জাতীয়
ইসলামের মর্মবাণী সঠিকভাবে প্রচারের উদ্দেশ্যে মডেল মসজিদ নির্মাণ: প্রধানমন্ত্রী
ইসলামের মর্মবাণী যেন সঠিকভাবে প্রচার করা যায়, সে জন্য মডেল মসজিদ নির্মাণ করা হয়েছে। বলেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
সোমবার (১৭ এপ্রিল) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি সংযুক্ত হয়ে ইসলামি সাংস্কৃতিক কেন্দ্র ও মডেল মসজিদ উদ্বোধন অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, এ মডেল মসজিদ নির্মাণ করা হয়েছে ইসলাম ধর্মের সঠিক চর্চাটা যাতে হয় এবং ইসলাম ধর্মের মর্মবাণীটা যাতে মানুষ সঠিকভাবে জানতে পারে, বুঝতে পারে এবং গ্রহণ করতে পারে, সে কারণে।
শেখ হাসিনা বলেন, ২০১৪ সালে নির্বাচনী ইশতেহারে ঘোষণা দিয়েছিলাম প্রতিটি জেলা, উপজেলা, পৌরসভায় মডেল মসজিদ নির্মাণ করা হবে এবং ইসলামিক সংস্কৃতিক কেন্দ্র স্থাপন করা হবে, সেটা পর্যায়ক্রমে করে দেয়া হচ্ছে।
যেকোনো দুর্যোগ মোকাবিলায় আলেম-ওলামারা মানবতার কান্ডারি হিসেবে দায়িত্ব পালন করে থাকেন, এ কথা জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আপনাদের কাছে একটাই অনুরোধ, কোমলমতি ছেলেদের কেউ যেন বিভ্রান্তির পথে নিয়ে না যায় এবং জঙ্গিপথে নিয়ে যেতে না পারে; ইসলাম যে শান্তির ধর্ম সেটা তাদের বোঝাতে হবে।
‘তাদের বোঝাতে হবে ইসলাম ধর্ম যে শান্তির ধর্ম, মানুষ খুন করে কখনো বেহেশতে যাওয়া যায় না, নিরীহ মানুষকে খুন করলে দোজখের আগুনে পুড়তে হয়, এ বিষয়গুলো সম্পর্কে তাদের সচেতন করতে হবে। আলেম-ওলামাদের সমাজের সাধারণ মানুষ শ্রদ্ধার চোখে দেখেন, তাই আপনাদের কথার গুরুত্ব রয়েছে সমাজে। তাই মাদকাসক্তি, জঙ্গিবাদ থেকে তাদের ফেরাতে সমাজের সচেতনতামূলক বার্তা পৌঁছে দিতে হবে আপনাদের।’
এদিন ৫০টি মডেল মসজিদ ও ইসলামি সাংস্কৃতিক কেন্দ্র উদ্বোধন করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর দেখানো পথেই দেশে ইসলাম ধর্মের প্রচার-প্রসারে কাজ করছে বর্তমান সরকার।
ইসলাম ধর্মের সঠিক চর্চা ও এর মূল্যবোধ অনুধাবনের জন্যই মডেল মসজিদগুলো গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে – এ কথা জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ইসলাম শান্তির ধর্ম; কিছু মানুষ সন্ত্রাস-জঙ্গিবাদের মাধ্যমে এ ধর্মকে প্রশ্নবিদ্ধ করছে।
যেকোনো দুর্যোগ মোকাবিলায় আলেম-ওলামাগণ মানবতার কান্ডারি হিসাবে দায়িত্ব পালন করে থাকেন – এ কথা জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আপনাদের কাছে একটাই অনুরোধ থাকবে, সন্ত্রাস-জঙ্গিবাদ মানুষকে বিভ্রান্ত করে জীবন কেড়ে নেয়; এখান থেকে মানুষকে বিরত রাখার সব উদ্যোগ নিতে হবে আপনাদের। মাদক ও বাল্যবিবাহের মত সামাজিক সমস্যা প্রতিরোধে সচেতনতা সৃষ্টিতেও এসব ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্র গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।’
শান্তির ধর্ম ইসলামের মর্মকথা সবার মাঝে ছড়িয়ে দিতেই দেশব্যাপী মডেল মসজিদ নির্মাণের উদ্যোগ বাস্তবায়ন করা হচ্ছে – একথা জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ইসলামিক ভাবধারায় এ দেশের মুসলমানরা যাতে ধর্মচর্চার মাধ্যমে সুনাগরিক হিসেবে গড়ে উঠতে পারে, সেটাই আমাদের লক্ষ্য।
তিনি আরও বলেন, কোমলমতি প্রজন্ম যাতে বিপথে না যায়, সেদিকে খেয়াল রাখতে আলেম-ওলেমারা কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারেন। মানুষ হত্যা করে বেহেশতে যাওয়া যায় না। পাশাপাশি মাদক থেকে নতুন প্রজন্মকে রক্ষা করার ক্ষেত্রেও মসজিদগুলো বড় ভূমিকা রাখতে পারে। ইসলামের মত শান্তির ধর্ম আর নেই।
