আন্তর্জাতিক
‘৬ মাসের মুখ্যমন্ত্রী’ হতে চান মিঠুন চক্রবর্তী
সিনেমার মতো এমএলএ কিংবা মন্ত্রী নয়, বাস্তবে সরাসরি মুখ্যমন্ত্রী হতে চাইলেন বলিউড সুপারস্টার ও ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) নেতা মিঠুন চক্রবর্তী। বলেছেন, ছয় মাসের জন্য পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী হলে রাজ্যের চেহারাই বদলে দেবেন। গেলো শুক্রবার (২ জুন) কলকাতায় আরএসএসের ছাত্র সংগঠন অখিল ভারতীয় বিদ্যার্থী পরিষদের এক অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন তিনি।
পশ্চিমবঙ্গের বর্তমান পরিস্থিতি, বিভিন্ন নিয়োগ দুর্নীতি প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে মিঠুন চক্রবর্তী বলেন, ছয় মাসের জন্য মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার সুযোগ পেলে পশ্চিমবঙ্গকে বদলে দেবো। কোনো প্রজন্মকে শেষ করতে হলে আগে শিক্ষা ব্যবস্থাকে শেষ করতে হয়। সেটাই হচ্ছে আমাদের রাজ্যে। শিক্ষা ব্যবস্থার বর্তমান যে হাল, তাতে শ্মশান খুব কাছে।
বর্তমানে কলকাতার সুশীল সমাজ নীরব অভিযোগ তুলে মহাগুরু বলেন, পশ্চিমবঙ্গে যখনই কোনো ঘটনা ঘটেছে আমরা জেগেছি। তার প্রতিবাদ করেছি। কিন্তু এখন আমরা প্রতিবাদ করতে ভুলে গেছি। কারণ যারা প্রতিবাদের ক্ষেত্রে সামনের সারিতে থাকেন তাদের আত্মা বিক্রি হয়ে গেছে।
তিনি আরও বলেন, বর্তমান দুর্নীতি নিয়ে আমি প্রতিবাদ করতে চাই। অনেক বাধা আসবে। তবুও প্রতিবাদ করতে হবে। আমিও তোমাদের সঙ্গে প্রতিবাদে রয়েছি।
ক্ষমতাসীন তৃণমূল কংগ্রেস ও মুখ্যমন্ত্রীকে আক্রমণ করে মিঠুন বলেন, রাজনৈতিক নেতাদের শিক্ষিত হওয়া প্রয়োজন রয়েছে। যেভাবে আমরা বড় হয়েছি, এখন আর তার মিল খুঁজে পাইনা। আমার প্রশ্ন, এখনো কি পশ্চিমবঙ্গ ভারতবর্ষের মধ্যে রয়েছে? আমাদের দেশে যদি ফেডারেল গভর্নমেন্ট চালিত হয়, তাহলে আপনি কেন আইন, আদালত, আদালতের রায়কে সম্মান করেন না। সংবিধান ছাড়া কোনো দেশ হতে পারে না। সংবিধান থাকলে এসব হচ্ছে কেন?
এদিকে, এই বক্তব্য নিয়ে মিঠুনকে তীব্র আক্রমণ করেছেন তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ। তিনি বলেন, মনের আসল ইচ্ছাটা বেরিয়ে পড়েছে। চিরকাল সুযোগসন্ধানী। প্রথমে মমতা ব্যানার্জীকে ধরে রাজ্যসভায় গেলেন। তারপরে প্রণব মুখার্জীকে ধরে পদ্মশ্রীর সুপারিশ। এখন মুখ্যমন্ত্রী হতে দলবদল করে বিজেপিতে গেছেন। কিন্তু তিনি (মিঠুন চক্রবর্তী) যদি এমএলএ ফাটাকেষ্ট, মিনিস্টার ফাটাকেষ্টর পর চিফ মিনিস্টার ফাটাকেষ্ট বানান, তবেই একমাত্র মনোবাঞ্ছা পূরণ হবে! বাস্তবে হওয়ার কোনো সম্ভবনা নেই।
প্রথমে সিপিএম-ঘনিষ্ঠতা, এরপরে তৃণমূলের হয়ে রাজ্যসভার সদস্য হয়েছিলেন মিঠুন চক্রবর্তী। সারদা-কাণ্ডে নাম জড়ানোর পরে রাজ্যসভার পদ ছাড়েন তিনি। বেশ কিছু দিন রাজনীতি থেকে দূরে ছিলেন। কিন্তু ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনের আগে নরেন্দ্র মোদীর মঞ্চে তার আগমন হয়। সেই সময়ে মিঠুনকে সামনে রেখে বিজেপির ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা নিয়ে বেশ আলোচনা হয়েছিল। কিন্তু ওই নির্বাচনে বিজেপি পর্যদুস্ত হওয়ার পরে আবার রাজনীতি থেকে গা ঢাকা দেন মিঠুন। সম্প্রতি বিজেপি নেতা হিসেবে ফের সক্রিয় হয়ে তিনি দলের জাতীয় কর্মসমিতি এবং রাজ্য কোর কমিটির সদস্য হয়েছেন। এখন প্রায়ই তাকে তৃণমূলের বিরুদ্ধে কথা বলতে শোনা যায়।
আন্তর্জাতিক
যুক্তরাষ্ট্র অন্তর্বর্তী সরকারের সঙ্গে কাজ করতে প্রস্তুত : মার্কিন মুখপাত্র
অন্তর্বর্তী সরকার এবং ড. ইউনূসের সঙ্গে কাজ করতে প্রস্তুত। অন্তর্বর্তী সরকার বাংলাদেশের জনগণের জন্য গণতান্ত্রিক ভবিষ্যৎ নির্ধারণ করবে বলে জানিয়েছেন, মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার।
স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের নিয়মিত সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন তিনি।
