লাইফস্টাইল
কিডনি রোগগুলি নীরব ঘাতক…
কিডনির সমস্যা এখন প্রায় ঘরে ঘরে। বিশেষ করে ক্রনিক কিডনি সমস্যা দিনে দিনে জটিল আকার নিচ্ছে। ক্রনিক রোগ মানে হল পুরনো রোগ। অনেকদিন ধরে শরীরে বাসা বেঁধে আছে। এই সব ক্রনিক রোগগুলি হল ব্লাড প্রেসার, ডায়াবিটিস, তার সঙ্গে আনুষাঙ্গিক ভাবে আছে কিডনির রোগ। ক্রনিক কিডনি ডিজিজ মানে কিডনি অনেকটাই নষ্ট হয়ে গিয়েছে। প্রায় ঠিক হওয়ার সম্ভাবনা নেই বললেই চলে। শুধু বয়স্ক নয়, কমবয়সিরাও এই রোগের শিকার। কিডনির সমস্যাকে ঘিরে বাড়ছে নানান শারীরিক জটিলতা। নেফ্রোলজিস্ট বিভাগের চিকিৎসক, ডাঃ গুরুদেব কেসি বলেন, ভারতীয় জনসংখ্যার প্রায়ই ১০% কিডনির সমস্যায় ভোগেন। প্রতিবছর এর কারণে ১ লাখেরও বেশি রেনাল ফেইলিউরের ঘটনা সামনে আসে। তিনি আরও বলেন,’দুর্ভাগ্যবশত বেশিরভাগ চিকিৎসক প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা না নেওয়ার পরিবর্তে, নেফ্রলজির বিষয়গুলি ঠিক করার দিকে বেশি সময় ব্যয় করেন যা ঠিক নয়’।
কিডনি রক্তকে পরিশ্রুত করার কাজ করে। ছেঁকে বের করে সকল বর্জ্য পদার্থকে। কিডনির সমস্যা গুরুতর হলে বন্ধ হয়ে যায় এই কাজ। শরীরে বাড়তে থাকে বর্জ্যের পরিমাণ। পরিস্থিতি চূড়ান্ত পর্যায়ে গেলে মৃত্যুও ঘটতেও পারে।
কিডনির সমস্যা হয়েছে? সহজেই বোঝা যাচ্ছে না? তাহলেই বিপদ! বিশেষ করে ক্রনিক কিডনি ডিজিজের রোগীদের প্রাথমিক পর্যায়ে রোগ ধরা পড়ে না। এটি আসেও নীরব ভাবে। তাই একে বলে ‘নীরব ঘাতক’। অর্থাৎ, নীরবে ঘাতকের ভূমিকা পালন করে।বিশেষজ্ঞরা পরামর্শ দিচ্ছেন, কোন কোন বিষয়ে বাড়তি সতর্কতা নেওয়া প্রয়োজন। ডায়াবিটিস বিভাগের বিশেষজ্ঞ ডাঃ কে এন মনোহর ও ডাঃ ভবন মনে করেন, রক্তচাপের মাত্রা যদি নির্দিষ্ট পর্যায়ে না থাকে, তাহলে প্রবল ক্ষতিও হতে পারে। এই বিষয়ে হার্ট, উচ্চরক্তচাপ, সুগার, চোখের দিকে বেশি করে নজর দেওয়া দরকার বলে তাঁরা জানিয়েছেন। উল্লেখ্য, চক্ষু রোগ বিশেষজ্ঞ ডাঃ সন্তোষ এবং ডাঃ ধোয়ানি এর জন্য নিয়মিত চক্ষু পরীক্ষা ও সুগার পরীক্ষার পরামর্শ দিয়েছেন।
