অপরাধ
কিস্তির মাধ্যমে বিক্রির প্রলোভন দেখিয়ে অনলাইনে প্রতারনা
বরিশালে ফার্নিচার ও গ্রোসারি পণ্য কম মূল্যে কিস্তির মাধ্যমে বিক্রির প্রলোভন দেখিয়ে অনলাইনে প্রচারণা চালিয়ে অর্থ হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগে স্বামী-স্ত্রীসহ একই পরিবারের তিনজনকে গ্রেফতার করেছে বরিশাল মেট্রোপলটন পুলিশ।
বুধবার (০৬ অক্টোবর) দুপুরে নগরীর এয়ারপোর্ট থানায় সংবাদ সম্মেলন করে বিএমপির উপকমিশনার (উত্তর) মো. জাকির হোসেন মজুমদার এসব তথ্য জানান। গ্রেফতাররা ই-কমার্স প্রতারক বলে জানিয়েছে পুলিশ।
গ্রেফতাররা হলেন- কাউনিয়া থানাধীন কাগাশুরা ৩ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা মোসা. শাহিনুর বেগম (৪৩), তার স্বামী আমিনুল ইসলাম সুমন মোল্লা (৩৬) ও তাদের ছেলে শাহারিয়ার ইসলাম শাকিল (১৭)।
জাকির হোসেন মজুমদার জানান, বরিশালের কাউনিয়া থানার কাগাশুরায় বারেক শেখ সুপার মার্কেটে বন্ধুজন ফার্নিচার মেলা অ্যান্ড ভ্যারাইটিজ স্টোর নামে একটি দোকান খুলে মোসা. শাহিনুর বেগম, তার স্বামী আমিনুল ইসলাম সুমন মোল্লা ও তাদের ছেলে শাহারিয়ার ইসলাম শাকিল গত এক বছর ধরে ফার্নিচার ও গ্রোসারি পণ্য কম মূল্যে অনলাইনে কিস্তির মাধ্যমে দেবেন বলে মানুষকে প্রলোভন দেখান। এখন পর্যন্ত প্রায় ৫০০ থেকে ১০০০ জন মানুষের কাছ থেকে তারা সপ্তাহে ২০০ টাকা, আবার কারো কারো কাছ থেকে প্রতিদিন ৫০ টাকা করে নিয়েছেন।
এর মধ্যে দু-একজনকে তারা কিছু পণ্য দিয়েছেন। বাকিদেরকে আর কোনো পণ্য না দেওয়ায় গ্রাহকরা তাদের কাছে পণ্য অথবা টাকা ফেরত চান। গ্রাহকদের কাছ থেকে এসব কথা শোনার পরে গত তিন মাস ধরে তারা পালিয়ে বেড়াচ্ছিল।
তিনি বলেন, এভাবে গত এক বছরে পণ্য দেওয়ার নাম করে তারা আনুমানিক ২০ থেকে ৩০ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। তারা মানুষের বিশ্বাস অর্জনের জন্য টাকার রশিদ দিতেন। কিন্তু তাদের টাকা নেওয়ার আইনগত কোনো ভিত্তি ছিল না। এ সবই ছিল তাদের কৌশল মাত্র। তারা জালিয়াতি ও প্রতারণার লক্ষ্যে সাধারণ মানুষের কাছ থেকে টাকা নিয়েছিলেন।
জাকির হোসেন মজুমদার বলেন, এটা হচ্ছে ই-কমার্সের মিনি ভার্সন। তারা মানুষের কাছে গিয়ে বলতো কোনো জিনিসের সম্পূর্ন মূল্য পরিশোধ করতে না পারলে তাদের কাছে অল্প অল্প করে অর্ধেক মূল্য জমা দিয়ে মালামাল নিতে পারবেন এবং বাকি মূল্য মালামাল নেওয়ার পর আবার অল্প অল্প করে কিস্তিতে পরিশোধ করতে পারবেন। আরও বলেন- ৫ হাজার টাকা জমা হলে ১ লাখ টাকা লোন নিতে পারবেন।
