আন্তর্জাতিক
জাতিসংঘে ইউক্রেন ইস্যুতে ভোট দেয়নি বাংলাদেশ-ভারত
ইউক্রেন ইস্যুতে জাতিসংঘের একটি প্রস্তাবে ভোট দেয়নি বাংলাদেশ। ওই একই প্রস্তাবে ভোটদান থেকে বিরত ছিল ভারতও। ইউক্রেনে কথিত যুদ্ধাপরাধের তদন্তের মেয়াদ আরও এক বছর বাড়ানোর জন্য এই মঙ্গলবার (৪ এপ্রিল) এই ভোটাভুটি অনুষ্ঠিত হয়। অবশ্য বাংলাদেশ-ভারতসহ বেশ কয়েকটি দেশ ভোটদান থেকে বিরত থাকলেও প্রস্তাবটি পাস হয়েছে।
বুধবার (৫ এপ্রিল) ভারতীয় বার্তাসংস্থা এএনআইয়ের বরাত দিয়ে এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রাশিয়ার আগ্রাসনের জেরে শুরু হওয়া যুদ্ধে ইউক্রেনে কথিত যুদ্ধাপরাধের তদন্তের মেয়াদ আরও এক বছর বাড়ানোর জন্য জাতিসংঘের মানবাধিকার কাউন্সিলের (ইউএনএইচআরসি) প্রস্তাবে এদিন ভোট দেয়া থেকে বিরত থাকে বাংলাদেশ, ভারতসহ বেশ কয়েকটি দেশ।
এনডিটিভি বলছে, এরপরও ভোটাভুটিতে জাতিসংঘের ওই প্রস্তাবটি পাস হয়। ভোটাভুটিতে ২৮টি দেশ খসড়া প্রস্তাবের পক্ষে ভোট দেয়। বাংলাদেশ-ভারত-পাকিস্তানসহ ১৭টি দেশ ভোটদান থেকে বিরত ছিল। আর মাত্র দু’টি দেশ এ প্রস্তাবের বিপক্ষে ভোট দেয়। প্রস্তাবের বিরুদ্ধে অবস্থান নেয়া দেশ দু’টি হচ্ছে চীন ও ইরিত্রিয়া।
ভোটাভুটির পর জাতিসংঘে নিযুক্ত ইউক্রেনের স্থায়ী প্রতিনিধি সের্গি কিসলিৎসিয়া টুইট করে ধন্যবাদ জানান। সেখানে তিনি বলেন, ‘রাশিয়ার আগ্রাসনের জেরে উদ্ভূত ইউক্রেনে মানবাধিকার পরিস্থিতির সমর্থনে খসড়া প্রস্তাবের পক্ষে ভোট দেয়ায় জাতিসংঘের মানবাধিকার কাউন্সিলের প্রতিনিধিদের আমরা অভিবাদন জানাই। মাত্র দু’টি দেশ এ প্রস্তাবের বিপক্ষে ছিল। এবার যুদ্ধাপরাধের জবাবদিহিতা হবে!’
অবশ্য এর আগেও রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ ইস্যুতে বিভিন্ন সময় ভোটদান থেকে বিরত ছিল বাংলাদেশ-ভারত। এর আগে চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে ভোটাভুটির মাধ্যমে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদ ‘বিস্তৃত, ন্যায্য এবং স্থায়ী শান্তি’ প্রতিষ্ঠা এবং ইউক্রেন থেকে রাশিয়ার সৈন্য প্রত্যাহার ও যুদ্ধ বন্ধ করার দাবি জানিয়ে একটি প্রস্তাব গৃহীত করে।
ওই প্রস্তাবে বলা হয়, জাতিসংঘের সনদ মেনে ইউক্রেনে দীর্ঘস্থায়ী শান্তি প্রতিষ্ঠিত হোক। সেসময় ১৪১ টি দেশ এই প্রস্তাবের পক্ষে ভোট দেয়। সাতটি দেশ বিপক্ষে ভোট দেয়। ভারত, বাংলাদেশ এবং পাকিস্তানসহ ৩২টি দেশ ভোটদান থেকে বিরত ছিল।
তবে ভোটদান থেকে বিরত থাকার কারণ হিসেবে সেসময় বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় দাবি করেছিল, জাতিসংঘের ওই প্রস্তাবে ইউক্রেনে শান্তি প্রতিষ্ঠায় টেকসই ও বাস্তবসম্মত পথরেখা না থাকায় ভোটদানে বিরত ছিল বাংলাদেশ।
এছাড়া একই কারণ ব্যাখ্যা করতে গিয়ে সেসময় জাতিসংঘে নিযুক্ত ভারতের স্থায়ী প্রতিনিধি রুচিরা কাম্বোজ বলেছিলেন, ভারত সংলাপ ও কূটনীতির আহ্বান পুনর্ব্যক্ত করে বহুপাক্ষিকতার প্রতি প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
অন্যদিকে রাশিয়ার ইউক্রেন আগ্রাসনের শুরু থেকে চীনা নানা সময়ই জাতিসংঘে বিভিন্ন প্রস্তাবের বিপক্ষে ভোট দিয়েছে। মঙ্গলবারের ভোটাভুটিতেও তারা প্রস্তাবের বিপক্ষে ভোট দেয়।
মূলত গেলো বছরের ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে আক্রমণের কয়েকদিন আগে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সাথে দেখা করার জন্য বেইজিং সফর করেছিলেন। তবে ঠিক সেই সময়ই রাশিয়ার সামরিক বাহিনীর ট্যাংকগুলো ইউক্রেনের সীমান্তে জড়ো হচ্ছিল।
উভয় নেতা সেসময় চীন-রাশিয়ার অংশীদারিত্বে ‘কোনও সীমা’ না রাখার ব্যাপারে সম্মত হন। এছাড়া ইউক্রেন আগ্রাসন শুরু হওয়ার পর থেকে রাশিয়ার সঙ্গে চীনের অর্থনৈতিক সম্পর্কও অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে।
