অর্থনীতি
৩০০ মিলিয়ন ডলারের চুক্তি সই করলো বাংলাদেশ-বিশ্বব্যাংক
গ্রামের সুবিধাবঞ্চিত প্রায় ৯ লাখ নারী ও পুরুষের কর্মসংস্থান এবং উদ্যোক্তাদের প্রয়োজনীয় দক্ষতা ও বিকল্প শিক্ষায় সহায়তার জন্য বাংলাদেশ সরকার ও বিশ্বব্যাংকের মধ্যে ৩০০ মিলিয়ন ডলারের একটি অর্থায়ন চুক্তি স্বাক্ষর হয়েছে।
রোববার (২৭ আগস্ট) বিশ্বব্যাংকের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ কথা বলা হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বাংলাদেশের পক্ষে অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) সচিব শরিফা খান এবং বিশ্বব্যাংকের পক্ষে বাংলাদেশ ও ভুটানের কান্ট্রি ডিরেক্টর আবদৌলায়ে সেক চুক্তিতে সই করেন।
দ্য ইকোনমিক অ্যাসিলারেশন অ্যান্ড রেজিলেন্স ফর নিট (ইএআরএন) প্রকল্পটি সুবিধাবঞ্চিত ও দুর্বল নারী-পুরুষের শিক্ষা অর্জন ও কর্মসংস্থানে যোগদানে থাকা বাধাগুলো অতিক্রম করতে সাহায্য করবে।
এটি শিক্ষা, কর্মসংস্থান বা প্রশিক্ষণ না থাকা গ্রামীণ নারী-পুরুষদের দক্ষতা প্রশিক্ষণ, বিকল্প শিক্ষা, কর্মসংস্থান ও উদ্যোক্তা সহায়তা দেবে। এদের মধ্যে ৬০ শতাংশই থাকবে নারী।
প্রকল্পটিতে বিভিন্ন দক্ষতা বিকাশের সুযোগ দেয়ার জন্য বৃত্তিমূলক প্রশিক্ষণ কেন্দ্র স্থাপন করা হবে।
এছাড়া বর্তমানে প্রচলিত এবং ভবিষ্যতের ব্যবসা-সংক্রান্ত বিভিন্ন বিষয়ে অনলাইন ও অফলাইন প্রশিক্ষণ কোর্স করানো হবে।
তারা গ্রামীণ নারীদের জন্য সুবিধাজনক অবস্থানে কেন্দ্র স্থাপন করবে। এটি উদ্যোক্তাদের জন্যও অর্থায়ন ও পরামর্শ সহায়তা দেবে।
মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে ঝরে পড়াদের, বিশেষ করে মেয়ে শিক্ষার্থীদের বৃত্তিমূলক মাধ্যমিক শিক্ষাগ্রহণে সহায়তা করবে।
আবদৌলায়ে সেক বলেছেন, তরুণরাই যেকোনো দেশের ভবিষ্যৎ। একটি দক্ষ প্রতিযোগিতামূলক কর্মী বাহিনী তৈরি করা, বাংলাদেশের উন্নয়নের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ অগ্রাধিকার।
তিনি আরও বলেন, প্রকল্পটি দক্ষতা উন্নয়ন, শিক্ষার ধারাবাহিকতা এবং কর্মসংস্থানের সুযোগের মাধ্যমে একটি প্রতিযোগিতামূলক কর্মী বাহিনী গড়ে তুলতে সাহায্য করবে এবং অন্তর্নিহিত সাংস্কৃতিক ও সামাজিক বাধাগুলো মোকাবিলা করবে। যা বিশেষ করে নারী, প্রতিবন্ধী এবং জাতিগত সংখ্যালঘুদের অগ্রযাত্রা ব্যাহত করে।
বাংলাদেশে প্রায় ২৭ শতাংশ তরুণ-তরুণী বা প্রায় ১২ দশমিক ৬ মিলিয়ন মানুষকে নিট হিসাবে শ্রেণিবদ্ধ করা হয়েছে। তাদের প্রায় ৯০ শতাংশ নারী,যারা বেশিরভাগই গ্রামীণ এলাকায় বসবাস করে।
তাদের কর্মসংস্থান বাড়ানোর জন্য থাকা প্রকল্পটি বাজার-প্রাসঙ্গিক ব্যবসার বিস্তৃত পরিসরের জন্য দক্ষতা উন্নয়ন প্রশিক্ষণ দেবে। বিশেষ করে নারীদের উপর জোর দেওয়া হবে।
মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে ঝরে পড়া তরুণ-তরুণীদের জন্য প্রকল্পটি একটি বিশেষ পাঠ্যক্রমের মাধ্যমে বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা কার্যক্রমে অংশ নিতে পারবে।
তারা নার্সিং, চিকিৎসা প্রযুক্তি, কৃষি খাদ্য প্রক্রিয়াকরণের মতো অন্যান্য কোর্সে ডিপ্লোমা-স্তরের কারিগরি শিক্ষা গ্রহণ করতে পারবে।
উদ্যোক্তাদের সহায়তা করার জন্য প্রকল্পটি নতুন উদ্যোক্তাদের বীজ অর্থায়ন, পরামর্শদান এবং অন্যান্য প্রাসঙ্গিক সহায়তা করবে।
ইআরডি সচিব শরিফা খান বলেছেন, প্রকল্পটি অষ্টম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনা ২০২১-২০২৫ এর সঙ্গে সংযুক্ত। ২০২৬ সালে দেশের এলডিসি অবস্থা থেকে উন্নীত হওয়া এবং ভিশন ২০৪১ বাস্তবায়নকেও সমর্থন করে এটি।
তিনি বলেন, এটি গ্রামীণ জনগোষ্ঠীর অর্থনৈতিক সম্পৃক্ততার জন্য একটি ব্যাপক সহায়তা ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে সরকারের পরিকল্পনা ও নীতিগুলোকে সমর্থন করবে।
তিনি আরও বলেন, নিট তরুণ-তরুণী, প্রতিবন্ধী এবং দেশের বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন অংশের জন্য অপরিহার্য।
রেয়াতি ঋণটি বিশ্বব্যাংকের ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট অ্যাসোসিয়েশন (আইডিএ) থেকে দেওয়া হয়েছে এবং পরিশোধের জন্য পাঁচ বছরের গ্রেস পিরিয়ডসহ ৩০ বছরের মেয়াদ রয়েছে।
বাংলাদেশে বর্তমানে ১৫ দশমিক ৮৬ বিলিয়ন ডলারের বৃহত্তম চলমান আইডিএ প্রোগ্রাম রয়েছে।
বাংলাদেশকে সহায়তা করা প্রথম উন্নয়ন অংশীদারদের মধ্যে বিশ্বব্যাংক একটি। স্বাধীনতার পর থেকে বাংলাদেশকে প্রায় ৪০ বিলিয়ন ডলার অনুদান, সুদমুক্ত ও রেয়াতি ঋণ দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে সংস্থাটি।
অর্থনীতি
বাংলাদেশের পাশে থাকবে আইএমএফ
ছাত্র-জনতার ব্যাপক বিক্ষোভের মুখে পদত্যাগ করে দেশ ছেড়ে পালিয়ে ভারতে আশ্রয় নিয়েছেন শেখ হাসিনা। তার দেশ ছেড়ে চলে যাওয়ার পর অন্তর্বর্তীকালীন সরকার প্রতিষ্ঠার ঘোষণা দেয়া হয়েছে। দেশের এ পরিস্থিতিতে বৃহস্পতিবার (০৮ আগস্ট) রাত ৮টার দিকে শপথ নেবে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। চলমান পরিস্থিতির মধ্যেও বাংলাদেশকে সহযোগিতা করে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ)।
মঙ্গলবার (৬ আগস্ট) এক বিবৃতিতে বাংলাদেশের পাশে থাকতে আইএমএফ ‘প্রতিশ্রুতিবদ্ধ’ বলে জানিয়েছে সংস্থাটি।
বৃহস্পতিবার (০৮ আগস্ট) আন্তর্জাতিক সংবাদ সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা যায়।
