হয়েছে।
এদিকে দীর্ঘদিন পর ক্লাসে বসার আনন্দে মাতোয়ারা শিক্ষার্থীরা। এক সপ্তাহ ধরে তারা স্কুলব্যাগ, ড্রেস, জুতা ইত্যাদি কিনে স্কুলে যাওয়ার প্রস্তুতি নিয়েছেন। তাদের স্বাগত জানিয়েছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো।
নির্দেশনা অনুযায়ী, সারা দেশের বেশির ভাগ প্রতিষ্ঠানই ইতোমধ্যে সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে। তবে প্রত্যন্ত এলাকার অনেক স্কুল-কলেজ এখনো পুরোপুরি প্রস্তুত হতে পারেনি। আর বর্ষাকাল হওয়ায় কোনো কোনো স্কুলের সামনে দেখা দিয়েছে জলাবদ্ধতা। ফলে অনেক স্কুল তাদের পাঠদান শুরু করতে পারবে না।
সরকারি ঘোষণা অনুযায়ী, সব দিন শিক্ষার্থীদের স্কুলে যেতে হবে না। শুধু পিইসি, এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষার্থীরা দৈনিক ক্লাস করবে। বাকিদের একদিন সরাসরি পাঠদান হবে। সপ্তাহের বাকি দিনগুলো অনলাইনে বা টেলিভিশনে দূরশিক্ষণে পাঠদান চলবে।
মুক্তা মাহমুদ
জাতীয়
শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা জানালেন অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টারা
শপথ নেয়ার পরের দিন ভাষা শহীদদের স্মরণে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা নিবেদন করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টারা।
শুক্রবার (৯ আগস্ট) বেলা ১১টার দিকে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ১৩ জন উপদেষ্টা নিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।
এর আগে, সাভারে জাতীয় স্মৃতিসৌধে মহান মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান ও অন্য উপদেষ্টারা।
গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান হিসেবে শপথ নেন ড. মুহাম্মদ ইউনূস। দায়িত্ব নেওয়ার পর তিনি এক নতুন বাংলাদেশ উপহার দেওয়ার অঙ্গীকার করেন।
আই/এ
জাতীয়
উপদেষ্টা পরিষদকে অভিনন্দন জানালেন জাসদ
জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল—জাসদের সভাপতি হাসানুল হক ইনু ও সাধারণ সম্পাদক শিরীন আখতার অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মোহাম্মদ ইউনুস এবং অন্য উপদেষ্টাদেরকে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়েছেন
বৃহস্পতিবার ( ৮ আগস্ট ) রাতে দলের পক্ষ থেকে পাঠানো এক বিবৃতিতে এ অভিনন্দন জানান তারা।
বিবৃতিতে জানানো হয়, “অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দায়িত্ব গ্রহণ করার পর দেশে আর একটিও প্রাণহানি, হামলা ও সম্পদ ধ্বংসের ঘটনা যেন না ঘটে তা নিশ্চিত হবে।”
বিবৃতিতে আরও বলেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার রাষ্ট্রীয় চার মূলনীতিসহ সংবিধানকে সমুন্নত রেখে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন এবং রাজনৈতিক ও সামাজিক শক্তির সাথে আলোচনা করে সরকারের কর্ম পরিকল্পনার রূপরেখা দ্রুত প্রকাশ করে বিদ্যমান অনিশ্চয়তা ও অস্থিরতা প্রশমিত করবেন।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রাথমিক ও প্রধান কাজ হিসেবে অনতিবিলম্বে দেশে আইনশৃঙ্খলা পুনঃপ্রতিষ্ঠা করার এবং জনগণের জানমালের নিরাপত্তা নিশ্চিত করে জনজীবনে স্বাভাবিকতা ও শান্তি ফিরিয়ে আনতে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানিয়েছেন।
জাসদ নেতৃবৃন্দ অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নিহত শিক্ষার্থী, সাধারণ মানুষ, সাংবাদিক পুলিশ বাহিনীর সদস্যসহ প্রতিটি হত্যাকাণ্ডের সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার নিশ্চিত করার আহ্বান জানান।