নারীর প্রতি সহিংসতা রোধেও এ সাংস্কৃতিক কেন্দ্রগুলো ভূমিকা রাখবে – এ কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির দেশ আমাদের। এখানে সবার সমান অধিকার আছে, যার যার ধর্ম পালনের। পবিত্র ইসলাম ধর্মকে যাতে কেউ কলুষিত করতে না পারে, সেজন্য সজাগ থাকতে হবে আলেমদের। মসজিদসহ সর্বক্ষেত্রে বিদ্যুৎ-পানির অপব্যবহার রোধে সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে।
ইসলাম চর্চার সব আধুনিক বন্দোবস্ত রয়েছে এসব মডেল মসজিদে বলেও জানান প্রধানমন্ত্রী। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ধর্মবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী মো. ফরিদুল হক খান এমপি।
চতুর্থ পর্যায়ে অর্ধশত মডেল মসজিদ উদ্বোধন করা হলো। ২০১৭ সালে সরকার দেশের প্রতিটি জেলা ও উপজেলায় ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্র ও মডেল মসজিদ স্থাপন করতে ৯ হাজার ৪৩৫ কোটি টাকার একটি প্রকল্প গ্রহণ করে।
‘প্রতিটি জেলা ও উপজেলায় একটি করে ৫৬৪টি মডেল মসজিদ ও ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্র স্থাপন’ শীর্ষক (দ্বিতীয় সংশোধিত) এ প্রকল্পটির মেয়াদ ২০২৪ সালের জুন পর্যন্ত। এরই মধ্যে ২০২১ সালের ৭ ডিসেম্বর প্রথম পর্যায়, ২০২৩ সালের ১৬ জানুয়ারি দ্বিতীয় পর্যায় এবং ২০২৩ সালের ১৬ মার্চ তৃতীয় পর্যায়ে ৫০টি করে মোট ১৫০টি মডেল মসজিদ ও ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্র স্থাপন করা হয়েছে।
জাতীয়
শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা জানালেন অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টারা
শপথ নেয়ার পরের দিন ভাষা শহীদদের স্মরণে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা নিবেদন করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টারা।
শুক্রবার (৯ আগস্ট) বেলা ১১টার দিকে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ১৩ জন উপদেষ্টা নিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।
এর আগে, সাভারে জাতীয় স্মৃতিসৌধে মহান মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান ও অন্য উপদেষ্টারা।
গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান হিসেবে শপথ নেন ড. মুহাম্মদ ইউনূস। দায়িত্ব নেওয়ার পর তিনি এক নতুন বাংলাদেশ উপহার দেওয়ার অঙ্গীকার করেন।
আই/এ
জাতীয়
উপদেষ্টা পরিষদকে অভিনন্দন জানালেন জাসদ
জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল—জাসদের সভাপতি হাসানুল হক ইনু ও সাধারণ সম্পাদক শিরীন আখতার অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মোহাম্মদ ইউনুস এবং অন্য উপদেষ্টাদেরকে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়েছেন
বৃহস্পতিবার ( ৮ আগস্ট ) রাতে দলের পক্ষ থেকে পাঠানো এক বিবৃতিতে এ অভিনন্দন জানান তারা।
বিবৃতিতে জানানো হয়, “অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দায়িত্ব গ্রহণ করার পর দেশে আর একটিও প্রাণহানি, হামলা ও সম্পদ ধ্বংসের ঘটনা যেন না ঘটে তা নিশ্চিত হবে।”
বিবৃতিতে আরও বলেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার রাষ্ট্রীয় চার মূলনীতিসহ সংবিধানকে সমুন্নত রেখে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন এবং রাজনৈতিক ও সামাজিক শক্তির সাথে আলোচনা করে সরকারের কর্ম পরিকল্পনার রূপরেখা দ্রুত প্রকাশ করে বিদ্যমান অনিশ্চয়তা ও অস্থিরতা প্রশমিত করবেন।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রাথমিক ও প্রধান কাজ হিসেবে অনতিবিলম্বে দেশে আইনশৃঙ্খলা পুনঃপ্রতিষ্ঠা করার এবং জনগণের জানমালের নিরাপত্তা নিশ্চিত করে জনজীবনে স্বাভাবিকতা ও শান্তি ফিরিয়ে আনতে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানিয়েছেন।
জাসদ নেতৃবৃন্দ অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নিহত শিক্ষার্থী, সাধারণ মানুষ, সাংবাদিক পুলিশ বাহিনীর সদস্যসহ প্রতিটি হত্যাকাণ্ডের সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার নিশ্চিত করার আহ্বান জানান।
