চট্টগ্রাম
পার্বত্য জেলায় পাহাড় ধসের শঙ্কা, আশ্রয়কেন্দ্রে যেতে মাইকিং
গত দুই দিনের টানা বর্ষণের কারণে পার্বত্য জেলা রাঙামাটিতে পাহাড় ধসের শঙ্কা দেখা দিয়েছে। পাহাড় ধসে ক্ষয়ক্ষতি এড়াতে পাহাড়ের ঢালে ঝুঁকিপূর্ণভাবে বসবাসরতদের নিরাপদ আশ্রয়ে যেতে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে মাইকিং করা হয়েছে। পাশাপাশি শহরের ঝুঁকিপূর্ণ এলাকাগুলো পরিদর্শন করেছেন রাঙামাটির জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মোশারফ হোসেন খান। রাঙামাটি আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রের তথ্যমতে, গত ২৪ ঘণ্টায় রাঙামাটিতে ৯৪ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে।
শুক্রবার (৪ আগস্ট) রাঙামাটির জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মোশারফ হোসেন খান ও জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তারা শহরের শিমুলতলী, লোকনাথ মন্দির, রুপনগর, ভেদভেদী মুসলিম পাড়াসহ বেশ কিছু এলাকা পরিদর্শন করেন।
এ সময় ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থানে বসবাসরতদের মাইকিং করে নিরাপদ আশ্রয়ে সরে যেতে আহ্বান জানানো হয়। এ সময় অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) এসএম ফেরদৌস ইসলাম, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মো. সাইফুল ইসলাম, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মারুফ হাসানসহ প্রশাসনের কর্মকর্তা ও বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
এদিকে, পাহাড়ের পাদদেশে বসবাসরতদের জন্য রাঙামাটি জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে শহরের ৯টি ওয়ার্ডে মোট ১৯টি আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে বলে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে। পাশাপাশি জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে একটি কন্ট্রোলরুম (নিয়ন্ত্রণ কক্ষ) খোলা হয়েছে। কিন্তু পাহাড়ের পাদদেশে বসবাসকারীদের মধ্যে এখনো আশ্রয়কেন্দ্রে যাওয়ার তেমন আগ্রহ দেখা যায়নি।
শহরের রুপনগর এলাকার বাসিন্দা মো. আবদুল সোবাহান গণমাধ্যমকে বলেন, এখনো তেমন বৃষ্টি না হওয়ায় আমরা আশ্রয়কেন্দ্রে যাইনি। তবে বৃষ্টির পরিমাণ আরও বাড়লে আমরা আশ্রয়কেন্দ্রে চলে যাব।
শিমুলতলী এলাকার বাসিন্দা রুপনা চাকমা বলেন, আমাদের বাসার ছোট বাচ্চাদের আত্মীয়ের বাসায় পাঠিয়ে দিয়েছি। আরও বেশি বৃষ্টি শুরু হলে আমরা আশ্রয়কেন্দ্রে চলে যাব।
শিমুলতলী সমাজ উন্নয়ন কমিটির সভাপতি মো. আবু বক্কর লিটন (মিঠু) বলেন, যেহেতু প্রতি বছর বৃষ্টিপাতের সময় শিমুলতলী এলাকায় পাহাড় ধসের আশঙ্কা তৈরি হয়, তাই আমরা সবাই সতর্ক রয়েছি। আমি শিমুলতলী এলাকার বাসিন্দাদের আশ্রয়কেন্দ্রে যেতে অনুরোধ করেছি। কিন্তু যেহেতু এখনো তেমন বৃষ্টি হয়নি তাই কেউ আশ্রয়কেন্দ্রে যেতে চাইছে না। তবে অনেকেই আত্মীয়স্বজনের বাসায় চলে গেছে। বৃষ্টি শুরু হলে হয়ত আরও অনেকেই আশ্রয়কেন্দ্রে চলে যাবে।
রাঙামাটির জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মোশারফ হোসেন খান জানান, যেহেতু গত দুই দিন যাবত টানা বর্ষণ হচ্ছে তাই অনেক জায়গায় পাহাড় ধসের শঙ্কা তৈরি হয়েছে। আমরা ঝুঁকিপূর্ণ এলাকাগুলো পরিদর্শন করেছি, আবার বের হব। এসব এলাকার বাসিন্দাদের নিরাপদ আশ্রয়ে সরে যাওয়ার জন্য নির্দেশনা ও মাইকিং করা হচ্ছে। জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে আশ্রয়কেন্দ্র ও কন্ট্রোলরুম খোলা হয়েছে। আমরা চাই না কারও কোনো ধরনের ক্ষয়ক্ষতি হোক।
এএম/
চট্টগ্রাম
কাভার্ডভ্যানের ধাক্কায় প্রাণ হারালেন দুই সাইকেল আরোহী
কর্ণফুলীতে পণ্যবাহী কাভার্ডভ্যানের ধাক্কায় দুই সাইকেল আরোহী নিহত হয়েছেন। কাভার্ডভ্যানটি আটক করা হয়েছে।
