শিক্ষা
মেডিকেলে প্রথম হওয়া রাফসানের ফেসবুক অ্যাকাউন্ট নেই
পরীক্ষা ভালো হয়েছিল। নিজে ভালো ফলাফলের বিষয়ে আশাবাদী ছিলাম। কিন্তু প্রথম হবো, সেটা কল্পনাতেও ছিল না। দুপুরের পর রেটিনা (কোচিং সেন্টার) থেকে ফোন করে আমাকে রেজাল্ট জানানো হয়। তাদের কাছ থেকে প্রথম হওয়ার বিষয়টি শুনে প্রথমে বিশ্বাস করতে পারিনি। পরে অনলাইনে নিজের রেজাল্ট দেখে বিস্মিত হয়েছি। বললেন মেডিকেলে প্রথম হওয়া চট্টগ্রামের রাফসান।
রোববার (১২ মার্চ) দুপুরে পরীক্ষার ফল প্রকাশের পর হালিশহরের বাসায় নিকটাত্মীয়, শুভাকাঙ্ক্ষী ও গণমাধ্যমের লোকজনের ভিড় জমে। কুশল বিনিময় আর শুভেচ্ছা নিতেই সন্ধ্যা পেরিয়ে রাত হয়ে যায়।
রাফসান বলেন, আমার কোনো ফেসবুক আইডি নেই। পড়াশোনার কাজ বাদে মোবাইলও ব্যবহার করিনি।
পরীক্ষার বিষয়ে রাফসান বলেন, বড় ভাইয়াদের অনেকে বলতেন পরীক্ষার হলে যাতে সময় নষ্ট না করি। ওই কথা চিন্তা করেই পরীক্ষার একঘণ্টা সময়ের মধ্যে প্রথম ৩০ মিনিটেই ৭০ নম্বরের উত্তর দিয়ে ফেলি। ৫ মিনিট আগেই আমার উত্তর লেখা শেষ হয়ে যায়।
রাফসান আরও বলেন, আমি প্রতিদিন ৬-৭ ঘণ্টা পড়ালেখা করতাম। পাঠ্যবই বাদেও প্রচুর বই পড়ি। আমার পড়ার সময় মা টেবিলের পাশে বসে থাকতেন। কোনো কোনো দিন টেবিলেই মাথা রেখে ঘুমিয়ে পড়তেন মা।
এমবিবিএস পাসের পর উচ্চতর শিক্ষার বিষয়ে রাফসান বলেন, চিকিৎসাবিজ্ঞানে আমার নিউরোসায়েন্স নিয়ে পড়ার আগ্রহ আছে।
২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষে সারাদেশে মেডিকেলে এক লাখ ৩৯ হাজার ২১৭ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে সবাইকে পেছনে ফেলে প্রথম হয়েছেন চট্টগ্রামের রাফসান। পরিবারের সঙ্গে বসবাস করেন হালিশহরের কে ব্লকের বাসায়। রাফসানদের গ্রামের বাড়ি রংপুর। বাবা একেএম শামশুজ্জামান সিটি গ্রুপ অব কোম্পানিজের ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার (শিপিং)।
বাবার কর্মস্থলের সুবাদে চট্টগ্রামেই পড়ালেখা শুরু তার। চট্টগ্রাম গ্রামার স্কুল (সিজিএস) দিয়ে শুরুর পর সপ্তম শ্রেণিতে ভর্তি হন রাজশাহী ক্যাডেট কলেজে। এসএসসি ও এইচএসসিতে গোল্ডেন জিপিএ-৫ পাওয়া রাফসান এবার আরও বেশি সফলতার পরিচয় দিয়েছেন।
ছেলের ফলাফলের খবর শুনে দুপুরেই অফিস থেকে বাসায় ফেরেন শামশুজ্জামান। ছেলের এমন ফলাফলে তারও উচ্ছ্বাসের কমতি নেই। তিনি বলেন, আমার ছেলে সারাদেশে প্রথম হয়েছে। আমার ছেলের ফলাফলের কথা শুনে আমার সহকর্মীরাও আনন্দিত হয়েছেন। ছেলের ফলাফলে সবাই আমাদেরও সুনাম করছেন। এরচেয়ে আনন্দের, গর্বের আর কী হতে পারে!
