বাংলাদেশ
মসজিদে একসঙ্গে প্রার্থনা করেছি: ইসরায়েল ধর্মযাজক
কার্পেটটি ছিল উষ্ণ– লোকেরা আমার দিকে একটু তাকিয়েছিল কারণ আমি দেখতে অন্যরকম, তবে তারা কিছুই বলেনি, মুচকি হেসেছিল। সেখানে আমার অভিজ্ঞতা ছিল খুবই সুন্দর। মসজিদে থাকার অভিজ্ঞতা জানালেন ধর্মযাজক ইসরায়েল এলবাউম।
গেলো বুধবার (২৬ জানুয়ারি) প্রচণ্ড তুষারঝড়ে ইস্তাম্বুলে আটকে পড়া এক ইজরায়েলি ধর্মযাজক (রাব্বাই) আশ্রয় নিতে বাধ্য হন পার্শ্ববর্তী একটি মসজিদে। সেখানে অবস্থানরত মুসলিম উপাসকরাও তাকে উষ্ণ অভ্যর্থনায় স্বাগত জানান। ইহুদি ধর্মযাজক ইসরায়েল এলবাউম নিজের সেই চমৎকার অভিজ্ঞতার কথা জানিয়েছেন তুরস্কের গণমাধ্যম আনাদোলু নিউজ এজেন্সিকে।
তিনি জানান, স্থানীয় সময় বিকেল ৩টা থেকে পরদিন দিবাগত রাত ২টা পর্যন্ত, প্রায় ১১ ঘণ্টা গাড়িতে বসে অপেক্ষা করছিলেন এলবাউম। ওই সময় কয়েকজন তুর্কি সেনা তাকে উদ্ধার করেন এবং বিমানবন্দরের কাছাকাছি আলি কুসকু মসজিদে নিয়ে যান। মসজিদে সকলে তাকে উষ্ণ স্বাগত জানান।
ধর্মযাযক বলেন, খুব ঠাণ্ডা ছিল তখন। মসজিদে থাকা অন্যান্যদের মতো তাকেও জুতা খুলে প্রবেশ করতে হয়েছিল। কার্পেটটি ছিল উষ্ণ– লোকেরা তার দিকে একটু তাকিয়েছিলেন কারণ তার অবয়ব ছিলো তাদের থেকে কিছুটা ভিন্ন। তবে তারা কিছুই বলেনি বরং মুচকি হেসেছিলেন। সেখানে তার অভিজ্ঞতা ছিল খুবই সুন্দর।
এলবাউম তার অভিজ্ঞতা থেকে জানান, অন্য লোকেদের দেখাদেখি তিনিও মসজিদে কিছুক্ষণ শুয়ে বিশ্রাম নিয়েছিলেন। সকালে যখন মুসলিমরা ফজরের নামাজে দাঁড়ালেন, তখন তিনিও নিজের প্রভাত প্রার্থনা সেরে নিয়েছিলেন।
এলবাউম গণমাধ্যম আনাদোলুকে আরও বলেন, আমরা একই সৃষ্টিকর্তার কাছে প্রার্থনা করছি; তাই তিনি মনে করেন এটি কোনো সমস্যা নয়। বরং চমৎকার এক অনুভূতি! আমরা একসঙ্গে আছি, একসঙ্গে প্রার্থনা করছি এবং একসঙ্গে হাসছি।
ইসরায়েল এলবাউম কোশার খাবার (ইহুদি ধর্মমত অনুযায়ী হালাল খাবার) নিয়ন্ত্রক। কোম্পানিগুলো মুসলিম হালাল খাবারের মানদণ্ডের মতো ইহুদি আইনগুলো মেনে চলছে কিনা তা পরীক্ষা করতেই তিনি এসেছিলেন ইস্তাম্বুলে। কাজ শেষে মঙ্গলবার চলে যাওয়ার কথা ছিল তার। পরিকল্পনা অনুযায়ী তিনি সেদিন ইস্তাম্বুল বিমানবন্দরের উদ্দেশ্যে যাত্রাও করলেও প্রচণ্ড তুষারঝড়ে রাস্তায় আটকে যায় তার গাড়ি। সেইসঙ্গে বৈরী আবহাওয়ার কারণে বিমানবন্দরটিও বন্ধ করে দেয়া হয়। এরপর তুর্কি সেনারা তাকে উদ্ধার করে বিমানবন্দরের কাছাকাছি আলি কুসকু মসজিদে নিয়ে যায়।
তাসনিয়া রহমান
জাতীয়
শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা জানালেন অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টারা
শপথ নেয়ার পরের দিন ভাষা শহীদদের স্মরণে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা নিবেদন করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টারা।
