জাতীয়
সরকারি চাকরিতে রেকর্ডসংখ্যক পদ ফাঁকা
কোভিড মহামারির মধ্যে দীর্ঘ সময় নিয়োগ বন্ধ থাকায় সরকারি চাকরিতে রেকর্ড সংখ্যক পদ ফাঁকা পড়ে আছে। সরকারি চাকরিতে বর্তমানে ৪ লাখ ৮৯ হাজার ৯৭৬টি শূন্যপদ রয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১ জুন) জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের প্রকাশ করা ২০২২ সালের সরকারি চাকরিজীবীদের পরিসংখ্যান থেকে এ তথ্য পাওয়া গেছে।
এতে দেখা গেছে, সরকারি চাকরিতে বর্তমানে ১৯ লাখ ১৫১টি অনুমোদিত পদ রয়েছে। এসব পদের বিপরীতে ১৩ লাখ ৯৬ হাজার ৮১৮ জন কর্মরত আছেন। আর ফাঁকা আছে ৪ লাখ ৮৯ হাজার ৯৭৬টি পদ।
সেই হিসাবে বর্তমানে সরকারি চাকরিতে মোট পদের ২৫ দশমিক ৭৮৬ শতাংশই খালি রয়েছে। করোনা মহামারিতে দীর্ঘসময় নিয়োগ বন্ধ থাকায় এভাবে রেকর্ডসংখ্যক পদ খালি পড়ে আছে।
করোনার সময়ে লকডাউনে সরকারি চাকরির নিয়োগ প্রক্রিয়া আটকে ছিল দীর্ঘদিন। তখন বিশ্বজুড়ে অচলাবস্থা তৈরি হয়েছিল, সব ধরনের কর্মকাণ্ড বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। যে করণে বিভিন্ন দফতরে সরকারি চাকরির প্রিলিমিনারি, লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষার তারিখ দফায় দফায় পরিবর্তন করা হয়েছে। স্থগিত করা হয়েছিল অনেক পরীক্ষাও।
পরিসংখ্যান বলছে, সরকারি চাকরিতে ২০১৮ সালে ৩ লাখ ৯৩ হাজার ২৪৭টি, ২০১৯ সালে ৩ লাখ ৮৭ হাজার ৩৩৮, ২০২০ সালে ৩ লাখ ৮০ হাজার ৯৫৫ এবং ২০২১ সালে ৩ লাখ ৫৮ হাজার ১২৫টি পদ ফাঁকা ছিল।
এখন সরকারি চাকরিতে প্রথম থেকে নবম গ্রেডের (আগের প্রথম শ্রেণি) ২ লাখ ৪৪ হাজার ৯৬টি অনুমোদিত পদ রয়েছে। এসব পদের বিপরীতে কর্মরত আছেন ১ লাখ ৭৯ হাজার ৫১৪ জন। ফাঁকা আছে ৬৪ হাজার ৫৮২টি পদ।
১০ থেকে ১২তম গ্রেডে (আগের দ্বিতীয় শ্রেণি) ২ লাখ ৯১ হাজার ১১১টি পদের বিপরীতে কাজ করছেন ১ লাখ ৯৩ হাজার ৬৬৪ জন। ফাঁকা রয়েছে ৯৭ হাজার ৪৪৭টি পদ।
১৩ থেকে ১৬তম গ্রেডে (আগের তৃতীয় শ্রেণি) ৭ লাখ ৯৫ হাজার ৪০টি পদ রয়েছে। এসব পদের বিপরীতে কর্মরত আছেন ৬ লাখ ৩ হাজার ৪৩৩ জন। ফাঁকা আছে ১ লাখ ৯১ হাজার ৬০৭টি পদ।
অন্যদিকে ১৭ থেকে ২০তম গ্রেডে (আগের চতুর্থ শ্রেণি) ৫ লাখ ৫৮ হাজার ৪৬৯টি পদ রয়েছে। এসব পদের বিপরীতে কর্মরত আছেন ৪ লাখ ১৫ হাজার ১০৪ জন। ফাঁকা রয়েছে ১ লাখ ৪৩ হাজার ৩৬৫টি পদ। আর সরকারি দফতরে নির্ধারিত ও অন্যান্য কাজের জন্য ১১ হাজার ৪৩৫টি পদ রয়েছে। এসব পদের বিপরীতে কাজ করছেন ৫ হাজার ১০৩ জন। ফাঁকা রয়েছে ৬ হাজার ৩৩২টি পদ।
প্রথম থেকে ১২তম গ্রেডের গেজেটেড পদগুলোতে নিয়োগ দেয় সরকারি কর্ম কমিশন (পিএসসি)। আর ১৩ থেকে ২০তম গ্রেডের পদে সরাসরি নিয়োগ দেয় মন্ত্রণালয় ও বিভাগ।
পরিসংখ্যান অনুযায়ী, সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগে ৬ হাজার ৮২১টি এবং অধিদফতর ও পরিদফতরে ৩ লাখ ২৫ হাজার ৩৩৬টি পদ ফাঁকা রয়েছে। আর বিভাগীয় কমিশনার ও জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে ১৩ হাজার ৩৫৭টি এবং স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান ও বিভিন্ন করপোরেশনে ফাঁকা রয়েছে ১ লাখ ৫৭ হাজার ৮১৯টি পদ।
জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্মকর্তা সংবাদমাধ্যমকে বলেন, সরকারি চাকরির ফাঁকা পদ পূরণে বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগকে তাগাদা দেয়া হয়েছে। অনেক সময় তারা দ্রুততার সঙ্গে কাজটি করছেন না। ফলে ফাঁকা পদের সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে। কোভিডের মধ্যে নিয়োগ প্রক্রিয়া অনেকটা বন্ধ ছিল, যে কারণে সরকারি চাকরিতে এখন সবচেয়ে বেশি পদ ফাঁকা রয়েছে।
সবসময়ই কেউ না কেউ চাকরি থেকে অবসরে যাচ্ছেন। ফলে শতভাগ পদ কখনই পূরণ হয় না। তবে মন্ত্রণালয় ও বিভাগগুলো উদ্যোগ নিলে ফাঁকা পদের সংখ্যা অর্ধেকে নামিয়ে আনা যাবে বলে জানান ওই কর্মকর্তা।
জাতীয়
শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা জানালেন অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টারা
শপথ নেয়ার পরের দিন ভাষা শহীদদের স্মরণে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা নিবেদন করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টারা।
শুক্রবার (৯ আগস্ট) বেলা ১১টার দিকে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ১৩ জন উপদেষ্টা নিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।
এর আগে, সাভারে জাতীয় স্মৃতিসৌধে মহান মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান ও অন্য উপদেষ্টারা।
গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান হিসেবে শপথ নেন ড. মুহাম্মদ ইউনূস। দায়িত্ব নেওয়ার পর তিনি এক নতুন বাংলাদেশ উপহার দেওয়ার অঙ্গীকার করেন।
আই/এ
জাতীয়
উপদেষ্টা পরিষদকে অভিনন্দন জানালেন জাসদ
জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল—জাসদের সভাপতি হাসানুল হক ইনু ও সাধারণ সম্পাদক শিরীন আখতার অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মোহাম্মদ ইউনুস এবং অন্য উপদেষ্টাদেরকে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়েছেন
বৃহস্পতিবার ( ৮ আগস্ট ) রাতে দলের পক্ষ থেকে পাঠানো এক বিবৃতিতে এ অভিনন্দন জানান তারা।
বিবৃতিতে জানানো হয়, “অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দায়িত্ব গ্রহণ করার পর দেশে আর একটিও প্রাণহানি, হামলা ও সম্পদ ধ্বংসের ঘটনা যেন না ঘটে তা নিশ্চিত হবে।”
বিবৃতিতে আরও বলেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার রাষ্ট্রীয় চার মূলনীতিসহ সংবিধানকে সমুন্নত রেখে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন এবং রাজনৈতিক ও সামাজিক শক্তির সাথে আলোচনা করে সরকারের কর্ম পরিকল্পনার রূপরেখা দ্রুত প্রকাশ করে বিদ্যমান অনিশ্চয়তা ও অস্থিরতা প্রশমিত করবেন।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রাথমিক ও প্রধান কাজ হিসেবে অনতিবিলম্বে দেশে আইনশৃঙ্খলা পুনঃপ্রতিষ্ঠা করার এবং জনগণের জানমালের নিরাপত্তা নিশ্চিত করে জনজীবনে স্বাভাবিকতা ও শান্তি ফিরিয়ে আনতে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানিয়েছেন।
জাসদ নেতৃবৃন্দ অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নিহত শিক্ষার্থী, সাধারণ মানুষ, সাংবাদিক পুলিশ বাহিনীর সদস্যসহ প্রতিটি হত্যাকাণ্ডের সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার নিশ্চিত করার আহ্বান জানান।