রাজ্যের স্বাস্থ্য কমিশনার ডি রনদীপ বলেন, সচেতনতা, ও নিয়মিত স্ক্রীনিং প্রাথমিকভাবে এই রোগ নিরাময়ে দারুণ ভূমিকা পালন করে। কিডনি নিয়ে আলোচনায় অংশগ্রহণকারী চিকিৎসকেরা, ডায়াবিটিস, ও উচ্চ রক্তচাপকে কিডনি সমস্যার প্রাথমিক কারণ হিসেবে চিহ্নিত করেছেন। তাঁরা বলেন, ৩১% মানুষের ক্রনিক কিডনির সমস্যায় আক্রান্ত হন শুধুমাত্র তাঁদের ডায়াবিটিস আছে বলে। এই বিষয়গুলিকে যদি নিয়ন্ত্রণে আনা যায় তাহলেই কিডনির মতো জটিল সমস্যা থেকে রেহাই পাওয়া যাবে।
শুধুমাত্র পুরুষেরাই নয়, মহিলাদের ক্ষেত্রেও এই সমস্যা হয়ে ওঠে জটিল। বিশেষ করে গর্ভবতী মহিলাদের বাড়তি সতর্কতা নেওয়া দরকার। তাঁদের নিয়মিত চেক-আপের মধ্যে থাকা উচিত। গর্ভাবস্থায় ডিহাইড্রেশন ও হাইপারটেনসিভের ঝুঁকি থাকে। তা ডেকে আনে কিডনির সমস্যা। ডায়াবিটিস মূত্রাশয়ের কোষগুলি নষ্ট করে দেয়। ফলে দেখা দিতে পারে বহুমূত্র জনিত সমস্যা, মূত্রনালীতে সংক্রমণ, এছাড়া বমি বমি ভাব, মুখ হাত ফোলা ইত্যাদি। যা গর্ভবতী মহিলাদের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ। হতে পারে মাসিকের সমস্যাও।
স্ত্রী রোগ বিশেষজ্ঞ ডাঃ শেফালিকা এবং ডাঃ কবিতা কোভি মহিলাদের কিডনি বিষয়ে বাড়তি সতর্কতা নিতে বলেছেন। নিয়মিত আল্ট্রাসাউন্ড পরীক্ষা, কিডনির সূক্ষ্মাতিসূক্ষ্ম সমস্যা নির্ণয় করতে পারে। তাই মাঝে মাঝে এই পরীক্ষা করানো উচিত। চিকিৎসকদের মতে, প্রাথমিক পর্যায়ে ওষুদের দ্বারা গুরুতর সমস্যাগুলি ঠেকানো সম্ভব।
পরামর্শ
মুখে ঘা দূর করতে মেনে চলুন ৫ উপায়
খাওয়া দাওয়ার সময় বা কথা বলার সময়ে মুখে ঘা হলে বেশ সমস্যায় পড়তে হয়। এই সমস্যা দীর্ঘদিন সহ্য না করাই উত্তম। এই সমস্যা কিন্তু একসময় মুখে আলসারেরও লক্ষণ হতে পারে। মুখের আলসারকে সামান্য ঘা ভেবে অবহেলা করলেই বিপদে পড়বেন। কোষ্ঠকাঠিন্য, হরমোন জনিত সমস্যার কারণে মুখের ভিতরে আলসার হতে পারে। অনেকে আবার ব্রেসেস পড়েন, তাঁদেরও মাঝেমাঝে এই সমস্যা হয়। শরীরে ভিটামিন সি ও ভিটামিন বি, আয়রন, জিঙ্ক, ফোলেটের ঘাটতির কারণেও মুখের ঘা থেকে আলসার হতে পারে।
মুখে ঘা হলে কিছুদিনের জন্য ঝাল, টক জাতীয় খাবার এড়িয়ে যাওয়াই ভাল। না হলে মুখে জ্বালা অনুভূত হবে। মুখে ঘা হলে মুক্তি পেতে পারেন ৫ উপায়ে ।
