জাতীয়
স্বাধীনতার মাসেই পদ্মা সেতু দিয়ে চলবে ট্রেন
সেতুর পর এবার একটু একটু করে শেষ হচ্ছে রেলের কাজ। দৃশ্যমান হচ্ছে পদ্মা সেতু রেল প্রকল্প। বিশাল এই কর্মযজ্ঞে দিনরাত ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন শ্রমিকরা। এরই মধ্যে শেষ হয়েছে, মাওয়া ও জাজিরা প্রান্তের ৫ হাজার ৪শ’ মিটার পাথরবিহীন রেলপথ ঢালাইয়ের কাজ। ৭টি মুভমেন্ট জয়েন্টের কাজও শেষ।
পদ্মা সেতুর ওপর দিয়ে চলতি মাসেই ট্রেন চলাচল শুরু হবে। প্রাথমিকভাবে ভাঙ্গা-মাওয়া ৪২ কিলোমিটার অংশে চলাচল করবে ট্রেন। ৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের মূল সেতুর সাড়ে পাঁচ কিলোমিটার রেল স্ল্যাব ট্রাক বসানোর কাজ এরই মধ্যে শেষ হয়েছে।
মূল সেতুর অগ্রগতি ৮৮ ভাগ। আর ভাঙ্গা-মাওয়া অংশের অগ্রগতি ৯২ শতাংশের ওপরে। মূল সেতুতে অবশিষ্ট মুভমেন্ট জয়েন্ট আর ৭৫০ মিটার স্ল্যাব ট্রাকের কাজ চলছে জোরেশোরে।
এসব তথ্য নিশ্চিত করে পদ্মা মূল সেতু ও ভায়াডাক্টের সিনিয়র প্রকৌশলী জহুরুল হক বলেন, ‘পদ্মা সেতুর ৭৫০ মিটার অংশ ছাড়া ভাঙ্গা-মাওয়া ৪২ কিলোমিটার অংশের রেলপথের কাজ শেষ। চলতি মাসে মূল সেতুর ওপর দিয়ে পরীক্ষামূলক ট্রেন চলাচল করবে।’
সরেজমিন দেখা যায়, পদ্মা সেতুর মাওয়া প্রান্ত থেকে ট্রাককারে মূল সেতুর রেলের ট্রাক প্যানেল (লোহার পাত) আর মালামাল নেওয়া হচ্ছে। বিশাল আকৃতির ট্রাক প্যানেলবোঝাই ট্রাককারটি ভায়াডাক্ট পেরিয়ে মূল সেতুতে চলছে পাথরবিহীন রেললাইনের ওপর দিয়ে। সেখানে ভায়াডাক্ট ও মূল সেতুর রেল কাজের প্রকৌশলীরাও আছেন। সেতুর রেললাইন নির্মাণে চলছে শত শত শ্রমিকদের কর্মযজ্ঞ।
ক্রেনের সাহায্যে রেলের ট্রাক প্যানেল বসানোর জন্য নিয়ে যাওয়া হয় নির্ধারিত স্থানে। এরপর ধীরে ধীরে বসিয়ে দেওয়া হয় সেতুর ওপর। যন্ত্রের সাহায্যে তা নিখুঁতভাবে পর্যবেক্ষণ করেন প্রকৌশলীরা। এরপর প্যানেলের ওপর ঢালাইয়ের আগের আনুষঙ্গিক কাজ সেরে নেয় শ্রমিকরা। এভাবে একের পর এক ট্রাক প্যানেল ওয়ার্ক শপ থেকে নিয়ে মূল সেতুতে তৈরি করা হচ্ছে পাথরবিহীন রেলের ট্রাক স্ল্যাব।
এরই মধ্যে জাজিরা ও মাওয়া প্রান্তের সাড়ে পাঁচ কিলোমিটার পাথরবিহীন রেলপথ নির্মাণ কাজ শেষ। বাকি ৭৫০ মিটার রেলপথের কাজ চলছে দ্রুতগতিতে। পুরো সেতুজুড়ে আটটি ব্রিজ মুভমেন্ট জয়েন্টের মধ্যে সাতটির কাজ এরই মধ্যে শেষ হয়েছে। বাকি একটির কাজ চলতি মাসের ১৫ তারিখের মধ্যেই শেষ করতে দিনরাত কাজ করে যাচ্ছেন শ্রমিক প্রকৌশলীরা।
পদ্মা মূল সেতু ও ভায়াডাক্টের পরিদর্শক সঞ্জয় চন্দ্র রায় বলেন, ‘পদ্মা সেতুতে আটটি ব্রিজ জয়েন্ট মুভমেন্ট রয়েছে। যার সাতটি শেষ। এখন শেষ জয়েন্ট মুভমেন্টের কাজ শেষ করে এ মাসেই রেল চলাচলের জন্য প্রস্তুত করা হবে।’
পাথরবিহীন রেলপথ বাংলাদেশে এই প্রথম। খরচ বেশি হলেও টেকসই এ রেলপথের ভবিষ্যৎ মেরামত ব্যয় তেমন নেই বলে জানালেন প্রকৌশলীরা।
পদ্মা মূল সেতু ও ভায়াডাক্টের সহকারী প্রকৌশলী লোকমান হোসাইন বলেন, ‘পাথরবিহীন এ রেলপথ তৈরিতে খরচ বেশি হলেও এটি হবে টেকসই। এ রেলপথে কোনো ঝাঁকুনি হবে না। পরবর্তী সময়ে মেরামত ব্যয় নেই বললেই চলে।’