তাদের এসব কথায় বিশ্বাস করে নগরীর এয়ারপোর্ট থানাধীন কাশীপুর ইউনিয়নের পূর্ববিল্ববাড়ী গ্রামের বাসিন্দা মো. ইউসুফ হাওলাদারের স্ত্রী লাইলী আক্তার প্রতিদিন ১০ টাকা, ২০ টাকা, ৩০ টাকা করে চলতি বছরের ২৭ ফেব্রুয়ারি থেকে ১৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ৩ হাজার ৫৫০ টাকা জমা দিয়েছেন। এখন তাকে পণ্য বা টাকা ফেরত না দেওয়ায় তিনি বাদী হয়ে এই তিনজনের নামে একটি প্রতারণা ও আত্মসাতের মামলা করেছেন।
এরই প্রেক্ষিতে গত সোমবার (০৪ অক্টোবর) রাত সাড়ে ১০টার দিকে মোসা. শাহিনুর বেগম, তার স্বামী আমিনুল ইসলাম সুমন মোল্লা ও তাদের ছেলে শাহারিয়ার ইসলাম শাকিলকে কাশিপুরের পূর্ববিল্ববাড়ি থেকে স্থানীয়রা আটকে রেখে এয়ারপোর্ট থানায় খবর দিলে পুলিশ তাদেরকে আটক করে। তাদেরকে জিজ্ঞাসাবাদে এ ঘটনার প্রাথমিক সত্যতা পাওয়া গেছে। এর মধ্য থেকে শাহারিয়ার ইসলাম শাকিলকে সমাজসেবা অফিসের প্রবেশন অফিসারের জিম্মায় দেওয়া হয়েছে। বাকি দুইজনকে আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে।
অপরাধ
রাজধানীতে বস্তা ভর্তি টাকাসহ একটি গাড়ি আটক করলেন শিক্ষার্থীরা
রাজধানীর উত্তরায় একটি প্রাইভেটকার থেকে এক বস্তা টাকাসহ একটি শটগান উদ্ধার করেছেন শিক্ষার্থীরা। এই ঘটনায় তিনজনকে হেফাজতে নিয়েছে নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা।
বুধবার (৭ আগস্ট) এ সংক্রান্ত একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা গণমাধ্যমে জানান, রাজধানীর উত্তরার একটি বাসার গ্যারেজ থেকে গাড়িটি জব্দ করা হয়। এ সময় তিনজনকে হেফাজতে নেয় নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা। পরে গাড়ি থেকে এক বস্তা টাকা উদ্ধার করে হেফাজতে নেন নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা। এ সময় স্থানীয় জনতা ও শিক্ষার্থীরা উল্লাস করেন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা আরও জানান, আওয়ামী লীগ ঘরোয়ানার একটি ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠানের এমডির গাড়ি থেকে এ টাকা উদ্ধার করা হয়েছে। গাড়ি থেকে এক বস্তা টাকাসহ একটি শটগান উদ্ধার করে উত্তরা টাউন কলেজের শিক্ষার্থীসহ অনান্য বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।
এএম/
অপরাধ
কাশিমপুর কারাগার থেকে পালিয়েছে ২০৯ বন্দি, নিহত ৬
গাজীপুরের কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে ২০৯ জন বন্দি পালিয়েছেন। পালিয়ে যাওয়ার সময় নিরাপত্তাকর্মীদের গুলিতে ছয়জন বন্দি নিহত হয়েছেন।
