আন্তর্জাতিক
স্যারের ক্যানসার! একজোট হলেন প্রাক্তন এবং বর্তমান ছাত্ররা
স্কুলের চৌকাঠ পেরিয়েছেন সেই কবে। জীবন চলে গিয়েছে তিন-সাড়ে তিন দশকের পার। তবু এক সময়ে কড়া বকুনি দেয়া, এমনকি কখনও-সখনও কান মলে দেয়া ‘স্যার’ কঠিন অসুখে শয্যাশায়ী জেনে একজোট হতে দু’মিনিট লাগেনি। শুধু টাকার অভাবে মাস্টারমশাইয়ের চিকিৎসা আটকে যাওয়ার কথা শুনে চোখে পানি আসার পাশাপাশি তা জোগাড়ের জন্য চোয়াল কঠিন হয়েছে প্রতিজ্ঞায়। হাতিয়ার ‘হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ’।
কলকাতার বালিগঞ্জ গভর্নমেন্ট স্কুলে ২০০৪ পর্যন্ত শিক্ষকতা করেছেন দেবব্রত চৌধুরী। ৭৮ বছরের ওই অঙ্কের শিক্ষকের ফুসফুসে বাসা বেঁধেছে ক্যানসার। মাস্টারমশাই অবিবাহিত। ভাগ্নি অনুরাধা দত্ত দেখাশোনা করেন। কিন্তু পেনশনের টাকায় চিকিৎসার হালে পানি পাওয়া শক্ত। পরিস্থিতি জেনে ঝাঁপিয়ে পড়েন স্কুলের ১৯৮৮ সালের মাধ্যমিক-ব্যাচের একদল পঞ্চাশোর্ধ্ব ‘ছাত্র’।
কঠিন অসুখে বিছানায় প্রায় মিশে গিয়েছিল শরীর। সেই অবস্থায় তাকে তুলে নিয়ে শহরের এক বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা করাতে নিয়ে যান ৩৫ বছর আগে স্কুল ছেড়ে আসা ওই প্রাক্তনীরা। স্কুলের অন্যান্য ব্যাচের প্রাক্তনীদের সঙ্গে যোগাযোগ করে সবাই মিলে তুলেছেন প্রায় ১১ লক্ষ টাকা। হাসপাতালে চিকিৎসা হয়েছে।
হাসপাতাল থেকে সবে বাড়ি ফেরা স্যারের গলা ক্ষীণ, কিন্তু তাতেও উপচে পড়া গর্বের ছোঁয়া স্পষ্ট। শরীরে শক্তি বিশেষ নেই, কিন্তু বাড়ির লোকের কথায়, তাতেও চেপে বসেছে এক অন্য রকম তৃপ্তি আর ভাললাগা।
বুধবার সন্ধ্যায় ক্ষীণ কণ্ঠে দেবব্রত বললেন, ‘‘কী ভাবে যে কী হয়ে গেল, বুঝতেই পারছি না। এখন অনেক ভাল আছি। ছাত্রদের পেয়ে ভাল লাগছে।’’
অনুরাধা জানিয়েছেন, এ মার্চেই তার মামার ক্যানসার ধরা পড়েছে। সামর্থ্য মতো চিকিৎসা শুরু হয়েছিল। তারপরে মামার প্রাক্তন ছাত্রেরা এসে হাসপাতালে নিয়ে যায়।
দেবব্রত চৌধুরীর এক প্রাক্তন ছাত্রের জানালেন ,‘‘আমাদের কারও নাম লেখার দরকার নেই। কাজটা তো হয়েছে, এটাই যথেষ্ট।’’ সঙ্গে আক্ষেপও করেছেন এ ছাত্র, এমন বহু শিক্ষক আছেন যাদের কাছে শিক্ষা পেয়ে বহু ছাত্রছাত্রী আজ প্রতিষ্ঠিত, তাদের অনেকেই হয়তো স্রেফ টাকার অভাবে চিকিৎসাটুকুও করাতে পারেন না। প্রতিষ্ঠিত প্রাক্তনীরা একটু উদ্যোগী হলেই সেই ছবি পাল্টাতে পারে।
দেবব্রত স্যারের ক্ষেত্রে অবশ্য সুবিধা হয়েছে ’৮৮ সালের ব্যাচের এক প্রাক্তন ছাত্র চিকিৎসক হওয়ায়। ৮ এপ্রিল দেবব্রতের অসুখের কথা বন্ধুদের গ্রুপে ‘শেয়ার’ করেন এক প্রাক্তনী। অন্য ছাত্র সে দিনই খুঁজে বার করেন স্যারের বাড়ি।
চিকিৎসক-ছাত্র শঙ্খশুভ্র দাস খবর পেয়ে চলে আসেন স্যরের বাড়িতে। তার কথায়, ‘‘তখন অবস্থা খুবই চিন্তার ছিল। ২৭ দিন চিকিৎসার পরে এখন খানিকটা ভাল। যেভাবে যা হল, তা অভাবনীয়।’’
স্কুলের সমস্ত প্রাক্তনী গ্রুপে প্রথমে যোগাযোগ করা হয়। ১৯৭৪ থেকে ২০০৫— প্রায় সব ব্যাচের প্রাক্তনীরা এগিয়ে আসেন। সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষও। ওই হাসপাতালের সিইও রাণা দাশগুপ্তের কথায়, ‘‘এমন উদ্যোগে আমরাও শামিল হতে চেয়েছিলাম।’’
সূত্র: জি নিউজ
আন্তর্জাতিক
যুক্তরাষ্ট্র অন্তর্বর্তী সরকারের সঙ্গে কাজ করতে প্রস্তুত : মার্কিন মুখপাত্র
