অপরাধ
বোরকায় ঢাকা নারী পকেটমার
ঈদুল আযহাকে সামনে রেখে রাজধানীতে সক্রিয় হয়ে উঠেছে ‘বোরকা পরিহিত’ নারী পকেটমার চক্র। বোরকা পরা অবস্থায় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, শপিংমল, হাসপাতাল, বাস স্টপেজে ঘুরে বেড়ান তারা। এসব জায়গায় বোরকাতে শরীর ঢেকে চললেও আড়ালে এসব নারী আসলে পকেটমার হিসেবে সংঘবদ্ধভাবে কাজ করেন।
আর এই নারী পকেটমাররা কৌশলে নারীদের ব্যাগ থেকেই উঠিয়ে নেন মোবাইল ফোন, টাকা ও স্বর্ণালঙ্কার। এসব পকেটমাররা মোবাইল ফোনগুলো বিক্রি করেন বিভিন্ন এলাকার মহাজনদের কাছে।
বুধবার (১৪ জুন) ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানিয়েছেন উপ-পুলিশ কমিশনার মশিউর রহমান।
ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) লালবাগ টিম ৯ জন পকেটমার ও ৭ জন মহাজনকে গ্রেপ্তার করেছে। তাদের কাছ থেকে উদ্ধার করা হয়েছে বিভিন্ন মডেলের ৪০টি মোবাইল ফোন।
গ্রেপ্তার এই ব্যক্তিদের জিজ্ঞাসাবাদ ও তদন্তে এ সব তথ্য জানিয়েছেন ডিবি লালবাগ বিভাগের উপ-কমিশনার মশিউর রহমান।
দুটি মোবাইল ফোন হারানোর ঘটনা তদন্ত করতে গিয়ে নারী পকেটমারদের সন্ধান পেয়েছে ডিবি। তদন্ত সূত্রে জানা গেছে, গত ১৭ এপ্রিল একজন এডিশনাল ডিস্ট্রিক্ট জাজের স্ত্রী নিউমার্কেট থেকে রিকশায় ইডেন মহিলা কলেজে যাওয়ার পথে এক পর্যায়ে তার ব্যাগ থেকে হারিয়ে ফেলেন আইফোনটি। ফোনটি উদ্ধার করে ডিবি।
গত ২ মে একজন সিনিয়র সাংবাদিকের স্ত্রী তার সন্তানকে স্কুল থেকে আনার জন্য যান আজিমপুরের ভিকারুন্নেসা নূন স্কুলে। স্কুলের গেইটে হঠাৎ দেখেন তার ব্যাগের চেইন খোলা; মোবাইলটি নাই। ১৪ মে ডিবি পুলিশ উদ্ধার করে দেয় আইফোনটি।
মশিউর রহমান জানান, রমনা এবং লালবাগ বিভাগে অবস্থিত বিভিন্ন মার্কেট, হাসপাতাল এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে আসা নারীদের ব্যাগ বা পকেট কেটে মোবাইল ও টাকা বিশেষ কৌশলে চুরি করার জন্য গড়ে উঠেছে নারী পকেটমারের একটি বড় চক্র।
তিনি বলেন, এরা বোরকা পরে, পর্দানশীল সেজে কখনো ছোট বাচ্চা কোলে নিয়ে স্নেহময়ী মায়ের অভিনয় করে সহসাই ঢুকে যায় জনারণ্যে। চোখের পলকে হাতিয়ে নেয় মোবাইল, নগদ টাকা ও ব্যাগে থাকা স্বর্ণালঙ্কার।
ডিবি লালবাগ বিভাগের অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার ও মাদক নিয়ন্ত্রণ টিমের সদস্যরা মঙ্গলবার সকাল থেকে দুপুরের মধ্যে ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজ ও আশপাশের এলাকা এবং গুলিস্তান এলাকায় তথ্য প্রযুক্তি ও গোপন তথ্যের ভিত্তিতে ধারাবাহিক অভিযান চালিয়ে ৯ জন নারী পকেটমারসহ মোট ১৬ জনকে গ্রেপ্তার করে। তাদের দখল থেকে বিভিন্ন মডেলের ৪০টি চোরাই মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়েছে।
গ্রেপ্তার নারীরা হলেন বর্ষা আক্তার অরফে মীম, সুমি আক্তার অরফে প্রিয়া, শাবনুর, আলেয়া অরফে আলো, সাথী আক্তার, মোছা. ছকিনা বেগম, সুজনা আক্তার অরফে সুজিনা আক্তার অরফে রুশকিনা, মোসা. তানিয়া খানম ও তাসলিমা খাতুন।
