অপরাধ
মানুষকে জামানত রেখে মিলছে ১০ হাজার পিছ ইয়াবা
এখন নগদ টাকা ছাড়াই মিলছে দশ হাজার ইয়াবা বড়ির চালান। এক সপ্তাহে পরিশোধ করতে হয় বকেয়া। শর্ত হিসেবে এ সময় পর্যন্ত জামানত রাখতে হয় একজনকে।
কিন্তু নির্দিষ্ট সময়ে বকেয়া পরিশোধ না করলে জিম্মায় থাকা ব্যক্তিকে নির্যাতন করে তার পরিবারের কাছ থেকে আদায় করা হয় টাকা। এক-দেড় বছর ধরে এভাবে ইয়াবা বিক্রি করছে কক্সবাজারের কারবারিরা। একটি অপহরণ মামলার তদন্তে এসব তথ্য পেয়েছে গোয়েন্দা পুলিশ।
প্রায় চার দশক ধরে বেকারিপণ্য দোকানে দোকানে সরবরাহ করে জীবিকা নির্বাহ করছেন রাজধানীর মগবাজারের বাসিন্দা হারুন অর রশীদ। ২রা সেপ্টেম্বর নিখোঁজ হয় তার বিশ বছরের সন্তান ফরহাদ হোসেন সম্রাট। ২৩ দিন পর অপরিচিত একটি নম্বর থেকে কল পান ষাটোর্ধ্ব এই পিতা। জানতে পারেন-তার ছেলেকে অপহরণ করা হয়েছে। জীবিত ফিরে পেতে, দিতে হবে সাড়ে তিন লাখ টাকা। দশ হাজার টাকা পাঠিয়েও কোনও ফল না মেলায় মামলা করেন হাতিরঝিল থানায়।
অপহৃত সম্রাটের পিতা হারুন অর রশীদ জানান, 'আমাকে আটকে রাখছে। আমার লাশ পাবেন। আমি জানতে চাই কেন? বলে লাদেনের সঙ্গে ঘুরতে আসছিলাম। লাদেন আমাকে মারধর করে বাইক নিয়ে চলে গেছে। এখন ওরা আমাকে আটকে রাখছে।'
তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় কক্সবাজারের টেকনাফের সাবরাং-এ গহীন অরণ্য ঘেরা টিনেরচালায় অপহরণকারীদের অবস্থান শনাক্ত করে গোয়েন্দা পুলিশ। এখানেই সম্রাটকে আটকে রেখে শারীরিক-মানসিক নির্যাতন করা হয়েছে। ভিডিওকলে সেই দৃশ্য তার পিতাকে দেখিয়ে আরও টাকা পাঠানোর চাপ দেয়া হয়।
২রা অক্টোবর অভিযানে সম্রাটকে উদ্ধার করেন গোয়েন্দারা। নির্যাতনের ধকলে এখনও এলোমেলো এই তরুণ জানান, কক্সবাজারে বিনা খরচে বেড়াতে নিয়ে অপরিচিতদের কাছে তাকে রেখে কেটে পড়ে এলাকার বড়ভাই সামির আহমেদ লাদেন।
অপহরণের শিকার তরুণ ফরহাদ হোসেন সম্রাট বলেন, 'আমার চোখ বেঁধে আলাদা করে ফেলে। ও নাকি ঢাকায় চলে আসছে। আমি জানতাম না কেন টাকা চাচ্ছে। কিসের টাকা। পরে অনেক মারধর করার পর বলছে লাদেনকে এনে দে নয়তো টাকা দে।'
সাবরাং থেকে তিন অপহরণকারী নুরুল আমিন, সাদ্দাম হোসেন ও সাব্বির আহমেদকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। পরে ঢাকায় অভিযান চালিয়ে ধরা হয় লাদেনকেও। এরমধ্যে আদালতে দায় স্বীকার করেছে নুরুল আমিন। কর্মকর্তারা জানান, সম্রাটকে জামানত রেখে কক্সবাজারের ইয়াবা কারবারি নুরুল আমিন ও তার সহযোগীদের কাছ থেকে দশ হাজার ইয়াবা নেয় লাদেন। এক সপ্তাহের মধ্যে বয়েকা পরিশোধ করে ছাড়িয়ে নেয়ার কথা সম্রাটকে। কিন্তু চালান বেহাত হওয়ায় বকেয়া পরিশোধে ব্যর্থ হয় লাদেন। তখনই সম্রাটকে নির্যাতন করে তার পরিবারের কাছ থেকে অর্থ আদায়ের চেষ্টা করে ইয়াবা কারবারিরা।
