বাংলাদেশ
কাছে গিয়েও পারলো না বাংলার নারীরা
কমনওয়েলথ গেমসের নারী ক্রিকেট বাছাইপর্বের শেষ ম্যাচে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে বাংলাদেশের হার ২২ রানের ব্যবধানে। টানা তিন ম্যাচে দাপুটে জয় নিয়ে এই ম্যাচে মুখোমুখি হয় দুই দল। সেখানে বাংলাদেশকে মাড়িয়ে শ্রীলঙ্কার জয়রথ পৌঁছে গেলো মূল পর্বে। আগামী জুলাই-অগাস্টে বার্মিংহামে কমনওয়েলথ গেমসে খেলবে লঙ্কানরা। বাংলাদেশ পারলো না কাছে গিয়েও।
লিগ পর্বের ম্যাচ, কিন্তু প্রেক্ষাপটের কারণে ম্যাচটি হয়ে উঠেছিলো ফাইনাল। সেই লড়াইয়ে পেরে উঠলো না বাংলার নারীরা। চামারি আতাপাত্তুর অলরাউন্ড পারফরম্যান্সেই ম্যাচের ব্যবধান হয়ে দাঁড়ালো। দারুণ জয়ে কমনওয়েলথ গেমসের চূড়ান্ত পর্বে জায়গা করে নিলো লঙ্কানরা।
কুয়ালা লামপুরে আজ সোমবার (২৪ জানুয়ারি) শ্রীলঙ্কা ২০ ওভারে তোলে ১৩৬ রান। বাংলাদেশ পুরো ওভার খেলে কেবল ৫ উইকেট হারালেও ১১৪ রানের বেশি করতে পারেনি। লঙ্কান অধিনায়ক আতাপাত্তু ওপেনিংয়ে ২৮ বলে ৪৮ রানের দুর্দান্ত ইনিংস খেলার পর বল হাতে ক্যারিয়ার সেরা বোলিং স্পর্শ করে ১৭ রানে নেন ৩ উইকেট।
টস জিতে ব্যাটিংয়ে নামা লঙ্কানদের তৃতীয় ওভারে ধাক্কা দেন সুরাইয়া আজমিন। বাংলাদেশের পেসার বিদায় করে দেন লঙ্কান ওপেনার ভাস্মি গুনারাত্নেকে। তবে আরেক প্রান্তে আতাপাত্তু বাউন্ডারি আদায় করতে থাকেন নিয়মিত। সুরাইয়াকে দুটি বাউন্ডারি মারেন তিনি।
বাংলাদেশের সেরা স্পিনার নাহিদা আক্তারকে ছক্কায় ওড়ান পরপর দুই ওভারে। লেগ স্পিনার রুমানা আহমেদের এক ওভারে মারেন চার ও ছক্কা। ৬ চার ও ৩ ছক্কায় আতাপাত্তুর ইনিংসটি থামে দশম ওভারে রুমানার বলে স্টাম্পড হয়ে।
তবে লঙ্কানরা তাতে দমে যায়নি। মিডল অর্ডারে হার্শিথা মাদাবি করেন ২২ বলে ১৯, নিলাকশি ডি সিলভা খেলেন ২৫ বলে ২৮ রানের গুরুত্বপূর্ণ ইনিংস। শেষ দিকে কিপার আনুশকা সাঞ্জিবানি ১৬ বলে অপরাজিত ২০ রান করে শ্রীলঙ্কাকে নিয়ে যান ১৩৬ রানে।
সুরাইয়া আজমিন শুরুতে উইকেট এনে দিলেও পরে সাফল্য ধরে রাখতে পারেনি বাংলাদেশ। ছবি: আইসিসি।সুরাইয়া আজমিন শুরুতে উইকেট এনে দিলেও পরে সাফল্য ধরে রাখতে পারেনি বাংলাদেশ। ছবি: আইসিসি।বাংলাদেশের হয়ে অভিজ্ঞ স্পিনার সালমা খাতুন আঁটসাঁট বোলিং করলেও খুব সুবিধা করতে পারেননি অন্যরা। নির্ভরযোগ্য স্পিনার নাহিদা দুই উইকেট নিতে পারলেও ছিলেন বেশ খরুচে।
চ্যালেঞ্জিং রান তাড়ায় বাংলাদেশ ওপেনার শামিমা সুলতানাকে হারায় দ্রুতই। দ্বিতীয় উইকেটে মুর্শিদা খাতুন ও ফারজানা হক ৫০ রানের জুটি গড়লেও তাতে লেগে যায় ৯ ওভার।
এই দুজনের কেউ ইনিংস বড়ও করতে পারেননি। ৩৬ বলে ৩৬ করা মুর্শিদাকে ফিরিয়ে জুটি ভাঙেন আতাপাত্তু। বাংলাদেশ অধিনায়ক নিগার সুলতানা পারেননি পরিস্থিতির দাবি মিটিয়ে দ্রুত রান তুলতে (২১ বলে ২০)। অনভিজ্ঞ সোবহানা মোস্তারিও পারেননি দারুণ কিছু করতে (১৩ বলে ১১*)।
বিস্ময়করভাবে, দ্রুত রান তুলতে সক্ষম অভিজ্ঞ রুমানা আহমেদকে ব্যাটিংয়ে নামানো হয় সোবহানা ও রিতু মনির পরে। সাত নম্বরে নেমে রুমানার তখন করার ছিল না তেমন কিছু। তিনে নেমে দীর্ঘক্ষণ এক প্রান্তে থেকে ফারজানা হক ইনিংসকে দিতে পারেননি গতি। শেষ ওভারে তিনি আউট হন ৩৯ বলে ৩৩ রান করে। দল পারেনি লক্ষ্যের কাছে যেতেও।
বাংলাদেশের বিপক্ষে ২০১৮ সালে ১৭ রানে ৩ উইকেট নিয়েছিলেন আতাপাত্তু, এবার নিজের সেই সেরা ছুঁয়ে ফেলেন আবার। লঙ্কান অধিনায়ক ম্যাচের সেরা তো বটেই, আসরে ২২১ রান করে ও ৪ উইকেট নিয়ে সিরিজের সেরাও তিনিই।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