অবশ্য চীন এখন পর্যন্ত রাশিয়া-ইউক্রেন সংঘাতে নিজেকে নিরপেক্ষ দেশ হিসেবে চিত্রিত করার চেষ্টা করে এসেছে এবং পূর্ব ইউরোপের এ দেশটিতে রুশ আগ্রাসন শুরুর পর থেকে সেটির নিন্দাও জানায়নি বেইজিং। এমনকি রাশিয়ার আগ্রাসনকে ‘আক্রমণ’ বলা থেকেও বিরত রয়েছে চীন।
আন্তর্জাতিক
যুক্তরাষ্ট্র অন্তর্বর্তী সরকারের সঙ্গে কাজ করতে প্রস্তুত : মার্কিন মুখপাত্র
অন্তর্বর্তী সরকার এবং ড. ইউনূসের সঙ্গে কাজ করতে প্রস্তুত। অন্তর্বর্তী সরকার বাংলাদেশের জনগণের জন্য গণতান্ত্রিক ভবিষ্যৎ নির্ধারণ করবে বলে জানিয়েছেন, মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার।
স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের নিয়মিত সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন তিনি।
প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের শপথ নেয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে মিলার বলেন, বাংলাদেশের জন্য আজ একটি শুভ দিন। নোবেল বিজয়ী অধ্যাপক ইউনূস সবেমাত্র বাংলাদেশ সরকারের প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেছেন।
যুক্তরাষ্ট্র এ সরকারকে অভিননন্দ জানিয়েছে কি না এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের চার্জ ডি’অ্যাফেয়ার্স আজ শপথ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন এবং তারা সাম্প্রতিক সহিংসতা বন্ধের জন্য ড. ইউনুসের আহ্বানকে স্বাগত জানাচ্ছেন।
প্রসঙ্গত, এসময়ে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাংলাদেশের নতুন অন্তর্বর্তী সরকারের যোগাযোগ হয়েছে বলেও জানান ম্যাথিউ মিলার। তবে কোন বিষয়ে যোগাযোগ হয়েছে তিনি সে বিষয়ে বিস্তারিত বলেন নি।
আই/এ
এশিয়া
জাপানে ৭.১ মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্প
জাপানের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় এলাকায় রিখটার স্কেলে ৭ দশমিক ১ মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্প আঘাত হেনেছে।
বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) স্থানীয় সময় বিকেল ৪টা ৪৩ মিনিটের দিকে পশ্চিমাঞ্চলীয় প্রধান দ্বীপ কিয়ুশুর মিয়াজাকি অঞ্চলে ভূমিকম্পটি আঘাত হানে।
জাপানের আবহাওয়া সংস্থার (জেএমএ) বরাত দিয়ে দেশটির রাষ্ট্রায়ত্ত সংবাদমাধ্যম এনএইচকে ওয়ার্ল্ড এ তথ্য জানিয়েছে।
খবরে বলা হয়েছে, ভূমিকম্পের পর দেশটিতে সুনামির সতর্কতা জারি করা হয়েছে। মিয়াজাকিতে সমুদ্রের ঢেউ ইতোমধ্যে ৫০ সেন্টিমিটারে পৌঁছেছে। তবে তাৎক্ষণিকভাবে বড় ধরনের কোনো ক্ষয়ক্ষতি কিংবা হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি।
এ বিষয়ে দেশটির মন্ত্রিপরিষদের মুখ্য সচিব ইয়োশিমাসা হায়াশি গণমাধ্যমকে বলেন, ভূমিকম্পের পর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্ল্যান্টগুলোতে কোনো ধরনের অস্বাভাবিক ঘটনা দেখা যায়নি। সরকার ভূমিকম্পে ক্ষয়ক্ষতি ও হতাহতের বিষয়ে খোঁজখবর নিচ্ছে।
প্রসঙ্গত, জাপানে ভূমিকম্পের ঘটনা একেবারে সাধারণ। বিশ্বে ৬ বা তার চেয়ে বেশি মাত্রার ভূমিকম্পের প্রায় এক-পঞ্চমাংশই এদেশে ঘটে থাকে।
এর আগে, ২০১১ সালের ১১ মার্চ দেশটির উত্তর-পূর্ব উপকূলে ৯ মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্প আঘাত হানে। যেটি ছিলো জাপানের ইতিহাসে সবচেয়ে শক্তিশালী ভূমিকম্প। ওই সময় ভূমিকম্পের পর দেশটিতে বিশাল সুনামি আঘাত হানে।
সূত্র: রয়টার্স
জিএমএম/
আন্তর্জাতিক
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে জনগণের ইচ্ছাকে প্রাধান্য দিতে হবে: যুক্তরাষ্ট্র
