রাজশাহী
গাইবান্ধায় সাঁওতালদের ভূমি ও অধিকার রক্ষায় প্রতিবাদ সমাবেশ
আন্তর্জাতিক আদিবাসী দিবস পালন উপলক্ষ্যে সাঁওতালদের ভূমি ও অধিকার রক্ষায় প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। দিবসটি উপলক্ষ্যে প্রতিপাদ্য বিষয় ছিল ‘আত্মনিয়ন্ত্রণাধিকার প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে আদিবাসী তরুণরাই মূল শক্তি’।
রোববার (১৩ আগস্ট) গাইবান্ধা পাবলিক লাইব্রেরি মিলনায়তনে প্রতিবাদী সমাবেশ, বিক্ষোভ মিছিল, সাঁওতালদের প্রতিবাদী গান ও নৃত্য পরিবেশনসহ অন্যান্য কর্মসূচি পালন করা হয়। অনুষ্ঠানের শুরুতেই সাঁওতাল নারী-পুরুষরা তাদের অধিকার ও দাবি সম্বলিত ব্যানার, ফেস্টুন নিয়ে বর্ণাঢ্য মিছিল গাইবান্ধা শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে। পরে সাঁওতাল নারী-পুরুষরা প্রতিবাদী গান ও নৃত্য পরিবেশন করেন। আদিবাসী-বাঙালি সংহতি পরিষদ, সাহেবগঞ্জ বাগদাফার্ম ভূমি উদ্ধার সংগ্রাম কমিটির আয়োজনে এই কর্মসূচির পালন করা হয়।
সাহেবগঞ্জ বাগদাফার্ম-ভূমি উদ্ধার সংগ্রাম কমিটির সভাপতি ফিলিমন বাসকের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সমাবেশে বক্তব্য দেন, এএলআরডি’র নির্বাহী পরিচালক ভূমি অধিকার কর্মী শামসুল হুদা, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক রুবায়েত ফেরদৌস, শিক্ষাবিদ অধ্যাপক মাজহার-উল মান্নান, আদিবাসী বাঙালি সংহতি পরিষদের আহ্বায়ক অ্যাড. সিরাজুল ইসলাম বাবু, হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদের কেন্দ্রীয় যুগ্ম সম্পাদক মনীন্দ্রনাথ, জনউদ্যোগের সদস্য সচিব প্রবীর চক্রবর্তী, জনউদ্যোগ কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য হরেন্দ্র নাথ শিং, আদিবাসী নেত্রী প্রিসিলা মুরমু, তৃষ্ণা মুরমু, সামাজিক সংগ্রাম পরিষদের সদস্য সচিব জাহাঙ্গির কবির তনু, আদিবাসী নেতা সুফল হেমব্রম, থমাস হেমব্রম, নিরঞ্জন পাহান, মানবাধিকার কর্মী গোলাম রব্বানী মুসা, কাজী আব্দুল খালেক, বাংলাদেশ রবিদাস ফোরামের সাধারণ সম্পাদক খিলন রবিদাস, ভূমি উদ্ধার কমিটির নেতা ময়নুল ইসলাম, আগস্টিন মিনজি, তুলিপ এক্কা, মাথিয়াস মার্ডি প্রমুখ।
সমাবেশে বক্তারা বলেন, সারাদেশে সাঁওতালসহ আদিবাসী জনগোষ্ঠী মানবাধিকার এবং জীবন মানের সার্বিকদিক দিয়ে আজও নানাভাবে বঞ্চিত এবং সে কারণেই দেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ জনগোষ্ঠীর থেকে পিছিয়ে পড়া অবহেলিত জনগোষ্ঠী। সমতলের আদিবাসীরা বিলুপ্ত হওয়ার পথে। ‘শুধু আদিবাসীই বিলুপ্ত হচ্ছে না, তাঁদের সংস্কৃতি, ভাষাও বিলুপ্ত হচ্ছে’। এরা বাংলাদেশের দরিদ্রতম জনগোষ্ঠী। অধিকাংশই ভূমিহীন, তাঁদের হাতে ভূমি নেই।
তারা আরও বলেন, আদিবাসীরা জাতীয়তাবাদী ঘৃণার শিকার। ১৯৭১ সালের আগে আমরা যেমন পাকিস্তানিদের ঘৃণার শিকার হয়েছি, তেমনি আজ আমরা বৃহত্তর জনগোষ্ঠীর ও সরকারের ঘৃণার শিকার হচ্ছি। উন্নয়ন প্রকল্পের নামে ক্রমাগত সাঁওতালসহ আদিবাসীদের উচ্ছেদ করা হচ্ছে। স্বাধীনতার ৫০ বছর পরেও মুক্তিযুদ্ধে আত্মত্যাগকারী সাঁওতালরা তাদের অধিকার ও মানবাধিকার থেকে বঞ্চিত। সাঁওতাল হত্যা, লুটপাট, অগ্নিসংযোগের পাঁচ বছর পেরিয়ে গেছে। এমন একটি বীভৎস, অমানবিক ঘটনার আজও বিচার কাজ শুরু হয়নি। সাঁওতাল হত্যা মামলার আসামিরা প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। তাঁদেরও কেউ গ্রেপ্তার করে না। এ নিয়ে সাঁওতালদের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে। তারা সরকারের প্রতি ৩ সাঁওতাল হত্যায় জড়িতদের দ্রুত গ্রেপ্তার করে বিচার এবং জমি ফেরতের পাশাপাশি বসতবাড়িতে অগ্নিসংযোগ, ভাঙচুর, লুটপাটের ঘটনায় ক্ষতিপূরণের দাবি জানান। শুধু তাই নয়, সাঁওতালদের রক্তে ভেজা জমিতে ইপিজেড করতে দেয়া হবে না। আদিবাসীদের ‘আদিবাসী’ হিসেবে সাংবিধানিক স্বীকৃতি দিতে হবে; সমতলের আদিবাসীদের জন্য পৃথক মন্ত্রণালয় ও ভূমি কমিশন গঠনেরও দাবি জানানো হয়।
এএম/
রাজশাহী
সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা ও সন্ত্রাসী কার্যকলাপের বিরুদ্ধে পাবনায় সচেতনতামূলক সমাবেশ
সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা ও সকল প্রকার সন্ত্রাসী কার্যকলাপের বিরুদ্ধে পাবনায় সচেতনতামূলক সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (০৮ আগস্ট) দুপুরে পাবনা সরকারি এডওয়ার্ড কলেজ বৈষম বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আয়োজনে এই সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
এ সময় দেশের সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা ও সন্ত্রাসী কার্যকলাপের বিরুদ্ধে সচেতনতামূলক বক্তব্য দেন এবং সবাইকে ঐক্যবদ্ধ ভাবে কাজ করার আহ্বান ও জানান। যাতে কোন অপশক্তি আবারও দেশটাকে অস্থিতিশীল তৈরি করতে না পারে তারও আহ্বান জানান।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন, এডওয়ার্ড কলেজের উপাধ্যক্ষ আব্দুল আউয়াল, বাংলা বিভাগের শিক্ষক মাহবুব, এডওয়ার্ড কলেজের বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক বরকাতুল্লাহ ফাহাদ,স্টুডেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের আহ্বায়ক সিরাজুল মনিরা,রাব্বি রুহান ও এম এইচ অনিক।
এএম/
অপরাধ
এনায়েতপুর থানায় হামলা, ১৩ পুলিশ সদস্য নিহত
সিরাগঞ্জের এনায়েতপুরে থানায় হামলা চালিয়ে ১৩ পুলিশ সদস্যকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে।
রোববার (৪ আগস্ট) পুলিশ সদর দপ্তর এবং রাজশাহী বিভাগের অতিরিক্ত ডিআইজি বিজয় বসাক গণমাধ্যমে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
পুলিশ সদর দপ্তর থেকে পাঠানো বার্তায় বলা হয়, সন্ত্রাসী হামলায় সিরাজগঞ্জের এনায়েতপুর থানার ১৩ জন পুলিশ সদস্য নিহত হয়েছেন। এছাড়া কুমিল্লার ইলিয়টগঞ্জ হাইওয়ে থানায় হামলায় এক পুলিশ সদস্য নিহত হয়েছেন।
এদিকে, সরকারের পদত্যাগের এক দফা দাবিতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ডাকা অসহযোগ কর্মসূচির প্রথম দিনে রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে ব্যাপক সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত সংঘর্ষে বিভিন্ন জেলায় ৫০ জনের মৃত্যু হয়েছে। আহত হয়েছেন সহস্রাধিক।
এর মধ্যে নরসিংদীতে ৬ জন, রংপুরে ৫ জন, ফেনীতে ৫ জন, ঢাকায় ৪ জন, সিরাজগঞ্জে ৪ জন, পাবনায় ৩ জন, বগুড়ায় ৩ জন, কিশোরগঞ্জে ৩ জন, ভোলায় ৩ জন, লক্ষ্মীপুরে ৩ জন, মুন্সীগঞ্জে ৩ জন, মাগুরায় ২ জন, সিলেটে ২ জন, ঢাকার আশুলিয়ায় একজন, বরিশালে একজন, জয়পুরহাটে একজন ও কুমিল্লায় একজন মারা গেছেন।
দেশজুড়ে
রাজশাহীতে থানা ও ভূমি অফিসে হামলা-অগ্নিসংযোগ
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের চলমান অসহযোগ কর্মসূচিতে রাজশাহী নগরীর মোহনপুর থানা, আওয়ামী লীগের অফিস, ভূমি অফিস ও একটি মার্কেটে আগুন দিয়েছে বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা।
তেমন কোনো অপ্রিতিকর ঘটনা না থাকলেও জেলার মোহনপুরে থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। আজ রোববার রোববার (৪ আগস্ট) দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে মোহনপুর উপজেলা সদরে এই ঘটনা ঘটে।
স্থানীয়রা জানান, বেলা সাড়ে ১১টার দিকে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ মিছিল বের করে মোহরপুর পুরো উপজেলা নিয়ন্ত্রণ নেন। এসময় বিক্ষুদ্ধ শিক্ষার্থীরা ব্যাপক ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগ চালায়। এতে ওই এলাকায় চরম আতঙ্ক দেখা যায়। পরে প্রায় দেড় ঘণ্টা পর পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
মোহনপুর থানায় হামলা করার পর পাশেই উপজেলা ভুমি অফিসে হামলা চালায়। এসময় সহকারী কমিশনারের (ভুমি) গাড়ি ভাংচুর করা হয়। এছাড়াও ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগ করা হয় থানার সামনের মার্কেটেও। বর্তমান পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে বলে জানিয়েছে থানা পুলিশ।
আই/এ
মন্তব্য করতে লগিন করুন লগিন