বাংলাদেশ
ডিসির নম্বর ক্লোন করে ডিসিকেই টাকার জন্য কল দিলেন প্রতারক
পঞ্চগড় জেলা প্রশাসকের (ডিসি) দাপ্তরিক মুঠোফোন নম্বর ক্লোন করে ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান ও জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের কর্মচারীদের কাছে চাঁদা দাবির অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছেন জেলা প্রশাসক মো. জহুরুল ইসলাম।
গতকাল মঙ্গলবার রাতে মুঠোফোন নম্বর ক্লোন হওয়ার বিষয়টি প্রথম আলোকে জানান জেলা প্রশাসক। এর আগে বিকেল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত এভাবে বিভিন্নজনকে ফোন দিয়ে চাঁদা দাবি করেন প্রতারকেরা। ইতিমধ্যে জেলা প্রশাসনের এক কর্মচারী ১০ হাজার টাকা নগদ অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে পাঠিয়েছেন বলে জানা গেছে। এ বিষয়ে সবাইকে সচেতন হওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে।
জেলার বোদা উপজেলার বড়শশী ইউপির চেয়ারম্যান আফজাল হোসেন বলেন, ‘মঙ্গলবার বিকেলে প্রথমে আমার মুঠোফোনে বোদা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) মুঠোফোন নম্বর থেকে একটি কল আসে। এ সময় আমাকে বলা হয়, আপনার ইউনিয়নের দুটি উন্নয়নকাজের বিষয়ে ডিসি স্যার একটু পরে আপনাকে ফোন দেবেন।
কিছুক্ষণ পরেই জেলা প্রশাসকের ফোন নম্বর থেকে কল আসে। এ সময় অপর প্রান্ত থেকে বলেন, “আমি পঞ্চগড়ের ডিসি বলছি, আপনার এলাকার দুটি উন্নয়নকাজের বিষয়ে ইঞ্জিনিয়ারদের সঙ্গে বসতে হবে এতে কিছু টাকাপয়সা খরচ হবে। আপনি কোথায় বসতে চান?” আমি বলেছি, আপনার অফিসেই বসব। তখনই এগুলো ইউএনও এবং ডিসি সাহেবের কণ্ঠ নয় বলে আমার সন্দেহ হয়। পরে আমি সরাসরি ডিসি মহোদয়কে ফোন দিলে তিনি এ বিষয়ে আমাকে ফোন করেননি বলে জানান।’
জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের এসএ শাখার নাজির আজাহার আলী বলেন, ‘সন্ধ্যা ৫টা ৫৬ মিনিটে আমাকে ডিসি স্যারের সেভ করা নম্বর থেকে ফোন দিয়ে বলেন, “আপনাকে একটা নম্বর দিচ্ছি, এই নম্বরে ১০ হাজার টাকা নগদ অ্যাকাউন্টে পাঠান।” এ সময় আমি বলি, স্যার আমি তো এসএ শাখার নাজির। আপনি মনে হয় নেজারত শাখার নাজিরকে ফোন করেছেন।
তখন অপর প্রাপ্ত থেকে বলছেন, ও নাই তো, আপনি টাকাটা পাঠিয়ে অফিসে এসে টাকা নিয়ে যান। পরে টাকা পাঠিয়ে আমি অফিসে গিয়ে দেখি এসব বিষয় নিয়েই অফিসে সবার মধ্যে আলোচনা চলছে। টাকা পাঠানোর পর আর ওই নম্বরে যোগাযোগ করতে পারছি না।
জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের নেজারত শাখার নাজির জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘বিকেলে ডিসি স্যারের সেভ করা ফোন নম্বর থেকে আমাকে কল দিয়ে টাকা চাচ্ছিলেন। এ সময় নেটওয়ার্কের সমস্যার কারণে কথাগুলো ভালোভাবে শুনতে পাচ্ছিলাম না। পরে আমি নিজেই ডিসি স্যারকে ফোন দিয়ে জানতে পারি তিনি ফোন করেননি। পরে নিশ্চিত হই এটা হ্যাকারের কাজ।
পঞ্চগড়ের জেলা প্রশাসক মো. জহুরুল ইসলাম বলেন, মঙ্গলবার বিকেল থেকেই আমার নম্বর ক্লোন করে আমারই কার্যালয়ের কয়েকজনকে ফোন দিয়ে টাকা দাবি করেছে একটি চক্র। এ ছাড়া একজন ইউপি চেয়ারম্যানকেও ফোন করে টাকা চেয়েছে। সবচেয়ে অবাক করার বিষয় হলো আমারই নম্বর থেকে আমার ফোনে কল এসেছে। ওই নম্বরের সামনে +৮৮৬ লেখা উঠেছে। আমাকে দেওয়া কলটি আমার একজন কর্মকর্তা রিসিভ করেছিলেন।
