অপরাধ
১৬ নকল ডিবিকে গ্রেপ্তার করলো আসল ডিবি
ডিবি পরিচয়ে অপহরণকারী চক্রের মূল হোতাসহ ১৬ সদস্য গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। এসময় তাদের কাছ থেকে অপহরণ কাজে ব্যবহৃত মাইক্রোবাস, দেশীয় অস্ত্র, ডিবি জ্যাকেট, হ্যান্ড কাপ এবং মোবাইল উদ্ধার করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (১১ জুলাই) দুপুরে ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এই তথ্য জানান ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার (ডিবি) হারুন অর রশীদ।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন– মো. শহিদুল ইসলাম মাঝি ওরফে শহিদ মাঝি (৫৩), সাগর চন্দ্র মালি (৩০), শাহ আলম হাওলাদার (৩৫), মো. কামরুল ইসলাম ওরফে রমিজ তালুকদার (৩০), মো. মাকসুদুল মোমিন ওরফে শামীম (৪৩), মো. হাসান (৩৮), মো. নুরুল ইসলাম (৩০), মো. খলিলুর রহমান ওরফে মাগার (৪৬), মো. আকরাম হোসেন (৩৮), মো. দ্বীন ইসলাম ওরফে কাউছার আহম্মেদ (৩৫), মো. ইলিয়াছ আহম্মেদ ওরফে নিরব (৩২), মো. ফরহাদ আলী (৬৬), মো. রিয়াজ হোসেন হাওলাদার ওরফে রিয়াজুল (৩১), মো. শফিকুল ইসলাম লিটন (৫০), মো. সেরাজুল ইসলাম (৪৪) ও মো. জহিরুল ইসলাম পিন্টু (৩৮)।
হারুন অর রশীদ জানান. শহিদ মাঝি একসময় ডিবির সোর্স হিসেবে কাজ করতো। ২০১২ সালে শহিদুল মাঝি অন্যদের বুঝিয়ে ডাকাত দল তৈরি করে। তার দলে ১০ জন সদস্য রয়েছে। আমরা সাত জনকে গ্রেপ্তার করেছি। অন্যদের নাম-পরিচয় পেয়েছি, তাদের গ্রেপ্তারেরর চেষ্টা চলছে। গেলো ১৭ জুন মামলার বাদী আব্দুল আজিজ (৩১) ব্যবসায়িক প্রয়োজনে তার ভগ্নিপতির মাধ্যমে ভগ্নিপতির বন্ধুর কাছ থেকে ১৩ লাখ টাকা ধার নেন। ওই দিন বিকেলে পল্টন থানাধীন বায়তুল ভিউ মার্কেটের পাশে অবস্থিত কার্পেট মার্কেটের সামনে থেকে কাঁধ ব্যাগে ১৩ লাখ টাকা নিয়ে ভাড়ায় চালিত মোটরসাইকেল যোগে তার খিলক্ষেতের বাসার উদ্দেশ্যে রওনা হন।
ডিবি প্রধান বলেন, রাত ৭টা ৫৫ মিনিটে ক্যান্টনমেন্ট থানাধীন জিয়া কলোনি এমপি চেকপোস্টের সামনে পৌঁছানো মাত্রই অজ্ঞাতনামা তিন-চার জন মাইক্রোবাসের মাধ্যমে তার ভাড়ায় চালিত মোটরসাইকেলের গতিরোধ করে। এরপর অজ্ঞাতনামা তিন/চার জন ডিবির পোশাক পরিহিত অবস্থায় এবং ডিবি পরিচয়ে তাকে জোর করে মাইক্রোবাসে উঠিয়ে হাত, পা ও চোখ বেঁধে এলোপাতাড়ি মারধর করে। এরপর ভয়ভীতি দেখিয়ে তার ১৩ লাখ টাকা, মানিব্যাগে থাকা ১৯ হাজার টাকা, তিনটি মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নেয়।
এছাড়া ভুক্তভোগীর বিকাশের এজেন্ট নম্বর ও পিন কোড জেনে ৩৭ হাজার টাকা তুলে নিয়ে নেয়। পরে বিভিন্ন স্থানে ঘোরাফেরা করে রাত ১১টার দিকে রূপগঞ্জের কাঞ্চন পৌরসভার অন্তর্গত চরপাড়া সাকিনের রাস্তার পাশে ফাঁকা জায়গায় ফেলে যায়।
পরে মামলাটির ছায়াতদন্তে নামে গোয়েন্দা গুলশান বিভাগের ক্যান্টনমেন্ট জোনাল টিম। ঘটনাস্থল পরিদর্শন, মামলার বাদীর বক্তব্য পর্যালোচনা ও তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় ডিবি পুলিশ পরিচয়ে অপহরণ ও ছিনতাইকারী দলটিকে শনাক্ত করা হয়।
