ক্যাম্পাস
ডেঙ্গুর প্রতিরোধে নেই কার্যকর পদক্ষেপ, শঙ্কায় রাবি শিক্ষার্থীরা
সারাদেশে মশাবাহিত রোগের প্রকোপ বাড়ছে। তবে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) ক্যাম্পাসে মশক নিধনের কোনো কার্যক্রম দেখা যায়নি। ক্যাম্পাসের বিভিন্ন চত্বরসহ আবাসিক হলগুলোতে মশার উপদ্রব মাত্রাতিরিক্ত। ফলে ডেঙ্গু, ম্যালেরিয়াসহ মশাবাহিত বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কায় রয়েছেন শিক্ষার্থীরা। এদিকে মশক নিধনে কার্যকর পদক্ষেপ না গ্রহণ করায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছে শিক্ষার্থীরা। তবে দ্রুতই মশক নিধন শুরুর আশ্বাস দিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক সুলতান-উল-ইসলাম।
শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হলগুলোর আশপাশ ও ড্রেন নিয়মিত পরিষ্কার করা হয় না। এছাড়া কিছু আবাসিক হলের বাথরুমসহ বিভিন্ন জায়গায় পানি জমে থাকে সেগুলা পরিষ্কার করা জরুরি। এসব কার্যকর পদক্ষেপ ছাড়া প্রশাসন শুধু লোকদেখানো কাজ করছে। অতি দ্রুত মশক নিধনের ব্যবস্থা করা প্রয়োজন।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, গত ১৭ জুলাই ডেঙ্গু প্রতিরোধ সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় আবাসিক হলসমূহসহ, ক্যাম্পাসে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখা ও মশার বিস্তার রোধে বিষয়ে শুধু আলোচনাই হয়। এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়েল রেজিস্ট্রার অধ্যাপক মো. আবদুস সালাম স্বাক্ষরিত সচেতনতামূলক এক বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়।
সরেজমিনে দেখা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৭টি আবাসিক হলের পাশে, একাডেমিক ভবনগুলোর ধারে বিভিন্ন স্থানে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে ময়লা আবর্জনা। এগুলো নিয়মিত পরিষ্কার না করায় সেগুলো যেন মশার প্রজনন কেন্দ্রে পরিণত হয়েছে।
তাছাড়াও ক্যাম্পাসের বিভিন্ন জায়গার ঝোঁপ-ঝাড়গুলোও দীর্ঘ দিন ধরে পরিষ্কার করা হয় না। ফলে ব্যাপক হারে বৃদ্ধি পেয়েছে মশার উপদ্রব। মশার কারণে সন্ধ্যা হলেই ক্যাম্পাসে থাকা দায় শিক্ষার্থীদের।
সদ্য রোগমুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের নাট্যকলা বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী উদয়ন কর্মকার বলেন, ‘আমি কিছুদিন আগেই ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়েছিলাম। মূলত মশার কামড়েই আমার এ রোগ হয়েছিল। রোগে আক্রান্ত হবার কারণে এক মাসের বেশি সময় আমার চিকিৎসা গ্রহণ ও বিশ্রামের প্রয়োজন হয়। এতে আমার পড়াশোনার ব্যাঘাত ঘটে।’
আমির আলী হলের আবাসিক শিক্ষার্থী সাকিব আহমেদ বলেন, ‘আমরা যারা হলে থাকি তাদেরকে প্রায়ই রাত জেগে পড়তে হয়। মশার উপদ্রব বেড়ে যাওয়ার কারণে মশারি টানিয়ে পড়তে হয়। দিনের বেলাতেও অনেকটা এরকম অবস্থা। ড্রেন ও ঝোপঝাড় নিয়মিতো পরিষ্কার না করায় মশার উপদ্রব বেড়েই যাচ্ছে। মাঝে মাঝে প্রশাসন থেকে মশা নিধনের ওষুধ ছিটালেও তা যথেষ্টা না। সম্প্রতি ডেঙ্গুর প্রকোপ বেড়েছে। এ নিয়ে আমরা সাধারণ শিক্ষার্থীরা অনেকটা শঙ্কায় আছি।’
নবাব আব্দুল লতিফ হলের আবাসিক মামুন হোসেন বলেন, ‘মশার কারণে ঠিকমতো পড়াশোনা করা যায় না। পড়লেও মশারি টাঙ্গিয়ে পড়তে হয়। বিশেষ করে হলের নিচের তলা গুলোতে মশার উপদ্রব বেশি। দেশে ডেঙ্গুর প্রকোপ বেড়েই চলেছে। আমরা সবসময় একটা আতঙ্কের মধ্যে থাকি। এ বিষয়ে আমাদের সকলের সচেতন হওয়া উচিৎ। এছাড়াও হল প্রশাসন এবং বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে মশা নিধনে সচেষ্ট হতে হবে।’
