বিএনপি
বিচারকের করার কিছু নাই, সিদ্ধান্ত আসে সরকারের শীর্ষ পর্যায় থেকে: আমীর খসরু
বিচার বিভাগ এখন পুলিশের এক্সটেনশন। তারা এখন সবার সামনে চলে এসেছে। এটা খুবই গুরুত্বের সঙ্গে মানুষের কাছে তুলে ধরতে হবে। দেশের পরিবর্তন করতে বর্তমান ফ্যাসিস্ট সরকারের পতন ঘটাতে হবে। বললেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী।
শুক্রবার (১১ আগস্ট) দুপুরে রাজধানীর সেগুনবাগিচায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির মিলনায়তনে এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও তার সহধর্মিণী ডা. জুবাইদা রহমানের বিরুদ্ধে সাজা দেয়ার প্রতিবাদে এই সভার আয়োজন করে জিয়া পরিষদ কেন্দ্রীয় সংসদ।
আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, যে রায় দেয়া হয়েছে তা বিচার বিভাগীয় রায় নয়। এটি একটি ফ্যাসিস্ট রেজিমের রায়, যারা জনগণকে বাইরে রেখে ক্ষমতায় বসে আছে। আইনের নামে যত বেআইনি কাজ আছে সবই করে যাচ্ছে। অসাংবিধানিকভাবে সংবিধান সংশোধন করেছে। বিচার বিভাগ, আইন বিভাগ ও নির্বাহী বিভাগ যার যার অবস্থান থেকে স্বাধীনভাবে কাজ করার কথা। কিন্তু অসাংবিধানিকভাবে সংবিধান সংশোধন করার কারণে দেশকে এমন জায়গায় নিয়ে গেছে সবই একাকার হয়ে গেছে। কারণ সত্যিকার অর্থে সাংবিধানিকভাবে দেশ পরিচালনা হলে ফ্যাসিস্ট রেজিমের অস্তিত্ব থাকবে না। অবৈধ সরকারের অস্তিত্ব থাকবে না। এজন্যই তারা জবাবদিহিতা চায় না।
তিনি বলেন, যারা ফ্যাসিস্ট তারা তো স্বচ্ছতা চাইবে না। কারণ জনগণের টাকা বিদেশে পাচার করতে হবে। ভোট চুরি করে ক্ষমতায় থাকতে হবে। সেজন্যই তো রাষ্ট্রীয় সংস্থাগুলো ধ্বংস করে ফেলেছে। তারা ব্যাংক লুট করে শেয়ার বাজার লুট করে। অথচ শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান একটি মুক্ত অর্থনীতি চালুর মাধ্যমে সাধারণ মানুষকে অর্থনীতিতে সম্পৃক্ত করেছিলেন। এখন হচ্ছে আওয়ামী মডেল অর্থনীতি।
তিনি বলেন, তারেক রহমান ও তার সহধর্মিণী ডা. জুবাইদা রহমানের বিরুদ্ধে যে সাজা দিয়েছে সেখানে বিচারকের করার কিছু নাই। এটা তো সরকারের শীর্ষ পর্যায় থেকে আসে। যা সাবেক প্রধান বিচারপতি সিনহা এমনকি বর্তমান বিচারকরাও বলেছেন। সুতরাং তাদের কাছে কোনো প্রত্যাশা করে লাভ নেই
আমীর খসরু বলেন, আমাদেরকে ঘুরে দাঁড়াতে হলে এই ফ্যাসিস্ট রেজিমের বিদায় ঘটাতে হবে। তারেক রহমানের ২৭ দফার ভিত্তিতে রাষ্ট্র নতুনভাবে মেরামত করতে হবে। এজন্য এই সরকারের বিদায় ছাড়া কোনো উপায় নেই।
তিনি আরো বলেন, আজকে দেশ কোথায় গিয়ে ঠেকেছে তা সম্পর্কে দেশবাসীকে জানানো দরকার। ১৪ আগস্ট একটি বই প্রকাশ করা হবে। যেখানে মিডিয়ার রিপোর্ট তুলে ধরা হবে। সেরকমভাবে রোহিঙ্গা শরণার্থী নিয়ে একটি বই প্রকাশ করা হবে। দেশের বিচার বিভাগ আজ কোথায় দাঁড়িয়ে আছে সেটা নিয়ে দেশে বিদেশে তুলে ধরতে হবে।
আমীর খসরু বলেন, বিচার বিভাগ হলো এখন পুলিশের এক্সটেনশন। তারা এখন সামনে চলে এসেছে। এটা খুবই গুরুত্বের সঙ্গে তুলে ধরতে হবে। বিচার বিভাগ কিন্তু আজকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ভিসানীতির আওতায় চলে এসেছে। তাহলে বোঝা যায় দেশে ন্যায় বিচার হয় না। যার প্রমাণ তারেক রহমান ও জুবাইদা রহমানের বিরুদ্ধে সাজা। কারণ জুবাইদা রহমানকে সরকার ভয় করে। আগামী নির্বাচনে তিনি আসলে ভয়। কিন্তু এসব তো ভেসে যাবে। তাহলে জায়মা রহমানকে বাদ রাখলেন কেন? আপনি যার সঙ্গেই নির্বাচন করবেন দাঁড়াতে পারবেন না। সুতরাং যা করছেন তার প্রতিদান পাওয়ার আগেই সরে দাঁড়ান।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের অধ্যাপক ড. বোরহানউদ্দিন খান বলেন, দেশে গণতন্ত্র ও আইনের শাসন নেই। বিচারকরা নিরপেক্ষভাবে বিচার করতে পারছেন না সরকারের কর্মকাণ্ডের কারণে।
মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল বলেন, বর্তমান সরকার অবৈধ। তারা একটি হাইব্রিড রেজিম তৈরি করেছেন। অন্যদিকে বিচার বিভাগ এখন পুলিশের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছে। দেশে সেনাবাহিনীর কর্মকর্তা, পুলিশের লোকসহ কত রকম মানুষ গুম হয়েছে কোনো হদিস আছে? দেশে যারা আইন মানার হুকুম দেয় তাদের আইন আমরা মানব কেন?
