অপরাধ
সমকামী ডেটিং অ্যাপের ফাঁদে ফেলে ইমতিয়াজকে হত্যা
ঢাকার তেজগাঁওয়ের স্থপতি ইমতিয়াজ মোহাম্মদ ভূঁইয়াকে হত্যার ঘটনায় তৃতীয় লিঙ্গের নারীসহ ৫ জন জড়িত ছিলেন। সমকামী ডেটিং অ্যাপের ফাঁদে ফেলে ইমতিয়াজকে হত্যা করেছে তারা। ইতোমধ্যে ৩ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বললেন ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) তেজগাঁও বিভাগের উপকমিশনার গোলাম সবুর।
সোমবার (২৭ মার্চ) গণমাধ্যমকে এ তথ্য জানান তিনি।
ডিবির উপকমিশনার গোলাম সবুর জানান, সমকামী ডেটিং অ্যাপের মাধ্যমে তিন সন্তানের জনক ইমতিয়াজের পরিচয় হয় আলিফ নামের এক তরুণের সঙ্গে। তার ডাকে ৭ মার্চ দুপুরে ক্রিসেন্ট রোডের একটি বাসায় যান তিনি। বাসাটি ছিল আরাফাত ও তার তৃতীয় লিঙ্গের সঙ্গী মেঘের। সেখানে ‘পূর্ব-পরিকল্পনা’ মতো ইমতিয়াজের ওপর হামলে পড়ে আরাফত, মেঘ এবং মুন্না। আটকে রেখে অর্থ দাবি করলে ইমতিয়াজ দিতে অস্বীকৃতি জানান। এতে বেদম মারধর এবং অত্যাচারের শিকার হয়ে একপর্যায়ে মারা যান ইমতিয়াজ।
আসামীদের জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, আসামীরা সমকামী এবং হিজড়া সদস্য। তারা একটি গে চ্যাটিং অ্যাপস এর মাধ্যমে পূর্ব হতে সমকামী বিভিন্ন লোকজনকে রুম ডেটের কথা বলে টার্গেট করে বাসায় ডেকে নিয়ে বিভিন্ন কায়দায় তাদের ব্লাকমেইল করে টাকা পয়সাসহ গুরুত্বপূর্ণ জিনিস পত্র ছিনিয়ে নিয়ে আসছে।
ইমতিয়াজ মোহাম্মদ ভূইয়া এর সাথে আলিফের গে চ্যাটিং অ্যাপস এর মাধ্যমেই সম্পর্ক তৈরি হয়। তারই সূত্র ধরে গত ৭ মার্চ দুপুরে আসামী আলিফকে ইমতিয়াজ ফোন করলে তাকে কলাবাগান থানার ক্রিসেন্ট রোডের আরাফাতের বাসায় যেতে বলা হয়।
ইমতিয়াজ সেখানে গেলে আলিফ তাকে নিয়ে রুমের ভেতর আপত্তিকর অবস্থায় থাকাকালীন পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী আরাফাত, মেঘ, মুন্না ও আনোয়ার রুমে প্রবেশ করে ওই ইস্যুকে কেন্দ্র করে ভিকটিমকে মারধর শুরু করে এবং বড় অংকের অর্থ দাবি করে। ইমতিয়াজ টাকা দিতে অস্বীকার করলে আসামীরা তার বুকে পিঠে আঘাতসহ প্রচণ্ড মারধর করে। যার কারণে ইমতিয়াজের মৃত্যু হয়।
এ ঘটনা ধামাচাপা দিতে মগবাজার থেকে একটি প্রাইভেটকার নিয়ে আসে মেঘ। আরাফাত ডেকে আনে আনোয়ারকে। ইমতিয়াজের মরদেহ পেছনে ঢুকিয়ে সুবিধাজনক একটি স্থান খুঁজতে থাকে তারা। একসময় মুন্সীগঞ্জ জেলার সিরাজদিখান থানা এলাকার কামারকান্দা গ্রামের নবাবগঞ্জ হাইওয়ে রোডের পাশে ঝোপে মরদেহটি ফেলে যে যার মত গা ঢাকা দেয়। কিন্তু শেষ রক্ষা হয়নি।
ডিবির তেজগাঁও বিভাগের নেতৃত্বে টানা অপারেশনে গ্রেপ্তার হয় মেঘ, আনোয়ার ও মুন্না। তাদের দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে নারায়ণগঞ্জ বন্দর থানার একটি গ্যারেজ থেকে হত্যাকাণ্ডের সময় ব্যবহৃত একটি গাড়ি জব্দ করা হয়। তবে আরাফত আর আলিফ পালিয়ে গেছে ভারতে।
