অর্থনীতি
একদিনে স্বর্ণের দাম বাড়লো ৩৬ ডলার
বিশ্ববাজারে হঠাৎ করেই স্বর্ণের দামে বড় উত্থান হয়েছে। গেলো সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসে বিশ্ববাজারে এক লাফে প্রতি আউন্স ন্বর্ণের দাম বেড়েছে ৩৬ ডলার। এতে সপ্তাহের ব্যবধানে বিশ্ববাজারে দামি এই ধাতুটির দাম ঊর্ধ্বমুখীই থাকলো। এর মাধ্যমে টানা দুই সপ্তাহ বিশ্ববাজারে বাড়লো ন্বর্ণের দাম।
বিশ্বাজারে স্বর্ণের এমন দাম বাড়লেও এখনই দেশের বাজারে দাম বাড়ানো হচ্ছে না। দেশের বাজারে স্বর্ণের দাম নির্ধারণের দায়িত্ব পালন করা বাংলাদেশ জুয়েলার্স সমিতির (বাজুস) সংশ্লিষ্টরা আগামী মঙ্গলবার (১৪ মার্চ) পর্যন্ত পরিস্থিতি দেখার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
স্বর্ণের দাম পর্যালোচনা করতে মঙ্গলবার বাজুসের মূল্য নির্ধারণ ও মূল্য পর্যবেক্ষণ সংক্রান্ত স্থায়ী কমিটি বৈঠকে বসবে। যদি বিশ্ববাজারে দাম বাড়ার প্রবণতা অব্যাহত থাকে এবং স্থানীয় বাজারে পাকা স্বর্ণের দাম বাড়ে, তাহলে ওই বৈঠক থেকে দেশের বাজারে স্বর্ণের দাম বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেয়া হতে পারে।
এ বিষয়ে বাজুসের মূল্য নির্ধারণ ও মূল্য পর্যবেক্ষণ সংক্রান্ত স্থায়ী কমিটির চেয়ারম্যান এম এ হান্নান আজাদ গণমাধ্যমকে বলেন, সপ্তাহের শেষদিন বিশ্ববাজারে স্বর্ণের দাম বাড়ার বিষয়টি আমরা লক্ষ্য করেছি। কিন্তু আমরা দাম বাড়ানো বা কমানোর সিদ্ধান্ত নিয়ে থাকি স্থানীয় বাজারের ওপর ভিত্তি করে। বিশ্ববাজারে দাম বাড়লেও স্থানীয় বাজারে সেইভাবে প্রভাবটা পড়েনি। তাই আমরা আগামী মঙ্গলবার পর্যন্ত পরিস্থিতি দেখবো।
তিনি বলেন, স্বর্ণের দাম পর্যালোচনা করতে আমরা মঙ্গলবার বৈঠকে বসবো। যদি বিশ্ববাজারে স্বর্ণের দাম বাড়ার প্রবণতা অব্যাহত থাকে এবং স্থানীয় বাজারে পাকা স্বর্ণের দাম বাড়ে, তাহলে আমরা দাম বাড়াবো। আর যদি বাজার পরিস্থিতি এমনই থাকে, তাহলে হয় তো দাম বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নাও আসতে পারে।
এদিকে, বিশ্ববাজারে দাম বাড়ার আগে এক মাস ধরে টানা দরপতন হয় স্বর্ণের। এতে এক মাসের মধ্যে প্রতি আউন্স ন্বর্ণের দাম ১৩৫ ডলার কমে যায়। বিশ্ববাজারে টানা দরপতনের মধ্যে সম্প্রতি দেশের বাজারে দুই দফায় স্বর্ণের দাম কমানো হয়েছে। অবশ্য তার আগে টানা ছয় দফা দেশের বাজারে স্বর্ণের দাম বাড়ানো হয়। এতে অতীতের সব রেকর্ড ভেঙে দেশের বাজারে ইতিহাসের সর্বোচ্চ দামে পৌঁছে স্বর্ণ।
চলতি বছরের ১৫ জানুয়ারি দাম বাড়ার মাধ্যমে ভালো মানের এক ভরি স্বর্ণের দাম হয় ৯৩ হাজার ৪২৯ টাকা। এর আগে কখনো দেশের বাজারে স্বর্ণের ভরি ৯৩ হাজার টাকা স্পর্শ করেনি। রেকর্ড দাম হওয়ার পর ফেব্রুয়ারিতে দুই দফা স্বর্ণের দাম কিছুটা কমানো হয়।
