বাংলাদেশ
ওষুধ-প্রতিরোধী ব্যাকটেরিয়ায় এক বছরে ১২ লক্ষ মানুষের প্রাণহানি, কতটা ঝুঁকিতে বাংলাদেশ?
অ্যান্টিবায়োটিক ওষুধ কোন কোন ব্যাকটেরিয়ার বিরুদ্ধে কাজ করছে না।
অ্যান্টিবায়োটিক ওষুধ কোন কোন ব্যাকটেরিয়ার বিরুদ্ধে কাজ করছে না।
অ্যান্টিবায়োটিক-প্রতিরোধী ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণে ২০১৯ সালে সারা বিশ্বে ১২ লক্ষ মানুষ প্রাণ হারিয়েছে বলে এক ব্যাপক-ভিত্তিক গবেষণা থেকে জানা যাচ্ছে।
এইডস কিংবা ম্যালেরিয়াতে প্রতিবছর যত সংখ্যক লোক মারা যায়, এই সংখ্যা তার দ্বিগুণ বলে গবেষণার ফলাফলে জানা যাচ্ছে।
দরিদ্র দেশগুলোতে সংক্রমণ পরিস্থিতি সবচেয়ে ভয়াবহ, বলছে এই গবেষণা। তবে অ্যান্টি-মাইক্রোবিয়াল রেজিস্ট্যান্স সবার স্বাস্থ্যের জন্যই ঝুঁকিপূর্ণ।
এর থেকে রক্ষা পেতে হলে ওষুধ নিয়ে গবেষণায় আরও বেশি অর্থ বিনিয়োগ করতে হবে। এবং বর্তমান যেসব অ্যান্টিবায়োটিক রয়েছে তা প্রয়োগে বিশেষভাবে সতর্ক থাকতে হবে বলে পরামর্শ দেয়া হয়েছে।
ছোটখাটো অসুখে অ্যান্টিবায়োটিকের নির্বিচার প্রয়োগের ফলে মারাত্মক অসুখবিসুখের ক্ষেত্রে অ্যান্টিবায়োটিকের কার্যকারিতা অনেকখানি কমে যায়।
এমআরএসএ ব্যাকটেরিয়াকে সবচেয়ে প্রাণঘাতী বলে মনে করা হয়।
আগে সাধারণ অসুখে পড়ে আরোগ্য হতো এমন সব রোগে এখন মানুষ মারা যাচ্ছে।
ব্রিটেনের স্বাস্থ্য বিভাগ বলছে, অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল রেজিস্টান্ট (এএমআর) এখন এক গোপন মহামারিতে পরিণত হয়েছে।
অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহারে এখনই সতর্ক না হলে কোভিড মহামারির অবসান পর এটাই বিশ্বব্যাপী এক বড় সমস্যা হয়ে দেখা দিতে পারে বলে স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা হুঁশিয়ারি জানিয়েছেন।
এএমআর-এর কারণে বিশ্বব্যাপী মৃত্যুর ওপর গবেষণার এই ফলাফল প্রকাশিত হয়েছে স্বাস্থ্য বিষয়ক প্রখ্যাত সাময়িকী ল্যানসেটে।
যুক্তরাষ্ট্রের ইউনিভার্সিটি অফ ওয়াশিংটনের নেতৃত্বে আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞরা ২০৪টি দেশে এই গবেষণা চালান।
পরীক্ষাগারে অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল-প্রতিরোধী ব্যকটেরিয়া।
তারা হিসেব করে দেখেছেন, ২০১৯ সালে সরাসরি এএমআর-এর কারণে বিভিন্ন রোগে গেছে ১২ লক্ষ লোক।
এর বাইরে, আরও ৫০ লক্ষ মানুষ প্রাণ হারিয়েছে এএমআর-এর সাথে সম্পর্কিত নানা অসুখে।
