স্বাস্থ্য
নিজ কার্যালয়ে অবরুদ্ধ বিএসএমএমইউ ভিসি
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) উপাচার্য অধ্যাপক ডা. শারফুদ্দিন আহমেদকে নিজ কার্যালয়ে অবরুদ্ধ করেছেন চিকিৎসকরা। মাসিক ভাতা বৃদ্ধি, বকেয়া ভাতা পরিশোধ ও নিয়মিত ভাতা দেয়ার দাবিতে আন্দোলন করছেন বিএসএমএমইউ-এর অধীন পোস্টগ্রাজুয়েট প্রাইভেট প্রশিক্ষণার্থী পাঁচ শতাধিক চিকিৎসক।
মঙ্গলবার (১৩ জুন) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে বিএসএমএমইউয়ের উপাচার্যের কার্যালয়ের নিচে অবস্থান নেন চিকিৎসকরা। পরে বেলা ১১টা ৫০ মিনিটের দিকে ভিসি কার্যালয়ের গেটে অবস্থান নেন তারা।
এ সময় উপাচার্যের পক্ষ থেকে চিকিৎসকদের শান্ত করার চেষ্টা করা হলে সরাসরি তারা উপাচার্যের সাথে কথা বলতে চান। তাদের দাবি আদায় না হলে অবস্থানের ঘোষণা দেন।
আন্দোলনকারী চিকিৎসকরা ভাতা ৫০ হাজার টাকা এবং তা নিয়মিত প্রদানের দাবিতে শ্লোগান দিতে থাকেন।
শিক্ষার্থীরা বলেন, ২০২১-২২ সেশনের ৭৫০ ও ২০২২-২৩ সেশনের ৭৫০ জনসহ মোট ১৫শ প্রাইভেট চিকিৎসক এই কোর্সে আছেন। কিন্তু প্রতিবারই ভাতা আদায়ের জন্য কখনো বিএসএমএমইউতে, কখনো স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে আবার কখনো অর্থ মন্ত্রণালয়ে ধরনা দিতে হচ্ছে। যেখানেই যাই তারা একজন আরেকজনের কাছে যেতে বলেন, ডিশোল্ডারিং করে দেয়ার চেষ্টা করেন। আজ আমরা দাবি আদায় করেই ঘরে ফিরব।
এ সময় চিকিৎসকদের উদ্দেশ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ডা. হাবিবুর রহমান দুলাল বলেন, আমরা আপনাদের দাবির বিষয়ে জেনেছি। ভিসি স্যারও জেনেছেন আপনাদের বিষয়ে। কিন্তু এভাবে আন্দোলন করে দাবি আদায় সম্ভব নয়। আপনার ডা. মিল্টন হলে বসেন, সেখানে ভিসি স্যার আসবেন, অন্যথায় আপনাদের থেকে ৫ জন প্রতিনিধি ভিসি অফিসে পাঠান। স্যার আপনাদের কথা শুনবেন।
এ সময় আন্দোলনকারী চিকিৎসকরা রুদ্ধ বৈঠকের বিষয়ে অনীহা প্রকাশ করেন। ভিসিকে চিকিৎসকদের কাছে আসার অনুরোধ করেন।
তারা বলেন, নানা গল্প-কাহিনী বলে আমাদেরকে অনেক দমিয়ে রাখা হয়েছে, আজকে আমরা দমে যেতে এখানে আসিনি।
স্বাস্থ্য
মেডিকেল কলেজের মান বাড়লে আরও দক্ষ চিকিৎসক তৈরি হবে: স্বাস্থ্যমন্ত্রী
মেডিকেল কলেজগুলোর সুযোগ-সুবিধা বাড়াতে হবে। মেডিকেল কলেজগুলো ডাক্তার তৈরি করে। মেডিকেল কলেজগুলোর মান বাড়লে এবং উন্নত যুগোপযোগী শিক্ষা দিলে সুদক্ষ ডাক্তার পাওয়া যাবে। বলেছেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী ডা. সামন্ত লাল সেন।
রোববার ( ১৪ জুলাই ) দিনাজপুরের এম আব্দুর রহিম মেডিকেল কলেজে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের সঙ্গে মতবিনিময় কালে গণমাধ্যমকে এসব কথা বলেন তিনি।
