বাংলাদেশ
‘ দিনের ভোট রাতে হওয়ার অভিযোগের কোনো সত্যতা নেই ’
দিনের ভোট রাতে হয়েছে এ বিষয়ে কোনো প্রার্থীসহ কেউ নির্বাচন কমিশনে সরাসরি কোনো অভিযোগ করেননি। এমনকি এই অভিযোগ নিয়ে কেউ আদালতেও যাননি। বললেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার কে এম নুরুল হুদা।
আজ বৃহস্পতিবার (২৭ জানিয়ারি) সকালে নির্বাচন কমিশনের মিডিয়া সেন্টারে, নির্বাচন কমিশন বিটে কর্মরত সাংবাদিকদের সংগঠন ‘রিপোর্টার্স ফোরাম ফর ইলেকশন অ্যান্ড ডেমোক্রেসি- আরএফইডি’ টক শীর্ষক আলোচনায় অংশ নিয়ে প্রধান নির্বাচন কমিশনার এসব কথা বলেন। আরএফইডি’র সভাপতি সোমা ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করেন সাধারণ সম্পাদক কাজী জেবেল।
সিইসি কে এম নুরুল হুদা বলেন, ‘নির্বাচন কমিশনের কেউ কোথাও রাতে ভোট হওয়ার বিষয়টি দেখেননি। এমনকি কোনো সাংবাদিক রাতে ভোট হয়েছে তা দেখেছেন কিংবা লিখেছেন বলে আমাদের জানা নেই।’ তিনি বলেন, ‘নির্বাচনের গেজেট প্রকাশ হয়ে গেলে আমাদের কিছু করার থাকে না। কারণ এটা আইন। প্রকৃতপক্ষে আমাদের আইনের বাইরে গিয়ে কিছু করার সুযোগও ছিল না।’
একাদশ জাতীয় সংসদ কয়েকশ’ কেন্দ্রে শতভাগ ভোট পড়েছে- এটা কীভাবে সম্ভব?- এমন প্রশ্নের জবারে সিইসি বলেন, ‘গেজেট হওয়ার পর বিষয়টি আমরা জানতে পেরেছি। এর আগ পর্যন্ত এ বিষয়ে কেউ নির্বাচন কমিশনে অভিযোগ দায়ের করেনি। তাই এ বিষয়ে আমার কোনো ব্যবস্থা নিতে পারিনি, ব্যবস্থা নেওয়ার সুযোগও ছিল না।
তিনি বলেন, ‘বদিউল আলম মজুমদারকে ব্যক্তিগত সুবিধা না দেওয়ায় কমিশনের সমালোচনা করছেন। শামসুল হুদা কমিশনের আমলে বদিউল আলম মজুমদারের বিরুদ্ধে এক কোটি টাকার আর্থিক অনিয়মের অভিযোগ রয়েছে কমিশনে।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমি কমিশনের দায়িত্ব নেওয়ার পর সুজন সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদার আমার কাছে এসেছিল সুবিধা নিতে। আমি তাকে কাজ করার সুযোগ না দেওয়ায় তিনি কমিশনের সমালোচনা করেন। অথচ তার বিরুদ্ধে কমিশনে এক কোটি টাকার আর্থিক অনিয়মের অভিযোগ রয়েছে।’
সাবেক সিইসি শামসুল হুদা হঠাৎ করেই ছবক শিখাচ্ছেন বলে মন্তব্য করেন সিইসি। তিনি বলেন, ‘শামসুল হুদা এতদিন পরে এসে আমাদেরকে ছবক দিচ্ছেন। তিনি ৯০ দিনের পরিবর্তে ৬৯০ দিন পর নির্বাচন করেছেন। এটা কিভাবে সম্ভব? দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন করা আর সামরিক শাসনের অধীনে নির্বাচন করা এক কথা নয়, এটা তাকে বুঝতে হবে। বদিউল আলম মজুমদারের মত একজন লোককে তিনি কীভাবে নির্বাচন কমিশনে কাজ করার সুযোগ দিলেন!, শামসুল হুদা কমিশন ক্যান্টনমেন্টের আশীর্বাদ নিয়ে নির্বাচন করেছেন বলেও তিনি মন্তব্য করেন।
তিনি বলেন, ‘গণমাধ্যম স্বাধীনভাবে কাজ করার সুযোগ পেয়েছে। নির্বাচন কমিশন নিয়ে গণমাধ্যমে উঠে আসা যেকোনো অনিয়ম, সংকট তদন্ত করে দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়।’ এ সময় তিনি তার বক্তব্যে নিজ ও কমিশনের কাজের বিভিন্ন দিক তুলে ধরে বলেন, ‘স্থানীয় সরকার নির্বাচন হচ্ছে। সাত কোটি ছয় লাখের বেশি স্মার্টকার্ড রেডি হয়ছে। পাঁচ কোটির বেশি বিতরণ করা হয়েছে। এতে বিদেশিরা নয়, দেশের মানুষ যুক্ত ছিলেন। অনেকগুলো আইনি-বিধি বাংলায় অনুবাদ করা হয়েছে। বিভিন্ন পর্যায়ের ভোটার তালিকা সংশোধন করা হয়েছে।’
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে নুরুল হুদা বলেন, ‘কুমিল্লা নির্বাচনে রাজনৈতিক চাপ ছিল না। নারায়ণগঞ্জ নির্বাচনও সন্তোষজনক। নির্বাচনকালীন আমাদের উপর কোনো রাজনৈতিক চাপ ছিল না। আমরা আমাদের মত করে কাজ করতে পেরেছি।’
তিনি বলেন, ‘ইসির পক্ষে নির্বাচনে সংঘর্ষ, সহিংসতা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব নয়, যদি না প্রার্থীরা সহনশীল হন। তবে রাজনৈতিক দলের অধীনে নির্বাচন করা কঠিন হলেও তা অসম্ভব নয়। এটা সামরিক সরকারের অধীনের চেয়ে অনেক ভালো।’