একই বছর এইডস-এ মারা গেছে আট লক্ষ ৬০ হাজার মানুষ। আর ম্যালেরিয়ায় মারা গেছে ছয় লক্ষ ৪০ হাজার জন।
এএমআর-এ মৃত্যুর প্রধান কারণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে নিউমোনিয়ার মতো লোয়ার রেসপিরেটরি সংক্রমণ এবং রক্তের সংক্রমণকে, যেখান থেকে পরে সেপসিস হয়।
এমআরএসএ (মেথিসিলিন রেজিস্টান্ট স্টেফাইলোকক্কাস অরিউস) ব্যাকটেরিয়াকে এই গবেষণায় বিশেষভাবে প্রাণঘাতী বলে উল্লেখ করা হয়েছে।
গরুর দুধে অ্যান্টিবায়োটিক আসে কীভাবে
দুধে চার ধরণের অ্যান্টিবায়োটিক পাওয়ার দাবি
অ্যান্টিবায়োটিক-প্রতিরোধী ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণ সামাল দিতে হাসপাতালগুলো হিমশিম খাচ্ছে।
অ্যান্টিবায়োটিক-প্রতিরোধী ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণ সামাল দিতে হাসপাতালগুলো হিমশিম খাচ্ছে।
এটি সহ ইকোলাই এবং আরও কয়েকটি ব্যাকটেরিয়াও ওষুধ-প্রতিরোধী ক্ষমতা অর্জন করেছে বলে গবেষণায় উল্লেখ করা হয়েছে।
বিভিন্ন দেশের হাসপাতাল এবং রোগীদের থেকে নেয়া তথ্য বিশ্লেষণ করে গবেষকরা দেখতে পেয়েছেন, সবচেয়ে বেশি ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে শিশুরা।
এএমআর-এ মৃত্যু হয়েছে প্রতি পাঁচ জনের মধ্যে একটি হচ্ছে শিশু, যাদের বয়স পাঁচের নীচে।
গবেষণার ফলাফলের উল্লেখযোগ্য দুটি দিক:
সবচেয়ে বেশি মৃত্যু হয়েছে দক্ষিণ এশিয়া এবং সাহারা মরুভূমির দক্ষিণের দেশগুলোতে। এই অঞ্চলে প্রতি এক লক্ষ মানুষের মধ্যে মারা গেছে ২৪ জন।
সবচেয়ে কম মৃত্যু ঘটেছে বেশি আয়ের দেশগুলোতে। সেখানে প্রতি এক লক্ষের মধ্যে মারা গেছে ১৩ জন।
ইউনিভার্সিটি অফ ওয়াশিংটনের অধ্যাপক ক্রিস মারে বলছেন, এই গবেষণায় সারা বিশ্বে অ্যান্টিবায়োটিকের প্রভাব কমে যাওয়ার প্রকৃত চিত্রটি ফুটে উঠেছে।
আমরা যদি এই লড়াইয়ে টিকে থাকতে চাই তাহলে যে এখনই দ্রুত ব্যবস্থা নিতে হবে, গবেষণা থেকে তার পরিষ্কার ইংগিতই পাওয়া যাচ্ছে,বলছেন তিনি।
ওয়াশিংটন ডিসি'র গবেষণা প্রতিষ্ঠান ড. রামানান লক্ষ্মীনারায়ণ বলছেন, অন্যান্য রোগের ক্ষেত্রে যেমন অর্থের বিনিয়োগ করতে হয়, এএমআর ঠেকাতে হলে এর জন্যও বিনিয়োগ বাড়াতে হবে।
সারা বিশ্বে কার্যকর এবং সাশ্রয়ী মূল্যে অ্যান্টিবায়োটিকের সঙ্কট রয়েছে। রাজনৈতিক এবং স্বাস্থ্য খাতের নেতাদের তাই এ বিষয়টিকে গুরুত্বের সাথে নিতে হবে, বলছেন তিনি।
প্রেসক্রিপশন ছাড়া ফার্মেসিতে অ্যান্টিবায়োটিক বিক্রির নিষেধাজ্ঞা রয়েছে বাংলাদেশে
বাংলাদেশের পরিস্থিতি কী?
