ফুটবল
মেসির হাত ধরে প্রথম শিরোপা মায়ামির
রুদ্ধশ্বাস এক ফাইনালের সাক্ষী হলো ফুটবল বিশ্ব। কাতার বিশ্বকাপের ফাইনালে ফ্রান্সের বিপক্ষে আর্জেন্টিনা যেমন রুদ্ধশ্বাস খেলা উপহার দিয়েছিল, তেমনই এক ফাইনাল যেন আবারও দেখা গেল। আর এবারও লাইমলাইটে লিওনেল মেসি। তবে আর্জেন্টিনা নয়, নতুন ক্লাব ইন্টার মায়ামির জার্সিতে।
রোববার (২০ আগস্ট) সকাল ৭টায় লিগস কাপের ফাইনালে মুখোমুখি হয় ইন্টার মায়ামি ও নাশভিল। ম্যাচটি নির্ধারিত সময়ে ১-১ গোলে ড্র হয়। এরপরে খেলা গড়ায় টাইব্রেকারে। সেখানেও প্রথমবার ৪-৪ গোলে সমতা আসে। তাতে আবারও দেয়া হয় টাইব্রেকার। এবার ৫-৫ সমতা। তবে শেষ পর্যন্ত পরের টাইব্রেকারে একটি শট ঠেকিয়ে লিগস কাপের শিরোপা নিশ্চিত করেন ইন্টার মায়ামির গোলরক্ষক ড্রেক ক্যালেন্ডার।
এরই মধ্য দিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে প্রথম শিরোপার স্বাদ পেয়ে যান মেসি। তিনি এই শিরোপা অর্জনের পেছনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন। লিগস কাপের ফাইনালে গোল করার মধ্য দিয়ে টানা ৭ ম্যাচে গোল করার রেকর্ড গড়েছেন আর্জেন্টাইন সেনসেশন। এমন কীর্তি টুর্নামেন্টের ইতিহাসে এই প্রথম। আর দলের শিরোপা অর্জনও হলো প্রথমবার।
ফাইনাল ম্যাচে মেসির গোলেই টিকে থাকার রশদ পেয়ে যায় মায়ামি। এটি মায়ামির জার্সিতে মেসির ১০ম গোল। তবে ফাইনাল ম্যাচটি জয়ের জন্য তাকে রুদ্ধশ্বাস যাত্রার মধ্য দিয়ে যেতে হয়েছে। খেলার ৫৭ মিনিটে যখন ১-১ গোলের সমতা আসে, তখন থেকেই দুদল ম্যাচ বের করার চেষ্টা চালিয়ে গেছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত গোলের দেখা মেলেনি।
যদিও একাধিক গোলের সুযোগ মিস করেছে দুদলই। খেলার ৭১ মিনিটে মেসির বুলেট গতির শট গোলপোস্টে লেগে ফিরে আসে। কিছুক্ষণ পরে নাশভিলের হ্যানি মুখতারও মিস করেন গোলের সুযোগ। তবে সবকিছু ছাপিয়ে আলোচনায় উঠে আসে মায়ামির ফরোয়ার্ড লিওনার্দো ক্যাম্পানার নাম। শেষদিকে তিনি যে সুযোগ নষ্ট করেছেন তাতে আফসোস করতে হয়েছে ভক্তদের। খেলার শেষ মিনিটে গোলরক্ষককে কাটিয়ে ফাঁকা গোল পেয়েও তিনি গোল করতে ব্যর্থ হন। ফলে ১-১ গোলেই শেষ হয় নির্ধারিত সময়।
তাতে খেলা ৯০ মিনিট পরে সরাসরি টাইব্রেকারে গড়ায়। মায়ামির পক্ষে প্রথম শটটি নেন লিওনেল মেসি। সফল কিকে দলকে এগিয়ে নেন। তবে নাশভিলের দ্বিতীয় টাইব্রেকার শট থেকে গোল করতে ব্যর্থ হন র্যান্ডাল লিল। অপরদিকে মায়ামির ভিক্টর উলো ব্যর্থ শট নেন। তাতে ৫টি টাইব্রেকার শেষে ৪-৪ সমতা আসে।
শুরু হয় আবারও ট্রাইব্রেকার শট। এবার ৫-৫ সমতা টানে দুদল। শেষ পর্যন্ত মায়ামি গোলরক্ষক ড্রেক ক্যালেন্ডার ও নাশভিলের গোলরক্ষক এলিয়ট প্যানিকো শট নিতে আসেন। ক্যালেন্ডার সফল হলেও প্যানিকো ভুল করে বসেন। তার শট ঠেকিয়ে মেসির হাতে শিরোপা তুলে দেয়ার দায়িত্ব নেন ক্যালেন্ডার। তাতে কাতার বিশ্বকাপের এমিলিয়ানো মার্টিনেজের দায়িত্বই তিনি যেন পালন করলেন।
এ দিকে পিএসজি অধ্যায় শেষ করে মায়ামিতে এসেই যেন কাতার বিশ্বকাপের ফর্ম ফিরিয়ে আনলেন মেসি। একের পর এক গোল করে আর্জেন্টিনার মতো মায়ামিকেও অধরা শিরোপা এনে দিলেন। তাতে নায়কের আসনে জায়গা করে নিলেন ৩৬ বছর বয়সী এই ফুটবল জাদুকর।
ফুটবল
ফুটবলকে বিদায় জানালেন পেপে
সব ধরনের ফুটবল থেকে বিদায় নিলেন পর্তুগালের ডিফেন্ডার পেপে। বৃহস্পতিবার এই সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছেন তিনি।
সর্বশেষ ইউরোর কোয়ার্টার ফাইনালে ফ্রান্সের বিপক্ষে পর্তুগালের ম্যাচটাই হয়ে রইল ৪১ বছর বয়সী এই ফুটবলারের ক্যারিয়ারের শেষ ম্যাচ।