নির্বাচনে বিভিন্ন দলের এজেন্টদের ভোট কেন্দ্রে সাবলীল পরিবেশ ছিল না অভিযোগের জবাবে বলেন, ‘প্রমাণ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।’ এজেন্ট বের করে দেওয়ার বিষয়ে বলেন, ‘অভিযোগ পাওয়ার পর ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। বেশির ভাগ সময় অভিযোগ আসে না।’ তিনি বলেন, ‘বর্তমান কমিশনের আমলে স্থানীয় সরকার নির্বাচনসহ সবধরনের নির্বাচন অংশগ্রহণমূলক হয়েছে, প্রতিযোগিতা পূর্ণ হয়েছে।’
আরেক প্রশ্নের জবাবে সিইসি নুরুল হুদা বলেন, ‘আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন শতভাগ ইভিএমে করা সম্ভব হবে না। তবে ৫০ ভাগ করা যেতে পারে।’ গত ৫ বছর তিনি তার দায়িত্ব পালনকালে নিজেকে শতভাগ সফল নয় বলেও তিনি দাবি করেন। তবে তার আন্তরিকতার অভাব ছিল না বলে জানান।
ইসির বিরুদ্ধে ৪২ নাগরিকের করা অভিযোগ ভিত্তিহীন ছিল বলে মন্তব্য করে তিনি বলেন, ‘বিভিন্ন পর্যায়ের অভিযোগ তদন্ত করা হচ্ছে।’ নির্বাচন কমিশন আইন হলে রাজনৈতিক দলগুলোর আস্থা ফিরে আসবে কি না?- এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘সার্চ কমিটি ব্যবস্থা ভালো। তবে আইন হওয়া সবচেয়ে বেশি ভালো।’
এসআই/
জাতীয়
শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা জানালেন অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টারা
শপথ নেয়ার পরের দিন ভাষা শহীদদের স্মরণে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা নিবেদন করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টারা।
শুক্রবার (৯ আগস্ট) বেলা ১১টার দিকে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ১৩ জন উপদেষ্টা নিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।
এর আগে, সাভারে জাতীয় স্মৃতিসৌধে মহান মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান ও অন্য উপদেষ্টারা।
গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান হিসেবে শপথ নেন ড. মুহাম্মদ ইউনূস। দায়িত্ব নেওয়ার পর তিনি এক নতুন বাংলাদেশ উপহার দেওয়ার অঙ্গীকার করেন।
আই/এ
জাতীয়
উপদেষ্টা পরিষদকে অভিনন্দন জানালেন জাসদ
জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল—জাসদের সভাপতি হাসানুল হক ইনু ও সাধারণ সম্পাদক শিরীন আখতার অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মোহাম্মদ ইউনুস এবং অন্য উপদেষ্টাদেরকে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়েছেন
বৃহস্পতিবার ( ৮ আগস্ট ) রাতে দলের পক্ষ থেকে পাঠানো এক বিবৃতিতে এ অভিনন্দন জানান তারা।
বিবৃতিতে জানানো হয়, “অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দায়িত্ব গ্রহণ করার পর দেশে আর একটিও প্রাণহানি, হামলা ও সম্পদ ধ্বংসের ঘটনা যেন না ঘটে তা নিশ্চিত হবে।”
বিবৃতিতে আরও বলেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার রাষ্ট্রীয় চার মূলনীতিসহ সংবিধানকে সমুন্নত রেখে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন এবং রাজনৈতিক ও সামাজিক শক্তির সাথে আলোচনা করে সরকারের কর্ম পরিকল্পনার রূপরেখা দ্রুত প্রকাশ করে বিদ্যমান অনিশ্চয়তা ও অস্থিরতা প্রশমিত করবেন।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রাথমিক ও প্রধান কাজ হিসেবে অনতিবিলম্বে দেশে আইনশৃঙ্খলা পুনঃপ্রতিষ্ঠা করার এবং জনগণের জানমালের নিরাপত্তা নিশ্চিত করে জনজীবনে স্বাভাবিকতা ও শান্তি ফিরিয়ে আনতে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানিয়েছেন।
জাসদ নেতৃবৃন্দ অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নিহত শিক্ষার্থী, সাধারণ মানুষ, সাংবাদিক পুলিশ বাহিনীর সদস্যসহ প্রতিটি হত্যাকাণ্ডের সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার নিশ্চিত করার আহ্বান জানান।