জাসদ জোর দাবি জানান, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে পূর্ববর্তী সরকারের পদত্যাগের পর দেশের বিভিন্ন স্থানে চলমান বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও পুলিশ বাহিনীর সদস্যসহ পেশাজীবী ও হিন্দু ও আহমদীয়াসহ ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের ওপর হামলা ও হত্যা করা, মন্দিরসহ ধর্মীয় স্থাপনায় হামলা, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের কার্যালয়ে ও নেতাকর্মীদের বাসাবাড়িতে হামলা-হত্যা-নির্যাতন, ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান ও ঘরবাড়িতে হামলা ও অগ্নিসংযোগ, সংসদ ভবন ও প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় ও গণভবনসহ বিভিন্ন সরকারি স্থাপনায় হামলা, ভাঙচুর, লুটপাট, অগ্নিসংযোগ, ধানমন্ডি ৩২ নম্বরের ঐতিহাসিক বঙ্গবন্ধু ভবন-বঙ্গবন্ধু জাদুঘরে হামলা, লুটপাট, জ্বালিয়ে ছারখার, দেশের বিভিন্ন স্থানে বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য, সাত বীরশ্রেষ্ঠর ভাস্কর্যসহ ভাষা আন্দোলন, স্বাধীনতা সংগ্রাম ও মুক্তিযুদ্ধের স্মারক ভাস্কর্য ও ম্যুরাল ভেঙে ফেলা এবং কুমিল্লার বীরচন্দ্র পাঠাগার, সুনামগঞ্জের ঐতিহ্য জাদুঘর, কুড়িগ্রামের উত্তরবঙ্গে মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর, ময়মনসিংহের ঐতিহাসিক শশীলজের ভেনাস ভাস্কর্য ভেঙে ফেলাসহ অগনিত শিল্পকর্ম ভেঙে ফেলার সব অপরাধ কাণ্ডের সঙ্গে যুক্ত দায়ী ব্যক্তিদের দ্রুত আইনের আওতায় আনার।
জেডএস/
জাতীয়
তদবির থেকে বিরত থাকুন, দেশগঠনে পরামর্শ দিন : আসিফ মাহমুদ
নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে গঠিত হয়েছে ১৭ সদস্যের অন্তবর্তীকালীন সরকার। এ উপদেষ্টা পরিষদে স্থান পেয়েছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের দুইজন প্রতিনিধি। এদের একজন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আসিফ মাহমুদ। তিনি উপদেষ্টা হিসেবে শপথ নেয়ার পর ঘনিষ্ঠজনদের নিজেদের সুবিধার জন্য কোনো আবদার কিংবা তদবির করতে বারণ করেছেন। বরং দেশগঠনে কোনো পরামর্শ থাকলে দেয়ার অনুরোধ করেছেন।
বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) দিবাগত রাতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এক পোস্ট করে এ অনুরোধ করেন।
পোস্টে এই তরুণ উপদেষ্টা লিখেছেন, ব্যক্তিগত লাভের আশায় আবদার, তদবির করা থেকে বিরত থাকুন। এতে করে আমার সাথে আপনার সম্পর্ক নষ্ট হতে পারে। দেশগঠনে পরামর্শ থাকলে জানাবেন।
বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) রাতে নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে ১৭ জনকে নিয়ে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন করা হয়। প্রধান উপদেষ্টা ও অন্য উপদেষ্টাদের শপথ পাঠ করান রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। ঢাকার বাইরে থাকায় তিন উপদেষ্টা ফারুক-ই-আযম, বিধান রঞ্জন রায় এবং সুপ্রদীপ চাকমা শপথ অনুষ্ঠানে উপস্থিত হতে পারেননি।
সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ছাড়া অন্যান্য উপদেষ্টারা হলেন- ১. সালেহ উদ্দিন আহমেদ ২. ড. আসিফ নজরুল ৩. আদিলুর রহমান খান ৪. হাসান আরিফ ৫. তৌহিদ হোসেন ৬. সৈয়দা রেজওয়ানা হাসান ৭. মো. নাহিদ ইসলাম ৮. আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া ৯. ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এম সাখাওয়াত হোসেন ১০. সুপ্রদীপ চাকমা ১১. ফরিদা আখতার ১২. বিধান রঞ্জন রায় ১৩. আ.ফ.ম খালিদ হাসান ১৪. নুরজাহান বেগম ১৫. শারমিন মুরশিদ ১৬. ফারুক-ই-আযম।
জেএইচ