জাতীয়
সাইবার হামলার শঙ্কা, এনআইডি সার্ভার বন্ধ
সাইবার হামলার আশঙ্কায় সার্ভার বন্ধ রেখেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। একইসঙ্গে বন্ধ করে রাখা হয়েছে জাতীয় পরিচয়পত্রের তথ্যভান্ডার এবং জাতীয় পরিচয়পত্র সেবা সংক্রান্ত ওয়েবসাইটও।
সোমবার (১৪ আগস্ট) সন্ধ্যায় ইসির সার্ভারগুলো বন্ধ করে দেয়া হয়। ফলে মঙ্গলবার (১৫ আগস্ট) সার্ভার ও তথ্যভান্ডারে ইসির সাধারণ কর্মকর্তারা ঢুকতে পারেননি। শুধু কারিগরি কমিটির সদস্যরা মনিটরিং করতে যেসব এক্সেস দরকার সেটি করতে পেরেছেন।
নির্বাচন কমিশনের অতিরিক্ত সচিব অশোক কুমার দেবনাথ বলেন, বুধবার (১৬ আগস্ট) বিকেল ৫টা পর্যন্ত বন্ধ থাকবে সার্ভার। এনআইডি সার্ভার বন্ধ থাকায় অনেক ব্যাংক ও সেবা প্রতিষ্ঠানেও বন্ধ রয়েছে সংশ্লিষ্ট সেবা প্রদান।
এদিকে ভারতীয় হ্যাকারদের সাইবার আক্রমণে দেশে ২৫টি সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের ওয়েবসাইট থেকে তথ্য ফাঁস হয়েছে। এতে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত প্রতিষ্ঠান গুলোর মধ্যে রয়েছে ইনভেস্টমেন্ট করপোরেশন অব বাংলাদেশ, আইসিবি এবং ডিরেক্টরেট জেনারেল অব হেলথ সার্ভিসেস, ডিজিএইচএস। সে হামলা থেকে বাঁচতে বন্ধ করে দেয়া হয়েছে জাতীয় পরিচয় পত্র (এনআইডি) সার্ভার।
সাইবার হামলায় প্রায় ১০ হাজার বিনিয়োগকারী এবং বিনিয়োগ আবেদনকারীদের তথ্য থাকায় ইনভেস্টমেন্ট করপোরেশন অব বাংলাদেশ, আইসিবি’র ওয়েবসাইট হ্যাকিং উল্লেখযোগ্যভাবে বড়। এতে সরকারি মিউচ্যুয়াল ফান্ডে বিনিয়োগকারীদের নাম, ঠিকানা ও ব্যাংক অ্যাকাউন্ট রয়েছে। আর ডিজিএইচএস এর ফাঁস হওয়া তথ্যে সরকারি হাসপাতাল থেকে রাজস্ব সংগ্রহের পরিসংখ্যান অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। ভারতীয় হ্যাকারদের দাবি, বাংলাদেশ ব্যাংকের ৪০ হাজার রেকর্ডের ডেটা দখল করেছে তারা। হ্যাকাররা, ভূমি মন্ত্রণালয়ের ভূমি কর পোর্টাল থেকেও কিছু তথ্য ফাঁস করে।
উল্লেখ্য, ১৫ আগস্টকে কেন্দ্র করে বাংলাদেশে বড় ধরনের হামলা চালানোর হুমকি দিয়েছিল একটি হ্যাকারগোষ্ঠী। সরকার থেকে জানানো হয়েছিল সাইবার হামলা রোধে সবধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।
নিজেদেরকে ভারতের একটি হ্যাকারগোষ্ঠী দাবি করে হুমকিতে বাংলাদেশের পাশাপাশি পাকিস্তানেও সাইবার আক্রমণের ঘোষণা দেয়া হয়। গেলো ৩১ জুলাই আক্রমণের হুমকি দিয়ে এতে পাকিস্তান ও বাংলাদেশের সাইবার জগতে ঝড়ের গতিতে আক্রমণ করে সাইবার জগত ধ্বংসের হুমকি দেয়া হয়।
এমতাবস্থায় গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পরিকাঠামো (সিআইআই) সহ দেশের সব ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান, স্বাস্থ্যখাত, বিদ্যুৎ ও জ্বালানিসহ সব সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানকে সতর্ক হওয়ার পরামর্শ দেয়া হয়।
গত শুক্রবার (৪ আগস্ট) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের (আইসিটি) বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিলের (বিসিসি) আওতাধীন সরকারের কম্পিউটার ইন্সিডেন্ট রেসপন্স টিম (বিজিডি ই-গভ সার্ট) এই তথ্য জানায়।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ধর্মীয় ও ভিন্ন মতাদর্শে উদ্বুদ্ধ একটি হ্যাকারগোষ্ঠী বিগত ৩১ জুলাই আগামী ১৫ আগস্ট বাংলাদেশের সাইবার জগতে বড় ধরনের হামলার হুমকি দিয়েছে। এর প্রেক্ষিতে সিআইআইসহ ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান, স্বাস্থ্যসেবা বিষয়ক প্রতিষ্ঠানসহ সব সরকারি ও বেসরকারি সংস্থার প্রতি সতর্কতা জারি করা হচ্ছে। এছাড়াও আগামী ১৫ আগস্ট ও এর মধ্যবর্তী সময়ে সব প্রতিষ্ঠানকে ছোট থেকে মাঝারি সাইবার হামলার জন্য প্রস্তুত থাকার পরামর্শ দেয়া হয়েছে।