ঢাকা মহানগর পুলিশ গোয়েন্দা বিভাগ (তেজগাঁও) উপ কমিশনার ওয়াহিদুল ইসলাম জানান,'হিউম্যান বডি জিম্মি রেখে মাদক বাকিতে দেয়া হয় এমন ঘটনা আমাদের জানা ছিল না। যখন আমরা জানতে পারি এমন ঘটনা আগেও ঘটেছে, তখন বুঝলাম এটা তাদের নতুন একটা কৌশল।'
এক-দেড় বছর ধরে নগদ টাকার বদলে মানুষ জামানত রেখে ইয়াবার চালান সরবরাহ করছে কক্সবাজারের কারবারিরা। এ ধরনের বেশ কিছু অভিযোগ পেয়েছে টেকনাফ ও উখিয়া থানা পুলিশ।
কক্সবাজার পুলিশ সুপার মো. হাসানুজ্জামান বলেন, 'মাদকের টাকা হয়তো পরিশোধ হয়নি। তাকে কৌশলে ডেকে নিয়ে যেয়ে আটকে রাখা হয়েছে। এমন কেস কয়েকটি পেয়েছি। এগুলো তদন্ত করে ভিকটিমকে উদ্ধার করতে পেরেছি।'
অভিনব এমন বাণিজ্য নিয়ে আরও তদন্ত করে জড়িতদের আইনের আওতায় আনতে কাজ করছে পুলিশের একাধিক ইউনিট।
অপরাধ
রাজধানীতে বস্তা ভর্তি টাকাসহ একটি গাড়ি আটক করলেন শিক্ষার্থীরা
রাজধানীর উত্তরায় একটি প্রাইভেটকার থেকে এক বস্তা টাকাসহ একটি শটগান উদ্ধার করেছেন শিক্ষার্থীরা। এই ঘটনায় তিনজনকে হেফাজতে নিয়েছে নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা।
বুধবার (৭ আগস্ট) এ সংক্রান্ত একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা গণমাধ্যমে জানান, রাজধানীর উত্তরার একটি বাসার গ্যারেজ থেকে গাড়িটি জব্দ করা হয়। এ সময় তিনজনকে হেফাজতে নেয় নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা। পরে গাড়ি থেকে এক বস্তা টাকা উদ্ধার করে হেফাজতে নেন নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা। এ সময় স্থানীয় জনতা ও শিক্ষার্থীরা উল্লাস করেন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা আরও জানান, আওয়ামী লীগ ঘরোয়ানার একটি ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠানের এমডির গাড়ি থেকে এ টাকা উদ্ধার করা হয়েছে। গাড়ি থেকে এক বস্তা টাকাসহ একটি শটগান উদ্ধার করে উত্তরা টাউন কলেজের শিক্ষার্থীসহ অনান্য বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।
এএম/
অপরাধ
কাশিমপুর কারাগার থেকে পালিয়েছে ২০৯ বন্দি, নিহত ৬
গাজীপুরের কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে ২০৯ জন বন্দি পালিয়েছেন। পালিয়ে যাওয়ার সময় নিরাপত্তাকর্মীদের গুলিতে ছয়জন বন্দি নিহত হয়েছেন।