১) মুখের ঘা কমাতে হালকা গরম পানিতে সামান্য লবন মিশিয়ে কুলকুচি করুন। এতে আরাম পাবেন। দিনে তিন থেকে চার বার করলে ব্যথা ও ঘা দুটোই কমে আসবে।
২) ঘায়ের জায়গায় সামান্য মধু লাগিয়ে রাখতে পারেন, ভালো উপকার পাবেন। কয়েক ঘণ্টা অন্তর অন্তর মধু লাগালে সুফল পাবেন।
৩) ঘায়ের জায়গায় বিশুদ্ধ নারিকেল তেল লাগিয়ে রাখলেও বেশ আরাম পাবেন।
৪) যে কোনও ঘায়ের জন্য ভালো প্রাকৃতিক ঔষধ হতে পারে হলুদ। মুখে যে জায়গায় ঘা হয়েছে, সেই স্থানে হলুদ বাটা লাগিয়ে রাখতে পারেন। কিছু দিন ব্যবহার করলেই ঘায়ের তীব্র জ্বালা-যন্ত্রণা কমে আসবে।
৫) বেকিং সোডা ঘা সারাতে দারুণ উপকারী একটি জিনিস। এক কাপ পানিতে এক চা চামচ বেকিং সোডা মিশিয়ে কুলকুচি করলে ঘা কমে যাবে। এছাড়া বেকিং সোডার সঙ্গে সামান্য পানি মিশিয়ে একটা ঘন পেস্ট তৈরি করে নিতে পারেন। সেই পেস্ট ক্ষতস্থানে লাগিয়ে রাখলেও বেশ উপকার পেতে পারেন।
জেডএস/
লাইফস্টাইল
জুতো-মোজার দুর্গন্ধ দূর হবে যেভাবে
এসে গেছে বৃষ্টির দিন। দিনভর ঘ্যানঘ্যানে বৃষ্টিতে বাড়ি থেকে বের হওয়াই সবথেকে বড় চ্যালেঞ্জ। বাড়ি থেকে বেরিয়েই কাকভেজাহয়ে অফিসে যাচ্ছে মানুষ। জুতো থেকে মোজা, সব ভিজে একেবারে চুপচুপে। সেই জুতো-মোজা পরেই সারাদিন কাটিয়ে দেয়া।
সবশেষে ঘরে পৌছে জুতো খুলতেই বিকট গন্ধ! এই পরিস্থিতির সম্মুখীন অনেকেই হচ্ছেন নিশ্চয়ই? এই সমস্যা দূর করতে ঘরোয়া কিছু টিপসে খুব সহজেই দূর করতে পারবেন জুতো, মোজার এই বাজে গন্ধ।
আসুন জেনে নেই তাহলে –
১. ছোট্ট একটি কাপড়ে অল্প পরিমাণ বেকিং সোডা নিয়ে ছোট পুটলি বানিয়ে মোজার মধ্যে রেখে দিন। দেখবেন মোজা থেকে দুর্গন্ধ দূর হবে।
২. ন্যাপথোলিন গুঁড়ো করে নিয়ে ট্যালকম পাউডারের সঙ্গে তা মিশিয়ে জুতোর মধ্যে ছড়িয়ে দিন। দেখবেন জুতোয় আর দুর্গন্ধ হচ্ছে না।
৩. বাড়িতে ফিরেই ভিজে জুতো ভালো করে শুকনো কাপড় দিয়ে মুছে নিন। তারপর জুতোর মধ্যে কিছু পরিমাণ বেকিং সোডা ছিটিয়ে দিন।
পরের দিন জুতোর ভিতর ভালো করে মুছে ফেলুন। দেখবেন গন্ধ দূর হয়েছে।
৪. জুতোর মধ্যে এক টুকরো ফেব্রিক সফটনার সিট রেখে দিন রাতে। পরদিন সেটি বের করে জুতো পরুন। বাজে গন্ধ একেবারে দূর হয়ে যাবে।