বুধবার (৭ আগস্ট) বিকেলে কাশিমপুর হাই সিকিউরিটি কেন্দ্রীয় কারাগারের সিনিয়র জেল সুপার সুব্রত কুমার বালা গণমাধ্যমকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান,গেলো মঙ্গলবার বিকেলে কাশিমপুর হাই সিকিউরিটি কেন্দ্রীয় কারাগারের বন্দিরা কারাগার ভেঙে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। কারারক্ষীরা তাদের নিভৃত করার চেষ্টা করলে বন্দিরা কারারক্ষীদের ওপর চড়াও হয়। বন্দিদের কেউ দেয়াল ভেঙে, কেউ দেয়াল টপকে, আবার কেউ দেয়ালের সঙ্গে বিদ্যুতের পাইপ লাগিয়ে কারারক্ষীদের মারধর করে পালিয়ে যেতে চান।
একপর্যায়ে সেনাবাহিনীকে খবর দিলে তারা কমান্ডো অভিযান চালিয়ে বিদ্রোহ দমন করেন।এসময়ে বন্দিদের মধ্যে ২০৯ জন দেয়াল টপকে পালিয়ে গেছে।বন্দিদের ঠেকাতে নিরাপত্তাকর্মীদের গুলিতে ছয়জনের মৃত্যু হয়েছে। নিহতদের ময়নাতদন্তের জন্য গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।
প্রসঙ্গত, নিহতদের নাম পরিচয় পরে জানানো হবে বলে জানিয়েছেন সিনিয়র জেল সুপার।
আই/এ
অপরাধ
কাশিমপুর কারাগারে তীব্র উত্তেজনা, সেনাবাহিনীর শক্ত অবস্থান
গাজীপুরের কাশিমপুর হাইসিকিউরিটি কেন্দ্রীয় কারাগারের ভেতরে বন্দিরা মুক্তির দাবিতে উত্তেজনা শুরু করেছেন। কারারক্ষীদের জিম্মি করে অনেকে দলবদ্ধভাবে বের হয়ে আসার চেষ্টা করছেন। খবর পেয়ে সেনা সদস্যরা এসে প্রাথমিকভাবে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন।
মঙ্গলবার (৬ আগস্ট) দুপুরের দিকে এ পরিস্থিতি দেখা গেছে। এসময়ে ওই এলাকার আকাশে হেলিকপ্টার চক্কর দিতে দেখা যায়।
কারা কর্তৃপক্ষ জানান, কাশিমপুর কারা কমপ্লেক্সে পৃথক চারটি কারাগার রয়েছে। এর মধ্যে বিডিআর বিদ্রোহ মামলার সাজাপ্রাপ্ত আসামি, ফাঁসি ও যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত দুর্ধর্ষ জঙ্গি বন্দিরা রয়েছে। এছাড়া রাজনৈতিক মামলায় গ্রেপ্তার অনেক নেতাকর্মীও ওই কারাগারে রয়েছে।
জানা যায়, বেলা ১১টার দিকে কিছু বন্দি কারাগারের অভ্যন্তরে থাকা কারারক্ষীদের জিম্মি করে মুক্তির দাবিতে বিদ্রোহ শুরু করে। এসময়ে কারারক্ষীরা তাদের শান্ত করার চেষ্টা করে ব্যর্থ হন। আগে থেকেই সেখানে অল্প সংখ্যক সেনাবাহিনীর সদস্যরা তাদের নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করেন। উত্তেজনা আরও বেড়ে গেলে দুপুর দেড়টার দিকে অতিরিক্ত সেনা সদস্য হেলিকপ্টার যোগে কারা অভ্যন্তরে এসে বন্দিদের নিয়ন্ত্রণ করেন।
প্রসঙ্গত, কারা অভ্যন্তরে বিদ্রোহের খবর পেয়ে বন্দিদের স্বজনরা সকাল থেকেই কারাগারের সামনে অবস্থান করেন। এ সময় তাদের সঙ্গে আন্দোলনকারীরা যোগ দিয়ে বিক্ষোভ করে। কারাগারের বাইরে একটি ঝুট গুদামে অগ্নিসংযোগ করা হয়। পরে সেনা সদস্যরা বাইরের বিক্ষোভকারীদের ধাওয়া করে ছত্রভঙ্গ করে দেন।
আই/এ