সর্বশেষ ২৬ ফেব্রুয়ারি সব থেকে ভালো মানের বা ২২ ক্যারেট প্রতি ভরি (১১ দশমিক ৬৬৪ গ্রাম) স্বর্ণের দাম এক হাজার ১৬৬ টাকা কমিয়ে ৯১ হাজার ৯৬ টাকা করা হয়। এছাড়া ২১ ক্যারেটের প্রতি ভরি স্বর্ণের দাম এক হাজার ৫০ টাকা কমিয়ে ৮৭ হাজার ১৩ টাকা, ১৮ ক্যারেটের প্রতি ভরি স্বর্ণের দাম ৮৭৫ টাকা কমিয়ে ৭৪ হাজার ৫৯১ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির স্বর্ণের দাম ভরিতে ৬৯৮ টাকা কমিয়ে ৬২ হাজার ১৬৯ টাকা নির্ধারণ করে বাজুস। বর্তমানে দেশের বাজারে এ দামেই স্বর্ণ বিক্রি হচ্ছে।
দেশের বাজারে স্বর্ণের এ দাম কমানোর পর বিশ্ববাজারে দাম বাড়তে দেখা যাচ্ছে। দেশের বাজারে স্বর্ণের দাম যখন কমানোর ঘোষণা দেয়া হয় সে সময় বিশ্ববাজারে প্রতি আউন্স স্বর্ণের দাম ছিল এক হাজার ৮১০ ডলার। এখন বেড়ে প্রতি আউন্স স্বর্ণের দাম দাঁড়িয়েছে এক হাজার ৮৬৭ দশমিক শূন্য ৯ ডলারে। অর্থাৎ দেশের বাজারে দাম কমানোর পর বিশ্ববাজারে প্রতি আউন্স স্বর্ণের দাম বেড়েছে ৫৭ ডলার।
এর মধ্যে গত সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসে বেড়েছে ৩৬ দশমিক ২০ ডলার বা এক দশমিক ৯৮ শতাংশ। এতে সপ্তাহের ব্যবধানে স্বর্ণের দাম বেড়েছে শূন্য দশমিক ৬৫ শতাংশ। সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসে স্বর্ণের দামে বড় উত্থান হলেও প্রথম তিন কার্যদিবস টানা দরপতন হয়।
গেলো সপ্তাহের লেনদেন শুরু হওয়ার আগে প্রতি আউন্স স্বর্ণের দাম ছিল এক হাজার ৮৫৫ দশমিক ২৫ ডলার। সেখান থেকে ৮ মার্চ লেনদেনের এক পর্যায়ে প্রতি আউন্স স্বর্ণের দাম এক হাজার ৮১০ ডলারে নেমে আসে। অর্থাৎ তিনদিনে প্রতি আউন্স স্বর্ণের দাম ৪৫ ডলার কমে যায়। এমন বড় পতনের পর আবার বড় উত্থান হয়। সপ্তাহের শেষ দুই কার্যদিবসে প্রতি আউন্স স্বর্ণের দাম বেড়েছে ৫২ ডলার।
অর্থনীতি
বাংলাদেশের পাশে থাকবে আইএমএফ
ছাত্র-জনতার ব্যাপক বিক্ষোভের মুখে পদত্যাগ করে দেশ ছেড়ে পালিয়ে ভারতে আশ্রয় নিয়েছেন শেখ হাসিনা। তার দেশ ছেড়ে চলে যাওয়ার পর অন্তর্বর্তীকালীন সরকার প্রতিষ্ঠার ঘোষণা দেয়া হয়েছে। দেশের এ পরিস্থিতিতে বৃহস্পতিবার (০৮ আগস্ট) রাত ৮টার দিকে শপথ নেবে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। চলমান পরিস্থিতির মধ্যেও বাংলাদেশকে সহযোগিতা করে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ)।
মঙ্গলবার (৬ আগস্ট) এক বিবৃতিতে বাংলাদেশের পাশে থাকতে আইএমএফ ‘প্রতিশ্রুতিবদ্ধ’ বলে জানিয়েছে সংস্থাটি।
বৃহস্পতিবার (০৮ আগস্ট) আন্তর্জাতিক সংবাদ সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা যায়।