প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, ‘প্রাণহানি ও মানুষের আহত হওয়ার ঘটনায়’ আইএমএফ গভীর দুঃখ প্রকাশ করেছে। তারা বাংলাদেশ ও দেশটির মানুষের প্রতি সম্পূর্ণ প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। দেশের অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা ধরে রাখতে এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক প্রবৃদ্ধিতে সংস্থাটি পাশে থাকবে।
এর আগে, চলতি বছরের জানুয়ারিতে বাংলাদেশকে ৪৭০ কোটি ডলারের একটি ঋণ অনুমোদন দেয় আইএমএফ। ইতোমধ্যেই তিন কিস্তিতে ২৩০ কোটি ৮২ লাখ ডলার ছাড় করেছে আইএমএফ। আর ২০২৬ সাল পর্যন্ত সাতটি কিস্তিতে ঋণের পুরো অর্থ ছাড় করার কথা রয়েছে সংস্থাটির।
বিশেষজ্ঞদের মতে, আইএমএফ, বিশ্বব্যাংক ও এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের মতো প্রতিষ্ঠান থেকে পাওয়া দীর্ঘমেয়াদি ঋণ দেশের জিডিপির প্রায় এক-চতুর্থাংশের সমতুল্য। সুতরাং, তাদের সমর্থন বাংলাদেশের অর্থনীতির জন্য গুরুত্বপূর্ণ।
এসি//
অর্থনীতি
আজ ব্যাংক থেকে এক লাখের বেশি টাকা তোলা যাবে না
শান্তিতে নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে প্রধান করে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের শপথ অনুষ্ঠান আজ (০৮ আগস্ট)। সে জন্য নিরাপত্তার স্বার্থে ব্যাংক থেকে টাকা উত্তোলনের সীমা আরোপ করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এক হিসাব থেকে এক লাখের বেশি নগদ টাকা উত্তোলন করা যাবে না। তবে এ সিদ্ধান্ত শুধু আজকের জন্য প্রযোজ্য হবে।
বুধবার (০৭ আগস্ট) রাতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক ব্যবস্থাপনা পরিচালক বা এমডিদের এক জরুরি বার্তায় এ নির্দেশনা দিয়েছে।
নির্দেশনা অনুযায়ী, বৃহস্পতিবার (০৮ আগস্ট) এক হিসাব থেকে এক লাখের বেশি নগদ টাকা উত্তোলন করা যাবে না। তবে যেকোনো পরিমাণ নগদ টাকা স্থানান্তর ও ডিজিটাল লেনদেন করা যাবে। এ ছাড়া কেন্দ্রীয় ব্যাংক আজকের জন্য প্রধান কার্যালয় থেকে শাখায় টাকা দেয়া বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়েছে। পাশাপাশি গ্রাহকদের চেকের মাধ্যমে টাকা পরিশোধ করতে পরামর্শ দেয়া হয়েছে।
জানা গেছে, সরকার পরিবর্তনের পর নগদ টাকা উত্তোলনের চাপ বেড়েছে। এসব অর্থ যাতে কোনোভাবেই সন্ত্রাসী বা অবৈধ কাজে ব্যবহৃত না হয়, সে জন্য নগদ টাকা উত্তোলন কিছুটা নিরুৎসাহিত করার সিদ্ধান্ত নেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। এর ধারাবাহিকতায় গত রাতে এ সিদ্ধান্ত জানায় বাংলাদেশ ব্যাংক।
বাংলাদেশ ব্যাংকের একজন কর্মকর্তা বলেন, ‘দেশে কোনো সরকার নেই এবং আজ নতুন সরকার গঠিত হচ্ছে। এই সময়ে কেউ যাতে নগদ টাকা নিয়ে কোনো অস্থিতিশীল পরিবেশ তৈরি করতে না পারে, সে জন্যই এই সিদ্ধান্ত।’
এসি//
অর্থনীতি