চোরাই মোবাইল কেনা-বেচায় জড়িত গ্রেপ্তার মহাজনরা হলেন মো. মাহাবুব হোসেন, মো. মোক্তার হোসেন, রফিকুল ইসলাম, মো. ইমরান হোসেন, ছৈয়দ হালদার, মো. আশরাফ ঢালী ও মো. জাকির হোসেন।
ডিবি কর্মকর্তারা জানিয়েছে, বর্ষা আগে কাজ করেছেন ডিজে শিল্পী হিসেবে। পরবর্তীতে বান্ধবীদের হাত ধরে নতুন মডেলের মোবাইল পাওয়ার আশায় যুক্ত হন মোবাইল পকেটমারির কাজে। গত পাঁচ বছরে এ কাজ করে ধরা খেয়েছেন তিনবার, ছাড়া পেয়ে একই কাজে ফিরেছেন।
১০ বছর বয়স থেকে মাকে পকেটমারির কাজ করতে দেখে এটাকেই পেশা হিসেবে বেছে নেয়ার সংকল্প করেন আলেয়া আক্তার আলো। গত ৮-৯ বছর ধরে দক্ষিণ ঢাকার বিভিন্ন জায়গা করে আসছেন পকেটমারির কাজ। তার সাথে যুক্ত হয়েছেন সুমি আক্তার প্রিয়া।
মশিউর রহমান বলেন, বর্ষা,আলো,প্রিয়া- এই তিন নারী পকেটমার গাউছিয়া মার্কেট, নিউমার্কেট, ইডেন কলেজ, বকশিবাজারস্হ বদরুন নেসা মহিলা কলেজ, আজিমপুরস্থ ভিকারুন্নেসা স্কুল অ্যান্ড কলেজ এলাকা দাপিয়ে বেড়াচ্ছিলেন। কোনো দিন একেকজন ৭টি পর্যন্ত মোবাইল চুরি করেছেন।
ডিবি জানিয়েছে, আইফোন বাদে অন্য ফোনের জন্য তাদেরকে দেয়া হয় ২ থেকে ৪ হাজার টাকা। আর আইফোনের জন্য দেয়া হয় ৭ থেকে ৮ হাজার টাকা।
তদন্ত কর্মকর্তারা জানান, চুরি করা মোবাইলগুলো থেকে বাটন মোবাইলগুলো বিক্রি হয় নিম্ন দামে। আইফোনগুলোর যন্ত্রাংশ খুচরা দামে বিক্রি করা হয়। এ ছাড়া আইএমইআই পরিবর্তন করেও বিক্রি করা হয়।
মার্কেট, স্কুলের ফটক, হাসপাতাল বা বাস স্টপেজে থাকা অবস্থায় নিজের মালামাল নিয়ে আরও সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়েছে ডিবি।
মোবাইল বা অন্য জিনিস চুরি বা হারিয়ে গেলে থানায় সাধারণ ডায়েরি বা মামলা করার পরামর্শ দিয়েছেন মশিউর রহমান। তিনি বলেন, উদ্ধার হওয়া ৪০টি মোবাইলের মধ্যে মাত্র একটি ফোন হারানোর জিডি পাওয়া গেছে। আইনানুগ ব্যবস্থা নিলে কখনও না কখনও সুফল পাওয়া যায়।
অপরাধ
রাজধানীতে বস্তা ভর্তি টাকাসহ একটি গাড়ি আটক করলেন শিক্ষার্থীরা
রাজধানীর উত্তরায় একটি প্রাইভেটকার থেকে এক বস্তা টাকাসহ একটি শটগান উদ্ধার করেছেন শিক্ষার্থীরা। এই ঘটনায় তিনজনকে হেফাজতে নিয়েছে নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা।
বুধবার (৭ আগস্ট) এ সংক্রান্ত একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা গণমাধ্যমে জানান, রাজধানীর উত্তরার একটি বাসার গ্যারেজ থেকে গাড়িটি জব্দ করা হয়। এ সময় তিনজনকে হেফাজতে নেয় নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা। পরে গাড়ি থেকে এক বস্তা টাকা উদ্ধার করে হেফাজতে নেন নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা। এ সময় স্থানীয় জনতা ও শিক্ষার্থীরা উল্লাস করেন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা আরও জানান, আওয়ামী লীগ ঘরোয়ানার একটি ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠানের এমডির গাড়ি থেকে এ টাকা উদ্ধার করা হয়েছে। গাড়ি থেকে এক বস্তা টাকাসহ একটি শটগান উদ্ধার করে উত্তরা টাউন কলেজের শিক্ষার্থীসহ অনান্য বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।
এএম/
অপরাধ