অন্তর্বর্তী সরকার এবং ড. ইউনূসের সঙ্গে কাজ করতে প্রস্তুত। অন্তর্বর্তী সরকার বাংলাদেশের জনগণের জন্য গণতান্ত্রিক ভবিষ্যৎ নির্ধারণ করবে বলে জানিয়েছেন, মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার।
স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের নিয়মিত সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন তিনি।
প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের শপথ নেয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে মিলার বলেন, বাংলাদেশের জন্য আজ একটি শুভ দিন। নোবেল বিজয়ী অধ্যাপক ইউনূস সবেমাত্র বাংলাদেশ সরকারের প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেছেন।
যুক্তরাষ্ট্র এ সরকারকে অভিননন্দ জানিয়েছে কি না এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের চার্জ ডি’অ্যাফেয়ার্স আজ শপথ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন এবং তারা সাম্প্রতিক সহিংসতা বন্ধের জন্য ড. ইউনুসের আহ্বানকে স্বাগত জানাচ্ছেন।
প্রসঙ্গত, এসময়ে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাংলাদেশের নতুন অন্তর্বর্তী সরকারের যোগাযোগ হয়েছে বলেও জানান ম্যাথিউ মিলার। তবে কোন বিষয়ে যোগাযোগ হয়েছে তিনি সে বিষয়ে বিস্তারিত বলেন নি।
আই/এ
এশিয়া
জাপানে ৭.১ মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্প
জাপানের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় এলাকায় রিখটার স্কেলে ৭ দশমিক ১ মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্প আঘাত হেনেছে।
বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) স্থানীয় সময় বিকেল ৪টা ৪৩ মিনিটের দিকে পশ্চিমাঞ্চলীয় প্রধান দ্বীপ কিয়ুশুর মিয়াজাকি অঞ্চলে ভূমিকম্পটি আঘাত হানে।
জাপানের আবহাওয়া সংস্থার (জেএমএ) বরাত দিয়ে দেশটির রাষ্ট্রায়ত্ত সংবাদমাধ্যম এনএইচকে ওয়ার্ল্ড এ তথ্য জানিয়েছে।
খবরে বলা হয়েছে, ভূমিকম্পের পর দেশটিতে সুনামির সতর্কতা জারি করা হয়েছে। মিয়াজাকিতে সমুদ্রের ঢেউ ইতোমধ্যে ৫০ সেন্টিমিটারে পৌঁছেছে। তবে তাৎক্ষণিকভাবে বড় ধরনের কোনো ক্ষয়ক্ষতি কিংবা হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি।
এ বিষয়ে দেশটির মন্ত্রিপরিষদের মুখ্য সচিব ইয়োশিমাসা হায়াশি গণমাধ্যমকে বলেন, ভূমিকম্পের পর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্ল্যান্টগুলোতে কোনো ধরনের অস্বাভাবিক ঘটনা দেখা যায়নি। সরকার ভূমিকম্পে ক্ষয়ক্ষতি ও হতাহতের বিষয়ে খোঁজখবর নিচ্ছে।
প্রসঙ্গত, জাপানে ভূমিকম্পের ঘটনা একেবারে সাধারণ। বিশ্বে ৬ বা তার চেয়ে বেশি মাত্রার ভূমিকম্পের প্রায় এক-পঞ্চমাংশই এদেশে ঘটে থাকে।
এর আগে, ২০১১ সালের ১১ মার্চ দেশটির উত্তর-পূর্ব উপকূলে ৯ মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্প আঘাত হানে। যেটি ছিলো জাপানের ইতিহাসে সবচেয়ে শক্তিশালী ভূমিকম্প। ওই সময় ভূমিকম্পের পর দেশটিতে বিশাল সুনামি আঘাত হানে।
সূত্র: রয়টার্স
জিএমএম/
আন্তর্জাতিক
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে জনগণের ইচ্ছাকে প্রাধান্য দিতে হবে: যুক্তরাষ্ট্র
বাংলাদেশের পরিস্থিতির উন্নয়নের ব্যাপারটি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করছে। ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার যেনো গণতন্ত্র, আইন ও বাংলাদেশি জনগণের আকাঙ্খা পূরণ করে-এমনটাই চাইছে যুক্তরাষ্ট্র।