এনবিআর চেয়ারম্যানকে বরখাস্তের দাবিতে বিক্ষোভ
জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিমকে বরখাস্তের দাবিসহ ৯ দফা দাবিতে বিক্ষোভ করেছেন জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।আর বিক্ষোভের মধ্যেই চেয়ারম্যানের পদত্যাগের গুঞ্জন চলছে।
বুধবার (৭ আগস্ট) সকাল থেকেই এনবিআর এর প্রধান কার্যালয়ে কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের বিক্ষোভ করতে দেখা যায়।
এনবিআরের কর্মচারীরা জানান, তারা দীর্ঘ দিন থেকে তাদের নানা দাবি ও অসুবিধা এনবিআর চেয়ারম্যানকে জানিয়ে আসছিলেন। কিন্তু এসব দাবি তিনি পূরণ করেন নাই। বাইরের ক্যাডারের কর্মকর্তারা এনবিআর কর্মচারীদের কষ্ট বুঝতে চান না। তাদের ইচ্ছে মত করে চালাতে চান, সেটা কতটা যৌক্তিক তা ভেবে দেখার এটাই উপযুক্ত সময়।
এসময়ে আন্দোলনরত কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা ৯ দফা দাবি জানান।
তাদের দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে-
১। প্রশাসন ক্যাডার থেকে কোনো কর্মকর্তা প্রেষণে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডে পদায়ন করা যাবে না।
২। স্বৈরাচারী শাসকের ঘনিষ্ঠ সহচর জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের বর্তমান চেয়ারম্যান আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিমকে অবিলম্বে পদ থেকে বরখাস্ত করে আয়কর/কাস্টমস, এক্সাইজ ও ভ্যাট ক্যাডার থেকে চেয়ারম্যান নিয়োগ দিতে হবে।
৩। অবিলম্বে স্বৈরাচারী চেয়ারম্যানের দোসর এবং প্রিয়পাত্র প্রথম সচিব (কর প্রশাসন) মো. শাহিদুজ্জামানকে তার পদ থেকে বরখাস্ত করে কর ক্যাডারের কর্মকর্তা পদায়ন করতে হবে।
৪। দুই বছর পর পর বদলি বাণিজ্য বন্ধ করে আয়কর আইন-২০২৩ এর সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে এবং আয়কর আদায়ের স্বার্থে অতীতের মতো রাজস্ব বান্ধব এবং প্রযোজ্যতা সাপেক্ষে বদলি করতে হবে।
৫। অবৈধ নিয়োগ অবিলম্বে বন্ধ করতে হবে এবং আউট সোর্সিং পদ্ধতিতে নিয়োগ দেওয়া যাবে না।
৬। সব কর্মচারীদের পদায়ন কর্মচারীদের জন্য প্রণীত জ্যেষ্ঠতা বিধিমালা ও আইন অনুযায়ী করতে হবে।
৭। আয়কর অনুবিভাগের ১০তম-২০তম গ্রেডের সব শূন্য পদে পদোন্নতি দিতে হবে এবং সব পদ পদোন্নতিযোগ্য হতে হবে, কোনো পদ ব্লক রাখা যাবে না।
৮। কর্মচারীদের নিজ নিজ অ্যাসোসিয়েশনের সঙ্গে পরামর্শ করে কর্মচারীদের স্বার্থ-সংশ্লিষ্ট সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে হবে, অন্যথায় কোনো সিদ্ধান্ত মানা হবে না।
৯। সর্বশেষে আয়কর অনুবিভাগের সংশ্লিষ্ট সব বিষয়ের সিদ্ধান্ত শুধু আয়কর বিভাগের কর্মকর্তা/কর্মচারীরা নেবে।
আই/এ
মন্তব্য করতে লগিন করুন লগিন