এ সময় অপর প্রান্ত থেকে এক ব্যক্তি বলছিলেন, আমি আপনার নম্বরটি ক্লোন করেছি। এ সময় তাঁকে কেন ক্লোন করেছেন প্রশ্ন করা হলে জবাবে তিনি বলেন, এটা তো অনেক কষ্টের কথা, এটা তো আপনি বুঝবেন না।
জেলা প্রশাসক জানান, বিষয়টি খতিয়ে দেখতে পুলিশকে জানানো হয়েছে। এ ছাড়া সাইবার বিভাগে চিঠি দেওয়াসহ পঞ্চগড় সদর থানায় একটি জিডি করা হয়েছে।
এসআই/
জাতীয়
শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা জানালেন অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টারা
শপথ নেয়ার পরের দিন ভাষা শহীদদের স্মরণে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা নিবেদন করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টারা।
শুক্রবার (৯ আগস্ট) বেলা ১১টার দিকে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ১৩ জন উপদেষ্টা নিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।
এর আগে, সাভারে জাতীয় স্মৃতিসৌধে মহান মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান ও অন্য উপদেষ্টারা।
গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান হিসেবে শপথ নেন ড. মুহাম্মদ ইউনূস। দায়িত্ব নেওয়ার পর তিনি এক নতুন বাংলাদেশ উপহার দেওয়ার অঙ্গীকার করেন।
আই/এ
জাতীয়
উপদেষ্টা পরিষদকে অভিনন্দন জানালেন জাসদ
জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল—জাসদের সভাপতি হাসানুল হক ইনু ও সাধারণ সম্পাদক শিরীন আখতার অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মোহাম্মদ ইউনুস এবং অন্য উপদেষ্টাদেরকে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়েছেন
বৃহস্পতিবার ( ৮ আগস্ট ) রাতে দলের পক্ষ থেকে পাঠানো এক বিবৃতিতে এ অভিনন্দন জানান তারা।
বিবৃতিতে জানানো হয়, “অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দায়িত্ব গ্রহণ করার পর দেশে আর একটিও প্রাণহানি, হামলা ও সম্পদ ধ্বংসের ঘটনা যেন না ঘটে তা নিশ্চিত হবে।”
বিবৃতিতে আরও বলেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার রাষ্ট্রীয় চার মূলনীতিসহ সংবিধানকে সমুন্নত রেখে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন এবং রাজনৈতিক ও সামাজিক শক্তির সাথে আলোচনা করে সরকারের কর্ম পরিকল্পনার রূপরেখা দ্রুত প্রকাশ করে বিদ্যমান অনিশ্চয়তা ও অস্থিরতা প্রশমিত করবেন।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রাথমিক ও প্রধান কাজ হিসেবে অনতিবিলম্বে দেশে আইনশৃঙ্খলা পুনঃপ্রতিষ্ঠা করার এবং জনগণের জানমালের নিরাপত্তা নিশ্চিত করে জনজীবনে স্বাভাবিকতা ও শান্তি ফিরিয়ে আনতে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানিয়েছেন।
জাসদ নেতৃবৃন্দ অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নিহত শিক্ষার্থী, সাধারণ মানুষ, সাংবাদিক পুলিশ বাহিনীর সদস্যসহ প্রতিটি হত্যাকাণ্ডের সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার নিশ্চিত করার আহ্বান জানান।