অপ্রয়োজনে অ্যান্টিবায়োটিকের ব্যবহার, অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহারে কর্তৃপক্ষের নজরদারির অভাব, পশু-পাখির খাবারে, শাক-সবজিতে বা কৃষিকাজে অ্যান্টিবায়োটিকের ব্যবহার – ইত্যাদি নানা কারণে বাংলাদেশে প্রচলিত অ্যান্টিবায়োটিকের অনেকগুলো কার্যক্ষমতা কমে গেছে বলে বলছেন বিশেষজ্ঞরা।
বাংলাদেশের রোগতত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান আইইডিসিআরের এক চলমান গবেষণায় উঠে এসেছে যে দেশে প্রচলিত অ্যান্টিবায়োটিকের মধ্যে অন্তত ১৭টির কার্যক্ষমতা অনেকাংশে কমে গেছে।
আইইডিসিআরের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ও মাইক্রোবায়োলজি বিভাগের প্রধান জাকির হোসেন হাবিব বলেন অ্যান্টিবায়োটিকের অনিয়ন্ত্রিত ব্যবহারের কারণে অনেক ওষুধই ব্যাকটেরিয়ার বিরুদ্ধে অপেক্ষাকৃত কম কার্যকর হয়ে পড়ছে।
আমরা যখন মেডিকেল শিক্ষার্থী ছিলাম তখন সেফট্রিয়াক্সোন অত্যন্ত কার্যকর একটি অ্যান্টিবায়োটিক ওষুধ ছিল। কিন্তু এখন যদি রেজিস্টান্স প্যাটার্ন দেখেন – তাহলে দেখবেন আমরা যেসব জীবাণু দেখিয়েছি, তার প্রত্যেকটি অন্তত ৬০ থেকে ৭০ শতাংশ এই অ্যান্টিবায়োটিক রেজিস্টান্ট।
অর্থাৎ বিশ থেকে ত্রিশ বছর আগেও যেই অ্যান্টিবায়োটিক ব্যাকটেরিয়াজনিত সংক্রমণের বিরুদ্ধে কার্যকর ছিল, তা এখন অনেকাংশে কার্যকারিতা হারিয়ে ফেলেছে।
এমনকি কিছুদিন আগেও যেসব অ্যান্টিবায়োটিক বিভিন্ন ব্যাকটেরিয়ার বিরুদ্ধে কার্যকর ছিল, সেগুলোও কার্যকারিতা হারাতে শুরু করেছে বলে বলেন হাবিব।
কার্যক্ষমতা কমে যাওয়ায় ঝুঁকিতে আছে আইসিইউতে থাকা রোগী এবং শিশুরা
বাংলাদেশে কয়েক বছর আগেও ইমিপেনাম, মেরোপেনাম গ্রুপের ড্রাগ বেশ কার্যকর ছিল। কিন্তু কোভিডের সময় এই গ্রুপের ড্রাগ রোগীদের অতিরিক্ত পরিমাণে দিয়ে এটির কার্যকারিতাও নষ্ট করে ফেলছেন চিকিৎসকরা।
হাবিব বলেন, এই গ্রুপের ড্রাগ কার্যকারিতা হারালে এরপর আমাদের হাতে আর খুব বেশি অ্যান্টিবায়োটিক থাকবে না।
ডা. হাবিবের মতে, সবচেয়ে ভয়াবহ বিষয় হলো বাংলাদেশে হাসপাতালগুলোতে এমন জীবাণুর উপস্থিতি পাওয়া গেছে যা সব ধরণের অ্যান্টটিবায়োটিক প্রতিরোধী। অর্থাৎ কোনো অ্যান্টিবায়োটিকেই ঐ জীবাণুর বিরুদ্ধে কার্যকর হবে না।
বাংলাদেশের হাসপাতালর রোগীদের দেহে অ্যান্টিবায়োটিকের কার্যকারিতা ও জীবাণুর ধরণ নিয়ে পরিচালিত হওয়া এক গবেষণার বরাত দিয়ে ডা. হাবিব বলেন, জীবাণুদের আমরা মাল্টি ড্রাাগ রেজিস্ট্যান্ট, এক্সটেনসিভ ড্রাগ রেজিস্ট্যান্ট আর প্যান ড্রাগ রেজিস্ট্যান্ট – এই তিন ভাগে ভাগ করেছি। যার মধ্যে প্যান ড্রাগ রেজিস্ট্যান্ট হল এমন জীবাণু যার বিরুদ্ধে কোন অ্যান্টিবায়োটিকই কার্যকর নয়।
প্রচলিত কোন অ্যান্টিবায়োটিক দিয়ে চিকিৎসা করা সম্ভব নয় – এমন জীবাণু পাওয়া গেছে প্রায় সাত ভাগ।
অ্যান্টিবায়োটিক রেজিস্টান্ট হবার কারণ কী?