স্বাস্থ্যমন্ত্রীবলেন, দেশে বিদ্যমান মেডিকেল কলেজগুলোর মান বৃদ্ধি পেলে আরও বেশি দক্ষ চিকিৎসক তৈরি হবে।
ডা. সামন্ত লাল সেন বলেন, মেডিকেল প্রফেশনাল এবং রোগীদের সুরক্ষার জন্য স্বাস্থ্য সুরক্ষা আইনের খসড়া তৈরি শেষ পর্যায়ে আছে। ইতোমধ্যে অনেকবার এটা নিয়ে মন্ত্রণালয়ে সভা হয়েছে। এই আইন রোগী এবং ডাক্তার উভয়কেই সুরক্ষা দেবে।
তিনি আরও বলেন, দেশের চিকিৎসকদের মান অনেক ভালো কিন্তু তাদের আরও কিছু সুযোগ-সুবিধা দিতে হবে। তাহলে চিকিৎসকরা একটা ভালোপর্যায় যেতে পারবে। জাতীয় সংসদে দাঁড়িয়ে সংসদ সদস্যরাপ্রশ্ন তোলেন ডাক্তার নেই। সরকার সেই লক্ষ্যে কাজ করছে। ডাক্তার সংকট কাটানোর জন্য আরও নতুন করে কিছু চিকিৎসক নেয়ার প্রক্রিয়া চলছে। আশা করি, অচিরেই সংকট কাটিয়ে উঠবে।
এম আব্দুর রহিম মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. এএফএম নূরুউল্লাহর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এই মতবিনিময় সভায় অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জাতীয় সংসদের হুইপ ইকবালুর রহিম, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল বাসার মোহাম্মদ খুরশীদ আলম প্রমুখ।
এএম/
রোগব্যাধি
পায়ের গোড়ালি ব্যথা কেন হয়, ব্যথা কমাতে করণীয়
অনেকের সকালে ঘুম থেকে ওঠার পর মেঝেতে পা ফেলার সময় ব্যথা লাগে। অথবা সারাদিনের কাজের পর রাতে পায়ের গোড়ালি ব্যথায় ঘুমাতে কষ্ট হয়। অনেকের আবার অনেকক্ষণ বসে কাজ করার পর দাঁড়ালেও গোড়ালি ব্যথা করে। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে এ রকম ব্যথার কারণ পায়ের পাতার নিচে প্রদাহ বা প্লান্টার ফ্যাসাইটিস।
পায়ের গোড়ালিতে ব্যথা কেন হয়?
আমাদের পায়ের সামনের দিকে ছোট ছোট কিছু হাড় আছে যেগুলো ব্যান্ডের মতো লিগামেন্ট দিয়ে পেছনের দিকে গোড়ালির হাড়ের সাথে সংযুক্ত থাকে। এই লিগামেন্টকে প্লান্টার ফাসা বলে। শরীরের ওজন যেন সরাসরি পায়ের হাড়ের উপর চাপ প্রয়োগ করতে না পারে, সে জন্য এই ব্যান্ড কাজ করে। এই ব্যান্ডে প্রদাহ হলে গোড়ালিতে ব্যথা হয়। তখন এটিকে বলে প্লান্টার ফ্যাসাইটিস।
প্লান্টার ফ্যাসাইটিসে ভুগছেন কিনা যেভাবে বুঝবেন
# সকালে বিছানা থেকে নেমে পা ফেলার সাথে সাথেই গোড়ালিতে ব্যথা হলে
# দীর্ঘসময় বসে থাকার পর হাঁটার সময় ব্যথা হলে
# সকালে গোড়ালি শক্ত হয়ে প্রচন্ড ব্যথা হলে
# সিঁড়ি দিয়ে ওঠানামা করার সময় ব্যথা বেড়ে গেলে
# কখনও কখনও গোড়ালি ফুলে যেতে পারে
# অনেকক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকার পর ব্যথা বেড়ে গেলে
# পায়ের গোড়ালিতে ব্যথা বা প্লান্টার ফ্যাসাইটিস
কোন কারণে এ সমস্যা হয়?