জাসদ জোর দাবি জানান, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে পূর্ববর্তী সরকারের পদত্যাগের পর দেশের বিভিন্ন স্থানে চলমান বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও পুলিশ বাহিনীর সদস্যসহ পেশাজীবী ও হিন্দু ও আহমদীয়াসহ ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের ওপর হামলা ও হত্যা করা, মন্দিরসহ ধর্মীয় স্থাপনায় হামলা, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের কার্যালয়ে ও নেতাকর্মীদের বাসাবাড়িতে হামলা-হত্যা-নির্যাতন, ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান ও ঘরবাড়িতে হামলা ও অগ্নিসংযোগ, সংসদ ভবন ও প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় ও গণভবনসহ বিভিন্ন সরকারি স্থাপনায় হামলা, ভাঙচুর, লুটপাট, অগ্নিসংযোগ, ধানমন্ডি ৩২ নম্বরের ঐতিহাসিক বঙ্গবন্ধু ভবন-বঙ্গবন্ধু জাদুঘরে হামলা, লুটপাট, জ্বালিয়ে ছারখার, দেশের বিভিন্ন স্থানে বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য, সাত বীরশ্রেষ্ঠর ভাস্কর্যসহ ভাষা আন্দোলন, স্বাধীনতা সংগ্রাম ও মুক্তিযুদ্ধের স্মারক ভাস্কর্য ও ম্যুরাল ভেঙে ফেলা এবং কুমিল্লার বীরচন্দ্র পাঠাগার, সুনামগঞ্জের ঐতিহ্য জাদুঘর, কুড়িগ্রামের উত্তরবঙ্গে মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর, ময়মনসিংহের ঐতিহাসিক শশীলজের ভেনাস ভাস্কর্য ভেঙে ফেলাসহ অগনিত শিল্পকর্ম ভেঙে ফেলার সব অপরাধ কাণ্ডের সঙ্গে যুক্ত দায়ী ব্যক্তিদের দ্রুত আইনের আওতায় আনার।
জেডএস/
জাতীয়
তদবির থেকে বিরত থাকুন, দেশগঠনে পরামর্শ দিন : আসিফ মাহমুদ
নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে গঠিত হয়েছে ১৭ সদস্যের অন্তবর্তীকালীন সরকার। এ উপদেষ্টা পরিষদে স্থান পেয়েছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের দুইজন প্রতিনিধি। এদের একজন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আসিফ মাহমুদ। তিনি উপদেষ্টা হিসেবে শপথ নেয়ার পর ঘনিষ্ঠজনদের নিজেদের সুবিধার জন্য কোনো আবদার কিংবা তদবির করতে বারণ করেছেন। বরং দেশগঠনে কোনো পরামর্শ থাকলে দেয়ার অনুরোধ করেছেন।
বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) দিবাগত রাতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এক পোস্ট করে এ অনুরোধ করেন।
পোস্টে এই তরুণ উপদেষ্টা লিখেছেন, ব্যক্তিগত লাভের আশায় আবদার, তদবির করা থেকে বিরত থাকুন। এতে করে আমার সাথে আপনার সম্পর্ক নষ্ট হতে পারে। দেশগঠনে পরামর্শ থাকলে জানাবেন।
বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) রাতে নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে ১৭ জনকে নিয়ে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন করা হয়। প্রধান উপদেষ্টা ও অন্য উপদেষ্টাদের শপথ পাঠ করান রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। ঢাকার বাইরে থাকায় তিন উপদেষ্টা ফারুক-ই-আযম, বিধান রঞ্জন রায় এবং সুপ্রদীপ চাকমা শপথ অনুষ্ঠানে উপস্থিত হতে পারেননি।
সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ছাড়া অন্যান্য উপদেষ্টারা হলেন- ১. সালেহ উদ্দিন আহমেদ ২. ড. আসিফ নজরুল ৩. আদিলুর রহমান খান ৪. হাসান আরিফ ৫. তৌহিদ হোসেন ৬. সৈয়দা রেজওয়ানা হাসান ৭. মো. নাহিদ ইসলাম ৮. আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া ৯. ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এম সাখাওয়াত হোসেন ১০. সুপ্রদীপ চাকমা ১১. ফরিদা আখতার ১২. বিধান রঞ্জন রায় ১৩. আ.ফ.ম খালিদ হাসান ১৪. নুরজাহান বেগম ১৫. শারমিন মুরশিদ ১৬. ফারুক-ই-আযম।
জেএইচ