রাফসানের পড়ালেখায় যে ব্যক্তি বেশি কষ্ট করেছেন তিনি হচ্ছেন মা কাউছার নাজনীন। তিনি বলেন, আমার ছেলে পড়ালেখায় মনোযোগী ছিল। তারপরেও ও যখন পড়তো, তখন আমি পাশেই বসে থাকতাম। আর কখন অজান্তে আমার চোখ বুজে ঘুম চলে আসতো। এমনও হয়েছে আমি ওর পাশে টেবিলে মাথা রেখে ঘুমিয়ে পড়েছি। আজ আমার ছেলে মেডিকেলে সারাদেশে প্রথম হয়েছে। মনে হচ্ছে আমিই প্রথম হয়েছি।
আল্লাহ আমাকে পুরষ্কার দিয়েছেন। সবাই আমার ছেলের জন্য দোয়া করবেন, বলেন রাফসানের মা।
শিক্ষা
চুয়েটে নিষিদ্ধ হলো ছাত্ররাজনীতি
চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (চুয়েট) নিষিদ্ধ করা হয়েছে সব ধরনের ছাত্ররাজনীতি।
বুধবার (০৭ আগস্ট) বিশ্ববিদ্যালয়টির ১৩৬তম জরুরি সিন্ডিকেট সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার (অতিরিক্ত দায়িত্ব) অধ্যাপক ড. শেখ মোহাম্মদ হুমায়ুন কবির স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে তা জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়, ১৩৬/১(ঘ) অনুযায়ী অত্র বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও শিক্ষক/কর্মকর্তা/কর্মচারীদের সকল ধরনের রাজনৈতিক সংগঠন এবং এর কার্যক্রমের সাথে সম্পৃক্ততা নিষিদ্ধ করা হলো। এ আদেশ অমান্যকারীদের বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয় বিধান অনুযায়ী শাস্তি প্রদান করা হবে।
উল্লেখ্য, সম্প্রতি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকে কেন্দ্র করে দেশের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধের দাবি জানায় সাধারণ শিক্ষার্থীরা। শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর সে দাবি আরও জোরালো হয়। এমন প্রেক্ষাপটে ক্যাম্পাসে ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে চুয়েট।
এসি//
শিক্ষা
আজ থেকে শুরু একাদশ শ্রেণির ক্লাস
২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষে একাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থীদের ক্লাস মঙ্গলবার (০৬ আগস্ট) হওয়ার কথা ছিল। কোটা সংস্কার আন্দোলনের পরিস্থিতিতে পিছিয়ে তা শুরু হচ্ছে আজ।
আন্তঃশিক্ষা বোর্ড সমন্বয় কমিটি বিভিন্ন কলেজ ও মাদ্রাসাগুলোকে বৃহস্পতিবার (০৮ আগস্ট) থেকে একাদশের ক্লাস শুরু করতে বলেছে। এরইমধ্যে অধ্যক্ষ ও প্রধান শিক্ষকদের এ নির্দেশনা দিয়ে চিঠি পাঠিয়েছে আন্তঃশিক্ষা বোর্ড সমন্বয় কমিটি।
বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, সব উচ্চমাধ্যমিক পর্যায়ের দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের অধ্যক্ষ ও প্রধান শিক্ষককে পাঠানো চিঠিতে কমিটি বলছে, বৃহস্পতিবার (০৮ আগস্ট) থেকে ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষে একাদশ শ্রেণিতে অনলাইনের মাধ্যমে ভর্তিকৃত শিক্ষার্থীদের ক্লাস শুরু হবে।
এদিকে প্রথম থেকে তৃতীয় ধাপে নির্বাচিত শিক্ষার্থীদের ভর্তির সময় বুধবার (০৭ আগস্ট) শেষ হয়েছে। তবে, একাদশ শ্রেণিতে ভর্তির চতুর্থ ধাপের আবেদনের সুযোগ দেওয়া হয়েছে শিক্ষার্থীদের। তিন ধাপে আবেদন গ্রহণ ও শিক্ষার্থী নির্বাচনের পরও কিছু কলেজ মাদ্রাসায় সিট খালি থাকায় ও কিছু শিক্ষার্থী ভর্তির জন্য নির্বাচিত হতে না পারায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
