ক্যাম্পাস
মাজেদকে চাকরি দেয়া মানেই একজন মাকে অপমান করা: নিহত খালেদ সাইফুল্লাহর মা
কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) মার্কেটিং বিভাগের ২০১২-১৩ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী ও কাজী নজরুল ইসলাম হল ছাত্রলীগের তৎকালীন সাংগঠনিক সম্পাদক নিহত খালিদ সাইফুল্লাহর মা ফাতেমা আক্তার কান্না স্বরে বলেন, সবাই আমার ছেলের হত্যাকাণ্ডের বিচারের আশ্বাস দিলেও কেউ কথা রাখেননি। তাদেরকে বারবার বলেছি আপনারা তাদের এই বিশ্ববিদ্যালয়ে চাকরি দিবেন না। কিন্তু প্রশাসন বারবার তাদের চাকরি দিচ্ছে। নতুন করে ভর্তি নিচ্ছে (সান্ধ্যকালীন)। তারাই আবার ছাত্রলীগের নতুন পদপ্রার্থী। মাজেদকে চাকরি দেয়া মানেই হলো আমাকে অপমান করা। একজন মাকে অপমান করা।
জানা যায়, খালিদ সাইফুল্লাহকে হত্যার ঘটনায় অভিযুক্ত আরেক আসামিকে কর্মকর্তা হিসেবে নিয়োগ দিতে যাচ্ছে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। ২০১৯ সালে প্রকাশিত এক বিজ্ঞপ্তির বিপরীতে প্রায় চার বছর এ নিয়োগ দিতে যাচ্ছেন প্রশাসন। এর আগে গেলো বছরের ২৭ অক্টোবর ঐ প্রার্থীকে নিয়োগ দিতে লিখিত পরীক্ষার আয়োজন করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। পরে গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হলে পরে আর ভাইবা বোর্ড ডাকেনি প্রশাসন। তবে সোমবার (১৫ মে) মৌখিক পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে।
চাকরির প্রার্থীর নাম রেজাউল ইসলাম মাজেদ। তিনি বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক।
এদিকে চাকরির দাবিতে গেল বছরের ৩১ মার্চ দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের উপাচার্যের কক্ষে চাকরির জন্য উচ্চবাচ্য করেন রেজাউল ইসলাম মাজেদ ও ছাত্রলীগের বিভিন্ন ইউনিটের নেতাকর্মীরা। পরে বিষয়টি নিয়ে উপাচার্যের সাথে একান্ত আলোচনা করতে চাইলে তখন দপ্তর থেকে বেরিয়ে আসেন উপাচার্য। পরে নিয়োগ ও টেন্ডারের দাবিতে উপাচার্যের গাড়ি আটক করে রাখেন তিনি। এসময় তাঁর সাথে সঙ্গ দেন শাখা ছাত্রলীগের সভাপতিও। পরে বিষয়টি নিয়ে বিভিন্ন সময়ে আরো উচ্চবাচ্য হলে উপাচার্যকে লক্ষ্য করে, ‘ষড়যন্ত্র করিস নারে, পিঠের চামড়া থাকবে না’, ‘জামাত-শিবিরের চামড়া, তুলে নেব আমরা,’ ‘বিএনপি-জামাতের প্রশাসন, হুঁশিয়ার সাবধান’ বলে ¯স্লোগান দেন তাঁর নেতাকর্মীরা।
এদিকে গাড়ি আটকের পর গণমাধ্যমে দেয়া এক বক্তব্যে রেজাউল ইসলাম মাজেদ বলেন, ‘দলের জন্য সবকিছু করেছি। এখন আমার বয়সও চলে যাচ্ছে। এ অবস্থায় চাকরি চাই। উপাচার্যের কাছে একাধিকবার গেছি। তিনি কোনো সাড়া দিচ্ছেন না।’
এছাড়াও বিভিন্ন সময়ে তাঁর হাতে মারধরের শিকার হয়েছেন শাখা ছাত্রলীগের বিভিন্ন ইউনিটের নেতাকর্মী থেকে সাধারণ শিক্ষার্থীরা। ২০১৭ সালের ১৪ ডিসেম্বর মারধরের শিকার হন শাখা ছাত্রলীগের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক স্বজন বরণ বিশ্বাস ও তার নেতাকর্মীরা। ২০২০ সালের ৯ মার্চ দুই ছাত্রলীগ নেতা মোবারক হোসাইন মাহী ও মমিন শুভ’কে মারধর করে হল থেকে বের করে দেন তিনি।
সাবেক এই ছাত্রলীগ নেতা থাকতেন শহিদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত হলের ৩০১ নং রুমে। এই কক্ষে বিভিন্ন সময়ে ছাত্রলীগের নেতাকর্মী ও সাধারণ শিক্ষার্থীদের রাতভর নির্যাতন করতেন তিনি। এসময় তাদের থেকে মানিব্যাগ, মোবাইল ছিনতাই করে নিয়ে যাওয়ার অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। আতঙ্ক সৃষ্টি করতে বহিরাগত সন্ত্রাসীদেরও ক্যাম্পাসে এনে শিক্ষার্থীদের নির্যাতন করতেন তিনি। ২০১৭ সালের ৫ জুন ক্যাম্পাস থেকে সাধারণ সম্পাদক মাজেদের কক্ষে ডেকে নিয়ে যায় মামুন চৌধুরী (গণিত ৭ম ব্যাচ) ও পরিসংখ্যান ৮ম ব্যাচের এক শিক্ষার্থীকে ডেকে নিয়ে বেধড়ক মারধর করেন তিনি। তাছাড়াও মাজেদ আতঙ্কে অনেকেই পড়াশোনা শেষ করতে পারেননি।