শুক্রবার (৯ আগস্ট) বেলা ১১টার দিকে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ১৩ জন উপদেষ্টা নিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।
এর আগে, সাভারে জাতীয় স্মৃতিসৌধে মহান মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান ও অন্য উপদেষ্টারা।
গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান হিসেবে শপথ নেন ড. মুহাম্মদ ইউনূস। দায়িত্ব নেওয়ার পর তিনি এক নতুন বাংলাদেশ উপহার দেওয়ার অঙ্গীকার করেন।
আই/এ
জাতীয়
উপদেষ্টা পরিষদকে অভিনন্দন জানালেন জাসদ
জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল—জাসদের সভাপতি হাসানুল হক ইনু ও সাধারণ সম্পাদক শিরীন আখতার অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মোহাম্মদ ইউনুস এবং অন্য উপদেষ্টাদেরকে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়েছেন
বৃহস্পতিবার ( ৮ আগস্ট ) রাতে দলের পক্ষ থেকে পাঠানো এক বিবৃতিতে এ অভিনন্দন জানান তারা।
বিবৃতিতে জানানো হয়, “অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দায়িত্ব গ্রহণ করার পর দেশে আর একটিও প্রাণহানি, হামলা ও সম্পদ ধ্বংসের ঘটনা যেন না ঘটে তা নিশ্চিত হবে।”
বিবৃতিতে আরও বলেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার রাষ্ট্রীয় চার মূলনীতিসহ সংবিধানকে সমুন্নত রেখে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন এবং রাজনৈতিক ও সামাজিক শক্তির সাথে আলোচনা করে সরকারের কর্ম পরিকল্পনার রূপরেখা দ্রুত প্রকাশ করে বিদ্যমান অনিশ্চয়তা ও অস্থিরতা প্রশমিত করবেন।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রাথমিক ও প্রধান কাজ হিসেবে অনতিবিলম্বে দেশে আইনশৃঙ্খলা পুনঃপ্রতিষ্ঠা করার এবং জনগণের জানমালের নিরাপত্তা নিশ্চিত করে জনজীবনে স্বাভাবিকতা ও শান্তি ফিরিয়ে আনতে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানিয়েছেন।
জাসদ নেতৃবৃন্দ অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নিহত শিক্ষার্থী, সাধারণ মানুষ, সাংবাদিক পুলিশ বাহিনীর সদস্যসহ প্রতিটি হত্যাকাণ্ডের সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার নিশ্চিত করার আহ্বান জানান।
জাসদ জোর দাবি জানান, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে পূর্ববর্তী সরকারের পদত্যাগের পর দেশের বিভিন্ন স্থানে চলমান বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও পুলিশ বাহিনীর সদস্যসহ পেশাজীবী ও হিন্দু ও আহমদীয়াসহ ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের ওপর হামলা ও হত্যা করা, মন্দিরসহ ধর্মীয় স্থাপনায় হামলা, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের কার্যালয়ে ও নেতাকর্মীদের বাসাবাড়িতে হামলা-হত্যা-নির্যাতন, ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান ও ঘরবাড়িতে হামলা ও অগ্নিসংযোগ, সংসদ ভবন ও প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় ও