অপরাধ
এটিএম বুথের টাকা লুট করে জুয়া খেলে তারা
ভারতীয় মেগা সিরিয়াল সিআইডি দেখে ব্যাংকের বুথের সিসি ক্যামেরায় কালো স্প্রে মেরে ক্যামেরা ঝাপসা করে বুথের লক ভেঙে ডাকাতি করে একটি চক্র। যাতে ডাকাতদের চেহারা সিসি ক্যামেরায় দেখা না যায়।
চক্রটি সিলেটের ওসমানী নগর থানা এলাকার ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংকের এটিএম মেশিনের লক ভেঙে ২৪ লাখ টাকা নিয়ে পালিয়ে যায়। এই টাকা নিয়ে তারা জুয়া খেলা শুরু করে।
২৪ লাখ টাকার মধ্যে ১৪ লাখ টাকার মতো জুয়া খেলে উড়িয়ে দেয় চক্রটি। এর সঙ্গে জড়িত তিনজনকে গ্রেফতার করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের গোয়েন্দা সাইবার অ্যান্ড স্পেশাল ক্রাইম বিভাগের সোশ্যাল মিডিয়া ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন টিম।
গ্রেফতাররা হলেন- মূলহোতা মো. শামীম আহাম্মেদ, নূর মোহাম্মদ সেবুল ও মো. আব্দুল হালিম। তাদের মধ্যে শামীম আহাম্মেদ দীর্ঘদিন ওমানপ্রবাসী ছিলেন, নূর মোহাম্মদ আগে দর্জির কাজ করতেন ও আব্দুল হালিম চায়ের দোকানদার ছিলেন।
মঙ্গলবার (২১ সেপ্টেম্বর) ধারাবাহিক অভিযানে রাজধানী ও হবিগঞ্জ জেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে তাদের গ্রেফতার করে। এসময় তাদের কাছ থেকে লুণ্ঠিত ১০ লাখ আট হাজার টাকা, দুটি মোবাইল ফোন, একটি ছুরি, একটি প্লাস ও মাথায় ব্যবহৃত তিনটি কাপড়ের টুকরা জব্দ করা হয়।
বুধবার (২২ সেপ্টেম্বর) দুপুরে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন ডিবি উত্তরের যুগ্ম-কমিশনার মোহাম্মদ হারুণ-অর-রশীদ।
তিনি বলেন, গত ১২ সেপ্টেম্বর রাত সোয়া ৩টার দিকে ডাকাত দলের সদস্যরা সিলেটের ওসমানী নগর থানার শেরপুর নতুন বাজার হাজী ইউনুস উল্ল্যাহ মার্কেটের ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংক (ইউসিবি) লিমিটেডের নিচতলায় স্থাপিত ব্যাংকের এটিএম বুথের দায়িত্বরত সিকিউরিটি গার্ডকে মারপিট করে। এরপর তার হাত ও মুখ স্কচটেপ পেঁচিয়ে বেঁধে ফেলে।
এরপর ডাকাতরা এটিএম বুথে স্থাপিত এটিএম মেশিনের সম্মুখ দরজা ও লক ভেঙে নগদ ২৪ লাখ ২৫ হাজার ৫০০ টাকা নিয়ে পালিয়ে যায়। এই ঘটনার প্রেক্ষিতে ১২ সেপ্টেম্বর সিলেটের ওসমানী নগর থানায় ব্যাংক একটি মামলা করে। ওই মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তার আবেদনের প্রেক্ষিতে মামলার ছায়া তদন্ত শুরু করে গোয়েন্দা সাইবার অ্যান্ড স্পেশাল ক্রাইম বিভাগ।
ডিবির যুগ্ম-কমিশনার মোহাম্মদ হারুন-অর-রশীদ বলেন, গ্রেফতাররা তথ্যপ্রযুক্তি সম্পর্কে বেশ পারদর্শী। এটিএম বুথের এটিএম মেশিন ভেঙে টাকা লুটের মূল পরিকল্পনাকারী মো. শামীম আহাম্মেদ নিয়মিত ভারতীয় মেগা সিরিয়াল সিআইডি অনুষ্ঠানটি দেখতেন। ওই সিরিয়াল দেখে এটিএম বুথের এটিএম মেশিন ভাঙার কলাকৌশল রপ্ত করেন ও টাকা লুটের পরিকল্পনা গ্রহণ করেন। পরিকল্পনা মোতাবেক তার সহযোগী গ্রেফতার নূর মোহাম্মদ সেবুল ও আব্দুল হালিমদের সঙ্গে এ বিষয়ে আলোচনা করেন।