সে ম্যাচে টাইব্রেকারে হেরে বিদায় নিয়েছিল পর্তুগাল। ইউরোর মূলপর্বে সবচেয়ে বয়স্ক খেলোয়াড় হিসেবে মাঠে নামার রেকর্ডও গড়েন তিনি।
পর্তুগালের হয়ে ১৪১ ম্যাচ খেলেছেন পেপে। জিতেছেন ২০১৬ ইউরো।
ফুটবল
বাফুফে থেকে পদত্যাগ করলেন সালাম মুর্শেদী
পদত্যাগ করেছেন বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের (বাফুফে) সিনিয়র সহসভাপতি আবদুস সালাম মুর্শেদী। তিনি ২০০৮ সাল থেকে পদটিতে দায়িত্ব পালন করে আসছেন।
এছাড়াও সালাম মুর্শেদী বাফুফের অর্থ কমিটি ও রেফারিজ কমিটির প্রধানও ছিলেন। এই দুটি পদ থেকেও তিনি পদত্যাগ করেছেন।
বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) রাতে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তি দিয়ে সালাম মুর্শেদীর পদত্যাগের কথা জানায় বাফুফে। সালাম মুর্শেদী খুলনা–৪ আসন থেকে আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য ছিলেন।
ফুটবল
চলে গেলেন স্বাধীন বাংলা ফুটবল দলের সংগঠক সাইদুর রহমান প্যাটেল
স্বাধীন বাংলা ফুটবল দলের অন্যতম সংগঠক ও উদ্যেক্তা সাইদুর রহমান প্যাটেল মারা গেছেন। বেশ কিছুদিন ধরেই তিনি ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ছিলেন। হাসপাতালে থাকাকালীন সেসব ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রকাশ করতেন তিনি। অবশেষে ৭৩ বছর বয়সে পৃথিবীর মায়া ত্যাগ করে চলে গেলেন স্বাধীন বাংলা ফুটবল দলের এই গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি।
বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) যুক্তরাষ্ট্রের লস অ্যাঞ্জেলসের একটি হাসপাতালে মৃত্যুবরণ করেন সাইদুর রহমান। তার মৃত্যুতে বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন (বাফুফে) শোক জানিয়েছে।
বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে সাইদুর রহমানের অবদান ছিল অনস্বীকার্য। স্বাধীন বাংলা ফুটবল দল গঠনে তিনি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন সময়ে বিভিন্ন স্থানে তহবিল তুলতেন সাইদুর রহমানরা। তারা ভারতে ঘুরে ঘুরে স্বাধীন বাংলা ফুটবল দলের হয়ে প্রীতি ম্যাচ খেলতেন। সেখান থেকেও তহবিল সংগ্রহ করতো এই দলটি।
একজন ফুটবল খেলোয়াড় হিসেবে মুক্তিযুদ্ধে ভূমিকা রাখার লক্ষ্য নিয়েই স্বাধীন বাংলা ফুটবল দল গঠন করার উদ্যেগ নিয়েছিলেন সাইদুর রহমান প্যাটেলরা। এখানে খেলে যে অর্থ উত্তোলন হবে, তা মুক্তিযুদ্ধের জন্য গঠিত তহবিলে প্রদান করা হবে; এমনই ছিল স্বাধীন বাংলা ফুটবল দলের সেসময়ের ভাবনা।
স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করার ইচ্ছা ছিল সাইদুর রহমানের। সবশেষ সাধারণ নির্বাচনের আগেই অবশ্য চিকিৎসার জন্য যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি জমাতে হয় তাকে। সেখানে লম্বা সময় ধরে চিকিৎসা নেওয়ার পর আর দেশে ফিরতে পারলেন না তিনি। যুক্তরাষ্ট্রের মাটিতেই নিজের জীবনের শেষ সময়টুকু কাটালেন।
সাইদুর রহমানের জন্ম ১৯৫১ সালের ৭ অক্টোবর। তিনি ঢাকার কেরানীগঞ্জের হাসনাবাদে জন্মগ্রহণ করেন। পরে অবশ্য গেন্ডারিয়ায় চলে যায় তার পরিবার। গেন্ডারিয়াতেই বেড়ে উঠেছেন, স্থানীয় পর্যায়ে ফুটবল খেলতে খেলতে শীর্ষ পর্যায়ের ফুটবলেও নিজের জায়গা করে নেন। তিনি ঢাকার ইস্টএন্ডের হয়ে ফুটবল খেলেছেন। দ্বিতীয় বিভাগে ফরাশগঞ্জের হয়ে, প্রথম বিভাগে পিডব্লুডি’র হয়ে খেলেছেন সাইদুর রহমান প্যাটেল।
এম এইচ//
মন্তব্য করতে লগিন করুন লগিন