শহীদ জিয়াউর রহমান হলের আবাসিক শিক্ষার্থী মিশন চাকমা বলেন, ‘আবাসিক হলগুলোর ড্রেনে পানি জমে থাকার কারণে মশার উপদ্রব বেড়ে যাচ্ছে। কয়েকদিন ধরে আমি অসুস্থ বোধ করছি। ডেঙ্গু রোগের আশঙ্কায় ব্লাড টেস্ট করতে দিয়েছি। অসুস্থতার কারণে পড়াশোনার ক্ষতি হচ্ছে। হলের ড্রেনগুলোসহ ক্যাম্পাসের বিভিন্ন জায়গা পরিষ্কার রাখলে আমরা ডেঙ্গু আশঙ্কা থেকে মুক্তি পেতে পারি।’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয় মেডিকেল সেন্টারের প্রধান কর্মকর্তা তবিবুর রহমান বলেন, ‘মশার কামড়ে মূলত ডেঙ্গু ও ম্যালেরিয়া রোগ ছড়ায়। এছাড়াও শিক্ষার্থীরা নানা মশাবাহিত রোগে আক্রান্ত হতে পারেন। ক্যাম্পাসে ডেঙ্গু আক্রান্ত শিক্ষার্থী রয়েছেন। আমরা কয়েক দিন আগে পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা সম্পর্কে প্রস্তুতিমূলক আলোচনা করেছি।’
সার্বিক বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক সুলতান-উল-ইসলাম বলেন, ‘সব হলের প্রোভোস্টদের সাথে আমরা এ বিষয়ে আলোচনা করেছি। এ নিয়ে আমরা একটি প্রচারপত্র চূড়ান্ত করেছি। চিকিৎসা থেকে শুরু করে কি কি সাবধানতা অবলম্বন করা দরকার সবকিছু প্রচারপত্রে উল্লেখ করা থাকবে। আর মশা নিধনের ঔষধ দুই একদিনের মধ্যেই দেয়া শুরু করবো। আমরা সিটি কর্পোরেশনকে অনুরোধ করবো ক্যাম্পাসে যেন মশা নিধনের মেশিন দেয়। আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের দুইটা মেশিন আছে। সেগুলো দিয়েই আপাতত মশা নিধন শুরু করবো।’
এস
ক্যাম্পাস
খুলছে জবি, প্রাথমিকভাবে ক্লাস চলবে অনলাইনে
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে (জবি)১৮ আগস্ট থেকে অনলাইন ক্লাস শুরু হবে।আজকেই ছাত্রীদের জন্য বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব ছাত্রী হল খুলে দেয়া হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) বিশ্ববিদ্যালয়ের ৯৮তম সিন্ডিকেট সভায় এ সিদ্ধান্ত হয় বলে গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ড. মো. আইনুল ইসলাম।
জানা যায়, ১৮ আগস্ট থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ে অনলাইনে ক্লাস চলবে। অনলাইন ক্লাস শুরুর আগে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতৃবৃন্দের সঙ্গে আলোচনা করে সব বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। এক্ষেত্রে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে ডিন, বিভাগীয় চেয়ারম্যান, ছাত্র উপদেষ্টা ও অন্যান্য শিক্ষকবৃন্দ আলোচনায় বসবেন।
এক সিন্ডিকেট সদস্য গণমাধ্যমকে জানান,তারা ক্যাম্পাসে স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করছেন। তাই প্রাথমিকভাবে অনলাইন ক্লাস চালুর সিদ্ধান্ত হয়েছে। পরবর্তীতে ছাত্র আন্দোলনের নেতৃবৃন্দের সঙ্গে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন হলে ক্যাম্পাসে এমনিই ছাত্র রাজনীতি থাকবে না বলে তার মনে হচ্ছে, তবে রাজনীতি নিষিদ্ধ হলে সেটা নতুন সরকার সিদ্ধান্ত নেবে।
প্রসঙ্গত, সিন্ডিকেট সভায় আন্দোলনে আহত শিক্ষার্থীদের চিকিৎসা খরচসহ তাদের খোঁজ নেওয়ার বিষয়েও সিদ্ধান্ত হয়েছে।
আই/এ
শিক্ষা
চুয়েটে নিষিদ্ধ হলো ছাত্ররাজনীতি
চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (চুয়েট) নিষিদ্ধ করা হয়েছে সব ধরনের ছাত্ররাজনীতি।