জাসদ জোর দাবি জানান, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে পূর্ববর্তী সরকারের পদত্যাগের পর দেশের বিভিন্ন স্থানে চলমান বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও পুলিশ বাহিনীর সদস্যসহ পেশাজীবী ও হিন্দু ও আহমদীয়াসহ ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের ওপর হামলা ও হত্যা করা, মন্দিরসহ ধর্মীয় স্থাপনায় হামলা, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের কার্যালয়ে ও নেতাকর্মীদের বাসাবাড়িতে হামলা-হত্যা-নির্যাতন, ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান ও ঘরবাড়িতে হামলা ও অগ্নিসংযোগ, সংসদ ভবন ও প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় ও গণভবনসহ বিভিন্ন সরকারি স্থাপনায় হামলা, ভাঙচুর, লুটপাট, অগ্নিসংযোগ, ধানমন্ডি ৩২ নম্বরের ঐতিহাসিক বঙ্গবন্ধু ভবন-বঙ্গবন্ধু জাদুঘরে হামলা, লুটপাট, জ্বালিয়ে ছারখার, দেশের বিভিন্ন স্থানে বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য, সাত বীরশ্রেষ্ঠর ভাস্কর্যসহ ভাষা আন্দোলন, স্বাধীনতা সংগ্রাম ও মুক্তিযুদ্ধের স্মারক ভাস্কর্য ও ম্যুরাল ভেঙে ফেলা এবং কুমিল্লার বীরচন্দ্র পাঠাগার, সুনামগঞ্জের ঐতিহ্য জাদুঘর, কুড়িগ্রামের উত্তরবঙ্গে মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর, ময়মনসিংহের ঐতিহাসিক শশীলজের ভেনাস ভাস্কর্য ভেঙে ফেলাসহ অগনিত শিল্পকর্ম ভেঙে ফেলার সব অপরাধ কাণ্ডের সঙ্গে যুক্ত দায়ী ব্যক্তিদের দ্রুত আইনের আওতায় আনার।
জেডএস/
জাতীয়
তদবির থেকে বিরত থাকুন, দেশগঠনে পরামর্শ দিন : আসিফ মাহমুদ
নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে গঠিত হয়েছে ১৭ সদস্যের অন্তবর্তীকালীন সরকার। এ উপদেষ্টা পরিষদে স্থান পেয়েছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের দুইজন প্রতিনিধি। এদের একজন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আসিফ মাহমুদ। তিনি উপদেষ্টা হিসেবে শপথ নেয়ার পর ঘনিষ্ঠজনদের নিজেদের সুবিধার জন্য কোনো আবদার কিংবা তদবির করতে বারণ করেছেন। বরং দেশগঠনে কোনো পরামর্শ থাকলে দেয়ার অনুরোধ করেছেন।
বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) দিবাগত রাতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এক পোস্ট করে এ অনুরোধ করেন।
পোস্টে এই তরুণ উপদেষ্টা লিখেছেন, ব্যক্তিগত লাভের আশায় আবদার, তদবির করা থেকে বিরত থাকুন। এতে করে আমার সাথে আপনার সম্পর্ক নষ্ট হতে পারে। দেশগঠনে পরামর্শ থাকলে জানাবেন।
বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) রাতে নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে ১৭ জনকে নিয়ে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন করা হয়। প্রধান উপদেষ্টা ও অন্য উপদেষ্টাদের শপথ পাঠ করান রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। ঢাকার বাইরে থাকায় তিন উপদেষ্টা ফারুক-ই-আযম, বিধান রঞ্জন রায় এবং সুপ্রদীপ চাকমা শপথ অনুষ্ঠানে উপস্থিত হতে পারেননি।
সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ছাড়া অন্যান্য উপদেষ্টারা হলেন- ১. সালেহ উদ্দিন আহমেদ ২. ড. আসিফ নজরুল ৩. আদিলুর রহমান খান ৪. হাসান আরিফ ৫. তৌহিদ হোসেন ৬. সৈয়দা রেজওয়ানা হাসান ৭. মো. নাহিদ ইসলাম ৮. আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া ৯. ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এম সাখাওয়াত হোসেন ১০. সুপ্রদীপ চাকমা ১১. ফরিদা আখতার ১২. বিধান রঞ্জন রায় ১৩. আ.ফ.ম খালিদ হাসান ১৪. নুরজাহান বেগম ১৫. শারমিন মুরশিদ ১৬. ফারুক-ই-আযম।
জেএইচ