চক্রটি এভাবে ডেটিং অ্যাপের ফাঁদে ফেলে বহু মানুষের কাছ থেকে হাতিয়ে নিয়েছে কোটি কোটি টাকা।
এর আগে গেলো ৭ মার্চ সন্তানদের স্কুল থেকে বাসায় দিয়ে কাজে বেরিয়ে নিখোঁজ হন স্থপতি ইমতিয়াজ। সম্ভাব্য সকল যায়গায় খুঁজেও স্বামীকে না পেয়ে কলাবাগান থানায় জিডি করেন ইমতিয়াজের অসহায় স্ত্রী স্থপতি ফাহমিদা।
ওদিকে সপ্তাহ পেরিয়ে যায়। স্বামী ঘরে ফেরে না। যতক্ষণে নিখোঁজ স্বামীর সন্ধান মিলল, ততক্ষণে বেওয়ারিশ হিসেবে দাফন হয়ে গেছেন ইমতিয়াজ।
ইমতিয়াজ ঢাকার তেজগাঁও থানা এলাকার মোহাম্মদ হোসেন ভূঁইয়ার ছেলে। তিনি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও বাড়ির নকশার কাজ করতেন। তার স্ত্রী, এক ছেলে ও দুই মেয়ে রয়েছে। ৭ মার্চ বাড়ি থেকে বের হয়ে তিনি নিখোঁজ হন। এ নিয়ে ৮ মার্চ তার স্ত্রী ফাহামিদা আক্তার কলাবাগান থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন।
পরদিন মুন্সিগঞ্জের সিরাজদিখানের একটি ঝোপের ভেতর থেকে ইমতিয়াজের মরদেহ উদ্ধার হয়। তবে পরিবার তা জানতে পারেনি। বেসরকারি একটি টেলিভিশনে ইমতিয়াজ নিখোঁজের বিষয়ে প্রতিবেদন সম্প্রচারিত হলে ১০ দিন পর পরিবার জানতে পারে, ইমতিয়াজ মোহাম্মদ খুন হয়েছেন। সিরাজদিখানে যে ক্ষতবিক্ষত মরদেহ উদ্ধার হয়েছে, তা ইমতিয়াজের। পরে আদালতের অনুমতিতে ওই মরদেহ উদ্ধার করে শনাক্ত করেছেন ইমতিয়াজের স্বজনেরা।
অপরাধ
রাজধানীতে বস্তা ভর্তি টাকাসহ একটি গাড়ি আটক করলেন শিক্ষার্থীরা
রাজধানীর উত্তরায় একটি প্রাইভেটকার থেকে এক বস্তা টাকাসহ একটি শটগান উদ্ধার করেছেন শিক্ষার্থীরা। এই ঘটনায় তিনজনকে হেফাজতে নিয়েছে নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা।
বুধবার (৭ আগস্ট) এ সংক্রান্ত একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা গণমাধ্যমে জানান, রাজধানীর উত্তরার একটি বাসার গ্যারেজ থেকে গাড়িটি জব্দ করা হয়। এ সময় তিনজনকে হেফাজতে নেয় নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা। পরে গাড়ি থেকে এক বস্তা টাকা উদ্ধার করে হেফাজতে নেন নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা। এ সময় স্থানীয় জনতা ও শিক্ষার্থীরা উল্লাস করেন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা আরও জানান, আওয়ামী লীগ ঘরোয়ানার একটি ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠানের এমডির গাড়ি থেকে এ টাকা উদ্ধার করা হয়েছে। গাড়ি থেকে এক বস্তা টাকাসহ একটি শটগান উদ্ধার করে উত্তরা টাউন কলেজের শিক্ষার্থীসহ অনান্য বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।
এএম/
অপরাধ
কাশিমপুর কারাগার থেকে পালিয়েছে ২০৯ বন্দি, নিহত ৬
গাজীপুরের কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে ২০৯ জন বন্দি পালিয়েছেন। পালিয়ে যাওয়ার সময় নিরাপত্তাকর্মীদের গুলিতে ছয়জন বন্দি নিহত হয়েছেন।
