ছাত্র-শিক্ষক
৭ বছর পর পূর্ণাঙ্গ কমিটি পাচ্ছে ইবি ছাত্রলীগ!
দীর্ঘ ৭ বছর পূর্ণাঙ্গ কমিটি পেতে যাচ্ছে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় (ইবি) ছাত্রলীগ। কমিটি পূর্ণাঙ্গ করতে কর্মীদের কাছ থেকে জীবনবৃত্তান্ত (সিভি) আহ্বান করা হয়েছে। আগামী ২ মে সকাল ১০টায় ক্যাম্পাসের বীরশ্রেষ্ঠ হামিদুর রহমান মিলনায়তনে শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি অথবা সাধারণ সম্পাদক বরাবর সিভি জমা দেয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে। মঙ্গলবার (২৫ এপ্রিল) ইবি ছাত্রলীগের সভাপতি ফয়সাল সিদ্দিকী আরাফাত ও সাধারণ সম্পাদক নাসিম আহমেদ জয় স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তি সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
ক্যাম্পাস ও দলীয় সূত্রে জানা গেছে, সর্বশেষ ২০১৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে সাইফুল ইসলাম সভাপতি, অমিত কুমার দাস সাধারণ সম্পাদক থাকাকালীন ১২১ সদস্য বিশিষ্ট পূর্ণাঙ্গ কমিটি পায় ইবি ছাত্রলীগ। এর আগে ২০১৪ সালের ৩ ডিসেম্বর কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ ইবির ৬ সদস্য বিশিষ্ট একটি আংশিক কমিটি ঘোষণা করে। এরপর ২০১৭ সালের ১৫ এপ্রিল শাহিনুর রহমান শাহিনকে সভাপতি ও জুয়েল রানা হালিমকে সাধারণ সম্পাদক করে দুই সদস্য বিশিষ্ট কমিটি দেয় কেন্দ্র। তারাও কমিটি পূর্ণাঙ্গ করতে পারেননি।
পরবর্তীতে ২০১৯ সালের ১৪ জুলাই রবিউল ইসলাম পলাশকে সভাপতি ও রাকিবুল ইসলাম রাকিবকে সাধারণ সম্পাদক করে দুই সদস্যের কমিটি গঠন হয়। এর তিন মাসের মাথায় সম্পাদক রাকিবের পদ পেতে মোটা অঙ্কের অর্থ লেনদেনের অডিও ক্লিপ ফাঁস হয়। এরপর থেকে আন্দোলনে নামে পদবঞ্চিত গ্রুপের নেতাকর্মীরা। পরে সভাপতি সম্পাদককে-অবাঞ্ছিত ঘোষণা করেন বিদ্রোহী নেতাকর্মীরা। একপর্যায়ে সভাপতি-সম্পাদককে ক্যাম্পাসে ঢুকতে না দেওয়ায় ভঙ্গুর অবস্থার সৃষ্টি হয় দলটির মধ্যে। ফলে তারা পূর্ণাঙ্গ কমিটি তো দূরের কথা। ক্যাম্পাসে এসেও কার্যক্রম পরিচালনা করতে পারেননি।
এদিকে প্রতিটি কমিটিরই দায়িত্ব প্রাপ্তরা বারবার আশ্বাস দিলেও কমিটি পূর্ণাঙ্গ করতে উদ্যোগ দেখা যায়নি বলে অভিযোগ পদপ্রত্যাশী নেতা-কর্মীদের। এছাড়াও অনেক ‘ত্যাগী নেতাকর্মী’ দলীয় পদবি ছাড়াই ক্যাম্পাস ছেড়েছেন। তারাও বিষয়টি নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।
সর্বশেষ ২০২২ সালের ৩১ জুলাই ফয়সাল সিদ্দিকী আরাফাতকে সভাপতি ও নাসিম আহমেদ জয়কে সাধারণ সম্পাদক করে ২৪ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি দিয়েছে কেন্দ্র। কেন্দ্রের নির্দেশনা অনুযায়ী তারা কমিটি পূর্ণাঙ্গ করতে কর্মীদের কাছে জীবন বৃত্তান্ত আহ্বান করেছেন। এই উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়েছেন সাবেক ও বর্তমান নেতা-কর্মীরা। বিষয়টি নিয়ে বর্তমান কর্মীদের মাঝেও উচ্ছ্বাস দেখা গেছে।
সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সাংগঠনিক গতিশীলতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করার জন্য আগ্রহী পদ-প্রত্যাশীদের আগামী ২ মে সকাল ১০টায় ক্যাম্পাসের বীরশ্রেষ্ঠ হামিদুর রহমান মিলনায়তনে শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি/সাধারণ সম্পাদক বরাবর জীবন বৃত্তান্ত জমা দেওয়ার আহ্বান জানানো যাচ্ছে।
অনুপ্রবেশ ঠেকাতে জীবনবৃত্তান্তের সঙ্গে সকল শিক্ষা সনদের ফটোকপি, অধ্যয়ণরত বিভাগের বিভাগীয় প্রধান কর্তৃক প্রত্যয়নপত্রের কপি এবং স্ব-স্ব জেলা/উপজেলা/মহানগর/পৌরসভা/ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি/সাধারণ সম্পাদক কর্তৃক প্রত্যয়নপত্রের কপি (মোবাইল নম্বরসহ) অবশ্যই যুক্ত করতে হবে বলে জানানো হয়েছে।