এছাড়াও বিভিন্ন আঞ্চলিক কমিটি, বিভাগীয় সহায়ক কমিটিতে একক আধিপত্য ছিল মাজেদের। তার অনুসারী শিক্ষার্থীদের কমিটিতে আনতে বিভিন্ন সময়ে চাপ সৃষ্টি করতেন তিনি। এমনই এক ঘটনা ঘটে চট্টগ্রাম স্টুডেন্টস ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের সাবেক সভাপতি মোহাম্মদ তারেকুল ইসলামের সাথে। জোর করে স্বাক্ষর নিতে গেলে পরে আত্মহত্যার হুমকি দিয়ে ক্যাম্পাস ছাড়েন তরিকুল। পরে এ ঘটনায় সাধারণ শিক্ষার্থীদের সাথে করা মাজেদের বিভিন্ন অপকর্ম তুলে ধরেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা। এছাড়াও শাখা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা সাধারণ শিক্ষার্থীদের মারধর করলে তাদের মারধরকে যৌক্তিক বলে প্রতিষ্ঠা করতেন তিনি।
এদিকে রেজাউল ইসলাম মাজেদ বলেন, আমি লিখিত পরীক্ষায় পাশ করার কারণে প্রশাসন আমাকে ভাইবার জন্য ডেকেছে। প্রশাসন যদি আমাকে যোগ্য মনে করে তাহলেই আমাকে চাকরি দিবে। এর আগেও খালেদ সাইফুল্লাহ হত্যাকান্ডের কয়েকজন আসামি চাকরি পেয়েছে। আর ছাত্রলীগ হলে কি চাকরি করা যাবে না।
এর আগে চাকরির জন্য উপাচার্যের গাড়ি অবরোধ করে রাখার বিষয়ে তিনি বলেন, গাড়ি অবরোধ চাকরি কোনো বিষয়ে করা হয়নি। আমাদের সাথে একটা ভুল বুঝাবুঝি হয়েছিল, সেজন্য গাড়ি অবরোধ করেছিলাম।
ছাত্রলীগ নেতাকে নিয়োগের বিষয়ে জানতে চেয়ে উপাচার্য ড. এ এফ এম আবদুল মঈনকে একাধিকবার কল দিয়েও পাওয়া যায়নি। তবে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ হুমায়ুন কবির বলেন, ‘পরীক্ষায় কে নির্বাচিত আমার জানা নাই। তাই এ বিষয়ে আমি মন্তব্য করতে রাজি না।’
ক্যাম্পাস
খুলছে জবি, প্রাথমিকভাবে ক্লাস চলবে অনলাইনে
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে (জবি)১৮ আগস্ট থেকে অনলাইন ক্লাস শুরু হবে।আজকেই ছাত্রীদের জন্য বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব ছাত্রী হল খুলে দেয়া হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) বিশ্ববিদ্যালয়ের ৯৮তম সিন্ডিকেট সভায় এ সিদ্ধান্ত হয় বলে গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ড. মো. আইনুল ইসলাম।
জানা যায়, ১৮ আগস্ট থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ে অনলাইনে ক্লাস চলবে। অনলাইন ক্লাস শুরুর আগে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতৃবৃন্দের সঙ্গে আলোচনা করে সব বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। এক্ষেত্রে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে ডিন, বিভাগীয় চেয়ারম্যান, ছাত্র উপদেষ্টা ও অন্যান্য শিক্ষকবৃন্দ আলোচনায় বসবেন।
এক সিন্ডিকেট সদস্য গণমাধ্যমকে জানান,তারা ক্যাম্পাসে স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করছেন। তাই প্রাথমিকভাবে অনলাইন ক্লাস চালুর সিদ্ধান্ত হয়েছে। পরবর্তীতে ছাত্র আন্দোলনের নেতৃবৃন্দের সঙ্গে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন হলে ক্যাম্পাসে এমনিই ছাত্র রাজনীতি থাকবে না বলে তার মনে হচ্ছে, তবে রাজনীতি নিষিদ্ধ হলে সেটা নতুন সরকার সিদ্ধান্ত নেবে।
প্রসঙ্গত, সিন্ডিকেট সভায় আন্দোলনে আহত শিক্ষার্থীদের চিকিৎসা খরচসহ তাদের খোঁজ নেওয়ার বিষয়েও সিদ্ধান্ত হয়েছে।
আই/এ
শিক্ষা
চুয়েটে নিষিদ্ধ হলো ছাত্ররাজনীতি
চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (চুয়েট) নিষিদ্ধ করা হয়েছে সব ধরনের ছাত্ররাজনীতি।