ডিবি প্রধান বলেন, গেলো ১০ জুলাই গাজীপুরের কালিয়াকৈর থানাধীন মৌচাক এলাকায় অভিযান চালিয়ে আন্ডারগ্রাউন্ডে থাকা চক্রের মূলহোতা মো. শহিদুল ইসলাম মাঝি ওরফে শহীদ মাঝিকে গ্রেপ্তার করা হয়। তার দেওয়া তথ্যমতে ঢাকা মহানগরীর ডেমরা থানাধীন পাড়া ডগাইর ফার্মের মোড় এলাকা থেকে ডিবি লেখা কালো রঙের একটি হায়েস মাইক্রোবাস থেকে সাগর চন্দ্র মালি, শাহ আলম হাওলাদার, মো. কামরুল ইসলাম ওরফে রমিজ তালুকদার, মো. মাকসুদুল মোমিন ওরফে শামীমকে গ্রেপ্তার করা হয়।
তিনি বলেন, পাড়া ডগাইরের একটি বাসা থেকে মো. হাসান, মো. নুরুল ইসলামকে হেফাজতে নেয় ডিবি পুলিশ। ধারাবাহিক অভিযান পরিচালনা করে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ডাকাতির প্রস্তুতিকালে খিলক্ষেত থানাধীন ৩০০ ফিট রোডের অস্ট্রেলিয়ান স্কুলের সামনে থেকে আরও নয় জনসহ মোট ১৬ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তাররা পরস্পর যোগসাজশে মাইক্রোবাস যোগে মানি এক্সচেঞ্জ ও ব্যাংক এলাকায় বিশেষত মতিঝিল, পল্টন, ধানমন্ডি ও গুলশান থেকে কোনো ব্যক্তি টাকা নিয়ে বের হওয়ার সময় তাদের টার্গেটকে ফলো করে। দুই/তিন জন মোটরসাইকেল নিয়ে টার্গেটের পিছু নেয়। পথে সুবিধাজনক স্থানে মাইক্রোবাস নিয়ে তাদের অগ্রগামী টিম প্রস্তুত থাকে।
মোটরসাইকেল টিমের তথ্যমতে সুবিধাজনক জায়গায় মাইক্রোবাস এসে টার্গেটকে গতিরোধ করে ভুক্তভোগীকে মাইক্রোবাসে তুলে নেয় এবং ভুক্তভোগীর কাছ থেকে সর্বস্ব লুটে নিয়ে নির্জন স্থানে ফেলে যায়। ডাকাত দলের সদস্যদের বিরুদ্ধে দেশের বিভিন্ন থানায় একাধিক মামলার তথ্য পাওয়া যায়– বলেন মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ।
অপরাধ
রাজধানীতে বস্তা ভর্তি টাকাসহ একটি গাড়ি আটক করলেন শিক্ষার্থীরা
রাজধানীর উত্তরায় একটি প্রাইভেটকার থেকে এক বস্তা টাকাসহ একটি শটগান উদ্ধার করেছেন শিক্ষার্থীরা। এই ঘটনায় তিনজনকে হেফাজতে নিয়েছে নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা।
বুধবার (৭ আগস্ট) এ সংক্রান্ত একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা গণমাধ্যমে জানান, রাজধানীর উত্তরার একটি বাসার গ্যারেজ থেকে গাড়িটি জব্দ করা হয়। এ সময় তিনজনকে হেফাজতে নেয় নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা। পরে গাড়ি থেকে এক বস্তা টাকা উদ্ধার করে হেফাজতে নেন নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা। এ সময় স্থানীয় জনতা ও শিক্ষার্থীরা উল্লাস করেন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা আরও জানান, আওয়ামী লীগ ঘরোয়ানার একটি ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠানের এমডির গাড়ি থেকে এ টাকা উদ্ধার করা হয়েছে। গাড়ি থেকে এক বস্তা টাকাসহ একটি শটগান উদ্ধার করে উত্তরা টাউন কলেজের শিক্ষার্থীসহ অনান্য বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।
এএম/
অপরাধ
কাশিমপুর কারাগার থেকে পালিয়েছে ২০৯ বন্দি, নিহত ৬