জাসদ জোর দাবি জানান, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে পূর্ববর্তী সরকারের পদত্যাগের পর দেশের বিভিন্ন স্থানে চলমান বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও পুলিশ বাহিনীর সদস্যসহ পেশাজীবী ও হিন্দু ও আহমদীয়াসহ ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের ওপর হামলা ও হত্যা করা, মন্দিরসহ ধর্মীয় স্থাপনায় হামলা, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের কার্যালয়ে ও নেতাকর্মীদের বাসাবাড়িতে হামলা-হত্যা-নির্যাতন, ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান ও ঘরবাড়িতে হামলা ও অগ্নিসংযোগ, সংসদ ভবন ও প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় ও গণভবনসহ বিভিন্ন সরকারি স্থাপনায় হামলা, ভাঙচুর, লুটপাট, অগ্নিসংযোগ, ধানমন্ডি ৩২ নম্বরের ঐতিহাসিক বঙ্গবন্ধু ভবন-বঙ্গবন্ধু জাদুঘরে হামলা, লুটপাট, জ্বালিয়ে ছারখার, দেশের বিভিন্ন স্থানে বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য, সাত বীরশ্রেষ্ঠর ভাস্কর্যসহ ভাষা আন্দোলন, স্বাধীনতা সংগ্রাম ও মুক্তিযুদ্ধের স্মারক ভাস্কর্য ও ম্যুরাল ভেঙে ফেলা এবং কুমিল্লার বীরচন্দ্র পাঠাগার, সুনামগঞ্জের ঐতিহ্য জাদুঘর, কুড়িগ্রামের উত্তরবঙ্গে মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর, ময়মনসিংহের ঐতিহাসিক শশীলজের ভেনাস ভাস্কর্য ভেঙে ফেলাসহ অগনিত শিল্পকর্ম ভেঙে ফেলার সব অপরাধ কাণ্ডের সঙ্গে যুক্ত দায়ী ব্যক্তিদের দ্রুত আইনের আওতায় আনার।
জেডএস/
জাতীয়
তদবির থেকে বিরত থাকুন, দেশগঠনে পরামর্শ দিন : আসিফ মাহমুদ
নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে গঠিত হয়েছে ১৭ সদস্যের অন্তবর্তীকালীন সরকার। এ উপদেষ্টা পরিষদে স্থান পেয়েছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের দুইজন প্রতিনিধি। এদের একজন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আসিফ মাহমুদ। তিনি উপদেষ্টা হিসেবে শপথ নেয়ার পর ঘনিষ্ঠজনদের নিজেদের সুবিধার জন্য কোনো আবদার কিংবা তদবির করতে বারণ করেছেন। বরং দেশগঠনে কোনো পরামর্শ থাকলে দেয়ার অনুরোধ করেছেন।
বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) দিবাগত রাতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এক পোস্ট করে এ অনুরোধ করেন।
পোস্টে এই তরুণ উপদেষ্টা লিখেছেন, ব্যক্তিগত লাভের আশায় আবদার, তদবির করা থেকে বিরত থাকুন। এতে করে আমার সাথে আপনার সম্পর্ক নষ্ট হতে পারে। দেশগঠনে পরামর্শ থাকলে জানাবেন।
বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) রাতে নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে ১৭ জনকে নিয়ে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন করা হয়। প্রধান উপদেষ্টা ও অন্য উপদেষ্টাদের শপথ পাঠ করান রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। ঢাকার বাইরে থাকায় তিন উপদেষ্টা ফারুক-ই-আযম, বিধান রঞ্জন রায় এবং সুপ্রদীপ চাকমা শপথ অনুষ্ঠানে উপস্থিত হতে পারেননি।
সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ছাড়া অন্যান্য উপদেষ্টারা হলেন- ১. সালেহ উদ্দিন আহমেদ ২. ড. আসিফ নজরুল ৩. আদিলুর রহমান খান ৪. হাসান আরিফ ৫. তৌহিদ হোসেন ৬. সৈয়দা রেজওয়ানা হাসান ৭. মো. নাহিদ ইসলাম ৮. আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া ৯. ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এম সাখাওয়াত হোসেন ১০. সুপ্রদীপ চাকমা ১১. ফরিদা আখতার ১২. বিধান রঞ্জন রায় ১৩. আ.ফ.ম খালিদ হাসান ১৪. নুরজাহান বেগম ১৫. শারমিন মুরশিদ ১৬. ফারুক-ই-আযম।
জেএইচ
মন্তব্য করতে লগিন করুন লগিন