এশিয়া
আদানিকাণ্ড তদন্তে কমিটি গঠন করলেন ভারতীয় সুপ্রিম কোর্ট
ভারতের শীর্ষস্থানীয় শিল্পপতি গৌতম আদানির বিরুদ্ধে জালিয়াতি ও পুঁজিবাজারে কারসাজির যে অভিযোগ তুলেছে মার্কিন সংস্থা হিন্ডেনবার্গ, তা তদন্তে ৬ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করে দিয়েছেন ভারতের সুপ্রিম কোর্ট।
বৃহস্পতিবার (২ মার্চ) ভারতের সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচুড়ের নেতৃত্বাধীন বেঞ্চ এ কমিটি গঠন করেন।
কমিটিতে অবসরপ্রাপ্ত বিচারক অভয় মনোহর সাপ্রেকে প্রধান হিসেবে মনোনীত করেছেন সর্বোচ্চ আদালত। বাকি ৫ সদস্য হলেন—ভারতের অভিজ্ঞ ব্যাংক কর্মকর্তা কে ভি কামাথ, সিকিউরিটি অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ বোর্ড অব ইন্ডিয়ার (এসইবিআই) সাবেক নির্বাহী ও পি ভাট, ভারতের তথ্য প্রযুক্তি কোম্পানি ইনফোসিসের সহপ্রতিষ্ঠাতা নন্দন নিলেকানি, আইনজীবী সোমশেখর সুন্দর্শন এবং অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি জে পি দেবধর।
বার্তাসংস্থা এএনআইয়ের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গৌতম আদানির বিরুদ্ধে শেয়ারবাজারে যে জালিয়াতির অভিযোগ উঠেছে—তার তদন্তে একটি কমিটি গঠনের আবেদন করে কয়েকদিন আগে পিটিশন জমা দিয়েছিলেন ভারতের সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী বিশাল তিওয়ারি।
আবেদনে সুপ্রিম কোর্টের কোনো একজন অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতির নেতৃত্বে একটি উচ্চ পর্যায়ের তদন্ত কমিটি গঠনের আর্জি জানিয়েছিলেন তিনি।
বৃহস্পতিবারের আগে গেলো ১৭ ফেব্রুয়ারি বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচুড়ের নেতৃত্বাধীন বেঞ্চেই বিশাল তিওয়ারির সেই পিটিশনের ওপর শুনানি হয়েছিল। সেদিনিই কমিটি গঠনের ইঙ্গিত দিয়েছিলেন আদালত।
সে দিনের শুনানিতে আদালতের সরকারপন্থী আইনজবী তুষার মেহতা কমিটি গঠনে কেন্দ্রীয় সরকারের পরামর্শ গ্রহণের পক্ষে যুক্তি উপস্থাপন করেছিলেন। তিনি বলেছিলেন,সার্বিক সত্যের উদ্ঘাটন ও অভ্যন্তরীণ পুঁজিবাজারে অনাকাঙ্ক্ষিত বিপর্যয় এড়াতে কেন্দ্রীয় সরকারের পরামর্শে তদন্ত কমিটি গঠন করা বাঞ্ছনীয়।
কিন্তু তার সেই যুক্তি নাকচ করে দিয়ে আদালত বলেছিলেন, যদি কমিটি গঠনে কেন্দ্রীয় সরাকরের পরামর্শ নেওয়া হয়, সেক্ষেত্রে কমিটির নিরপেক্ষতা প্রশ্নবিদ্ধ হবে এবং সেই তদন্ত সবার কাছে গ্রহণযোগ্য না ও হতে পারে।
বিভিন্ন ভারতীয় ও আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুসারে, কমিটিকে আগামি দু’মাসের মধ্যে তদন্ত শেষ করে প্রতিবেদন জমা দেয়ার নির্দেশ দিয়েছেন সুপ্রিম কোর্ট।
এদিকে, সর্বোচ্চ আদালতের এ পদক্ষেপকে স্বাগত জানিয়েছেন আদানিগ্রুপের প্রধান গৌতম আদানি। বৃহস্পতিবার এক টুইটবার্তায় তিনি বলেন, ‘আদানিগ্রুপ সম্মানিত সুপ্রিম কোর্টের এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানাচ্ছে। (কমিটির নেতৃত্বে) আর অল্প কিছু দিনের মধ্যেই প্রকৃত ঘটনা সর্বসমক্ষে আসবে। সত্যের জয় হবেই।’
আদানি বনাম হিন্ডেনবার্গ