তিনি বলেন, শেখ হাসিনা এমন জায়গায় দেশকে নিয়ে গেছে মানুষের দম বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। মানুষ নিরাপদ আশ্রয় খুঁজছে। তিনি তারেক রহমানের মেয়ে ব্যারিস্টার জায়মার সঙ্গে বাংলাদেশের যেকোনো আসন থেকে নির্বাচন করলে পরাজিত হবেন। আসুন আমরা শপথ নিই এই ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ সরকারকে হটিয়ে মুক্তিযুদ্ধের চেতনার ভিত্তিতে নতুন বাংলাদেশ গঠন করি। টেক ব্যাক বাংলাদেশ
বিএনপি
অন্তর্বর্তী সরকারকে অভিনন্দন জানালেন তারেক রহমান
বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের জন্য অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস এবং তার সহযোগী উপদেষ্টাদের অভিনন্দন জানিয়েছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপাসন তারেক রহমান। বাংলাদেশ সময় বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) দিবাগত রাত ১২টা ১২ মিনিটে নিজের ফেরিফায়েড ফেসবুক প্রোফাইলে দেওয়া এক স্ট্যাটাসে তিনি এ অভিনন্দন জানান।
অভিনন্দন বার্তায় তারেক রহমান লিখেছেন, বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের জন্য অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস এবং তার সহযোগী উপদেষ্টাদের অভিনন্দন। যদি পেছনে ফিরে তাকাই গেলো ১৬ বছর ধরে শেখ হাসিনার স্বৈরাচারী শাসনামলে বাংলাদেশের মানুষ ব্যাপক অধিকার লঙ্ঘন ও অবিচারের সম্মুখীন হওয়ার পর এই মুহুর্তটি এসেছে। আমাদের সাহসী ছাত্র-শিক্ষক, কর্মী, রিকশাচালক থেকে শুরু করে গৃহিণী, সাধারণ নাগরিক এবং রাজনৈতিক কর্মী- সমস্ত গণতন্ত্রপ্রেমী মানুষ ব্যাপকভাবে কোটা আন্দোলনে অংশগ্রহণ করেছে
তিনি বলেন, এই বিক্ষোভ শুধু কোটা সংস্কার নিয়ে নয়, নজিরবিহীন দুর্নীতি, মূল্যস্ফীতি, বেকারত্ব, মতপ্রকাশের স্বাধীনতা দমন-পীড়ন এবং মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ অবস্থান। আওয়ামী লীগের শাসনামলে অন্যায়ের মাত্রা ভয়াবহ আকার ধারণ করেছিল।
নতুন সরকারের কাছে জনগণের প্রত্যাশার কথা তুলে ধরে বিএনপির এই নেতা বলেন, সেই শাসনের পতনের সাথে সাথে বাংলাদেশের জনগণ অর্ন্তবর্তীকালীন সরকারের কাছে সুষ্ঠু ও বিশ্বাসযোগ্য জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য স্বাধীনভাবে ভোটাধিকারের প্রত্যাশা করে যেন তারা তাদের গণতান্ত্রিক আকাঙ্খার প্রতিফলন ঘটাতে পারে।
বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিবেশে বিএনপির অবস্থা তুলে ধরে তিনি আরও বলেন, বিএনপি একটি পাবলিক ম্যান্ডেটসহ একটি নির্বাচিত সরকার গঠন এবং জনগণের সেবা করে একটি জবাবদিহিমূলক সংসদ, জনগণের অধিকার ও স্বাধীনতা পুনরুদ্ধার এবং এর ফলে আইনের শাসন ও সুশাসন প্রতিষ্ঠাকে সমর্থন করে।
উল্লেখ্য, নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে ১৭ জনকে নিয়ে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন করা হয়েছে। বঙ্গভবনের দরবার হলে বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) রাতে শপথ নিয়েছেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উপদেষ্টারা। প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে প্রথমে ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে শপথ পাঠ করান রাষ্ট্রপতি মোঃ সাহাবুদ্দিন। এরপর বাকি ১৬ উপদেষ্টার মধ্যে ১৩ জন শপথ পাঠ করেন। ঢাকার বাইরে থাকায় তিন উপদেষ্টা ফারুক-ই-আযম, বিধান রঞ্জন রায় এবং সুপ্রদীপ চাকমা শপথ অনুষ্ঠানে উপস্থিত হতে পারেননি।
সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ছাড়া অন্যান্য উপদেষ্টারা হলেন- ১. সালেহ উদ্দিন আহমেদ ২. ড. আসিফ নজরুল ৩. আদিলুর রহমান খান ৪. হাসান আরিফ ৫. তৌহিদ হোসেন ৬. সৈয়দা রেজওয়ানা হাসান ৭. মো. নাহিদ ইসলাম ৮. আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া ৯. ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এম সাখাওয়াত হোসেন ১০. সুপ্রদীপ চাকমা ১১. ফরিদা আখতার ১২. বিধান রঞ্জন রায় ১৩. আ.ফ.ম খালিদ হাসান ১৪. নুরজাহান বেগম ১৫. শারমিন মুরশিদ ১৬. ফারুকী আযম।
জেএইচ
বিএনপি
ছাত্র-জনতার সমর্থনেই ড. ইউনূসকে সরকারের প্রধান করা হয়েছে: ফখরুল
ছাত্র-জনতার সমর্থনেই ড. ইউনূসকে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান করা হয়েছে। অন্তর্বর্তী সরকারের দায়িত্ব নিতে যাওয়া নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে দেশে চলমান সহিংসতা ও সংকট কেটে যাবে। বলেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের আন্দোলনে আহত নেতাকর্মীদের দেখতে রাজধানীর পঙ্গু হাসপাতালে গিয়ে তিনি এ কথা বলেন।
এ সময় আবেগপ্লুত মির্জা ফখরুল বলেন, হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আহতদের যে দৃশ্য দেখেছি তা সহ্য করার মতো না।
নতুন সরকার দেশে দ্রুত আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি করবে আশা প্রকাশ করে ফখরুল বলেন, অর্থনীতিকে সচল রাখার দ্রুত উদ্যোগ নিবে সরকার। অন্তবর্তীকালীন সরকার দেশের গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনতে দ্রুত নির্বাচনের ব্যবস্থা করার কথা জানান তিনি।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ছাত্র ও আমাদের মনোনীত ব্যক্তি ড. ইউনূস। তার সফল নেতৃত্বে চলমান সহিংসতা ও সংকট কেটে যাবে বলে বিশ্বাস করি।
এএম/
বিএনপি
নির্বাচন আয়োজনে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে সহায়তা করবে বিএনপি : ফখরুল
অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন করে তিন মাসের মধ্যে নির্বাচনের দাবি জানিয়েছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। এসময়ে নির্বাচন আয়োজনে এ সরকরারকে বিএনপি পূর্ণ সহযোগিতা করবে বলেও জানান তিনি।
বুধবার (৭ আগস্ট) বিকেলে নয়াপল্টনে দলটির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে অনুষ্ঠিত সমাবেশে এ দাবি জানান তিনি।
রাষ্ট্রপতির কাছে দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, কোনো বিলম্ব না করে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন করুন। এই সরকার যারা হবেন, তারা তিন মাসের মধ্যে নির্বাচন করবেন; সেই ব্যবস্থা তারা করবেন এবং এর জন্য পূর্ণ সহযোগিতা বিএনপি তাকে দেবে।
বিএনপি নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্য করে মহাসচিব বলেন, আওয়ামী লীগ সরকারকে পদত্যাগ করে পালিয়ে যেতে হয়েছে। এ বিজয় ছাত্রদের, এ বিজয় আপনাদের। যে বিজয় অর্জিত হয়েছে, এটাকে রক্ষা করতে সবাই সচেতন থাকবেন। চক্রান্তকারীরা নতুন করে চক্রান্ত করতে পারে। তারা বিজয়কে বিলিয়ে দিতে পারে চক্রান্তের মধ্য দিয়ে। সেই সুযোগ যেন তাদের না দেয়া হয়। যারা এসব করছে তারা দেশের শক্র। এরা কোনো আন্দোলনকারী হতে পারে না।
হামলা বা ভাঙচুর হচ্ছে তারা বিএনপির লোক নয় দাবি করে তিনি আরও বলেন, যারা আজকে বিভিন্ন এলাকায়, বিভিন্ন শহরে বন্দরে ভাঙচুর করছে, লুটপাট করছে তারা কেউ বিএনপির লোক নয়। তারা ছাত্রদের কেউ না। তারা দুর্বৃত্ত, দুষ্কৃতকারী। এটা তাদেরই লোক যারা এদেশে গণতন্ত্রকে ধ্বংস করতে চায়। সজাগ থাকবেন, সাবধান থাকবেন। বার বার বিজয় ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা হয়েছে। এ বিজয় যেন ছিনিয়ে নিতে না পারে।
প্রসঙ্গত, সমাবেশে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও দলটির চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া ভার্চুয়ালি যুক্ত হন।
আই/এ
মন্তব্য করতে লগিন করুন লগিন