অপরাধ
ব্যাগের সূত্র ধরে খুলল মেছের আলী হত্যা রহস্যের জট
রাজধানীর খিলক্ষেতে ফেলে যাওয়া একটি ব্যাগের সূত্র ধরে মেছের আলী হত্যার রহস্য উদঘাটন করেছে পুলিশ। এ ঘটনায় রমজান আলী নামে একজনকে গ্রেপ্তারও করা হয়েছে। রোববার (৪ জুন) রাতে গাজীপুরের শ্রীপুর থানার মাওনা এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
গুলশান বিভাগের ক্যান্টনমেন্ট জোনের অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার ইফতেখায়রুল ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, গেলো ২৩ মে বিকালে খিলক্ষেত থানার বরুয়ার বোয়ালিয়া খাল সংলগ্ন আশিয়ান হাউজিং প্রজেক্টের বালুর চরে মেছের আলীর মৃতদেহ পাওয়া যায়। ওই ঘটনায় খিলক্ষেত থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা হয়। মামলাটি তদন্তকালে ঘটনাস্থলে একটি ব্যাগ পাওয়া যায়। সেই ব্যাগ থেকে লোহার কাঁচি, কম্বলসহ কিছু নতুন-পুরনো কাপড় ও মিনা নামে একজনের জন্ম নিবন্ধন ও টিকা কার্ড পাওয়া যায়।
অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার বলেন, প্রাপ্ত ব্যাগ ও ঘটনাস্থলের আশপাশের সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ ও জন্ম সনদের প্রেক্ষিতে মিনা ও তার স্বামী শাহাবুদ্দিনকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়।
জিজ্ঞাসাবাদে এই দুইজন জানায়, পবিত্র ঈদুল ফিতরের কয়েক দিন আগে শাহাবুদ্দিন তার গ্রামের বাড়ি নেত্রকোনায় যাওয়ার জন্য নারায়ণগঞ্জ থেকে কমলাপুর রেল স্টেশনে উপস্থিত হন। ওই সময় রমজান আলী নামে এক ব্যক্তির সঙ্গে নেত্রকোনায় যাওয়ার কথা বলে। রমজান আলী ট্রেনের জন্য অপেক্ষা না করে কারওয়ান বাজার থেকে বাসে করে যাওয়ার প্রস্তাব দেয়। শাহাবুদ্দিন সরল বিশ্বাসে রমজানের সঙ্গে কারওয়ান বাজারে যায়। সেখানে গিয়ে রমজান শাহাবুদ্দিনকে চা পান করার কথা বলে। চা পান করার পর শাহাবুদ্দিনকে তার কাছে থাকা ব্যাগ ও টাকা তাকে দিতে বলে রমজান। শাহাবুদ্দিন চারশত টাকা ও তার ব্যাগটি রমজানের কাছে দেয়। রমজানের মোবাইল ফোন থেকে শাহাবুদ্দিন তার স্ত্রীকে জানায়, সে রমজানের সঙ্গে গ্রামের বাড়ি যাচ্ছে, সেও একই এলাকায় যাবে। শাহাবুদ্দিন চা পান করার পর তন্দ্রাচ্ছন্ন হলে রমজান তার ব্যাগ ও টাকা নিয়ে চলে যায়। ঘটনাস্থলে প্রাপ্ত ব্যাগটি শাহাবুদ্দিনের খানো হলে সে তার ব্যাগটি শনাক্ত করে।
ইফতেখায়রুল ইসলাম বলেন, গত ২০ মে মেছের আলী বাসা থেকে বের হলে সেই রাতে বিমানবন্দর রেলস্টেশনে রমজান আলীর সঙ্গে পরিচয় হয়। অটোরিকশাযোগে রমজান ও মেছের আলী বড়ুয়া রেলগেট এলাকায় যায়। তখন রমজান আলীর পেছনে একটি ব্যাগ ঝুলানো ছিল। ওই ব্যাগের ভেতরেই শাহাবুদ্দিনের কাছ থেকে নেওয়া ব্যাগটি ছিল। মেছের আলীকে নিয়ে রমজান আলী রেলগেটের সামনের এক দোকানে চা পান করে। চা পান করার সময় মেছের আলীর কাছে টাকা হাজার রমজান আলী দেখতে পায়। এরপর রমজান কৌশলে মেছের আলীর চায়ের মধ্যে চেতনানাশক ওষুধ মেশায়।