গাজীপুরের কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে ২০৯ জন বন্দি পালিয়েছেন। পালিয়ে যাওয়ার সময় নিরাপত্তাকর্মীদের গুলিতে ছয়জন বন্দি নিহত হয়েছেন।
বুধবার (৭ আগস্ট) বিকেলে কাশিমপুর হাই সিকিউরিটি কেন্দ্রীয় কারাগারের সিনিয়র জেল সুপার সুব্রত কুমার বালা গণমাধ্যমকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান,গেলো মঙ্গলবার বিকেলে কাশিমপুর হাই সিকিউরিটি কেন্দ্রীয় কারাগারের বন্দিরা কারাগার ভেঙে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। কারারক্ষীরা তাদের নিভৃত করার চেষ্টা করলে বন্দিরা কারারক্ষীদের ওপর চড়াও হয়। বন্দিদের কেউ দেয়াল ভেঙে, কেউ দেয়াল টপকে, আবার কেউ দেয়ালের সঙ্গে বিদ্যুতের পাইপ লাগিয়ে কারারক্ষীদের মারধর করে পালিয়ে যেতে চান।
একপর্যায়ে সেনাবাহিনীকে খবর দিলে তারা কমান্ডো অভিযান চালিয়ে বিদ্রোহ দমন করেন।এসময়ে বন্দিদের মধ্যে ২০৯ জন দেয়াল টপকে পালিয়ে গেছে।বন্দিদের ঠেকাতে নিরাপত্তাকর্মীদের গুলিতে ছয়জনের মৃত্যু হয়েছে। নিহতদের ময়নাতদন্তের জন্য গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।
প্রসঙ্গত, নিহতদের নাম পরিচয় পরে জানানো হবে বলে জানিয়েছেন সিনিয়র জেল সুপার।
আই/এ
অপরাধ
কাশিমপুর কারাগারে তীব্র উত্তেজনা, সেনাবাহিনীর শক্ত অবস্থান
গাজীপুরের কাশিমপুর হাইসিকিউরিটি কেন্দ্রীয় কারাগারের ভেতরে বন্দিরা মুক্তির দাবিতে উত্তেজনা শুরু করেছেন। কারারক্ষীদের জিম্মি করে অনেকে দলবদ্ধভাবে বের হয়ে আসার চেষ্টা করছেন। খবর পেয়ে সেনা সদস্যরা এসে প্রাথমিকভাবে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন।
মঙ্গলবার (৬ আগস্ট) দুপুরের দিকে এ পরিস্থিতি দেখা গেছে। এসময়ে ওই এলাকার আকাশে হেলিকপ্টার চক্কর দিতে দেখা যায়।
কারা কর্তৃপক্ষ জানান, কাশিমপুর কারা কমপ্লেক্সে পৃথক চারটি কারাগার রয়েছে। এর মধ্যে বিডিআর বিদ্রোহ মামলার সাজাপ্রাপ্ত আসামি, ফাঁসি ও যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত দুর্ধর্ষ জঙ্গি বন্দিরা রয়েছে। এছাড়া রাজনৈতিক মামলায় গ্রেপ্তার অনেক নেতাকর্মীও ওই কারাগারে রয়েছে।
জানা যায়, বেলা ১১টার দিকে কিছু বন্দি কারাগারের অভ্যন্তরে থাকা কারারক্ষীদের জিম্মি করে মুক্তির দাবিতে বিদ্রোহ শুরু করে। এসময়ে কারারক্ষীরা তাদের শান্ত করার চেষ্টা করে ব্যর্থ হন। আগে থেকেই সেখানে অল্প সংখ্যক সেনাবাহিনীর সদস্যরা তাদের নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করেন। উত্তেজনা আরও বেড়ে গেলে দুপুর দেড়টার দিকে অতিরিক্ত সেনা সদস্য হেলিকপ্টার যোগে কারা অভ্যন্তরে এসে বন্দিদের নিয়ন্ত্রণ করেন।
প্রসঙ্গত, কারা অভ্যন্তরে বিদ্রোহের খবর পেয়ে বন্দিদের স্বজনরা সকাল থেকেই কারাগারের সামনে অবস্থান করেন। এ সময় তাদের সঙ্গে আন্দোলনকারীরা যোগ দিয়ে বিক্ষোভ করে। কারাগারের বাইরে একটি ঝুট গুদামে অগ্নিসংযোগ করা হয়। পরে সেনা সদস্যরা বাইরের বিক্ষোভকারীদের ধাওয়া করে ছত্রভঙ্গ করে দেন।
আই/এ
মন্তব্য করতে লগিন করুন লগিন