অপরাধ
র্যাব-পুলিশের পোষাকে টাকাওয়ালাদের টার্গেট, হাতকড়া পরিয়ে লুট
র্যাব ও ডিবি পুলিশ পরিচয় দিয়ে বিভিন্ন ব্যক্তিকে মাইক্রোবাসে তুলে অর্থ হাতিয়ে নেয়া চক্রের নয় সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)।
বুধবার (২৭ অক্টোবর) আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর পরিচয়ে মানুষকে তুলে নিয়ে ছিনতাই ঘটনা প্রতিরোধে ডিবি উত্তরের যুগ্ম-কমিশনার মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান।
এর আগে, ২৬ অক্টোবর রাজধানীর মোহাম্মদপুর, মতিঝিল এলাকা থেকে ওই নয় ছিনতাইকারীকে গ্রেফতার করে ডিবির গুলশান বিভাগ। অভিযানের নেতৃত্ব দেন গুলশান বিভাগের উপ-কমিশনার (ডিসি) মো. মশিউর রহমান।
গ্রেফতাররা হলেন- আব্দুল্লাহ আল মামুন, ইমদাদুল শরীফ, খোকন, মাসুদুর রহমান তুহিন, মামুন শিকদার, কমল হোসেন, ওয়াহিদুল ইসলাম, ফারুক বেপারী ও মতিউর রহমান। এই চক্রটি ডিবি ও র্যাবের পরিচয় মানুষকে তুলে নিয়ে ছিনতাই করে তাদের নির্জন জায়গায় ফেলে রাখতো।
গ্রেফতারের সময় তাদের কাছ থেকে একটি ওয়াকিটকি, একটি পিস্তল, এক জোড়া হাতকড়া, ট্রাভেল ব্যাগ, দুইটি জ্যাকেট, চারটি নতুন গামছা, একটি প্রাইভেটকার, একটি মাইক্রোবাস ও পাঁচ হাজার পিস ইয়াবা উদ্ধার করা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে হারুন অর রশীদ বলেন, হাতে ওয়ারলেস সেট, গায়ে র্যাব, ডিবি ও পুলিশের জ্যাকেট পরা দেখলেই তাদের পুলিশ বা র্যাব মনে করার কোন কারণ নেই। তাদের যাচাই করুন। তারা সত্যিকারের আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য কিনা তা নিশ্চিত হয়ে কথা বলুন। প্রয়োজনে মানুষ জড়ো করুন।
তিনি বলেন, প্রয়োজনে নিকটস্থ থানা পুলিশ বা জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯ এ ফোন দিন।
হারুন অর রশীদ বলেন, ঢাকা মহানগরী এবং আশেপাশের এলাকায় ভুয়া র্যাব ও ভুয়া ডিবি পুলিশ পরিচয় দিয়ে ব্যাংকে টাকা জমা দিতে যাওয়া অথবা ব্যাংক থেকে টাকা উত্তোলনকারী ব্যক্তিদেরকে জোরপূর্বক মাইক্রোবাসে তুলে নেয় ওই চক্রটি। তুলে নেওয়া ব্যক্তিকে কখনো সাভার-আশুলিয়া, কখনো বেড়িবাঁধ, কখনো নারায়ণগঞ্জ জেলার রূপগঞ্জে নিয়ে ব্যাপক মারধর করে। এরপর তাদের কাছ থেকে নগদ টাকা ও তাদের ডেবিট, ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমে টাকা উত্তোলন করে হাতিয়ে নিতো।
জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতাররা জানান, তারা ব্যাংকের কাছে দাঁড়িয়ে ব্যাংক থেকে নগদ টাকা উত্তোলনকারী ব্যক্তিদের টার্গেট করেন। টার্গেটকৃত ব্যক্তিকে অনুসরণ করে সুবিধাজনক স্থানে পৌঁছার পর তাদের সঙ্গে থাকা ডিবির জ্যাকেট পরে ওই ব্যক্তির গতিরোধ করেন। এসময় ওয়াকিটকি দেখিয়ে নিজেদেরকে ডিবি পুলিশের পরিচয় দিয়ে টার্গেট করা ব্যক্তিকে কোনো একটা অপরাধ করার অজুহাত দেখিয়ে হাতকড়া পরিয়ে তাদের নিজেদের গাড়িতে তুলে নেন।