পরিকল্পনা বাস্তবায়নের জন্য তারা মুখে মাস্ক, মাথায় গোলাপি রঙের কাপড় বেঁধে ও মাথায় ক্যাপ পরে শাবল ও অন্যান্য যন্ত্রপাতিসহ ইউসিবির ওই এটিএম বুথে প্রবেশ করেন। এটিএম বুথের সিসি ক্যামেরায় তাদের চেহারা যেন না দেখা যায় সেজন্য কালো রঙের স্প্রে করে ক্যামেরার লেন্স ঝাপসা করে দেন তারা। এসময় তারা এটিএম বুথের সিকিউরিটি গার্ডকে মারধর করে ও হাত-মুখ স্কচটেপ দিয়ে বাঁধেন। পরে তারা শাবল দিয়ে এটিএমে বুথের লক ও বক্স ভেঙে ২৪ লাখ ২৫ হাজার ৫০০ টাকা নিয়ে পালিয়ে যান।
এক প্রশ্নের জবাবে ডিবির এই কর্মকর্তা বলেন, এ চক্রের মূলহোতা শামীম আহাম্মেদ দীর্ঘদিন ওমান থাকার পরে দেশে এসে বেশি টাকা আয়ের লোভে সিআইডি দেখে ডাকাতির পরিকল্পনা করেন। গ্রেফতারদের বাকি দুজন- নূর মোহাম্মদ আগে দর্জি ও আব্দুল হালিম চায়ের দোকানদান ছিলেন।
তাদের বিরুদ্ধে আর কোনো মামলা আছে কি-না জানতে চাইলে হারুন-অর-রশীদ বলেন, শামীম ও নূর মোহাম্মদের বিরুদ্ধে একটি করে মামলা রয়েছে। পলাতক একজনসহ এ চক্রের অন্য সদস্যদের ধরতে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
গোয়েন্দা সাইবার অ্যান্ড স্পেশাল ক্রাইম বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) মুহাম্মদ শরীফুল ইসলামের নির্দেশনায় অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার (এডিসি) মো. জুনায়েদ আলম সরকারের তত্ত্বাবধায়নে সোশ্যাল মিডিয়া ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন টিমের অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার (এডিসি) মনিরুল ইসলামের নেতৃত্বে অভিযানটি পরিচালিত হয় বলেও জানান ডিবির এই কর্মকর্তা।
বুথে ডাকাতির ঘটনায় ব্যাংকের কেউ জড়িত ছিলেন কি-না জানতে চাইলে ইউসিবি ব্যাংকের ডেপুটি ম্যানেজিং ডিরেক্টর এন মুস্তাফা তারেক বলেন, ডাকাতির ঘটনায় ব্যাংকের কেউ জড়িত নয়। বিষয়টি ডিবিকে জানানো হয়েছে, তারা তিনজনকে গ্রেফতার করেছে।
অপরাধ
রাজধানীতে বস্তা ভর্তি টাকাসহ একটি গাড়ি আটক করলেন শিক্ষার্থীরা
রাজধানীর উত্তরায় একটি প্রাইভেটকার থেকে এক বস্তা টাকাসহ একটি শটগান উদ্ধার করেছেন শিক্ষার্থীরা। এই ঘটনায় তিনজনকে হেফাজতে নিয়েছে নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা।
বুধবার (৭ আগস্ট) এ সংক্রান্ত একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা গণমাধ্যমে জানান, রাজধানীর উত্তরার একটি বাসার গ্যারেজ থেকে গাড়িটি জব্দ করা হয়। এ সময় তিনজনকে হেফাজতে নেয় নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা। পরে গাড়ি থেকে এক বস্তা টাকা উদ্ধার করে হেফাজতে নেন নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা। এ সময় স্থানীয় জনতা ও শিক্ষার্থীরা উল্লাস করেন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা আরও জানান, আওয়ামী লীগ ঘরোয়ানার একটি ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠানের এমডির গাড়ি থেকে এ টাকা উদ্ধার করা হয়েছে। গাড়ি থেকে এক বস্তা টাকাসহ একটি শটগান উদ্ধার করে উত্তরা টাউন কলেজের শিক্ষার্থীসহ অনান্য বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।