এছাড়া, ক্রীড়া, সামাজিক-সাংস্কৃতিক বা অন্য কোনো দক্ষতামূলক কর্মকাণ্ডের সনদ/স্বীকৃতির কপি এবং পাসপোর্ট আকারের ৪ কপি ছবি জমা দিতে বলা হয়েছে। পৃথক ৪ সেট জীবনবৃত্তান্ত ‘এ ৪’ সাইজের পৃথক খামে জমা দিতে হবে বলে বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়।
এ বিষয়ে ইবি ছাত্রলীগের সভাপতি ফয়সাল সিদ্দিকী আরাফাত বলেন, গঠনতন্ত্র অনুযায়ী জেলা সমমান কমিটিগুলোতে ১৫১-২০১ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি দেওয়া হয়। বর্তমানে অধিকাংশ কমিটিই ১৫১ সদস্য বিশিষ্ট দেওয়া হচ্ছে। আমরাও ১৫১ সদস্যের কমিটি দেওয়ার কথাই ভাবছি। আমাদের সমকালীন ঘোষিত কমিটিগুলোর মধ্য আমরাই প্রথম এমন উদ্যোগ নিয়েছি। এতে একটা ভালো লাগা কাজ করছে। দীর্ঘদিন পরে কমিটি পূর্ণাঙ্গ হতে যাচ্ছে এটাও একটা আনন্দের বিষয়। আমরা জীবন বৃত্তান্ত আহ্বান ও কর্মী সভার আয়োজন করেছি। জীবন বৃত্তান্ত নেওয়ার পর যাছাই-বাছাই করে অতি দ্রুত কমিটি পূর্ণাঙ্গ করা হবে। কমিটি পূর্ণাঙ্গ হওয়ার মাধ্যমে ইবি ছাত্রলীগ আরো গতিশীল হবে বলে প্রত্যাশা রাখছি।
ছাত্র-শিক্ষক
জামায়াত-শিবির নিষিদ্ধ করায় সরকারকে ঢাবি শিক্ষক সমিতির নেতাদের অভিনন্দন
সন্ত্রাসবিরোধী আইনে জামায়াত-শিবিরের রাজনীতি নিষিদ্ধ ঘোষণা করায় সরকারকে অভিনন্দন জানিয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতি।
শুক্রবার (২ আগস্ট) দুপুরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. নিজামুল হক ভুঁইয়া ও সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. জিনাত হুদা এক যৌথ বিবৃতিতে এ অভিনন্দন জানান।
বিবৃতিতে বলা হয়, মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে হত্যা, ধর্ষণ ও লুণ্ঠনের সঙ্গে জামায়াতের সক্রিয় সম্পৃক্ততা ছিল। এছাড়া সাম্প্রতিক সময়ে রাষ্ট্রবিরোধী কর্মকাণ্ডের কারণে তাদের সংগঠনের রাজনীতি নিষিদ্ধ করায় সরকারকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি অভিনন্দন জানাচ্ছে।
শিক্ষক নেতারা বলেন, ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ কালরাত্রির গণহত্যা ও ১৪ ডিসেম্বর বুদ্ধিজীবী নিধনের নেতৃত্বদানকারী এবং ৩০ লাখ শহীদের রক্তে স্নাত, দুই থেকে ছয় লাখ নারীর সম্ভ্রম ও আত্মত্যাগের বিনিময়ে অর্জিত স্বাধীন-সার্বভৌম বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের বিরোধিতাকারী সংগঠন হচ্ছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ও তার ছাত্র সংগঠন ইসলামী ছাত্র শিবির (তৎকালীন ছাত্র সংঘ)। স্বাধীনতা উত্তর বাংলাদেশেও তারা বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে ও রাজপথে শিক্ষক-শিক্ষার্থী নির্যাতন ও হত্যার বহু ঘটনা ঘটিয়েছে।
তারা বলেন, এসব কারণে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ও ইসলামী ছাত্র শিবিরের রাজনীতি নিষিদ্ধ করাকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে মনে করে। তবে এটিই যথেষ্ট নয়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি রাষ্ট্রের সব পর্যায়ে মুক্তিযুদ্ধের আদর্শ বাস্তবায়নে সব ধরনের উদ্যোগ নেওয়ার জোর দাবি জানাচ্ছে।
জেএইচ
ছাত্র-শিক্ষক
শিক্ষার্থীদের মুক্তির দাবি ঢাবির ইংরেজি বিভাগের শিক্ষকদের