প্রায় ৪০ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে ঢাকা-যশোর ১৬৯ কিলোমিটার পদ্মা সেতুর রেল সংযোগ প্রকল্পে কাজ করছে চায়না রেলওয়ে ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানি।
জাতীয়
শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা জানালেন অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টারা
শপথ নেয়ার পরের দিন ভাষা শহীদদের স্মরণে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা নিবেদন করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টারা।
শুক্রবার (৯ আগস্ট) বেলা ১১টার দিকে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ১৩ জন উপদেষ্টা নিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।
এর আগে, সাভারে জাতীয় স্মৃতিসৌধে মহান মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান ও অন্য উপদেষ্টারা।
গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান হিসেবে শপথ নেন ড. মুহাম্মদ ইউনূস। দায়িত্ব নেওয়ার পর তিনি এক নতুন বাংলাদেশ উপহার দেওয়ার অঙ্গীকার করেন।
আই/এ
জাতীয়
উপদেষ্টা পরিষদকে অভিনন্দন জানালেন জাসদ
জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল—জাসদের সভাপতি হাসানুল হক ইনু ও সাধারণ সম্পাদক শিরীন আখতার অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মোহাম্মদ ইউনুস এবং অন্য উপদেষ্টাদেরকে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়েছেন
বৃহস্পতিবার ( ৮ আগস্ট ) রাতে দলের পক্ষ থেকে পাঠানো এক বিবৃতিতে এ অভিনন্দন জানান তারা।
বিবৃতিতে জানানো হয়, “অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দায়িত্ব গ্রহণ করার পর দেশে আর একটিও প্রাণহানি, হামলা ও সম্পদ ধ্বংসের ঘটনা যেন না ঘটে তা নিশ্চিত হবে।”
বিবৃতিতে আরও বলেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার রাষ্ট্রীয় চার মূলনীতিসহ সংবিধানকে সমুন্নত রেখে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন এবং রাজনৈতিক ও সামাজিক শক্তির সাথে আলোচনা করে সরকারের কর্ম পরিকল্পনার রূপরেখা দ্রুত প্রকাশ করে বিদ্যমান অনিশ্চয়তা ও অস্থিরতা প্রশমিত করবেন।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রাথমিক ও প্রধান কাজ হিসেবে অনতিবিলম্বে দেশে আইনশৃঙ্খলা পুনঃপ্রতিষ্ঠা করার এবং জনগণের জানমালের নিরাপত্তা নিশ্চিত করে জনজীবনে স্বাভাবিকতা ও শান্তি ফিরিয়ে আনতে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানিয়েছেন।
জাসদ নেতৃবৃন্দ অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নিহত শিক্ষার্থী, সাধারণ মানুষ, সাংবাদিক পুলিশ বাহিনীর সদস্যসহ প্রতিটি হত্যাকাণ্ডের সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার নিশ্চিত করার আহ্বান জানান।