এএম/
অপরাধ
কাশিমপুর কারাগার থেকে পালিয়েছে ২০৯ বন্দি, নিহত ৬
গাজীপুরের কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে ২০৯ জন বন্দি পালিয়েছেন। পালিয়ে যাওয়ার সময় নিরাপত্তাকর্মীদের গুলিতে ছয়জন বন্দি নিহত হয়েছেন।
বুধবার (৭ আগস্ট) বিকেলে কাশিমপুর হাই সিকিউরিটি কেন্দ্রীয় কারাগারের সিনিয়র জেল সুপার সুব্রত কুমার বালা গণমাধ্যমকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান,গেলো মঙ্গলবার বিকেলে কাশিমপুর হাই সিকিউরিটি কেন্দ্রীয় কারাগারের বন্দিরা কারাগার ভেঙে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। কারারক্ষীরা তাদের নিভৃত করার চেষ্টা করলে বন্দিরা কারারক্ষীদের ওপর চড়াও হয়। বন্দিদের কেউ দেয়াল ভেঙে, কেউ দেয়াল টপকে, আবার কেউ দেয়ালের সঙ্গে বিদ্যুতের পাইপ লাগিয়ে কারারক্ষীদের মারধর করে পালিয়ে যেতে চান।
একপর্যায়ে সেনাবাহিনীকে খবর দিলে তারা কমান্ডো অভিযান চালিয়ে বিদ্রোহ দমন করেন।এসময়ে বন্দিদের মধ্যে ২০৯ জন দেয়াল টপকে পালিয়ে গেছে।বন্দিদের ঠেকাতে নিরাপত্তাকর্মীদের গুলিতে ছয়জনের মৃত্যু হয়েছে। নিহতদের ময়নাতদন্তের জন্য গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।
প্রসঙ্গত, নিহতদের নাম পরিচয় পরে জানানো হবে বলে জানিয়েছেন সিনিয়র জেল সুপার।
আই/এ
অপরাধ
কাশিমপুর কারাগারে তীব্র উত্তেজনা, সেনাবাহিনীর শক্ত অবস্থান
গাজীপুরের কাশিমপুর হাইসিকিউরিটি কেন্দ্রীয় কারাগারের ভেতরে বন্দিরা মুক্তির দাবিতে উত্তেজনা শুরু করেছেন। কারারক্ষীদের জিম্মি করে অনেকে দলবদ্ধভাবে বের হয়ে আসার চেষ্টা করছেন। খবর পেয়ে সেনা সদস্যরা এসে প্রাথমিকভাবে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন।
মঙ্গলবার (৬ আগস্ট) দুপুরের দিকে এ পরিস্থিতি দেখা গেছে। এসময়ে ওই এলাকার আকাশে হেলিকপ্টার চক্কর দিতে দেখা যায়।
কারা কর্তৃপক্ষ জানান, কাশিমপুর কারা কমপ্লেক্সে পৃথক চারটি কারাগার রয়েছে। এর মধ্যে বিডিআর বিদ্রোহ মামলার সাজাপ্রাপ্ত আসামি, ফাঁসি ও যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত দুর্ধর্ষ জঙ্গি বন্দিরা রয়েছে। এছাড়া রাজনৈতিক মামলায় গ্রেপ্তার অনেক নেতাকর্মীও ওই কারাগারে রয়েছে।
জানা যায়, বেলা ১১টার দিকে কিছু বন্দি কারাগারের অভ্যন্তরে থাকা কারারক্ষীদের জিম্মি করে মুক্তির দাবিতে বিদ্রোহ শুরু করে। এসময়ে কারারক্ষীরা তাদের শান্ত করার চেষ্টা করে ব্যর্থ হন। আগে থেকেই সেখানে অল্প সংখ্যক সেনাবাহিনীর সদস্যরা তাদের নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করেন। উত্তেজনা আরও বেড়ে গেলে দুপুর দেড়টার দিকে অতিরিক্ত সেনা সদস্য হেলিকপ্টার যোগে কারা অভ্যন্তরে এসে বন্দিদের নিয়ন্ত্রণ করেন।
প্রসঙ্গত, কারা অভ্যন্তরে বিদ্রোহের খবর পেয়ে বন্দিদের স্বজনরা সকাল থেকেই কারাগারের সামনে অবস্থান করেন। এ সময় তাদের সঙ্গে আন্দোলনকারীরা যোগ দিয়ে বিক্ষোভ করে। কারাগারের বাইরে একটি ঝুট গুদামে অগ্নিসংযোগ করা হয়। পরে সেনা সদস্যরা বাইরের বিক্ষোভকারীদের ধাওয়া করে ছত্রভঙ্গ করে দেন।
আই/এ