গণভবনসহ বিভিন্ন সরকারি স্থাপনায় হামলা, ভাঙচুর, লুটপাট, অগ্নিসংযোগ, ধানমন্ডি ৩২ নম্বরের ঐতিহাসিক বঙ্গবন্ধু ভবন-বঙ্গবন্ধু জাদুঘরে হামলা, লুটপাট, জ্বালিয়ে ছারখার, দেশের বিভিন্ন স্থানে বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য, সাত বীরশ্রেষ্ঠর ভাস্কর্যসহ ভাষা আন্দোলন, স্বাধীনতা সংগ্রাম ও মুক্তিযুদ্ধের স্মারক ভাস্কর্য ও ম্যুরাল ভেঙে ফেলা এবং কুমিল্লার বীরচন্দ্র পাঠাগার, সুনামগঞ্জের ঐতিহ্য জাদুঘর, কুড়িগ্রামের উত্তরবঙ্গে মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর, ময়মনসিংহের ঐতিহাসিক শশীলজের ভেনাস ভাস্কর্য ভেঙে ফেলাসহ অগনিত শিল্পকর্ম ভেঙে ফেলার সব অপরাধ কাণ্ডের সঙ্গে যুক্ত দায়ী ব্যক্তিদের দ্রুত আইনের আওতায় আনার।
জেডএস/
জাতীয়
তদবির থেকে বিরত থাকুন, দেশগঠনে পরামর্শ দিন : আসিফ মাহমুদ
নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে গঠিত হয়েছে ১৭ সদস্যের অন্তবর্তীকালীন সরকার। এ উপদেষ্টা পরিষদে স্থান পেয়েছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের দুইজন প্রতিনিধি। এদের একজন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আসিফ মাহমুদ। তিনি উপদেষ্টা হিসেবে শপথ নেয়ার পর ঘনিষ্ঠজনদের নিজেদের সুবিধার জন্য কোনো আবদার কিংবা তদবির করতে বারণ করেছেন। বরং দেশগঠনে কোনো পরামর্শ থাকলে দেয়ার অনুরোধ করেছেন।
বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) দিবাগত রাতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এক পোস্ট করে এ অনুরোধ করেন।
পোস্টে এই তরুণ উপদেষ্টা লিখেছেন, ব্যক্তিগত লাভের আশায় আবদার, তদবির করা থেকে বিরত থাকুন। এতে করে আমার সাথে আপনার সম্পর্ক নষ্ট হতে পারে। দেশগঠনে পরামর্শ থাকলে জানাবেন।
বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) রাতে নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে ১৭ জনকে নিয়ে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন করা হয়। প্রধান উপদেষ্টা ও অন্য উপদেষ্টাদের শপথ পাঠ করান রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। ঢাকার বাইরে থাকায় তিন উপদেষ্টা ফারুক-ই-আযম, বিধান রঞ্জন রায় এবং সুপ্রদীপ চাকমা শপথ অনুষ্ঠানে উপস্থিত হতে পারেননি।
সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ছাড়া অন্যান্য উপদেষ্টারা হলেন- ১. সালেহ উদ্দিন আহমেদ ২. ড. আসিফ নজরুল ৩. আদিলুর রহমান খান ৪. হাসান আরিফ ৫. তৌহিদ হোসেন ৬. সৈয়দা রেজওয়ানা হাসান ৭. মো. নাহিদ ইসলাম ৮. আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া ৯. ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এম সাখাওয়াত হোসেন ১০. সুপ্রদীপ চাকমা ১১. ফরিদা আখতার ১২. বিধান রঞ্জন রায় ১৩. আ.ফ.ম খালিদ হাসান ১৪. নুরজাহান বেগম ১৫. শারমিন মুরশিদ ১৬. ফারুক-ই-আযম।
জেএইচ