সম্প্রতি ভারতের শীর্ষস্থানীয় শিল্পোদ্যোক্তা গৌতম আদানির সম্পর্কে একটি অনুসন্ধানী প্রতিবেদন প্রকাশ করে মার্কিন বিনিয়োগ গবেষণা সংস্থা হিন্ডেনবার্গ রিসার্চ ফার্ম। গেলো ২৪ জানুয়ারি প্রকাশ করা সেই প্রতিবেদনে বলা হয়, এক দশককালেরও বেশি সময় ধরে শেয়ার কারসাজি এবং আর্থিক লেনদেনে প্রতারণা চালিয়ে আসছে আদানি গ্রুপ। কৃত্রিমভাবে শেয়ারের দর বহু গুণ বাড়িয়ে এ গ্রুপ বিশাল সম্পদ গড়েছে। গত কয়েক বছরে আদানি গ্রুপের কোম্পানির শেয়ার ৫০০ শতাংশেরও বেশি বেড়েছে।
প্রতিবেদনটি প্রকাশের পর থেকেই আদানি গ্রুপের সব কোম্পানির শেয়ারের দাম পড়তে শুরু করে; এখনও অব্যাহত আছে সেই পতন। দরপতনের জেরে ইতোমধ্যে হাজার হাজার কোটি ডলার খুইয়েছেন গৌতম আদানি।
হিন্ডেনবার্গের যাবতীয় অভিযোগ অবশ্য দ্ব্যর্থহীনভাবে অস্বীকার করেছে আদানি গ্রুপ। গ্রুপের পক্ষ থেকে দেয়া এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, হিন্ডেনবার্গ রিসার্চের প্রতিবেদন ‘মিথ্যা’,‘ভিত্তিহীন’, ও ‘শত্রুতাপূর্ণ’ আরও বলা হয়েছে, ভারতের শেয়ারবাজার সম্পর্কে ‘কোনো ধারণা নেই’ হিন্ডেনবার্গ রিসার্চের।
এমনকি এ প্রতিবেদন প্রকাশের মাধ্যমে হিন্ডেনবার্গ রিসার্চ ভারত, তার স্বাধীনতা ও সংহতিকে ‘আক্রমণ’করেছে বলেও অভিযোগ করেছে ভারতের রাজনৈতিক দল বিজেপি ও প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ঘনিষ্ট আদানি গ্রুপ।
আদানি গ্রুপের এসব অভিযোগের পাল্টা জবাবে হিন্ডেনবার্গ রিসার্চ ফার্মের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, তাদের প্রতিবেদনের প্রতিটি তথ্য-অভিযোগ সত্য এবং লোকসান থেকে বাঁচতে এখন জাতীয়তাবাদী চেতনাকে ব্যবহার করার চেষ্টা করছেন আদানি।
এশিয়া
জাপানে ৭.১ মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্প
জাপানের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় এলাকায় রিখটার স্কেলে ৭ দশমিক ১ মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্প আঘাত হেনেছে।
বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) স্থানীয় সময় বিকেল ৪টা ৪৩ মিনিটের দিকে পশ্চিমাঞ্চলীয় প্রধান দ্বীপ কিয়ুশুর মিয়াজাকি অঞ্চলে ভূমিকম্পটি আঘাত হানে।
জাপানের আবহাওয়া সংস্থার (জেএমএ) বরাত দিয়ে দেশটির রাষ্ট্রায়ত্ত সংবাদমাধ্যম এনএইচকে ওয়ার্ল্ড এ তথ্য জানিয়েছে।
খবরে বলা হয়েছে, ভূমিকম্পের পর দেশটিতে সুনামির সতর্কতা জারি করা হয়েছে। মিয়াজাকিতে সমুদ্রের ঢেউ ইতোমধ্যে ৫০ সেন্টিমিটারে পৌঁছেছে। তবে তাৎক্ষণিকভাবে বড় ধরনের কোনো ক্ষয়ক্ষতি কিংবা হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি।
এ বিষয়ে দেশটির মন্ত্রিপরিষদের মুখ্য সচিব ইয়োশিমাসা হায়াশি গণমাধ্যমকে বলেন, ভূমিকম্পের পর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্ল্যান্টগুলোতে কোনো ধরনের অস্বাভাবিক ঘটনা দেখা যায়নি। সরকার ভূমিকম্পে ক্ষয়ক্ষতি ও হতাহতের বিষয়ে খোঁজখবর নিচ্ছে।
প্রসঙ্গত, জাপানে ভূমিকম্পের ঘটনা একেবারে সাধারণ। বিশ্বে ৬ বা তার চেয়ে বেশি মাত্রার ভূমিকম্পের প্রায় এক-পঞ্চমাংশই এদেশে ঘটে থাকে।