প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের শপথ নেয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে মিলার বলেন, বাংলাদেশের জন্য আজ একটি শুভ দিন। নোবেল বিজয়ী অধ্যাপক ইউনূস সবেমাত্র বাংলাদেশ সরকারের প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেছেন।
যুক্তরাষ্ট্র এ সরকারকে অভিননন্দ জানিয়েছে কি না এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের চার্জ ডি’অ্যাফেয়ার্স আজ শপথ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন এবং তারা সাম্প্রতিক সহিংসতা বন্ধের জন্য ড. ইউনুসের আহ্বানকে স্বাগত জানাচ্ছেন।
প্রসঙ্গত, এসময়ে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাংলাদেশের নতুন অন্তর্বর্তী সরকারের যোগাযোগ হয়েছে বলেও জানান ম্যাথিউ মিলার। তবে কোন বিষয়ে যোগাযোগ হয়েছে তিনি সে বিষয়ে বিস্তারিত বলেন নি।
আই/এ
এশিয়া
জাপানে ৭.১ মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্প
জাপানের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় এলাকায় রিখটার স্কেলে ৭ দশমিক ১ মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্প আঘাত হেনেছে।
বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) স্থানীয় সময় বিকেল ৪টা ৪৩ মিনিটের দিকে পশ্চিমাঞ্চলীয় প্রধান দ্বীপ কিয়ুশুর মিয়াজাকি অঞ্চলে ভূমিকম্পটি আঘাত হানে।
জাপানের আবহাওয়া সংস্থার (জেএমএ) বরাত দিয়ে দেশটির রাষ্ট্রায়ত্ত সংবাদমাধ্যম এনএইচকে ওয়ার্ল্ড এ তথ্য জানিয়েছে।
খবরে বলা হয়েছে, ভূমিকম্পের পর দেশটিতে সুনামির সতর্কতা জারি করা হয়েছে। মিয়াজাকিতে সমুদ্রের ঢেউ ইতোমধ্যে ৫০ সেন্টিমিটারে পৌঁছেছে। তবে তাৎক্ষণিকভাবে বড় ধরনের কোনো ক্ষয়ক্ষতি কিংবা হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি।
এ বিষয়ে দেশটির মন্ত্রিপরিষদের মুখ্য সচিব ইয়োশিমাসা হায়াশি গণমাধ্যমকে বলেন, ভূমিকম্পের পর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্ল্যান্টগুলোতে কোনো ধরনের অস্বাভাবিক ঘটনা দেখা যায়নি। সরকার ভূমিকম্পে ক্ষয়ক্ষতি ও হতাহতের বিষয়ে খোঁজখবর নিচ্ছে।
প্রসঙ্গত, জাপানে ভূমিকম্পের ঘটনা একেবারে সাধারণ। বিশ্বে ৬ বা তার চেয়ে বেশি মাত্রার ভূমিকম্পের প্রায় এক-পঞ্চমাংশই এদেশে ঘটে থাকে।
এর আগে, ২০১১ সালের ১১ মার্চ দেশটির উত্তর-পূর্ব উপকূলে ৯ মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্প আঘাত হানে। যেটি ছিলো জাপানের ইতিহাসে সবচেয়ে শক্তিশালী ভূমিকম্প। ওই সময় ভূমিকম্পের পর দেশটিতে বিশাল সুনামি আঘাত হানে।
সূত্র: রয়টার্স
জিএমএম/
আন্তর্জাতিক
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে জনগণের ইচ্ছাকে প্রাধান্য দিতে হবে: যুক্তরাষ্ট্র
বাংলাদেশের পরিস্থিতির উন্নয়নের ব্যাপারটি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করছে। ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার যেনো গণতন্ত্র, আইন ও বাংলাদেশি জনগণের আকাঙ্খা পূরণ করে-এমনটাই চাইছে যুক্তরাষ্ট্র।
স্থানীয় সময় বুধবার (৭ আগস্ট) ওয়াশিংটনে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের নিয়মিত ব্রিফিংয়ে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে যুক্তরাষ্ট্রে এমনটাই আশা করে বলে জানিয়েছেন মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার। এদিন যুক্তরাষ্ট্রপ্রবাসী ইরাকের এক সাংবাদিক জানতে চান, ‘বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান হিসেবে ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। বাংলাদেশে তার বা অন্যদের সঙ্গে আপনাদের যোগাযোগ হয়েছি কী? বাংলাদেশের স্থিতিশীলতা পরিস্থিতিকে আপনি কীভাবে মূল্যায়ন করবেন?’