৫. বাড়িতে ফিরে জুতো ধুয়ে হেয়ার ড্রায়ার চালিয়ে হালকা শুকিয়ে নিন। এবার এক টুকরো কাপড় বা তুলো লবঙ্গ তেলে ভিজিয়ে জুতোর মধ্যে রেখে দিন সারারাত। জুতোর দুর্গন্ধ দূর হবে।
৬. ফুটন্ত জলে টি ব্যাগ ফেলে রাখুন ২ মিনিট। টি ব্যাগ ঠাণ্ডা হলে জুতোর মধ্যে রেখে দিন। এক ঘণ্টা পর তা সরিয়ে জুতোর ভেতরের অংশ ভাল করে মুছে নিন। দুর্গন্ধের পাশাপাশি দূর হবে তাতে থাকা ব্যাকটেরিয়াও।
জেডএস//
রেসিপি
ম্যাংগো পুডিং তৈরির রেসিপি
আমের সিজনে অনেকেই আমের পাল্প ডিপ ফ্রিজে সংরক্ষণ করেন। সেই ম্যাংগো পাল্প দিয়েই ম্যাংগো পুডিং বানানো যাবে। আর আমের সিজনে তো ফ্রেশ আমই ব্যবহার করতে পারবেন। ছোট বাচ্চাদের জন্য এটি বেশ হেলদি একটি ডেজার্ট আইটেম। মাত্র ৪টি উপাদান দিয়েই ইয়াম্মি ইয়াম্মি ম্যাংগো পুডিং বানিয়ে নেয়া যায়। চলুন দেরি না করে রেসিপিটি জেনে নেই এখনই।
উপকরণ
ঘন দুধ- ১ কাপ
চিনি- স্বাদ অনুযায়ী ( আমি হাফ কাপ দেই )
আম- ২টি
ডিম- ২টি
ম্যাংগো পুডিং তৈরির পুরো প্রণালী
১. প্রথমে আম ছোট ছোট করে কেটে নিন। দুধ জ্বাল দিয়ে ঘন করুন এবং ঠাণ্ডা করে নিন।
২. এবার ব্লেন্ডার জগে আম, চিনি, দুধ ও ডিম সবকিছু দিয়ে ভালোভাবে ব্লেন্ড করে নিন।
৩) মিশ্রণটি মোটামুটি ঘন ও থকথকে হবে। যদি বেশি ঘন হয়ে যায়, লিকুইড দুধ মিশিয়ে নিতে হবে।
৪. এবার একটি স্টিলের টিফিন বক্সে পুডিংয়ের মিশ্রণ ঢেলে নিতে হবে।
৫. বড় সসপ্যানে পানি ফুটতে দিন। এবার একটি স্ট্যান্ড প্যানে সেট করে তার উপর স্টিলের টিফিন বক্সটি রাখুন।
৬. বাটির ঢাকনা ভালোভাবে আটকাবেন এবং পানি যেন ভেতরে না যেতে পারে সেদিকে খেয়াল রাখবেন।
৭. চুলার আঁচ মিডিয়াম রাখুন, ১৫-২০ মিনিট অপেক্ষা করে চেক করুন পুডিং জমেছে কি না।
৮. পুডিং জমে গেলে চুলা নিভিয়ে দিন। এরপর রুম টেম্পারেচারে ঠাণ্ডা করে নিতে হবে।
ব্যস, আমের পুডিং বানানো হয় গেলো! চাইলে ফ্রিজে রেখে ম্যাংগো পুডিং ভালোভাবে সেট করে নিতে পারেন। সেট হয়ে গেলে টিফিন বক্স থেকে পুডিংটি একটি প্লেটে সাবধানে উল্টিয়ে ঢেলে নিন। এবার ছুরি দিয়ে পিস পিস করে কেটে সার্ভ করুন। আর এটি ঠাণ্ডা ঠাণ্ডা খেতে কিন্তু বেশি মজা লাগে। সব উপকরণগুলো বাসাতে থাকলে আজই বানিয়ে নিন দারুন মজাদার ডেজার্টটি।
জেএইচ
মন্তব্য করতে লগিন করুন লগিন