বুধবার (০৭ আগস্ট) বিশ্ববিদ্যালয়টির ১৩৬তম জরুরি সিন্ডিকেট সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার (অতিরিক্ত দায়িত্ব) অধ্যাপক ড. শেখ মোহাম্মদ হুমায়ুন কবির স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে তা জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়, ১৩৬/১(ঘ) অনুযায়ী অত্র বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও শিক্ষক/কর্মকর্তা/কর্মচারীদের সকল ধরনের রাজনৈতিক সংগঠন এবং এর কার্যক্রমের সাথে সম্পৃক্ততা নিষিদ্ধ করা হলো। এ আদেশ অমান্যকারীদের বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয় বিধান অনুযায়ী শাস্তি প্রদান করা হবে।
উল্লেখ্য, সম্প্রতি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকে কেন্দ্র করে দেশের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধের দাবি জানায় সাধারণ শিক্ষার্থীরা। শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর সে দাবি আরও জোরালো হয়। এমন প্রেক্ষাপটে ক্যাম্পাসে ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে চুয়েট।
এসি//
শিক্ষা
আজ থেকে শুরু একাদশ শ্রেণির ক্লাস
২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষে একাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থীদের ক্লাস মঙ্গলবার (০৬ আগস্ট) হওয়ার কথা ছিল। কোটা সংস্কার আন্দোলনের পরিস্থিতিতে পিছিয়ে তা শুরু হচ্ছে আজ।
আন্তঃশিক্ষা বোর্ড সমন্বয় কমিটি বিভিন্ন কলেজ ও মাদ্রাসাগুলোকে বৃহস্পতিবার (০৮ আগস্ট) থেকে একাদশের ক্লাস শুরু করতে বলেছে। এরইমধ্যে অধ্যক্ষ ও প্রধান শিক্ষকদের এ নির্দেশনা দিয়ে চিঠি পাঠিয়েছে আন্তঃশিক্ষা বোর্ড সমন্বয় কমিটি।
বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, সব উচ্চমাধ্যমিক পর্যায়ের দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের অধ্যক্ষ ও প্রধান শিক্ষককে পাঠানো চিঠিতে কমিটি বলছে, বৃহস্পতিবার (০৮ আগস্ট) থেকে ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষে একাদশ শ্রেণিতে অনলাইনের মাধ্যমে ভর্তিকৃত শিক্ষার্থীদের ক্লাস শুরু হবে।
এদিকে প্রথম থেকে তৃতীয় ধাপে নির্বাচিত শিক্ষার্থীদের ভর্তির সময় বুধবার (০৭ আগস্ট) শেষ হয়েছে। তবে, একাদশ শ্রেণিতে ভর্তির চতুর্থ ধাপের আবেদনের সুযোগ দেওয়া হয়েছে শিক্ষার্থীদের। তিন ধাপে আবেদন গ্রহণ ও শিক্ষার্থী নির্বাচনের পরও কিছু কলেজ মাদ্রাসায় সিট খালি থাকায় ও কিছু শিক্ষার্থী ভর্তির জন্য নির্বাচিত হতে না পারায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
জানা গেছে, যেসব শিক্ষার্থী কলেজে ভর্তির আবেদন করেননি বা আবেদন করে কলেজ সিলেকশন পাননি তারা এবং যেসব শিক্ষার্থী চূড়ান্ত মনোনয়ন পেয়েও কলেজে ভর্তি হতে পারেননি বা নিশ্চায়ন করতে পারেননি তারা চতুর্থ ধাপে ভর্তির আবেদন করতে পারবেন।
অনলাইনে নির্ধারিত ওয়েবসাইটে (https://www.xiclassadmission.gov.bd) প্রবেশ করে নির্দেশিকা অনুসারে শিক্ষার্থীদের আবেদন করতে হবে। শিক্ষার্থীদের কলেজের আসন সংখ্যা দেখে ৫টি থেকে ১০টি কলেজে আবেদনের চয়েজ দিতে পারবেন। আবেদন ফি নির্ধারণ করা হয়েছে ১৫০ টাকা। ব্যাংক কার্ড ও মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে এ ফি পরিশোধ করতে হবে।
জানা গেছে, ১১ থেকে ১৪ আগস্ট (বুধবার) রাত ১০টা পর্যন্ত চতুর্থ বা সর্বশেষ ধাপের আবেদন গ্রহণ করা হবে। ১৭ আগস্ট (শনিবার) রাত ৮টায় চতুর্থ ধাপের ফল প্রকাশ করা হবে। ১৮ আগস্ট থেকে ১৯ আগস্ট (সোমবার) রাত ৮টা পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের সিলেকশন নিশ্চায়ন করতে হবে। চতুর্থ ধাপে নির্বাচিত শিক্ষার্থীরা ২০ আগস্ট (মঙ্গলবার) কলেজে ভর্তি হতে পারবেন।
এসি//
মন্তব্য করতে লগিন করুন লগিন