জাসদ জোর দাবি জানান, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে পূর্ববর্তী সরকারের পদত্যাগের পর দেশের বিভিন্ন স্থানে চলমান বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও পুলিশ বাহিনীর সদস্যসহ পেশাজীবী ও হিন্দু ও আহমদীয়াসহ ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের ওপর হামলা ও হত্যা করা, মন্দিরসহ ধর্মীয় স্থাপনায় হামলা, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের কার্যালয়ে ও নেতাকর্মীদের বাসাবাড়িতে হামলা-হত্যা-নির্যাতন, ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান ও ঘরবাড়িতে হামলা ও অগ্নিসংযোগ, সংসদ ভবন ও প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় ও গণভবনসহ বিভিন্ন সরকারি স্থাপনায় হামলা, ভাঙচুর, লুটপাট, অগ্নিসংযোগ, ধানমন্ডি ৩২ নম্বরের ঐতিহাসিক বঙ্গবন্ধু ভবন-বঙ্গবন্ধু জাদুঘরে হামলা, লুটপাট, জ্বালিয়ে ছারখার, দেশের বিভিন্ন স্থানে বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য, সাত বীরশ্রেষ্ঠর ভাস্কর্যসহ ভাষা আন্দোলন, স্বাধীনতা সংগ্রাম ও মুক্তিযুদ্ধের স্মারক ভাস্কর্য ও ম্যুরাল ভেঙে ফেলা এবং কুমিল্লার বীরচন্দ্র পাঠাগার, সুনামগঞ্জের ঐতিহ্য জাদুঘর, কুড়িগ্রামের উত্তরবঙ্গে মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর, ময়মনসিংহের ঐতিহাসিক শশীলজের ভেনাস ভাস্কর্য ভেঙে ফেলাসহ অগনিত শিল্পকর্ম ভেঙে ফেলার সব অপরাধ কাণ্ডের সঙ্গে যুক্ত দায়ী ব্যক্তিদের দ্রুত আইনের আওতায় আনার।
জেডএস/
জাতীয়
তদবির থেকে বিরত থাকুন, দেশগঠনে পরামর্শ দিন : আসিফ মাহমুদ
নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে গঠিত হয়েছে ১৭ সদস্যের অন্তবর্তীকালীন সরকার। এ উপদেষ্টা পরিষদে স্থান পেয়েছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের দুইজন প্রতিনিধি। এদের একজন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আসিফ মাহমুদ। তিনি উপদেষ্টা হিসেবে শপথ নেয়ার পর ঘনিষ্ঠজনদের নিজেদের সুবিধার জন্য কোনো আবদার কিংবা তদবির করতে বারণ করেছেন। বরং দেশগঠনে কোনো পরামর্শ থাকলে দেয়ার অনুরোধ করেছেন।
বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) দিবাগত রাতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এক পোস্ট করে এ অনুরোধ করেন।
পোস্টে এই তরুণ উপদেষ্টা লিখেছেন, ব্যক্তিগত লাভের আশায় আবদার, তদবির করা থেকে বিরত থাকুন। এতে করে আমার সাথে আপনার সম্পর্ক নষ্ট হতে পারে। দেশগঠনে পরামর্শ থাকলে জানাবেন।
বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) রাতে নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে ১৭ জনকে নিয়ে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন করা হয়। প্রধান উপদেষ্টা ও অন্য উপদেষ্টাদের শপথ পাঠ করান রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। ঢাকার বাইরে থাকায় তিন উপদেষ্টা ফারুক-ই-আযম, বিধান রঞ্জন রায় এবং সুপ্রদীপ চাকমা শপথ অনুষ্ঠানে উপস্থিত হতে পারেননি।
সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ছাড়া অন্যান্য উপদেষ্টারা হলেন- ১. সালেহ উদ্দিন আহমেদ ২. ড. আসিফ নজরুল ৩. আদিলুর রহমান খান ৪. হাসান আরিফ ৫. তৌহিদ হোসেন ৬. সৈয়দা রেজওয়ানা হাসান ৭. মো. নাহিদ ইসলাম ৮. আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া ৯. ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এম সাখাওয়াত হোসেন ১০. সুপ্রদীপ চাকমা ১১. ফরিদা আখতার ১২. বিধান রঞ্জন রায় ১৩. আ.ফ.ম খালিদ হাসান ১৪. নুরজাহান বেগম ১৫. শারমিন মুরশিদ ১৬. ফারুক-ই-আযম।
জেএইচ
মন্তব্য করতে লগিন করুন লগিন