ডিবি উত্তরের যুগ্ম-কমিশনার আরও জানান, এরপর কিছুদূর গাড়ি চালানোর পর তাদের কাছ থাকা টাকা-পয়সা, মোবাইল ফোন ও মূল্যবান সামগ্রী কেড়ে নিতো ওই চক্রটি। এরপর তাদের কাছে থাকা গামছা দিয়ে ভুক্তভোগীর চোখ বেঁধে নির্জন স্থানে ফেলে রেখে দিতো।
গ্রেফতারদের বিরুদ্ধে ডাকাতি ও মাদক আইনে মতিঝিল থানায় দুটি পৃথক মামলা হয়েছে। চক্রটির বেশিরভাগ সদস্য ঢাকার বাইরের। তারা ঢাকার বাইরে থেকে এসে কাজ করে আবার চলে যান। তারা কাঁচপুর থেকে মেঘনা পর্যন্ত সড়কটি ব্যবহার করেন বলেও জানান তিনি।
হারুন অর রশীদ আরও বলেন, ভুক্তোভোগীরা মামলা করতে চান না, তারা মনে করেন বেঁচে গেছি, শুকরিয়া আদায় করেন। কিন্তু পুলিশকে জানান না। যে নয়জনকে গ্রেফতার করেছি, প্রত্যেকের বিরুদ্ধে ডাকাতি মামলা, নারী নির্যাতন মামলা ও ধর্ষণের মামলা রয়েছে বলেও জানান তিনি।
এ সময় হারুন অর রশীদ বলেন, এ ধরনের ছিনতাইয়ের কবলে পড়লে থানায় জানান। থানায় না গেলে আমাদের কাছে আসুন। আমরা আপনাদের অভিযোগ নিবো।
সাধারণ মানুষের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, প্রত্যেককে সাহসের সঙ্গে এগিয়ে আসতে হবে। তাহলে আমরা অপরাধ চক্রকে ধরতে পারবো।
অপরাধ
রাজধানীতে বস্তা ভর্তি টাকাসহ একটি গাড়ি আটক করলেন শিক্ষার্থীরা
রাজধানীর উত্তরায় একটি প্রাইভেটকার থেকে এক বস্তা টাকাসহ একটি শটগান উদ্ধার করেছেন শিক্ষার্থীরা। এই ঘটনায় তিনজনকে হেফাজতে নিয়েছে নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা।
বুধবার (৭ আগস্ট) এ সংক্রান্ত একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা গণমাধ্যমে জানান, রাজধানীর উত্তরার একটি বাসার গ্যারেজ থেকে গাড়িটি জব্দ করা হয়। এ সময় তিনজনকে হেফাজতে নেয় নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা। পরে গাড়ি থেকে এক বস্তা টাকা উদ্ধার করে হেফাজতে নেন নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা। এ সময় স্থানীয় জনতা ও শিক্ষার্থীরা উল্লাস করেন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা আরও জানান, আওয়ামী লীগ ঘরোয়ানার একটি ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠানের এমডির গাড়ি থেকে এ টাকা উদ্ধার করা হয়েছে। গাড়ি থেকে এক বস্তা টাকাসহ একটি শটগান উদ্ধার করে উত্তরা টাউন কলেজের শিক্ষার্থীসহ অনান্য বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।
এএম/
অপরাধ
কাশিমপুর কারাগার থেকে পালিয়েছে ২০৯ বন্দি, নিহত ৬
গাজীপুরের কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে ২০৯ জন বন্দি পালিয়েছেন। পালিয়ে যাওয়ার সময় নিরাপত্তাকর্মীদের গুলিতে ছয়জন বন্দি নিহত হয়েছেন।