এর আগে, ২০১১ সালের ১১ মার্চ দেশটির উত্তর-পূর্ব উপকূলে ৯ মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্প আঘাত হানে। যেটি ছিলো জাপানের ইতিহাসে সবচেয়ে শক্তিশালী ভূমিকম্প। ওই সময় ভূমিকম্পের পর দেশটিতে বিশাল সুনামি আঘাত হানে।
সূত্র: রয়টার্স
জিএমএম/
এশিয়া
শেখ হাসিনা দেশ ছাড়ার পর যা বললেন পুতুল
ছাত্র-জনতার ব্যাপক বিক্ষোভের মুখে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে ক্ষমতাচ্যুত হয়ে ভারতে আশ্রয় নিয়েছেন শেখ হাসিনা। দেশে গঠিত হচ্ছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার।
রাজনৈতিক পটপরিবর্তনে মায়ের পদত্যাগ ও দেশত্যাগ নিয়ে এবার মুখ খুলেছেন মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ পুতুল। জানিয়েছেন তার প্রতিক্রিয়া।
বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে সরে যেতে বাধ্য হওয়ার পর সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম এক্সে এ বিষয়ে আবেগঘন পোস্ট দিয়েছেন মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ পুতুল।
পোস্টে তিনি লিখেছেন, আমার দেশ বাংলাদেশ যাকে আমি ভালোবাসি, সেখানে প্রাণহানির ঘটনায় হৃদয় ভেঙে গেছে। আরও হৃদয়বিদারক যে, আমি এই কঠিন সময়ে আমার মাকে দেখতে ও আলিঙ্গন করতে পারিনি। আমি আরডি হিসেবে আমার দায়িত্ব পালনের বিষয়ে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ রয়েছি।
প্রসঙ্গত, সায়মা ওয়াজেদ পুতুল বর্তমানে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার আঞ্চলিক পরিচালক হিসেবে দায়িত্বপালন করছেন।
জিএমএম/
এশিয়া
ভারতীয় গণমাধ্যম বাংলাদেশ নিয়ে গুজব ছড়াচ্ছে: পশ্চিমবঙ্গ পুলিশ
বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে ভারতের স্থানীয় গণমাধ্যমে গুজব ছড়ানো হচ্ছে। জানিয়েছে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ পুলিশ। এ ব্যাপারে রাজ্যের বাসিন্দাদের সতর্ক থাকার আহ্বান জানানো হয়েছে।
মঙ্গলবার (৬ আগস্ট) পশ্চিমবঙ্গ পুলিশের ফেসবুক পেজে দেওয়া এক পোস্টে এ আহ্বান জানানো হয়।
পোস্টে বলা হয়, কিছু স্থানীয় টিভি চ্যানেলে বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে যেভাবে রিপোর্টিং হচ্ছে, তা খুবই দৃষ্টিকটুভাবে সাম্প্রদায়িক উস্কানিমূলক এবং ভারতের প্রেস কাউন্সিলের নিয়মাবলীর পরিপন্থী। দর্শকদের অনুরোধ, এই ধরনের কভারেজ দেখার সময় নিজস্ব বিচারবিবেচনা প্রয়োগ করুন এবং মাথায় রাখুন যে, চ্যানেলের দেখানো ফুটেজের সত্যতা কিন্তু কোনও নিরপেক্ষ তৃতীয় সংস্থা দিয়ে যাচাই করা নয়। একতরফা বিদ্বেষমূলক এবং বিভ্রান্তিকর প্রচারের ফাঁদে পা দেবেন না। শান্ত থাকুন, শান্তি বজায় রাখুন।
সোমবার (৫ আগস্ট) পদত্যাগ করে ভারত চলে যান বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এরপর থেকেই ভারতীয় বিভিন্ন গণমাধ্যমে হিন্দুদের বাড়িঘরে হামলার মিথ্যা তথ্য ছড়ানো শুরু করে।
এমনকি বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের খেলোয়াড় লিটন দাসের বাড়িতে হামলা হয়েছে বলে খবর বের হয়। পরে জানা যায়, মাশরাফির বাড়িতে হামলার ভিডিও ব্যবহার করে সেটি লিটন দাসের বাড়ি বলে গুজব ছড়ানো হয়েছে।
জিএমএম/
মন্তব্য করতে লগিন করুন লগিন