প্লান্টার ফাসাতে অতিরিক্ত টান পড়লে প্লান্টার ফ্যাসাইটিস হয়। সাধারণত পুরুষদের চেয়ে মহিলাদের এই সমস্যা বেশি হয়। এছাড়াও আরও নানা কারণে এমনটি হতে পারে। যেমন-
১. কোনো কারণে প্লান্টার ফাসা মচকে গেলে
২. অতিরিক্ত ওজন
৩. হঠাৎ করেই বেশি ব্যায়াম করলে
৪. প্রতিদিন কয়েক ঘন্টা পায়ের পাতার উপর দাঁড়িয়ে থাকলে
৫. অন্য কোনো শারীরিক সমস্যা, যেমন- রিউমাটয়েড আর্থ্রাইটিস থাকলে
৬. উঁচু হিল পরে অভ্যাস থাকার পর হঠাৎ করে ফ্ল্যাট জুতা পরলে
৭. পায়ের পাতা সমতল থাকলে কিংবা অস্বাভাবিক বাঁকা থাকলে
৮. পায়ের পাতা অস্বাভাবিক অবস্থানে রাখলে
এই সমস্যার ঝুঁকিতে কারা আছেন?
১. ৪০-৬০ বছর বয়সী মানুষের মধ্যে এই সমস্যা বেশি দেখা যায়। বিশেষ করে নারীরা বেশি ঝুঁকিতে থাকেন।
২. দৌড়, নৃত্য ইত্যাদির কারণে গোড়ালিতে চাপ পড়ে। নিয়মিত যারা এগুলো করেন তাদের মধ্যে পায়ের গোড়ালিতে ব্যথা হওয়ার প্রবণতা বেশি থাকে।
৩. ওজন বেশি হলে, দীর্ঘ সময় কোনো পেশাতে দাঁড়িয়ে কাজ করতে হলে এবং গর্ভবতী নারীদের ডেলিভারি হওয়ার কিছুদিন আগে এই সমস্যা হতে পারে।
৪. এছাড়া যারা আর্থ্রাইটিস বা এনকাইলোজিং স্পন্ডেলাইটিসে ভুগছেন, দীর্ঘদিন শক্ত হিলের জুতো ব্যবহার করছেন এমন ব্যক্তিও প্লান্টার ফ্যাসাইটিসের ঝুঁকিতে আছেন।
৫. অনেকের পায়ে গঠনগত সমস্যা থাকে, যেমন- ফ্ল্যাট ফুট সমস্যা। এটিও গোড়ালি ব্যথার ঝুঁকি বাড়ায়।
সহজ কয়েকটি ব্যায়াম
রাতে ঘুমানোর আগে কয়েক মিনিটের এই ব্যায়ামগুলো করলে বেশ আরাম পাওয়া যাবে। সেই সাথে গোড়ালিতে ব্যথা হওয়ার চান্সও কমে যাবে অনেকটাই।
১. মেঝেতে একটা তোয়ালে বা কাপড় রাখুন। এবার ওটার উপর পা দিয়ে সামনের আঙুলগুলো দিয়ে তোয়ালেটিকে আঁকড়ে ধরুন এবং নিজের দিকে আনতে চেষ্টা করুন। অন্য পা দিয়েও ব্যায়ামটি করুন।
২. ব্যায়ামের পর একটা স্বস্তিকর আরামদায়ক ঘুমের জন্য খানিকক্ষণ পায়ের পাতায় মালিশ (ফুট ম্যাসাজ) করে নিন। সবচেয়ে ভালো পদ্ধতি হলো, ছোট্ট একটা প্লাস্টিকের বল মেঝেতে রেখে তার ওপর পায়ের পাতা দিয়ে চেপে ধরে নাড়ানো। দুই পায়ে ৩০ সেকেন্ড এই ব্যায়াম করুন। এতে পায়ের পাতা রিলাক্সড হবে।
ব্যথা কমাতে করণীয়
১) ঘরোয়াভাবে ব্যথা কমাতে তেল দিয়ে পায়ের পাতায় ম্যাসাজ করুন। একটি সমীক্ষা অনুসারে, ল্যাভেন্ডার অয়েলের প্রদাহরোধী বৈশিষ্ট্য রয়েছে, যা ব্যথার জন্য ভালো কাজ করে। অলিভ বা নারকেল তেলের সাথে এক বা দুই ফোঁটা এই অয়েল মিশিয়ে পায়ের তলায় ম্যাসাজ করুন। তারপর একটি পাত্রে উষ্ণ পানিতে কয়েক ফোঁটা ল্যাভেন্ডার অয়েল দিয়ে পা ডুবিয়ে রাখুন।
২) এমন জুতা পরার চেষ্টা করুন যেটা পায়ের গোড়ালিকে ভালো সাপোর্ট দেয়, বিশেষ করে যদি আপনার পায়ে চলাচল বেশি হয়ে থাকে।