বুধবার (৭ আগস্ট) বিকেলে কাশিমপুর হাই সিকিউরিটি কেন্দ্রীয় কারাগারের সিনিয়র জেল সুপার সুব্রত কুমার বালা গণমাধ্যমকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান,গেলো মঙ্গলবার বিকেলে কাশিমপুর হাই সিকিউরিটি কেন্দ্রীয় কারাগারের বন্দিরা কারাগার ভেঙে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। কারারক্ষীরা তাদের নিভৃত করার চেষ্টা করলে বন্দিরা কারারক্ষীদের ওপর চড়াও হয়। বন্দিদের কেউ দেয়াল ভেঙে, কেউ দেয়াল টপকে, আবার কেউ দেয়ালের সঙ্গে বিদ্যুতের পাইপ লাগিয়ে কারারক্ষীদের মারধর করে পালিয়ে যেতে চান।
একপর্যায়ে সেনাবাহিনীকে খবর দিলে তারা কমান্ডো অভিযান চালিয়ে বিদ্রোহ দমন করেন।এসময়ে বন্দিদের মধ্যে ২০৯ জন দেয়াল টপকে পালিয়ে গেছে।বন্দিদের ঠেকাতে নিরাপত্তাকর্মীদের গুলিতে ছয়জনের মৃত্যু হয়েছে। নিহতদের ময়নাতদন্তের জন্য গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।
প্রসঙ্গত, নিহতদের নাম পরিচয় পরে জানানো হবে বলে জানিয়েছেন সিনিয়র জেল সুপার।
আই/এ
অপরাধ
কাশিমপুর কারাগারে তীব্র উত্তেজনা, সেনাবাহিনীর শক্ত অবস্থান
গাজীপুরের কাশিমপুর হাইসিকিউরিটি কেন্দ্রীয় কারাগারের ভেতরে বন্দিরা মুক্তির দাবিতে উত্তেজনা শুরু করেছেন। কারারক্ষীদের জিম্মি করে অনেকে দলবদ্ধভাবে বের হয়ে আসার চেষ্টা করছেন। খবর পেয়ে সেনা সদস্যরা এসে প্রাথমিকভাবে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন।
মঙ্গলবার (৬ আগস্ট) দুপুরের দিকে এ পরিস্থিতি দেখা গেছে। এসময়ে ওই এলাকার আকাশে হেলিকপ্টার চক্কর দিতে দেখা যায়।
কারা কর্তৃপক্ষ জানান, কাশিমপুর কারা কমপ্লেক্সে পৃথক চারটি কারাগার রয়েছে। এর মধ্যে বিডিআর বিদ্রোহ মামলার সাজাপ্রাপ্ত আসামি, ফাঁসি ও যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত দুর্ধর্ষ জঙ্গি বন্দিরা রয়েছে। এছাড়া রাজনৈতিক মামলায় গ্রেপ্তার অনেক নেতাকর্মীও ওই কারাগারে রয়েছে।
জানা যায়, বেলা ১১টার দিকে কিছু বন্দি কারাগারের অভ্যন্তরে থাকা কারারক্ষীদের জিম্মি করে মুক্তির দাবিতে বিদ্রোহ শুরু করে। এসময়ে কারারক্ষীরা তাদের শান্ত করার চেষ্টা করে ব্যর্থ হন। আগে থেকেই সেখানে অল্প সংখ্যক সেনাবাহিনীর সদস্যরা তাদের নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করেন। উত্তেজনা আরও বেড়ে গেলে দুপুর দেড়টার দিকে অতিরিক্ত সেনা সদস্য হেলিকপ্টার যোগে কারা অভ্যন্তরে এসে বন্দিদের নিয়ন্ত্রণ করেন।
প্রসঙ্গত, কারা অভ্যন্তরে বিদ্রোহের খবর পেয়ে বন্দিদের স্বজনরা সকাল থেকেই কারাগারের সামনে অবস্থান করেন। এ সময় তাদের সঙ্গে আন্দোলনকারীরা যোগ দিয়ে বিক্ষোভ করে। কারাগারের বাইরে একটি ঝুট গুদামে অগ্নিসংযোগ করা হয়। পরে সেনা সদস্যরা বাইরের বিক্ষোভকারীদের ধাওয়া করে ছত্রভঙ্গ করে দেন।
আই/এ