বুধবার (৭ আগস্ট) বিকেলে কাশিমপুর হাই সিকিউরিটি কেন্দ্রীয় কারাগারের সিনিয়র জেল সুপার সুব্রত কুমার বালা গণমাধ্যমকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান,গেলো মঙ্গলবার বিকেলে কাশিমপুর হাই সিকিউরিটি কেন্দ্রীয় কারাগারের বন্দিরা কারাগার ভেঙে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। কারারক্ষীরা তাদের নিভৃত করার চেষ্টা করলে বন্দিরা কারারক্ষীদের ওপর চড়াও হয়। বন্দিদের কেউ দেয়াল ভেঙে, কেউ দেয়াল টপকে, আবার কেউ দেয়ালের সঙ্গে বিদ্যুতের পাইপ লাগিয়ে কারারক্ষীদের মারধর করে পালিয়ে যেতে চান।
একপর্যায়ে সেনাবাহিনীকে খবর দিলে তারা কমান্ডো অভিযান চালিয়ে বিদ্রোহ দমন করেন।এসময়ে বন্দিদের মধ্যে ২০৯ জন দেয়াল টপকে পালিয়ে গেছে।বন্দিদের ঠেকাতে নিরাপত্তাকর্মীদের গুলিতে ছয়জনের মৃত্যু হয়েছে। নিহতদের ময়নাতদন্তের জন্য গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।
প্রসঙ্গত, নিহতদের নাম পরিচয় পরে জানানো হবে বলে জানিয়েছেন সিনিয়র জেল সুপার।
আই/এ
অপরাধ
কাশিমপুর কারাগারে তীব্র উত্তেজনা, সেনাবাহিনীর শক্ত অবস্থান
গাজীপুরের কাশিমপুর হাইসিকিউরিটি কেন্দ্রীয় কারাগারের ভেতরে বন্দিরা মুক্তির দাবিতে উত্তেজনা শুরু করেছেন। কারারক্ষীদের জিম্মি করে অনেকে দলবদ্ধভাবে বের হয়ে আসার চেষ্টা করছেন। খবর পেয়ে সেনা সদস্যরা এসে প্রাথমিকভাবে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন।
মঙ্গলবার (৬ আগস্ট) দুপুরের দিকে এ পরিস্থিতি দেখা গেছে। এসময়ে ওই এলাকার আকাশে হেলিকপ্টার চক্কর দিতে দেখা যায়।
কারা কর্তৃপক্ষ জানান, কাশিমপুর কারা কমপ্লেক্সে পৃথক চারটি কারাগার রয়েছে। এর মধ্যে বিডিআর বিদ্রোহ মামলার সাজাপ্রাপ্ত আসামি, ফাঁসি ও যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত দুর্ধর্ষ জঙ্গি বন্দিরা রয়েছে। এছাড়া রাজনৈতিক মামলায় গ্রেপ্তার অনেক নেতাকর্মীও ওই কারাগারে রয়েছে।
জানা যায়, বেলা ১১টার দিকে কিছু বন্দি কারাগারের অভ্যন্তরে থাকা কারারক্ষীদের জিম্মি করে মুক্তির দাবিতে বিদ্রোহ শুরু করে। এসময়ে কারারক্ষীরা তাদের শান্ত করার চেষ্টা করে ব্যর্থ হন। আগে থেকেই সেখানে অল্প সংখ্যক সেনাবাহিনীর সদস্যরা তাদের নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করেন। উত্তেজনা আরও বেড়ে গেলে দুপুর দেড়টার দিকে অতিরিক্ত সেনা সদস্য হেলিকপ্টার যোগে কারা অভ্যন্তরে এসে বন্দিদের নিয়ন্ত্রণ করেন।
প্রসঙ্গত, কারা অভ্যন্তরে বিদ্রোহের খবর পেয়ে বন্দিদের স্বজনরা সকাল থেকেই কারাগারের সামনে অবস্থান করেন। এ সময় তাদের সঙ্গে আন্দোলনকারীরা যোগ দিয়ে বিক্ষোভ করে। কারাগারের বাইরে একটি ঝুট গুদামে অগ্নিসংযোগ করা হয়। পরে সেনা সদস্যরা বাইরের বিক্ষোভকারীদের ধাওয়া করে ছত্রভঙ্গ করে দেন।
আই/এ