বুধবার (৭ আগস্ট) বেলা একটার দিকে চরপাথরঘাটা ইউনিয়নের ইছানগর বাংলাবাজার এলাকায় এই দুর্ঘটনা ঘটে।
নিহতরা হলেন- নওগাঁ জেলার আত্রাই উপজেলার নন্দনালী গ্রামের কামাল মণ্ডলের ছেলে চঞ্চল মণ্ডল (১৮) ও রাজবাড়ী জেলার গোয়ালন্দ উপজেলার ছোট পাগলা গ্রামের মোহাম্মদ আবদুল জলিলের ছেলে জাহিদুল ইসলাম (১৬)। তারা কর্ণফুলী উপজেলার ইছানগর গ্রামে ভাড়া বাসায় থাকতেন।
চরপাথরঘাটার ৮ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মোহাম্মদ আবু তাহের গণমাধ্যমকে বলেন, দুপুরে তারা তিনজন সাইকেল চালিয়ে কর্মস্থলে যাচ্ছিলেন। এ সময় কাভার্ডভ্যানের ধাক্কায় ঘটনাস্থলেই দুজন নিহত হয়। অপরজনকে গুরুতর আহত অবস্থায় হাসপাতালে পাঠানো হয়। কাভার্ডভ্যানটি আটক করা হয়েছে।
এএম/
চট্টগ্রাম
রাতেও ট্রাফিক সামলাচ্ছেন ছাত্রীরা
সরকার পতনের পরে চট্রগ্রামে নগরীর থানাগুলো ফাঁকা পড়ে আছে। এ অবস্থায় নগরীর রাস্তায় নেই কোন ট্রাফিক পুলিশ। দিনভর রাস্তায় ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণ করেন সরকার পতনের আন্দোলন করা শিক্ষার্থীরা। তবে দিন পেরিয়ে রাত হলেও, রাস্তায় ছাত্রদের পাশপাশি ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণ করতে দেখা যায় ছাত্রীদেরও।
মঙ্গলবার (৬ আগস্ট) চট্টগ্রাম নগরীর চকবাজার অলী খা মসজিদ মোড় এলাকায় এমন চিত্র দেখতে পায় গণমাধ্যম।
নগরীর অলী খা মসজিদ মোড়ে শৃঙ্খলা রক্ষার কাজ করা বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ফাইজা তাবাসসুম বলেন, দেশে ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থান হয়েছে। এখন দেশকে এগিয়ে নিতে সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে। নিজের দায়িত্ববোধের জায়গা থেকে এখানে আসা। সকালে শুনেছি সড়কে ট্রাফিক পুলিশ নেই। তাই তারা কাজ করতে এসেছেন।
আসিফুর রহমান নামে আরেক বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী জানান, শিফট সিস্টেম করে ছাত্ররা কাজ করছে। এখন তিনি দায়িত্ব পালন করছেন। নিজেদের ইচ্ছায় তারা এখানে এসেছেন।
আই/এ
চট্টগ্রাম
‘বালুখেকো’ চেয়ারম্যান সেলিম ও তার ছেলে গণপিটুনিতে নিহত
চাঁদপুর সদর উপজেলার লক্ষ্মীপুর মডেল ইউনিয়ন পরিষদের আলোচিত ‘বালুখেকো’ খ্যাত চেয়ারম্যান সেলিম খান ও তার ছেলে নায়ক শান্ত খান গনপিটুনিতে নিহত হয়েছেন।
সোমবার (৫ আগস্ট) শেখ হাসিনা পদত্যাগ করার পর নিজ এলাকা থেকে পালিয়ে যাওয়ার সময় বালিয়া ইউনিয়নের ফরক্কাবাদ বাজারে এসে জনগণের তোপের মুখে পড়েন তারা। এরপর সেখানে নিজের পিস্তল থেকে গুলি করে উদ্ধার হয়ে আসতে পারলেও পার্শ্ববর্তী বাগাড়া বাজারে এসে জনতার মুখোমুখি হয়। তারপর সেখানে জনগণের পিটুনিতে নিহত হোন সেলিম খান ও তার ছেলে শান্ত খান।
চাঁদপুর সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শেখ মুহসীন আলম গণমাধ্যমে বলেন, তাদের মৃত্যুর বিষয় জেনেছি। তবে কেউ খবর দেয়নি। আর জানমালের নিরাপত্তার কারণে সেখানে কাউকে পাঠানো হয়নি।
প্রসঙ্গত, আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে সেলিম খান চাঁদপুর নৌ-সীমানায় পদ্মা-মেঘনা নদীতে শত শত ড্রেজার দিয়ে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করে কোটি কোটি টাকার মালিক বনে যান। এসব ঘটনায় সে কারাভোগ করেন এবং দুদকে তার বিরুদ্ধে মামলা চলমান রয়েছে। সেলিম খান একজন আলোচিত প্রযোজকও। তিনি প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান শাপলা মিডিয়ার কর্ণধার।
এছাড়া সেলিম খানকে পদ্মা-মেঘনার চর থেকে বিভিন্ন সময় বালু তোলাসহ নানা কারণে চাঁদপুর সদর উপজেলার লক্ষ্মীপুর মডেল ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান পদ থেকে আজীবন বহিষ্কার করে আওয়ামী লীগ। ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতির দায়িত্ব পালন করছিলেন তিনি।
এএম/
মন্তব্য করতে লগিন করুন লগিন