শ্রীলঙ্কা : ২০ ওভারে ১৩৬/৬ (গুনারত্নে ৭, আতাপাত্তু ৪৮, হাসিনি ৭, হার্শিথা ১৯, নিলাকশি ২৮, আনুশকা ২০*, কাঞ্চনা ০, দিলহারি ১*; সালমা ৪-০-১৪-১, সুরাইয়া ২-০-১২-১, নাহিদা ৪-০-৩৪-২, রুমানা ৪-০-৩৩-১, রিতু ৩-০-২৩-০, মেঘলা ৩-০-১৭-০)।
বাংলাদেশ: ২০ ওভারে ১১৪/৫ (শামিমা ৬, মুর্শিদা ৩৬, ফারজানা ৩৩, নিগার ২০, সোবহানা ১১*, রিতু ০, রুমানা ২*; উদেশিকা ২-০-২২-০, দিলহারি ৪-০-২১-০, কাঞ্চনা ২-০-১৩-১, রানাভিরা ৪-০-২২-০, নিসানসালা ৪-০-১৭-০, আতাপাত্তু ৪-০-১৭-৩)।
ফল: শ্রীলঙ্কা ২২ রানে জয়ী।
প্লেয়ার অব দা ম্যাচ: চামারি আতাপাত্তু।
হাসিব মোহাম্মদ
জাতীয়
শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা জানালেন অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টারা
শপথ নেয়ার পরের দিন ভাষা শহীদদের স্মরণে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা নিবেদন করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টারা।
শুক্রবার (৯ আগস্ট) বেলা ১১টার দিকে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ১৩ জন উপদেষ্টা নিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।
এর আগে, সাভারে জাতীয় স্মৃতিসৌধে মহান মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান ও অন্য উপদেষ্টারা।
গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান হিসেবে শপথ নেন ড. মুহাম্মদ ইউনূস। দায়িত্ব নেওয়ার পর তিনি এক নতুন বাংলাদেশ উপহার দেওয়ার অঙ্গীকার করেন।
আই/এ
জাতীয়
উপদেষ্টা পরিষদকে অভিনন্দন জানালেন জাসদ
জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল—জাসদের সভাপতি হাসানুল হক ইনু ও সাধারণ সম্পাদক শিরীন আখতার অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মোহাম্মদ ইউনুস এবং অন্য উপদেষ্টাদেরকে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়েছেন
বৃহস্পতিবার ( ৮ আগস্ট ) রাতে দলের পক্ষ থেকে পাঠানো এক বিবৃতিতে এ অভিনন্দন জানান তারা।
বিবৃতিতে জানানো হয়, “অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দায়িত্ব গ্রহণ করার পর দেশে আর একটিও প্রাণহানি, হামলা ও সম্পদ ধ্বংসের ঘটনা যেন না ঘটে তা নিশ্চিত হবে।”
বিবৃতিতে আরও বলেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার রাষ্ট্রীয় চার মূলনীতিসহ সংবিধানকে সমুন্নত রেখে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন এবং রাজনৈতিক ও সামাজিক শক্তির সাথে আলোচনা করে সরকারের কর্ম পরিকল্পনার রূপরেখা দ্রুত প্রকাশ করে বিদ্যমান অনিশ্চয়তা ও অস্থিরতা প্রশমিত করবেন।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রাথমিক ও প্রধান কাজ হিসেবে অনতিবিলম্বে দেশে আইনশৃঙ্খলা পুনঃপ্রতিষ্ঠা করার এবং জনগণের জানমালের নিরাপত্তা নিশ্চিত করে জনজীবনে স্বাভাবিকতা ও শান্তি ফিরিয়ে আনতে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানিয়েছেন।
জাসদ নেতৃবৃন্দ অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নিহত শিক্ষার্থী, সাধারণ মানুষ, সাংবাদিক পুলিশ বাহিনীর সদস্যসহ প্রতিটি হত্যাকাণ্ডের সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার নিশ্চিত করার আহ্বান জানান।