স্থানীয় সময় বুধবার (৭ আগস্ট) ওয়াশিংটনে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের নিয়মিত ব্রিফিংয়ে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে যুক্তরাষ্ট্রে এমনটাই আশা করে বলে জানিয়েছেন মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার। এদিন যুক্তরাষ্ট্রপ্রবাসী ইরাকের এক সাংবাদিক জানতে চান, ‘বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান হিসেবে ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। বাংলাদেশে তার বা অন্যদের সঙ্গে আপনাদের যোগাযোগ হয়েছি কী? বাংলাদেশের স্থিতিশীলতা পরিস্থিতিকে আপনি কীভাবে মূল্যায়ন করবেন?’
জবাবে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার বলেন, ‘আমরা এখনও যোগাযোগ করেনি। আমরা বাংলাদেশের পরিস্থিতির উন্নয়ন পর্যবেক্ষণ অব্যাহত রাখছি এবং আমরা এরইমধ্যে দেখেছি অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান হিসেবে ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। আমরা মনে করি তার নেতৃত্বে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার বাংলাদেশে দীর্ঘমেয়াদি শান্তি ও রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা প্রতিষ্ঠায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। আপনি নিশ্চয়ই মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে বলতে শুনেছেন যে. অন্তর্বর্তীকালীন সরকার যে সিদ্ধান্ত নেবে তা যেনো গণতান্ত্রিক নীতিমালাকে, আইনের শাসন এবং সিদ্ধান্তে বাংলাদেশি জনগণের ইচ্ছা প্রতিফলিত হয়।
এসময় যুক্তরাষ্ট্রপ্রবাসী বাংলাদেশি সাংবাদিক মুশফিকুল ফজল আনসারী একটি প্রশ্ন করেন। তার প্রশ্নটি ছিল, আপনি কি জানেন যে স্বৈরশাসক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পুত্র ভার্জিনিয়ায় অবস্থান করে নতুন সরকারকে হুমকি দিচ্ছেন, সহিংসতা উসকে দিচ্ছেন? তিনি সাবেক স্বৈরশাসক শেখ হাসিনার তথ্য ও প্রযুক্তি বিষয়ক উপদেষ্টা ছিলেন যিনি বাংলাদেশে ইন্টারনেট বন্ধ করে দিয়েছিলেন। দয়াকরে তার ব্যাপারে আপনার মন্তব্য জানাবেন কী?’
জবাবে ম্যাথিউ মিলার বলেন, মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র বলেন, ‘একজন সাধারণ নাগরিকের বিবৃতি নিয়ে আমার কোনো মন্তব্য নেই। আমি এরইমধ্যে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কথা বলেছি এবং আমরা দেখতে চাই এই সরকার কী পদক্ষেপ নিয়ে এগিয়ে যায়।
এসময় মুশফিকুল ফজল আনসারী আরও জানতে চান, ‘দেশের শান্তি প্রতিষ্ঠায় এবং একটি অবাধ, নিরপেক্ষ ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের নতুন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে প্রত্যাশা নিয়ে আপনার কী মন্তব্য?
জবাবে ডিপার্টমেন্ট অফ স্টেটের মুখপাত্র বলেন, শনের প্রশ্নের উত্তরে আমি যেমনটি বলেছি – অন্তর্বর্তীকালীন সরকার যখন কোনো সিদ্ধান্ত নেয়, আমরা দেখতে চাই ওই সিদ্ধান্তে যেনো গণতান্ত্রিক নীতি মেনে চলা হয় এবং জনগণের ইচ্ছার প্রতিফলন ঘটে।
মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের নিয়মিত ওই ব্রিফিংয়ে ফিলিস্তিনের গাজা, দক্ষিণ আমেরিকার ভেনিজুয়েলা, ইরাক ও ইরানের পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা হয়।
এমআর//
মন্তব্য করতে লগিন করুন লগিন