জবাবে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার বলেন, ‘আমরা এখনও যোগাযোগ করেনি। আমরা বাংলাদেশের পরিস্থিতির উন্নয়ন পর্যবেক্ষণ অব্যাহত রাখছি এবং আমরা এরইমধ্যে দেখেছি অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান হিসেবে ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। আমরা মনে করি তার নেতৃত্বে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার বাংলাদেশে দীর্ঘমেয়াদি শান্তি ও রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা প্রতিষ্ঠায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। আপনি নিশ্চয়ই মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে বলতে শুনেছেন যে. অন্তর্বর্তীকালীন সরকার যে সিদ্ধান্ত নেবে তা যেনো গণতান্ত্রিক নীতিমালাকে, আইনের শাসন এবং সিদ্ধান্তে বাংলাদেশি জনগণের ইচ্ছা প্রতিফলিত হয়।
এসময় যুক্তরাষ্ট্রপ্রবাসী বাংলাদেশি সাংবাদিক মুশফিকুল ফজল আনসারী একটি প্রশ্ন করেন। তার প্রশ্নটি ছিল, আপনি কি জানেন যে স্বৈরশাসক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পুত্র ভার্জিনিয়ায় অবস্থান করে নতুন সরকারকে হুমকি দিচ্ছেন, সহিংসতা উসকে দিচ্ছেন? তিনি সাবেক স্বৈরশাসক শেখ হাসিনার তথ্য ও প্রযুক্তি বিষয়ক উপদেষ্টা ছিলেন যিনি বাংলাদেশে ইন্টারনেট বন্ধ করে দিয়েছিলেন। দয়াকরে তার ব্যাপারে আপনার মন্তব্য জানাবেন কী?’
জবাবে ম্যাথিউ মিলার বলেন, মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র বলেন, ‘একজন সাধারণ নাগরিকের বিবৃতি নিয়ে আমার কোনো মন্তব্য নেই। আমি এরইমধ্যে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কথা বলেছি এবং আমরা দেখতে চাই এই সরকার কী পদক্ষেপ নিয়ে এগিয়ে যায়।
এসময় মুশফিকুল ফজল আনসারী আরও জানতে চান, ‘দেশের শান্তি প্রতিষ্ঠায় এবং একটি অবাধ, নিরপেক্ষ ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের নতুন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে প্রত্যাশা নিয়ে আপনার কী মন্তব্য?
জবাবে ডিপার্টমেন্ট অফ স্টেটের মুখপাত্র বলেন, শনের প্রশ্নের উত্তরে আমি যেমনটি বলেছি – অন্তর্বর্তীকালীন সরকার যখন কোনো সিদ্ধান্ত নেয়, আমরা দেখতে চাই ওই সিদ্ধান্তে যেনো গণতান্ত্রিক নীতি মেনে চলা হয় এবং জনগণের ইচ্ছার প্রতিফলন ঘটে।
মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের নিয়মিত ওই ব্রিফিংয়ে ফিলিস্তিনের গাজা, দক্ষিণ আমেরিকার ভেনিজুয়েলা, ইরাক ও ইরানের পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা হয়।
এমআর//
মন্তব্য করতে লগিন করুন লগিন