জানা গেছে, যেসব শিক্ষার্থী কলেজে ভর্তির আবেদন করেননি বা আবেদন করে কলেজ সিলেকশন পাননি তারা এবং যেসব শিক্ষার্থী চূড়ান্ত মনোনয়ন পেয়েও কলেজে ভর্তি হতে পারেননি বা নিশ্চায়ন করতে পারেননি তারা চতুর্থ ধাপে ভর্তির আবেদন করতে পারবেন।
অনলাইনে নির্ধারিত ওয়েবসাইটে (https://www.xiclassadmission.gov.bd) প্রবেশ করে নির্দেশিকা অনুসারে শিক্ষার্থীদের আবেদন করতে হবে। শিক্ষার্থীদের কলেজের আসন সংখ্যা দেখে ৫টি থেকে ১০টি কলেজে আবেদনের চয়েজ দিতে পারবেন। আবেদন ফি নির্ধারণ করা হয়েছে ১৫০ টাকা। ব্যাংক কার্ড ও মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে এ ফি পরিশোধ করতে হবে।
জানা গেছে, ১১ থেকে ১৪ আগস্ট (বুধবার) রাত ১০টা পর্যন্ত চতুর্থ বা সর্বশেষ ধাপের আবেদন গ্রহণ করা হবে। ১৭ আগস্ট (শনিবার) রাত ৮টায় চতুর্থ ধাপের ফল প্রকাশ করা হবে। ১৮ আগস্ট থেকে ১৯ আগস্ট (সোমবার) রাত ৮টা পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের সিলেকশন নিশ্চায়ন করতে হবে। চতুর্থ ধাপে নির্বাচিত শিক্ষার্থীরা ২০ আগস্ট (মঙ্গলবার) কলেজে ভর্তি হতে পারবেন।
এসি//
শিক্ষা
অনির্দিষ্টকালের জন্য স্থগিত এইচএসসি পরীক্ষা
অনির্দিষ্টকালের জন্য স্থগিত করা হয়েছে এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষাগুলো। বুধবার (৭ আগস্ট) শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে এ সংক্রান্ত এক বিজ্ঞপ্তিতে বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে।
এতে সই করেছেন সরকারি মাধ্যমিক শাখা-২ এর উপসচিব সাইয়েদ এ. জেড মোরশেদ আলী।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, আগামী ১১ আগস্ট ২০২৪ তারিখ থেকে অনুষ্ঠিতব্য এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষা ২০২৪-এর পরীক্ষাসমূহ অনিবার্য কারণবশত স্থগিত করে পরীক্ষা গ্রহণের বিস্তারিত সময়সূচি পরবর্তীতে জানানো হবে মর্মে সংশ্লিষ্ট সবাইকে অবহিত করার জন্য নির্দেশক্রমে অনুরোধ করা হলো।
কোটা সংস্কার আন্দোলনকে ঘিরে সৃষ্ট সহিংসতায় শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার কথা বিবেচনা করে দফায় দফায় চলমান এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষা স্থগিত করা হয়। তিন দফায় আট দিনের পরীক্ষা স্থগিত করেছে বোর্ডগুলো। পরে ১১ আগস্ট থেকে নতুন সময়সূচিতে পরীক্ষা নেয়ার কথা জানানো হয়।
চলমান পরিস্থিতিতে প্রথমে গেলো ১৮ জুলাইয়ের এইচএসসি পরীক্ষা স্থগিত করা হয়। এরপর পরিস্থিতি আরও খারাপ হওয়ায় ২১, ২৩ ও ২৫ জুলাইয়ের সব পরীক্ষা স্থগিত করা হয়। তৃতীয় দফায় ২৮ জুলাই থেকে ১ আগস্ট পর্যন্ত সময়সূচি অনুযায়ী যত পরীক্ষা ছিল, তা সব স্থগিত করে আন্তঃশিক্ষা বোর্ড সমন্বয় কমিটি।
গেলো ৩০ জুন এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষা শুরু হয়। চলতি বছর ৯টি সাধারণ শিক্ষা বোর্ড, কারিগরি বোর্ড ও মাদরাসা বোর্ডের অধীনে মোট পরীক্ষার্থী ১৪ লাখ ৫০ হাজার ৭৯০ জন।
এসি//
মন্তব্য করতে লগিন করুন লগিন