হাবিবের মতে সংক্রমণ রোধের প্রাথমিক ধারণা ও কাঠামোগত পরিবেশ না থাকা বাংলাদেশে অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল রেজিস্টান্স তৈরির অন্যতম প্রধান কারণ।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের বাস্তবতায় হাসপাতালগুলো, বিশেষ করে সরকারি হাসপাতালগুলো, জীবাণুর প্রধান আবাসস্থল এবং সংক্রমণ ছড়ানোর প্রধান জায়গা। হাসপাতালগুলো সবসময় জনাকীর্ণ থাকায় সেখানে জীবাণুর সংক্রমণ দ্রুত ছড়ায়।
হাসপাতাল বোঝাই হওয়ার কারণে কোনো সার্জারি হওয়ার পর চিকিৎসকরা রোগীদের বেশি বেশি অ্যান্টিবায়োটিক দেন যেন ইনফেকশন না হয়ে যায়। কারণ মানুষে বোঝাই হাসপাতালে একজন জটিল রোগীর বিভিন্ন ধরণের রোগে সংক্রমিত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
প্রেসক্রিপশন ছাড়া ফার্মেসিতে অ্যান্টিবায়োটিক বিক্রির নিষেধাজ্ঞা রয়েছে বাংলাদেশে।
সংক্রমণ রোধের প্রাথমিক ধারণা ও কাঠামোগত পরিবেশ না থাকা বাংলাদেশে অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল রেজিস্টান্স তৈরির অন্যতম প্রধান কারণ বলে মনে করেন চিকিৎসকরা।
এছাড়া দেশের প্রত্যেক হাসপাতালে কোন রোগীকে, কী কারণে, কোন অ্যান্টিবায়োটিক দেয়া হল – তার নির্দিষ্ট তালিকা এবং সে বিষয়ে গবেষণা না হওয়াও দীর্ঘ মেয়াদে অ্যান্টিবায়োটিক রেজিস্টান্স তৈরি হওয়ার অন্যতম কারণ বলে উল্লেখ করেন মি. হাবিব।
গ্রাহক পর্যায়ে অ্যান্টিবায়োটিক জাতীয় ওষুধ বেচা-কেনার ক্ষেত্রে কর্তৃপক্ষের নজরদারি না থাকাও রেজিস্টান্স তৈরির ক্ষেত্রে সহায়ক ভূমিকা পালন করে।
এছাড়া আরো কয়েকটি কারণে অ্যান্টিবায়োটিক রেজিস্টান্ট হয়ে থাকে, এর মধ্যে প্রধান কয়েকটি হলো—
• বিনা প্রেসক্রিপশনে ঘনঘন অ্যান্টিবায়োটিক সেবন করলে
• পুরো কোর্স শেষ না করে মাঝপথে অ্যান্টিবায়োটিক খাওয়া বন্ধ করলে অ্যান্টিবায়োটিক কাজ করে না
• প্রয়োজনের তুলনায় স্বল্প ডোজের অ্যান্টিবায়োটিক দেয়া হলে
• ভাইরাসজনিত কোন অসুখে, অর্থাৎ যেসব ক্ষেত্রে একটি নির্দিষ্ট সময় পরে এমনি সেরে যেত, সেখানে বিশেষ করে শিশুদের অ্যান্টিবায়োটিক দিলে।
মুক্তা মাহমুদ
জাতীয়
শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা জানালেন অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টারা
শপথ নেয়ার পরের দিন ভাষা শহীদদের স্মরণে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা নিবেদন করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টারা।
শুক্রবার (৯ আগস্ট) বেলা ১১টার দিকে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ১৩ জন উপদেষ্টা নিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।
এর আগে, সাভারে জাতীয় স্মৃতিসৌধে মহান মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান ও অন্য উপদেষ্টারা।
গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান হিসেবে শপথ নেন ড. মুহাম্মদ ইউনূস। দায়িত্ব নেওয়ার পর তিনি এক নতুন বাংলাদেশ উপহার দেওয়ার অঙ্গীকার করেন।
আই/এ
জাতীয়
উপদেষ্টা পরিষদকে অভিনন্দন জানালেন জাসদ
জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল—জাসদের সভাপতি হাসানুল হক ইনু ও সাধারণ সম্পাদক শিরীন আখতার অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মোহাম্মদ ইউনুস এবং অন্য উপদেষ্টাদেরকে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়েছেন
বৃহস্পতিবার ( ৮ আগস্ট ) রাতে দলের পক্ষ থেকে পাঠানো এক বিবৃতিতে এ অভিনন্দন জানান তারা।
বিবৃতিতে জানানো হয়, “অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দায়িত্ব গ্রহণ করার পর দেশে আর একটিও প্রাণহানি, হামলা ও সম্পদ ধ্বংসের ঘটনা যেন না ঘটে তা নিশ্চিত হবে।”
বিবৃতিতে আরও বলেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার রাষ্ট্রীয় চার মূলনীতিসহ সংবিধানকে সমুন্নত রেখে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন এবং রাজনৈতিক ও সামাজিক শক্তির সাথে আলোচনা করে সরকারের কর্ম পরিকল্পনার রূপরেখা দ্রুত প্রকাশ করে বিদ্যমান অনিশ্চয়তা ও অস্থিরতা প্রশমিত করবেন।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রাথমিক ও প্রধান কাজ হিসেবে অনতিবিলম্বে দেশে আইনশৃঙ্খলা পুনঃপ্রতিষ্ঠা করার এবং জনগণের জানমালের নিরাপত্তা নিশ্চিত করে জনজীবনে স্বাভাবিকতা ও শান্তি ফিরিয়ে আনতে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানিয়েছেন।
জাসদ নেতৃবৃন্দ অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নিহত শিক্ষার্থী, সাধারণ মানুষ, সাংবাদিক পুলিশ বাহিনীর সদস্যসহ প্রতিটি হত্যাকাণ্ডের সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার নিশ্চিত করার আহ্বান জানান।
জাসদ জোর দাবি জানান, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে পূর্ববর্তী সরকারের পদত্যাগের পর দেশের বিভিন্ন স্থানে চলমান বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও পুলিশ বাহিনীর সদস্যসহ পেশাজীবী ও হিন্দু ও আহমদীয়াসহ ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের ওপর হামলা ও হত্যা করা, মন্দিরসহ ধর্মীয় স্থাপনায় হামলা, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের কার্যালয়ে ও নেতাকর্মীদের বাসাবাড়িতে হামলা-হত্যা-নির্যাতন, ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান ও ঘরবাড়িতে হামলা ও অগ্নিসংযোগ, সংসদ ভবন ও প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় ও গণভবনসহ বিভিন্ন সরকারি স্থাপনায় হামলা, ভাঙচুর, লুটপাট, অগ্নিসংযোগ, ধানমন্ডি ৩২ নম্বরের ঐতিহাসিক বঙ্গবন্ধু ভবন-বঙ্গবন্ধু জাদুঘরে হামলা, লুটপাট, জ্বালিয়ে ছারখার, দেশের বিভিন্ন স্থানে বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য, সাত বীরশ্রেষ্ঠর ভাস্কর্যসহ ভাষা আন্দোলন, স্বাধীনতা সংগ্রাম ও মুক্তিযুদ্ধের স্মারক ভাস্কর্য ও ম্যুরাল ভেঙে ফেলা এবং কুমিল্লার বীরচন্দ্র পাঠাগার, সুনামগঞ্জের ঐতিহ্য জাদুঘর, কুড়িগ্রামের উত্তরবঙ্গে মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর, ময়মনসিংহের ঐতিহাসিক শশীলজের ভেনাস ভাস্কর্য ভেঙে ফেলাসহ অগনিত শিল্পকর্ম ভেঙে ফেলার সব অপরাধ কাণ্ডের সঙ্গে যুক্ত দায়ী ব্যক্তিদের দ্রুত আইনের আওতায় আনার।
জেডএস/
জাতীয়
তদবির থেকে বিরত থাকুন, দেশগঠনে পরামর্শ দিন : আসিফ মাহমুদ
নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে গঠিত হয়েছে ১৭ সদস্যের অন্তবর্তীকালীন সরকার। এ উপদেষ্টা পরিষদে স্থান পেয়েছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের দুইজন প্রতিনিধি। এদের একজন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আসিফ মাহমুদ। তিনি উপদেষ্টা হিসেবে শপথ নেয়ার পর ঘনিষ্ঠজনদের নিজেদের সুবিধার জন্য কোনো আবদার কিংবা তদবির করতে বারণ করেছেন। বরং দেশগঠনে কোনো পরামর্শ থাকলে দেয়ার অনুরোধ করেছেন।
বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) দিবাগত রাতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এক পোস্ট করে এ অনুরোধ করেন।
পোস্টে এই তরুণ উপদেষ্টা লিখেছেন, ব্যক্তিগত লাভের আশায় আবদার, তদবির করা থেকে বিরত থাকুন। এতে করে আমার সাথে আপনার সম্পর্ক নষ্ট হতে পারে। দেশগঠনে পরামর্শ থাকলে জানাবেন।
বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) রাতে নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে ১৭ জনকে নিয়ে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন করা হয়। প্রধান উপদেষ্টা ও অন্য উপদেষ্টাদের শপথ পাঠ করান রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। ঢাকার বাইরে থাকায় তিন উপদেষ্টা ফারুক-ই-আযম, বিধান রঞ্জন রায় এবং সুপ্রদীপ চাকমা শপথ অনুষ্ঠানে উপস্থিত হতে পারেননি।
সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ছাড়া অন্যান্য উপদেষ্টারা হলেন- ১. সালেহ উদ্দিন আহমেদ ২. ড. আসিফ নজরুল ৩. আদিলুর রহমান খান ৪. হাসান আরিফ ৫. তৌহিদ হোসেন ৬. সৈয়দা রেজওয়ানা হাসান ৭. মো. নাহিদ ইসলাম ৮. আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া ৯. ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এম সাখাওয়াত হোসেন ১০. সুপ্রদীপ চাকমা ১১. ফরিদা আখতার ১২. বিধান রঞ্জন রায় ১৩. আ.ফ.ম খালিদ হাসান ১৪. নুরজাহান বেগম ১৫. শারমিন মুরশিদ ১৬. ফারুক-ই-আযম।
জেএইচ