জাসদ জোর দাবি জানান, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে পূর্ববর্তী সরকারের পদত্যাগের পর দেশের বিভিন্ন স্থানে চলমান বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও পুলিশ বাহিনীর সদস্যসহ পেশাজীবী ও হিন্দু ও আহমদীয়াসহ ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের ওপর হামলা ও হত্যা করা, মন্দিরসহ ধর্মীয় স্থাপনায় হামলা, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের কার্যালয়ে ও নেতাকর্মীদের বাসাবাড়িতে হামলা-হত্যা-নির্যাতন, ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান ও ঘরবাড়িতে হামলা ও অগ্নিসংযোগ, সংসদ ভবন ও প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় ও গণভবনসহ বিভিন্ন সরকারি স্থাপনায় হামলা, ভাঙচুর, লুটপাট, অগ্নিসংযোগ, ধানমন্ডি ৩২ নম্বরের ঐতিহাসিক বঙ্গবন্ধু ভবন-বঙ্গবন্ধু জাদুঘরে হামলা, লুটপাট, জ্বালিয়ে ছারখার, দেশের বিভিন্ন স্থানে বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য, সাত বীরশ্রেষ্ঠর ভাস্কর্যসহ ভাষা আন্দোলন, স্বাধীনতা সংগ্রাম ও মুক্তিযুদ্ধের স্মারক ভাস্কর্য ও ম্যুরাল ভেঙে ফেলা এবং কুমিল্লার বীরচন্দ্র পাঠাগার, সুনামগঞ্জের ঐতিহ্য জাদুঘর, কুড়িগ্রামের উত্তরবঙ্গে মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর, ময়মনসিংহের ঐতিহাসিক শশীলজের ভেনাস ভাস্কর্য ভেঙে ফেলাসহ অগনিত শিল্পকর্ম ভেঙে ফেলার সব অপরাধ কাণ্ডের সঙ্গে যুক্ত দায়ী ব্যক্তিদের দ্রুত আইনের আওতায় আনার।
জেডএস/
জাতীয়
তদবির থেকে বিরত থাকুন, দেশগঠনে পরামর্শ দিন : আসিফ মাহমুদ
নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে গঠিত হয়েছে ১৭ সদস্যের অন্তবর্তীকালীন সরকার। এ উপদেষ্টা পরিষদে স্থান পেয়েছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের দুইজন প্রতিনিধি। এদের একজন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আসিফ মাহমুদ। তিনি উপদেষ্টা হিসেবে শপথ নেয়ার পর ঘনিষ্ঠজনদের নিজেদের সুবিধার জন্য কোনো আবদার কিংবা তদবির করতে বারণ করেছেন। বরং দেশগঠনে কোনো পরামর্শ থাকলে দেয়ার অনুরোধ করেছেন।
বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) দিবাগত রাতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এক পোস্ট করে এ অনুরোধ করেন।
পোস্টে এই তরুণ উপদেষ্টা লিখেছেন, ব্যক্তিগত লাভের আশায় আবদার, তদবির করা থেকে বিরত থাকুন। এতে করে আমার সাথে আপনার সম্পর্ক নষ্ট হতে পারে। দেশগঠনে পরামর্শ থাকলে জানাবেন।
বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) রাতে নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে ১৭ জনকে নিয়ে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন করা হয়। প্রধান উপদেষ্টা ও অন্য উপদেষ্টাদের শপথ পাঠ করান রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। ঢাকার বাইরে থাকায় তিন উপদেষ্টা ফারুক-ই-আযম, বিধান রঞ্জন রায় এবং সুপ্রদীপ চাকমা শপথ অনুষ্ঠানে উপস্থিত হতে পারেননি।
সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ছাড়া অন্যান্য উপদেষ্টারা হলেন- ১. সালেহ উদ্দিন আহমেদ ২. ড. আসিফ নজরুল ৩. আদিলুর রহমান খান ৪. হাসান আরিফ ৫. তৌহিদ হোসেন ৬. সৈয়দা রেজওয়ানা হাসান ৭. মো. নাহিদ ইসলাম ৮. আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া ৯. ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এম সাখাওয়াত হোসেন ১০. সুপ্রদীপ চাকমা ১১. ফরিদা আখতার ১২. বিধান রঞ্জন রায় ১৩. আ.ফ.ম খালিদ হাসান ১৪. নুরজাহান বেগম ১৫. শারমিন মুরশিদ ১৬. ফারুক-ই-আযম।
জেএইচ
মন্তব্য করতে লগিন করুন লগিন