৩) প্লান্টার ফ্যাসাইটিস এর সমস্যা কমাতে নাইট স্প্লিন্ট (night splint) বেশ কার্যকর। রাতভর পায়ের গোড়ালিকে নিউট্রাল পজিশনে রাখতে এটি হেল্প করে। কমপক্ষে ছয় মাস ধরে প্ল্যান্টার ফ্যাসাইটিস আছে এমন রোগীদের জন্য এটি সবচেয়ে ভালো কাজ করে। বেশিরভাগই এক থেকে তিন মাসের জন্য ব্যবহার করা হয় এবং নাইট স্প্লিন্ট হার্ড ও সফট দুটো মডেলেই পাওয়া যায়।
চিকিৎসা
- ব্যথা হলে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী ব্যথানাশক ওষুধ গ্রহণ করতে হবে
- প্রয়োজন অনুসারে ফিজিওথেরাপি, যেমন- ওয়াক্স, হাইড্রোথেরাপি, আলট্রাসাউন্ড থেরাপি দিতে হবে
- ফিজিওথেরাপিস্টের দেখানো এক্সারসাইজ, স্ট্রেচিং করতে হবে
- বরফের ব্যবহারে ঘরোয়াভাবে ব্যথা কমানো যায়
- প্রয়োজন অনুসারে অনেক সময় অর্থোটিকস ব্যবহার করতে হয়
- যদি কোনোটাতেই ব্যথা না কমে, তাহলে অপারেশন করতে হতে পারে
পায়ের গোড়ালিতে ব্যথা হলে হাঁটতে কষ্ট হতে পারে। তাই চেষ্টা করতে হবে যেন এই ব্যথা না হয়। এজন্য প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা নিতে হবে আগে থেকেই। আর ব্যথা হলে ঘরোয়া উপায়ে চেষ্টা করুন কমানোর জন্য। যদি কোনোভাবেই ব্যথা কমানো না যায়, তাহলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।
জেএইচ
আন্তর্জাতিক
আবারও ভয়ংকর রূপে করোনা, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সতর্কতা
আবারও ভয়ংকর রূপ ধারণ করতে যাচ্ছে করোনা ভাইরাস। সংক্রামক এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে গেলো সপ্তাহে বিশ্বজুড়ে মৃত্যু হয়েছে প্রায় ১৭০০ মানুষের। করোনাভাইরাস এর এমন ভয়াবহ রূপ তুলে ধরেছেন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) মহাপরিচালক টেড্রোস আধানম গেব্রেইয়েসুস।
শুক্রবার (১২ জুলাই) এক প্রতিবেদনে বিষয়টি নিশ্চিত করেছে বার্তাসংস্থা এএফপি।
প্রতিবেদনে বলা হয়,হঠাৎ এমন মৃত্যুর পর ঝুঁকিপূর্ণ জনগোষ্ঠীকে অতিদ্রুত করোনারোধী টিকা নেয়ার জন্য আহ্বান জানিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা।এছাড়া ডব্লিউএইচওর মহাপরিচালক কোভিড-১৯ ভ্যাকসিন গ্রহণের হার হ্রাসের বিষয়েও সতর্কবার্তা দিয়েছেন।
সংস্থাটির মহাপরিচালক জানান, ক্রমাগত মৃত্যুর সংখ্যা সামনে আসা সত্ত্বেও দেখা যাচ্ছে, স্বাস্থ্যকর্মী এবং ৬০ বছরের বেশি বয়সী ব্যক্তিদের মধ্যে ভ্যাকসিনের কভারেজ হ্রাস পেয়েছে, সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ জনগোষ্ঠীর মধ্যে তারাও রয়েছেন।
তিনি আরও বলেন, সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে থাকা লোকদের শেষ ডোজ নেয়ার ১২ মাসের মধ্যে আবারও কোভিড-১৯ ভ্যাকসিন নিতে ডব্লিউএইচও সুপারিশ করছে।
একইসঙ্গে ভাইরাস নজরদারি এবং সিকোয়েন্সিং বজায় রাখতে ও সাশ্রয়ী মূল্যে এবং নির্ভরযোগ্য পরীক্ষা, চিকিৎসা এবং সবার জন্য ভ্যাকসিন নিশ্চিত করার জন্য বিশ্বের সরকারগুলোর প্রতি আহ্বানও জানিয়েছে সংস্থাটি।
আই/এ
মন্তব্য করতে লগিন করুন লগিন