চলমান কোটা সংস্কার আন্দোলনে শিক্ষার্থীদের ন্যায্য দাবির প্রতি সমর্থন ও গ্রেপ্তারদের মুক্তির দাবি জানিয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের শিক্ষকরা। এছাড়া শিক্ষার্থীদের ন্যায্য দাবির প্রতি সমর্থন এবং সংলাপের মাধ্যমে একটি সৌহার্দ্যপূর্ণ সমাধান আসবে বলে আশা করেন তারা।
রোববার (২৮ জুলাই) বিকেল সোয়া ৩টায় বিভাগের শিক্ষকদের পক্ষ থেকে বিভাগীয় চেয়ারম্যান অধ্যাপক জেরিন আলম স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ দাবি জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, আমরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের শিক্ষকরা সম্প্রতি কোটা সংস্কার আন্দোলনে শিক্ষার্থী ও সাধারণ মানুষের প্রাণহানি, নির্বিচারে গ্রেপ্তার ও হয়রানির ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করছি। আমরা বিশেষভাবে উদ্বিগ্ন যে আমাদের ছাত্র মো. আবুল হাসনাত (হাসনাত আবদুল্লাহ), কোটাবিরোধী আন্দোলনের এক সমন্বয়ক গ্রেপ্তার হয়েছেন। আমরা তার এবং অন্য শিক্ষার্থীদের অবিলম্বে মুক্তির দাবি জানাচ্ছি।
এতে আরও বলা হয়, আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোকে সংযম প্রদর্শন এবং আটকদের জিজ্ঞাসাবাদ করার সময় দায়িত্বশীল আচরণ করার আহ্বান জানাচ্ছি। আমরা শিক্ষার্থীদের ন্যায্য দাবির প্রতি সমর্থন জানাচ্ছি এবং আশা করছি যে সংলাপের মাধ্যমে একটি সৌহার্দ্যপূর্ণ সমাধান আসবে।
এএম/
ছাত্র-শিক্ষক
শিক্ষক নেতাদের সঙ্গে ওবায়দুল কাদেরের বৈঠক আজ
সর্বজনীন পেনশনের ‘প্রত্যয় স্কিম’ বাতিলের দাবিতে তৃতীয় দিনের মতো সর্বাত্মক কর্মবিরতি পালন করেছেন দেশের ৩৫টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।
বৃহস্পতিবার (৪ জুলাই) বিষয়টি সুরাহার জন্য শিক্ষক নেতাদের সঙ্গে বৈঠকে বসবেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।
বুধবার (৩ জুলাই) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা ভবনের মূল ফটকে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা।
এ সময় সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির মহাসচিব ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক নিজামুল হক ভূঁইয়া জানান, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের আন্দোলনরত শিক্ষকদের সঙ্গে কথা বলতে চেয়েছেন। পরে আজ বসার জন্য সময় দেন তিনি। তবে পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত শিক্ষকদের সর্বাত্মক কর্মবিরতি চলবে।
গেলো তিন দিন ধরে শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের আন্দোলনের ফলে কার্যত অচল হয়ে আছে দেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলো। গতকালও সকাল থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা সর্বাত্মক কর্মবিরতি পালন করে কলা ভবনের মূল ফটকে অবস্থান নেন।
অন্যদিকে ‘কর্মকর্তা-কর্মচারী ঐক্য পরিষদ’ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সামনে অবস্থান নেন। ফলে শিক্ষার্থীরা বিভাগ, হল, ইনস্টিটিউট ও প্রশাসনিক ভবনের কোথাও কোনো ধরনের সেবা পাচ্ছে না। প্রশাসনিক ভবনের সামনে থেকে অনেক শিক্ষার্থী সেবা নিতে এসে ফিরে যাচ্ছেন।
অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী মঙ্গলবার শিক্ষকদের চলমান আন্দোলনকে ‘অযৌক্তিক’ বলে মন্তব্য করেছেন। এ বিষয়ে সাংবাদিকরা জানতে চাইলে নিজামুল হক ভূঁইয়া বলেন, ‘যারা প্রত্যয় স্কিম করেছেন, তারা হয়তো মন্ত্রীকে ভুল বুঝিয়েছেন। তিনি তার জায়গা থেকে কথা বলেছেন। আমরা যখন তাকে বোঝাতে পারব, তখন হয়তো তিনি আমাদের সঙ্গে একমত হবেন। তার বক্তব্যটি আমরা গ্রহণ করিনি।’
টিআর/
মন্তব্য করতে লগিন করুন লগিন