পুলিশের এই কর্মকর্তা আরও বলেন, মেছের আলীর কাছে থাকা চার হাজার টাকা নেয়াই ছিল রমজান আলীর মূল উদ্দেশ্য। মেছের আলী ও রমজান চা পান করার পর বরুয়ার বোয়ালিয়া খাল সংলগ্ন আশিয়ান হাউজিং প্রজেক্টের বালুর চরে যায়। কিছুক্ষণ পর মেছের আলী অজ্ঞান হলে মেছেরকে একটু দূরে বড় বড় ঘাসযুক্ত জায়গায় রেখে ঘটনাস্থল থেকে চলে যায় রমজান। কিন্তু ভুলে ব্যাগটি রেখে যায়। ওই ব্যাগের সূত্র ধরেই অপরাধীকে শনাক্ত করতে সক্ষম হয় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীটি।
গত রোববার রাতে গাজীপুরের শ্রীপুর থানার মাওনা এলাকা থেকে রমজানকে গ্রেফতার করে পুলিশ। গতকাল আদালতে পাঠানো হলে দোষ স্বীকার করে রমজান জবানবন্দি দেন বলে জানিয়েছেন পুলিশের এই কর্মকর্তা।
অপরাধ
রাজধানীতে বস্তা ভর্তি টাকাসহ একটি গাড়ি আটক করলেন শিক্ষার্থীরা
রাজধানীর উত্তরায় একটি প্রাইভেটকার থেকে এক বস্তা টাকাসহ একটি শটগান উদ্ধার করেছেন শিক্ষার্থীরা। এই ঘটনায় তিনজনকে হেফাজতে নিয়েছে নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা।
বুধবার (৭ আগস্ট) এ সংক্রান্ত একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা গণমাধ্যমে জানান, রাজধানীর উত্তরার একটি বাসার গ্যারেজ থেকে গাড়িটি জব্দ করা হয়। এ সময় তিনজনকে হেফাজতে নেয় নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা। পরে গাড়ি থেকে এক বস্তা টাকা উদ্ধার করে হেফাজতে নেন নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা। এ সময় স্থানীয় জনতা ও শিক্ষার্থীরা উল্লাস করেন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা আরও জানান, আওয়ামী লীগ ঘরোয়ানার একটি ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠানের এমডির গাড়ি থেকে এ টাকা উদ্ধার করা হয়েছে। গাড়ি থেকে এক বস্তা টাকাসহ একটি শটগান উদ্ধার করে উত্তরা টাউন কলেজের শিক্ষার্থীসহ অনান্য বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।
এএম/
অপরাধ
কাশিমপুর কারাগার থেকে পালিয়েছে ২০৯ বন্দি, নিহত ৬
গাজীপুরের কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে ২০৯ জন বন্দি পালিয়েছেন। পালিয়ে যাওয়ার সময় নিরাপত্তাকর্মীদের গুলিতে ছয়জন বন্দি নিহত হয়েছেন।