প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, ‘প্রাণহানি ও মানুষের আহত হওয়ার ঘটনায়’ আইএমএফ গভীর দুঃখ প্রকাশ করেছে। তারা বাংলাদেশ ও দেশটির মানুষের প্রতি সম্পূর্ণ প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। দেশের অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা ধরে রাখতে এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক প্রবৃদ্ধিতে সংস্থাটি পাশে থাকবে।
এর আগে, চলতি বছরের জানুয়ারিতে বাংলাদেশকে ৪৭০ কোটি ডলারের একটি ঋণ অনুমোদন দেয় আইএমএফ। ইতোমধ্যেই তিন কিস্তিতে ২৩০ কোটি ৮২ লাখ ডলার ছাড় করেছে আইএমএফ। আর ২০২৬ সাল পর্যন্ত সাতটি কিস্তিতে ঋণের পুরো অর্থ ছাড় করার কথা রয়েছে সংস্থাটির।
বিশেষজ্ঞদের মতে, আইএমএফ, বিশ্বব্যাংক ও এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের মতো প্রতিষ্ঠান থেকে পাওয়া দীর্ঘমেয়াদি ঋণ দেশের জিডিপির প্রায় এক-চতুর্থাংশের সমতুল্য। সুতরাং, তাদের সমর্থন বাংলাদেশের অর্থনীতির জন্য গুরুত্বপূর্ণ।
এসি//
অর্থনীতি
আজ ব্যাংক থেকে এক লাখের বেশি টাকা তোলা যাবে না
শান্তিতে নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে প্রধান করে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের শপথ অনুষ্ঠান আজ (০৮ আগস্ট)। সে জন্য নিরাপত্তার স্বার্থে ব্যাংক থেকে টাকা উত্তোলনের সীমা আরোপ করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এক হিসাব থেকে এক লাখের বেশি নগদ টাকা উত্তোলন করা যাবে না। তবে এ সিদ্ধান্ত শুধু আজকের জন্য প্রযোজ্য হবে।
বুধবার (০৭ আগস্ট) রাতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক ব্যবস্থাপনা পরিচালক বা এমডিদের এক জরুরি বার্তায় এ নির্দেশনা দিয়েছে।
নির্দেশনা অনুযায়ী, বৃহস্পতিবার (০৮ আগস্ট) এক হিসাব থেকে এক লাখের বেশি নগদ টাকা উত্তোলন করা যাবে না। তবে যেকোনো পরিমাণ নগদ টাকা স্থানান্তর ও ডিজিটাল লেনদেন করা যাবে। এ ছাড়া কেন্দ্রীয় ব্যাংক আজকের জন্য প্রধান কার্যালয় থেকে শাখায় টাকা দেয়া বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়েছে। পাশাপাশি গ্রাহকদের চেকের মাধ্যমে টাকা পরিশোধ করতে পরামর্শ দেয়া হয়েছে।
জানা গেছে, সরকার পরিবর্তনের পর নগদ টাকা উত্তোলনের চাপ বেড়েছে। এসব অর্থ যাতে কোনোভাবেই সন্ত্রাসী বা অবৈধ কাজে ব্যবহৃত না হয়, সে জন্য নগদ টাকা উত্তোলন কিছুটা নিরুৎসাহিত করার সিদ্ধান্ত নেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। এর ধারাবাহিকতায় গত রাতে এ সিদ্ধান্ত জানায় বাংলাদেশ ব্যাংক।
বাংলাদেশ ব্যাংকের একজন কর্মকর্তা বলেন, ‘দেশে কোনো সরকার নেই এবং আজ নতুন সরকার গঠিত হচ্ছে। এই সময়ে কেউ যাতে নগদ টাকা নিয়ে কোনো অস্থিতিশীল পরিবেশ তৈরি করতে না পারে, সে জন্যই এই সিদ্ধান্ত।’
এসি//