বিজিডি সার্ট এই হ্যাকারগোষ্ঠীর সঙ্গে সাদৃশ্য আছে এমন বেশ কয়েকটি হ্যাকারগ্রুপের পক্ষ থেকে সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশে পরিচালিত অন্তত ৬টি সাইবার হামলা শনাক্ত করেছে । গেলো ২০ জুন থেকে ১ আগস্ট সময়ের মধ্যে এই সাইবার হামলাগুলো করা হয়।
সার্ট, এসব হামলার বিষয়ে সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নেয়ার বিষয়ে কিছু পরামর্শ দিয়েছে। বিশেষ করে অফিস সময়সূচির পরে, কোনো সার্ভারে যেন বাড়তি চাপ না থাকে, ওয়েব অ্যাপ্লিকেশন ফায়ারওয়াল স্থাপনের মাধ্যমে সিস্টেমে আসা প্রতিটি ট্র্যাফিককে মনিটর করা এবং সর্বোপরি পুরো সিস্টেমকে যথাসম্ভব নিরাপদ রাখা।
জাতীয়
শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা জানালেন অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টারা
শপথ নেয়ার পরের দিন ভাষা শহীদদের স্মরণে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা নিবেদন করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টারা।
শুক্রবার (৯ আগস্ট) বেলা ১১টার দিকে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ১৩ জন উপদেষ্টা নিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।
এর আগে, সাভারে জাতীয় স্মৃতিসৌধে মহান মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান ও অন্য উপদেষ্টারা।
গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান হিসেবে শপথ নেন ড. মুহাম্মদ ইউনূস। দায়িত্ব নেওয়ার পর তিনি এক নতুন বাংলাদেশ উপহার দেওয়ার অঙ্গীকার করেন।
আই/এ
জাতীয়
উপদেষ্টা পরিষদকে অভিনন্দন জানালেন জাসদ
জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল—জাসদের সভাপতি হাসানুল হক ইনু ও সাধারণ সম্পাদক শিরীন আখতার অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মোহাম্মদ ইউনুস এবং অন্য উপদেষ্টাদেরকে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়েছেন
বৃহস্পতিবার ( ৮ আগস্ট ) রাতে দলের পক্ষ থেকে পাঠানো এক বিবৃতিতে এ অভিনন্দন জানান তারা।
বিবৃতিতে জানানো হয়, “অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দায়িত্ব গ্রহণ করার পর দেশে আর একটিও প্রাণহানি, হামলা ও সম্পদ ধ্বংসের ঘটনা যেন না ঘটে তা নিশ্চিত হবে।”
বিবৃতিতে আরও বলেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার রাষ্ট্রীয় চার মূলনীতিসহ সংবিধানকে সমুন্নত রেখে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন এবং রাজনৈতিক ও সামাজিক শক্তির সাথে আলোচনা করে সরকারের কর্ম পরিকল্পনার রূপরেখা দ্রুত প্রকাশ করে বিদ্যমান অনিশ্চয়তা ও অস্থিরতা প্রশমিত করবেন।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রাথমিক ও প্রধান কাজ হিসেবে অনতিবিলম্বে দেশে আইনশৃঙ্খলা পুনঃপ্রতিষ্ঠা করার এবং জনগণের জানমালের নিরাপত্তা নিশ্চিত করে জনজীবনে স্বাভাবিকতা ও শান্তি ফিরিয়ে আনতে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানিয়েছেন।
জাসদ নেতৃবৃন্দ অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নিহত শিক্ষার্থী, সাধারণ মানুষ, সাংবাদিক পুলিশ বাহিনীর সদস্যসহ প্রতিটি হত্যাকাণ্ডের সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার নিশ্চিত করার আহ্বান জানান।