বুধবার (৭ আগস্ট) বিকেলে কাশিমপুর হাই সিকিউরিটি কেন্দ্রীয় কারাগারের সিনিয়র জেল সুপার সুব্রত কুমার বালা গণমাধ্যমকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান,গেলো মঙ্গলবার বিকেলে কাশিমপুর হাই সিকিউরিটি কেন্দ্রীয় কারাগারের বন্দিরা কারাগার ভেঙে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। কারারক্ষীরা তাদের নিভৃত করার চেষ্টা করলে বন্দিরা কারারক্ষীদের ওপর চড়াও হয়। বন্দিদের কেউ দেয়াল ভেঙে, কেউ দেয়াল টপকে, আবার কেউ দেয়ালের সঙ্গে বিদ্যুতের পাইপ লাগিয়ে কারারক্ষীদের মারধর করে পালিয়ে যেতে চান।
একপর্যায়ে সেনাবাহিনীকে খবর দিলে তারা কমান্ডো অভিযান চালিয়ে বিদ্রোহ দমন করেন।এসময়ে বন্দিদের মধ্যে ২০৯ জন দেয়াল টপকে পালিয়ে গেছে।বন্দিদের ঠেকাতে নিরাপত্তাকর্মীদের গুলিতে ছয়জনের মৃত্যু হয়েছে। নিহতদের ময়নাতদন্তের জন্য গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।
প্রসঙ্গত, নিহতদের নাম পরিচয় পরে জানানো হবে বলে জানিয়েছেন সিনিয়র জেল সুপার।
আই/এ
অপরাধ
কাশিমপুর কারাগারে তীব্র উত্তেজনা, সেনাবাহিনীর শক্ত অবস্থান
গাজীপুরের কাশিমপুর হাইসিকিউরিটি কেন্দ্রীয় কারাগারের ভেতরে বন্দিরা মুক্তির দাবিতে উত্তেজনা শুরু করেছেন। কারারক্ষীদের জিম্মি করে অনেকে দলবদ্ধভাবে বের হয়ে আসার চেষ্টা করছেন। খবর পেয়ে সেনা সদস্যরা এসে প্রাথমিকভাবে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন।
মঙ্গলবার (৬ আগস্ট) দুপুরের দিকে এ পরিস্থিতি দেখা গেছে। এসময়ে ওই এলাকার আকাশে হেলিকপ্টার চক্কর দিতে দেখা যায়।
কারা কর্তৃপক্ষ জানান, কাশিমপুর কারা কমপ্লেক্সে পৃথক চারটি কারাগার রয়েছে। এর মধ্যে বিডিআর বিদ্রোহ মামলার সাজাপ্রাপ্ত আসামি, ফাঁসি ও যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত দুর্ধর্ষ জঙ্গি বন্দিরা রয়েছে। এছাড়া রাজনৈতিক মামলায় গ্রেপ্তার অনেক নেতাকর্মীও ওই কারাগারে রয়েছে।
জানা যায়, বেলা ১১টার দিকে কিছু বন্দি কারাগারের অভ্যন্তরে থাকা কারারক্ষীদের জিম্মি করে মুক্তির দাবিতে বিদ্রোহ শুরু করে। এসময়ে কারারক্ষীরা তাদের শান্ত করার চেষ্টা করে ব্যর্থ হন। আগে থেকেই সেখানে অল্প সংখ্যক সেনাবাহিনীর সদস্যরা তাদের নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করেন। উত্তেজনা আরও বেড়ে গেলে দুপুর দেড়টার দিকে অতিরিক্ত সেনা সদস্য হেলিকপ্টার যোগে কারা অভ্যন্তরে এসে বন্দিদের নিয়ন্ত্রণ করেন।
প্রসঙ্গত, কারা অভ্যন্তরে বিদ্রোহের খবর পেয়ে বন্দিদের স্বজনরা সকাল থেকেই কারাগারের সামনে অবস্থান করেন। এ সময় তাদের সঙ্গে আন্দোলনকারীরা যোগ দিয়ে বিক্ষোভ করে। কারাগারের বাইরে একটি ঝুট গুদামে অগ্নিসংযোগ করা হয়। পরে সেনা সদস্যরা বাইরের বিক্ষোভকারীদের ধাওয়া করে ছত্রভঙ্গ করে দেন।
আই/এ
মন্তব্য করতে লগিন করুন লগিন