কাশিমপুর কারাগার থেকে পালিয়েছে ২০৯ বন্দি, নিহত ৬
গাজীপুরের কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে ২০৯ জন বন্দি পালিয়েছেন। পালিয়ে যাওয়ার সময় নিরাপত্তাকর্মীদের গুলিতে ছয়জন বন্দি নিহত হয়েছেন।
বুধবার (৭ আগস্ট) বিকেলে কাশিমপুর হাই সিকিউরিটি কেন্দ্রীয় কারাগারের সিনিয়র জেল সুপার সুব্রত কুমার বালা গণমাধ্যমকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান,গেলো মঙ্গলবার বিকেলে কাশিমপুর হাই সিকিউরিটি কেন্দ্রীয় কারাগারের বন্দিরা কারাগার ভেঙে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। কারারক্ষীরা তাদের নিভৃত করার চেষ্টা করলে বন্দিরা কারারক্ষীদের ওপর চড়াও হয়। বন্দিদের কেউ দেয়াল ভেঙে, কেউ দেয়াল টপকে, আবার কেউ দেয়ালের সঙ্গে বিদ্যুতের পাইপ লাগিয়ে কারারক্ষীদের মারধর করে পালিয়ে যেতে চান।
একপর্যায়ে সেনাবাহিনীকে খবর দিলে তারা কমান্ডো অভিযান চালিয়ে বিদ্রোহ দমন করেন।এসময়ে বন্দিদের মধ্যে ২০৯ জন দেয়াল টপকে পালিয়ে গেছে।বন্দিদের ঠেকাতে নিরাপত্তাকর্মীদের গুলিতে ছয়জনের মৃত্যু হয়েছে। নিহতদের ময়নাতদন্তের জন্য গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।
প্রসঙ্গত, নিহতদের নাম পরিচয় পরে জানানো হবে বলে জানিয়েছেন সিনিয়র জেল সুপার।
আই/এ
অপরাধ
কাশিমপুর কারাগারে তীব্র উত্তেজনা, সেনাবাহিনীর শক্ত অবস্থান
গাজীপুরের কাশিমপুর হাইসিকিউরিটি কেন্দ্রীয় কারাগারের ভেতরে বন্দিরা মুক্তির দাবিতে উত্তেজনা শুরু করেছেন। কারারক্ষীদের জিম্মি করে অনেকে দলবদ্ধভাবে বের হয়ে আসার চেষ্টা করছেন। খবর পেয়ে সেনা সদস্যরা এসে প্রাথমিকভাবে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন।
মঙ্গলবার (৬ আগস্ট) দুপুরের দিকে এ পরিস্থিতি দেখা গেছে। এসময়ে ওই এলাকার আকাশে হেলিকপ্টার চক্কর দিতে দেখা যায়।
কারা কর্তৃপক্ষ জানান, কাশিমপুর কারা কমপ্লেক্সে পৃথক চারটি কারাগার রয়েছে। এর মধ্যে বিডিআর বিদ্রোহ মামলার সাজাপ্রাপ্ত আসামি, ফাঁসি ও যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত দুর্ধর্ষ জঙ্গি বন্দিরা রয়েছে। এছাড়া রাজনৈতিক মামলায় গ্রেপ্তার অনেক নেতাকর্মীও ওই কারাগারে রয়েছে।
জানা যায়, বেলা ১১টার দিকে কিছু বন্দি কারাগারের অভ্যন্তরে থাকা কারারক্ষীদের জিম্মি করে মুক্তির দাবিতে বিদ্রোহ শুরু করে। এসময়ে কারারক্ষীরা তাদের শান্ত করার চেষ্টা করে ব্যর্থ হন। আগে থেকেই সেখানে অল্প সংখ্যক সেনাবাহিনীর সদস্যরা তাদের নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করেন। উত্তেজনা আরও বেড়ে গেলে দুপুর দেড়টার দিকে অতিরিক্ত সেনা সদস্য হেলিকপ্টার যোগে কারা অভ্যন্তরে এসে বন্দিদের নিয়ন্ত্রণ করেন।
প্রসঙ্গত, কারা অভ্যন্তরে বিদ্রোহের খবর পেয়ে বন্দিদের স্বজনরা সকাল থেকেই কারাগারের সামনে অবস্থান করেন। এ সময় তাদের সঙ্গে আন্দোলনকারীরা যোগ দিয়ে বিক্ষোভ করে। কারাগারের বাইরে একটি ঝুট গুদামে অগ্নিসংযোগ করা হয়। পরে সেনা সদস্যরা বাইরের বিক্ষোভকারীদের ধাওয়া করে ছত্রভঙ্গ করে দেন।
আই/এ
মন্তব্য করতে লগিন করুন লগিন