বুধবার (০৭ আগস্ট) বিশ্ববিদ্যালয়টির ১৩৬তম জরুরি সিন্ডিকেট সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার (অতিরিক্ত দায়িত্ব) অধ্যাপক ড. শেখ মোহাম্মদ হুমায়ুন কবির স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে তা জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়, ১৩৬/১(ঘ) অনুযায়ী অত্র বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও শিক্ষক/কর্মকর্তা/কর্মচারীদের সকল ধরনের রাজনৈতিক সংগঠন এবং এর কার্যক্রমের সাথে সম্পৃক্ততা নিষিদ্ধ করা হলো। এ আদেশ অমান্যকারীদের বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয় বিধান অনুযায়ী শাস্তি প্রদান করা হবে।
উল্লেখ্য, সম্প্রতি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকে কেন্দ্র করে দেশের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধের দাবি জানায় সাধারণ শিক্ষার্থীরা। শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর সে দাবি আরও জোরালো হয়। এমন প্রেক্ষাপটে ক্যাম্পাসে ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে চুয়েট।
এসি//
শিক্ষা
আজ থেকে শুরু একাদশ শ্রেণির ক্লাস
২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষে একাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থীদের ক্লাস মঙ্গলবার (০৬ আগস্ট) হওয়ার কথা ছিল। কোটা সংস্কার আন্দোলনের পরিস্থিতিতে পিছিয়ে তা শুরু হচ্ছে আজ।
আন্তঃশিক্ষা বোর্ড সমন্বয় কমিটি বিভিন্ন কলেজ ও মাদ্রাসাগুলোকে বৃহস্পতিবার (০৮ আগস্ট) থেকে একাদশের ক্লাস শুরু করতে বলেছে। এরইমধ্যে অধ্যক্ষ ও প্রধান শিক্ষকদের এ নির্দেশনা দিয়ে চিঠি পাঠিয়েছে আন্তঃশিক্ষা বোর্ড সমন্বয় কমিটি।
বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, সব উচ্চমাধ্যমিক পর্যায়ের দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের অধ্যক্ষ ও প্রধান শিক্ষককে পাঠানো চিঠিতে কমিটি বলছে, বৃহস্পতিবার (০৮ আগস্ট) থেকে ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষে একাদশ শ্রেণিতে অনলাইনের মাধ্যমে ভর্তিকৃত শিক্ষার্থীদের ক্লাস শুরু হবে।
এদিকে প্রথম থেকে তৃতীয় ধাপে নির্বাচিত শিক্ষার্থীদের ভর্তির সময় বুধবার (০৭ আগস্ট) শেষ হয়েছে। তবে, একাদশ শ্রেণিতে ভর্তির চতুর্থ ধাপের আবেদনের সুযোগ দেওয়া হয়েছে শিক্ষার্থীদের। তিন ধাপে আবেদন গ্রহণ ও শিক্ষার্থী নির্বাচনের পরও কিছু কলেজ মাদ্রাসায় সিট খালি থাকায় ও কিছু শিক্ষার্থী ভর্তির জন্য নির্বাচিত হতে না পারায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
জানা গেছে, যেসব শিক্ষার্থী কলেজে ভর্তির আবেদন করেননি বা আবেদন করে কলেজ সিলেকশন পাননি তারা এবং যেসব শিক্ষার্থী চূড়ান্ত মনোনয়ন পেয়েও কলেজে ভর্তি হতে পারেননি বা নিশ্চায়ন করতে পারেননি তারা চতুর্থ ধাপে ভর্তির আবেদন করতে পারবেন।
অনলাইনে নির্ধারিত ওয়েবসাইটে (https://www.xiclassadmission.gov.bd) প্রবেশ করে নির্দেশিকা অনুসারে শিক্ষার্থীদের আবেদন করতে হবে। শিক্ষার্থীদের কলেজের আসন সংখ্যা দেখে ৫টি থেকে ১০টি কলেজে আবেদনের চয়েজ দিতে পারবেন। আবেদন ফি নির্ধারণ করা হয়েছে ১৫০ টাকা। ব্যাংক কার্ড ও মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে এ ফি পরিশোধ করতে হবে।
জানা গেছে, ১১ থেকে ১৪ আগস্ট (বুধবার) রাত ১০টা পর্যন্ত চতুর্থ বা সর্বশেষ ধাপের আবেদন গ্রহণ করা হবে। ১৭ আগস্ট (শনিবার) রাত ৮টায় চতুর্থ ধাপের ফল প্রকাশ করা হবে। ১৮ আগস্ট থেকে ১৯ আগস্ট (সোমবার) রাত ৮টা পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের সিলেকশন নিশ্চায়ন করতে হবে। চতুর্থ ধাপে নির্বাচিত শিক্ষার্থীরা ২০ আগস্ট (মঙ্গলবার) কলেজে ভর্তি হতে পারবেন।
এসি//
মন্তব্য করতে লগিন করুন লগিন