জাসদ জোর দাবি জানান, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে পূর্ববর্তী সরকারের পদত্যাগের পর দেশের বিভিন্ন স্থানে চলমান বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও পুলিশ বাহিনীর সদস্যসহ পেশাজীবী ও হিন্দু ও আহমদীয়াসহ ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের ওপর হামলা ও হত্যা করা, মন্দিরসহ ধর্মীয় স্থাপনায় হামলা, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের কার্যালয়ে ও নেতাকর্মীদের বাসাবাড়িতে হামলা-হত্যা-নির্যাতন, ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান ও ঘরবাড়িতে হামলা ও অগ্নিসংযোগ, সংসদ ভবন ও প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় ও গণভবনসহ বিভিন্ন সরকারি স্থাপনায় হামলা, ভাঙচুর, লুটপাট, অগ্নিসংযোগ, ধানমন্ডি ৩২ নম্বরের ঐতিহাসিক বঙ্গবন্ধু ভবন-বঙ্গবন্ধু জাদুঘরে হামলা, লুটপাট, জ্বালিয়ে ছারখার, দেশের বিভিন্ন স্থানে বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য, সাত বীরশ্রেষ্ঠর ভাস্কর্যসহ ভাষা আন্দোলন, স্বাধীনতা সংগ্রাম ও মুক্তিযুদ্ধের স্মারক ভাস্কর্য ও ম্যুরাল ভেঙে ফেলা এবং কুমিল্লার বীরচন্দ্র পাঠাগার, সুনামগঞ্জের ঐতিহ্য জাদুঘর, কুড়িগ্রামের উত্তরবঙ্গে মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর, ময়মনসিংহের ঐতিহাসিক শশীলজের ভেনাস ভাস্কর্য ভেঙে ফেলাসহ অগনিত শিল্পকর্ম ভেঙে ফেলার সব অপরাধ কাণ্ডের সঙ্গে যুক্ত দায়ী ব্যক্তিদের দ্রুত আইনের আওতায় আনার।
জেডএস/
জাতীয়
তদবির থেকে বিরত থাকুন, দেশগঠনে পরামর্শ দিন : আসিফ মাহমুদ
নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে গঠিত হয়েছে ১৭ সদস্যের অন্তবর্তীকালীন সরকার। এ উপদেষ্টা পরিষদে স্থান পেয়েছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের দুইজন প্রতিনিধি। এদের একজন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আসিফ মাহমুদ। তিনি উপদেষ্টা হিসেবে শপথ নেয়ার পর ঘনিষ্ঠজনদের নিজেদের সুবিধার জন্য কোনো আবদার কিংবা তদবির করতে বারণ করেছেন। বরং দেশগঠনে কোনো পরামর্শ থাকলে দেয়ার অনুরোধ করেছেন।
বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) দিবাগত রাতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এক পোস্ট করে এ অনুরোধ করেন।
পোস্টে এই তরুণ উপদেষ্টা লিখেছেন, ব্যক্তিগত লাভের আশায় আবদার, তদবির করা থেকে বিরত থাকুন। এতে করে আমার সাথে আপনার সম্পর্ক নষ্ট হতে পারে। দেশগঠনে পরামর্শ থাকলে জানাবেন।
বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) রাতে নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে ১৭ জনকে নিয়ে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন করা হয়। প্রধান উপদেষ্টা ও অন্য উপদেষ্টাদের শপথ পাঠ করান রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। ঢাকার বাইরে থাকায় তিন উপদেষ্টা ফারুক-ই-আযম, বিধান রঞ্জন রায় এবং সুপ্রদীপ চাকমা শপথ অনুষ্ঠানে উপস্থিত হতে পারেননি।
সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ছাড়া অন্যান্য উপদেষ্টারা হলেন- ১. সালেহ উদ্দিন আহমেদ ২. ড. আসিফ নজরুল ৩. আদিলুর রহমান খান ৪. হাসান আরিফ ৫. তৌহিদ হোসেন ৬. সৈয়দা রেজওয়ানা হাসান ৭. মো. নাহিদ ইসলাম ৮. আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া ৯. ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এম সাখাওয়াত হোসেন ১০. সুপ্রদীপ চাকমা ১১. ফরিদা আখতার ১২. বিধান রঞ্জন রায় ১৩. আ.ফ.ম খালিদ হাসান ১৪. নুরজাহান বেগম ১৫. শারমিন মুরশিদ ১৬. ফারুক-ই-আযম।
জেএইচ
মন্তব্য করতে লগিন করুন লগিন