জাসদ জোর দাবি জানান, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে পূর্ববর্তী সরকারের পদত্যাগের পর দেশের বিভিন্ন স্থানে চলমান বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও পুলিশ বাহিনীর সদস্যসহ পেশাজীবী ও হিন্দু ও আহমদীয়াসহ ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের ওপর হামলা ও হত্যা করা, মন্দিরসহ ধর্মীয় স্থাপনায় হামলা, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের কার্যালয়ে ও নেতাকর্মীদের বাসাবাড়িতে হামলা-হত্যা-নির্যাতন, ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান ও ঘরবাড়িতে হামলা ও অগ্নিসংযোগ, সংসদ ভবন ও প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় ও গণভবনসহ বিভিন্ন সরকারি স্থাপনায় হামলা, ভাঙচুর, লুটপাট, অগ্নিসংযোগ, ধানমন্ডি ৩২ নম্বরের ঐতিহাসিক বঙ্গবন্ধু ভবন-বঙ্গবন্ধু জাদুঘরে হামলা, লুটপাট, জ্বালিয়ে ছারখার, দেশের বিভিন্ন স্থানে বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য, সাত বীরশ্রেষ্ঠর ভাস্কর্যসহ ভাষা আন্দোলন, স্বাধীনতা সংগ্রাম ও মুক্তিযুদ্ধের স্মারক ভাস্কর্য ও ম্যুরাল ভেঙে ফেলা এবং কুমিল্লার বীরচন্দ্র পাঠাগার, সুনামগঞ্জের ঐতিহ্য জাদুঘর, কুড়িগ্রামের উত্তরবঙ্গে মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর, ময়মনসিংহের ঐতিহাসিক শশীলজের ভেনাস ভাস্কর্য ভেঙে ফেলাসহ অগনিত শিল্পকর্ম ভেঙে ফেলার সব অপরাধ কাণ্ডের সঙ্গে যুক্ত দায়ী ব্যক্তিদের দ্রুত আইনের আওতায় আনার।
জেডএস/
জাতীয়
তদবির থেকে বিরত থাকুন, দেশগঠনে পরামর্শ দিন : আসিফ মাহমুদ
নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে গঠিত হয়েছে ১৭ সদস্যের অন্তবর্তীকালীন সরকার। এ উপদেষ্টা পরিষদে স্থান পেয়েছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের দুইজন প্রতিনিধি। এদের একজন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আসিফ মাহমুদ। তিনি উপদেষ্টা হিসেবে শপথ নেয়ার পর ঘনিষ্ঠজনদের নিজেদের সুবিধার জন্য কোনো আবদার কিংবা তদবির করতে বারণ করেছেন। বরং দেশগঠনে কোনো পরামর্শ থাকলে দেয়ার অনুরোধ করেছেন।
বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) দিবাগত রাতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এক পোস্ট করে এ অনুরোধ করেন।
পোস্টে এই তরুণ উপদেষ্টা লিখেছেন, ব্যক্তিগত লাভের আশায় আবদার, তদবির করা থেকে বিরত থাকুন। এতে করে আমার সাথে আপনার সম্পর্ক নষ্ট হতে পারে। দেশগঠনে পরামর্শ থাকলে জানাবেন।
বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) রাতে নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে ১৭ জনকে নিয়ে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন করা হয়। প্রধান উপদেষ্টা ও অন্য উপদেষ্টাদের শপথ পাঠ করান রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। ঢাকার বাইরে থাকায় তিন উপদেষ্টা ফারুক-ই-আযম, বিধান রঞ্জন রায় এবং সুপ্রদীপ চাকমা শপথ অনুষ্ঠানে উপস্থিত হতে পারেননি।
সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ছাড়া অন্যান্য উপদেষ্টারা হলেন- ১. সালেহ উদ্দিন আহমেদ ২. ড. আসিফ নজরুল ৩. আদিলুর রহমান খান ৪. হাসান আরিফ ৫. তৌহিদ হোসেন ৬. সৈয়দা রেজওয়ানা হাসান ৭. মো. নাহিদ ইসলাম ৮. আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া ৯. ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এম সাখাওয়াত হোসেন ১০. সুপ্রদীপ চাকমা ১১. ফরিদা আখতার ১২. বিধান রঞ্জন রায় ১৩. আ.ফ.ম খালিদ হাসান ১৪. নুরজাহান বেগম ১৫. শারমিন মুরশিদ ১৬. ফারুক-ই-আযম।
জেএইচ