অর্থনীতি
এনবিআর চেয়ারম্যানকে বরখাস্তের দাবিতে বিক্ষোভ
জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিমকে বরখাস্তের দাবিসহ ৯ দফা দাবিতে বিক্ষোভ করেছেন জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।আর বিক্ষোভের মধ্যেই চেয়ারম্যানের পদত্যাগের গুঞ্জন চলছে।
বুধবার (৭ আগস্ট) সকাল থেকেই এনবিআর এর প্রধান কার্যালয়ে কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের বিক্ষোভ করতে দেখা যায়।
এনবিআরের কর্মচারীরা জানান, তারা দীর্ঘ দিন থেকে তাদের নানা দাবি ও অসুবিধা এনবিআর চেয়ারম্যানকে জানিয়ে আসছিলেন। কিন্তু এসব দাবি তিনি পূরণ করেন নাই। বাইরের ক্যাডারের কর্মকর্তারা এনবিআর কর্মচারীদের কষ্ট বুঝতে চান না। তাদের ইচ্ছে মত করে চালাতে চান, সেটা কতটা যৌক্তিক তা ভেবে দেখার এটাই উপযুক্ত সময়।
এসময়ে আন্দোলনরত কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা ৯ দফা দাবি জানান।
তাদের দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে-
১। প্রশাসন ক্যাডার থেকে কোনো কর্মকর্তা প্রেষণে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডে পদায়ন করা যাবে না।
২। স্বৈরাচারী শাসকের ঘনিষ্ঠ সহচর জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের বর্তমান চেয়ারম্যান আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিমকে অবিলম্বে পদ থেকে বরখাস্ত করে আয়কর/কাস্টমস, এক্সাইজ ও ভ্যাট ক্যাডার থেকে চেয়ারম্যান নিয়োগ দিতে হবে।
৩। অবিলম্বে স্বৈরাচারী চেয়ারম্যানের দোসর এবং প্রিয়পাত্র প্রথম সচিব (কর প্রশাসন) মো. শাহিদুজ্জামানকে তার পদ থেকে বরখাস্ত করে কর ক্যাডারের কর্মকর্তা পদায়ন করতে হবে।
৪। দুই বছর পর পর বদলি বাণিজ্য বন্ধ করে আয়কর আইন-২০২৩ এর সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে এবং আয়কর আদায়ের স্বার্থে অতীতের মতো রাজস্ব বান্ধব এবং প্রযোজ্যতা সাপেক্ষে বদলি করতে হবে।
৫। অবৈধ নিয়োগ অবিলম্বে বন্ধ করতে হবে এবং আউট সোর্সিং পদ্ধতিতে নিয়োগ দেওয়া যাবে না।
৬। সব কর্মচারীদের পদায়ন কর্মচারীদের জন্য প্রণীত জ্যেষ্ঠতা বিধিমালা ও আইন অনুযায়ী করতে হবে।
৭। আয়কর অনুবিভাগের ১০তম-২০তম গ্রেডের সব শূন্য পদে পদোন্নতি দিতে হবে এবং সব পদ পদোন্নতিযোগ্য হতে হবে, কোনো পদ ব্লক রাখা যাবে না।
৮। কর্মচারীদের নিজ নিজ অ্যাসোসিয়েশনের সঙ্গে পরামর্শ করে কর্মচারীদের স্বার্থ-সংশ্লিষ্ট সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে হবে, অন্যথায় কোনো সিদ্ধান্ত মানা হবে না।
৯। সর্বশেষে আয়কর অনুবিভাগের সংশ্লিষ্ট সব বিষয়ের সিদ্ধান্ত শুধু আয়কর বিভাগের কর্মকর্তা/কর্মচারীরা নেবে।
আই/এ
মন্তব্য করতে লগিন করুন লগিন