বাংলাদেশের পরিস্থিতির উন্নয়নের ব্যাপারটি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করছে। ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার যেনো গণতন্ত্র, আইন ও বাংলাদেশি জনগণের আকাঙ্খা পূরণ করে-এমনটাই চাইছে যুক্তরাষ্ট্র।
স্থানীয় সময় বুধবার (৭ আগস্ট) ওয়াশিংটনে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের নিয়মিত ব্রিফিংয়ে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে যুক্তরাষ্ট্রে এমনটাই আশা করে বলে জানিয়েছেন মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার। এদিন যুক্তরাষ্ট্রপ্রবাসী ইরাকের এক সাংবাদিক জানতে চান, ‘বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান হিসেবে ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। বাংলাদেশে তার বা অন্যদের সঙ্গে আপনাদের যোগাযোগ হয়েছি কী? বাংলাদেশের স্থিতিশীলতা পরিস্থিতিকে আপনি কীভাবে মূল্যায়ন করবেন?’
জবাবে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার বলেন, ‘আমরা এখনও যোগাযোগ করেনি। আমরা বাংলাদেশের পরিস্থিতির উন্নয়ন পর্যবেক্ষণ অব্যাহত রাখছি এবং আমরা এরইমধ্যে দেখেছি অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান হিসেবে ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। আমরা মনে করি তার নেতৃত্বে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার বাংলাদেশে দীর্ঘমেয়াদি শান্তি ও রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা প্রতিষ্ঠায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। আপনি নিশ্চয়ই মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে বলতে শুনেছেন যে. অন্তর্বর্তীকালীন সরকার যে সিদ্ধান্ত নেবে তা যেনো গণতান্ত্রিক নীতিমালাকে, আইনের শাসন এবং সিদ্ধান্তে বাংলাদেশি জনগণের ইচ্ছা প্রতিফলিত হয়।
এসময় যুক্তরাষ্ট্রপ্রবাসী বাংলাদেশি সাংবাদিক মুশফিকুল ফজল আনসারী একটি প্রশ্ন করেন। তার প্রশ্নটি ছিল, আপনি কি জানেন যে স্বৈরশাসক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পুত্র ভার্জিনিয়ায় অবস্থান করে নতুন সরকারকে হুমকি দিচ্ছেন, সহিংসতা উসকে দিচ্ছেন? তিনি সাবেক স্বৈরশাসক শেখ হাসিনার তথ্য ও প্রযুক্তি বিষয়ক উপদেষ্টা ছিলেন যিনি বাংলাদেশে ইন্টারনেট বন্ধ করে দিয়েছিলেন। দয়াকরে তার ব্যাপারে আপনার মন্তব্য জানাবেন কী?’
জবাবে ম্যাথিউ মিলার বলেন, মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র বলেন, ‘একজন সাধারণ নাগরিকের বিবৃতি নিয়ে আমার কোনো মন্তব্য নেই। আমি এরইমধ্যে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কথা বলেছি এবং আমরা দেখতে চাই এই সরকার কী পদক্ষেপ নিয়ে এগিয়ে যায়।
এসময় মুশফিকুল ফজল আনসারী আরও জানতে চান, ‘দেশের শান্তি প্রতিষ্ঠায় এবং একটি অবাধ, নিরপেক্ষ ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের নতুন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে প্রত্যাশা নিয়ে আপনার কী মন্তব্য?
জবাবে ডিপার্টমেন্ট অফ স্টেটের মুখপাত্র বলেন, শনের প্রশ্নের উত্তরে আমি যেমনটি বলেছি – অন্তর্বর্তীকালীন সরকার যখন কোনো সিদ্ধান্ত নেয়, আমরা দেখতে চাই ওই সিদ্ধান্তে যেনো গণতান্ত্রিক নীতি মেনে চলা হয় এবং জনগণের ইচ্ছার প্রতিফলন ঘটে।
মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের নিয়মিত ওই ব্রিফিংয়ে ফিলিস্তিনের গাজা, দক্ষিণ আমেরিকার ভেনিজুয়েলা, ইরাক ও ইরানের পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা হয়।
এমআর//
মন্তব্য করতে লগিন করুন লগিন