বুধবার (৭ আগস্ট) বিকেলে কাশিমপুর হাই সিকিউরিটি কেন্দ্রীয় কারাগারের সিনিয়র জেল সুপার সুব্রত কুমার বালা গণমাধ্যমকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান,গেলো মঙ্গলবার বিকেলে কাশিমপুর হাই সিকিউরিটি কেন্দ্রীয় কারাগারের বন্দিরা কারাগার ভেঙে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। কারারক্ষীরা তাদের নিভৃত করার চেষ্টা করলে বন্দিরা কারারক্ষীদের ওপর চড়াও হয়। বন্দিদের কেউ দেয়াল ভেঙে, কেউ দেয়াল টপকে, আবার কেউ দেয়ালের সঙ্গে বিদ্যুতের পাইপ লাগিয়ে কারারক্ষীদের মারধর করে পালিয়ে যেতে চান।
একপর্যায়ে সেনাবাহিনীকে খবর দিলে তারা কমান্ডো অভিযান চালিয়ে বিদ্রোহ দমন করেন।এসময়ে বন্দিদের মধ্যে ২০৯ জন দেয়াল টপকে পালিয়ে গেছে।বন্দিদের ঠেকাতে নিরাপত্তাকর্মীদের গুলিতে ছয়জনের মৃত্যু হয়েছে। নিহতদের ময়নাতদন্তের জন্য গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।
প্রসঙ্গত, নিহতদের নাম পরিচয় পরে জানানো হবে বলে জানিয়েছেন সিনিয়র জেল সুপার।
আই/এ
অপরাধ
কাশিমপুর কারাগারে তীব্র উত্তেজনা, সেনাবাহিনীর শক্ত অবস্থান
গাজীপুরের কাশিমপুর হাইসিকিউরিটি কেন্দ্রীয় কারাগারের ভেতরে বন্দিরা মুক্তির দাবিতে উত্তেজনা শুরু করেছেন। কারারক্ষীদের জিম্মি করে অনেকে দলবদ্ধভাবে বের হয়ে আসার চেষ্টা করছেন। খবর পেয়ে সেনা সদস্যরা এসে প্রাথমিকভাবে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন।
মঙ্গলবার (৬ আগস্ট) দুপুরের দিকে এ পরিস্থিতি দেখা গেছে। এসময়ে ওই এলাকার আকাশে হেলিকপ্টার চক্কর দিতে দেখা যায়।
কারা কর্তৃপক্ষ জানান, কাশিমপুর কারা কমপ্লেক্সে পৃথক চারটি কারাগার রয়েছে। এর মধ্যে বিডিআর বিদ্রোহ মামলার সাজাপ্রাপ্ত আসামি, ফাঁসি ও যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত দুর্ধর্ষ জঙ্গি বন্দিরা রয়েছে। এছাড়া রাজনৈতিক মামলায় গ্রেপ্তার অনেক নেতাকর্মীও ওই কারাগারে রয়েছে।
জানা যায়, বেলা ১১টার দিকে কিছু বন্দি কারাগারের অভ্যন্তরে থাকা কারারক্ষীদের জিম্মি করে মুক্তির দাবিতে বিদ্রোহ শুরু করে। এসময়ে কারারক্ষীরা তাদের শান্ত করার চেষ্টা করে ব্যর্থ হন। আগে থেকেই সেখানে অল্প সংখ্যক সেনাবাহিনীর সদস্যরা তাদের নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করেন। উত্তেজনা আরও বেড়ে গেলে দুপুর দেড়টার দিকে অতিরিক্ত সেনা সদস্য হেলিকপ্টার যোগে কারা অভ্যন্তরে এসে বন্দিদের নিয়ন্ত্রণ করেন।
প্রসঙ্গত, কারা অভ্যন্তরে বিদ্রোহের খবর পেয়ে বন্দিদের স্বজনরা সকাল থেকেই কারাগারের সামনে অবস্থান করেন। এ সময় তাদের সঙ্গে আন্দোলনকারীরা যোগ দিয়ে বিক্ষোভ করে। কারাগারের বাইরে একটি ঝুট গুদামে অগ্নিসংযোগ করা হয়। পরে সেনা সদস্যরা বাইরের বিক্ষোভকারীদের ধাওয়া করে ছত্রভঙ্গ করে দেন।
আই/এ
মন্তব্য করতে লগিন করুন লগিন