আফ্রিকা
নির্বাচনের ফলাফল বাতিল করে সেনাবাহিনীর ক্ষমতা দখল
এবার আফ্রিকার দেশ গ্যাবনে ক্ষমতা দখল করেছে সামরিক বাহিনী। বুধবার (৩০ আগস্ট) দেশটির শীর্ষ সামরিক কর্মকর্তাদের একটি দল এ ঘোষণা দিয়েছে।
এতে বলা হয়, তারা দেশের ক্ষমতা গ্রহণ করেছেন। এর মাত্র কয়েক মিনিট আগেই দেশটির সাধারণ নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণা করা হয়।
আল জাজিরার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে যে, গেবোনিস ইলেকশন সেন্টার আলি বোঙ্গোকে প্রেসিডেন্ট হিসেবে ঘোষণা দেয়। কিন্তু নির্বাচনের ফলাফল প্রত্যাখ্যান করে সামরিক বাহিনীই দেশ পরিচালনার দায়িত্ব গ্রহণ করেছে।
মধ্য আফ্রিকার দেশটির রাষ্ট্রীয় প্রচারমাধ্যম গেবন ২৪য়ে প্রচারিত একটি ভিডিওতে সামরিক কর্মকর্তারা বলেন, তারা সব ধরনের নিরাপত্তা এবং প্রতিরক্ষা বাহিনীর নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে।
তারা জানান, নির্বাচনের ফলাফল প্রত্যাখ্যান করা হয়েছে। পরবর্তী নির্দেশনা না দেওয়া পর্যন্ত সব সীমান্ত বন্ধ থাকবে বলেও জানানো হয়।
এদিকে রাজধানী লিব্রেভিলে গোলাগুলির তুমুল শব্দ শোনা গেছে বলে রয়টার্স এবং এএফপির খবরে নিশ্চিত করা হয়েছে। তবে প্রেসিডেন্ট হিসেবে নির্বাচিত হওয়া আলি বোঙ্গো এখন কোথায় আছেন সে বিষয়ে স্পষ্ট কোনো ধারণা পাওয়া যায়নি। গত শনিবার জাতীয় নির্বাচনের ভোটে অংশ নেওয়ার সময় সর্বশেষ তাকে দেখা যায়। এরপরে তাকে আর জনসম্মুখে দেখা যায়নি।
এক বিবৃতিতে সামরিক কর্মকর্তারা বলেন, গ্যাবোনিজ জনগণের জন্য আমরা বর্তমান শাসনের অবসান ঘটিয়ে শান্তি রক্ষা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। যৌথ বিবৃতিটি একজন শীর্ষ কর্মকর্তা পড়ে শোনান। সে সময় তার পেছনে আরও বেশ কয়েকজন কর্মকর্তাকে চুপচাপ দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা গেছে।
২০২০ সালের পর এ নিয়ে পশ্চিম ও মধ্য আফ্রিকার আটটি দেশে সামরিক অভ্যুত্থানের ঘটনা ঘটলো। গেলো কয়েক বছরে মালি, গিনিয়া, বুরকিনা ফাসো, চাদ এবং নাইজারে বেসামরিক সরকারকে হটিয়ে ক্ষমতা দখল করেছে সামরিক বাহিনী।
এদিকে গ্যাবনের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে বেশ উত্তেজনা বিরাজ করছে। সামনের দিনগুলোতে কী ঘটতে যাচ্ছে তা এখনই বলা যাচ্ছে না। গেবোনিস ইলেকশন সেন্টার জানিয়েছে, জাতীয় নির্বাচনে বোঙ্গো ৬৪ দশমিক ২৭ শতাংশ ভোট পেয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী আলবার্ট অন্দো ওসা ভোট পেয়েছেন ৩০ দশমিক ৭৭ শতাংশ।
আফ্রিকা
বরখাস্ত হলেন তিউনিসিয়ার প্রধানমন্ত্রী
তিউনিসিয়ার প্রধানমন্ত্রী আহমেদ হাচানিকে বরখাস্ত করেছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট কাইস সাইদ। বুধবার (৭ আগস্ট)বরখাস্ত হন হাচানি।
প্রেসিডেন্টের কার্যালয় এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানিয়েছে বলে খবর প্রকাশ করেছে চীনা বার্তা সংস্থা শিনহুয়া। তবে বরখাস্তের কোনো কারণ বা ব্যাখ্যা বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়নি।
গেলো বছরের আগস্টে হাচানিকে তিউনিসিয়ার প্রধানমন্ত্রী মনোনীত করা হয়। এর এক বছরের মাথায় তিনি পদ হারালেন।
এদিকে প্রেসিডেন্ট সাইদ সামাজিক বিষয়কমন্ত্রী কামেল মাদ্দৌরিকে নতুন প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নিয়োগ দিয়েছেন এবং তাকে জনগণের সেবায় আত্মনিয়োগ করতে আহ্বান জানিয়েছেন।
আঞ্চলিক সংবাদমাধ্যমে বলা হচ্ছে, আগামী নির্বাচন ঘিরে তিউনিসিয়া জটিল সময় পার করছে। জনগণের মধ্যে সরকার নিয়ে ক্ষোভ বাড়ছে। যা ইতিমধ্যে বিভিন্ন খাতে জনরোষে রূপ নিতে শুরু করেছে।
প্রসঙ্গত, উত্তর আফ্রিকার উপকূলে ভূমধ্যসাগরের তীরে অবস্থিত দেশ তিউনিসিয়া। দেশটি উত্তর আফ্রিকা, আটলান্টিক মহাসাগরের নীল নদের বদ্বীপ এবং ভূমধ্য উপকূলের মধ্যে অবস্থিত।
জিএমএম/
আফ্রিকা
মালিতে গ্রামবাসীদের ওপর হামলা, নিহত ৪০
পশ্চিম আফ্রিকার মধ্যাঞ্চল মালিতে গ্রামবাসীদের ওপর হামলা চালিয়েছে সশস্ত্র সন্ত্রাসি বাহিনী। এতে প্রায় ৪০ গ্রামবাসী নিহত হয়েছেন।
বুধবার (৩ জুলাই) বার্তাসংস্থা রয়টার্সের দেয়া প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা যায়।
দেশটির স্থানীয় কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, বিদ্রোহে জর্জরিত মধ্য মালির একটি গ্রামে অজ্ঞাত সশস্ত্র ব্যক্তিদের হামলায় প্রায় ৪০ জন নিহত হয়েছেন। সোমবার মোপ্তি অঞ্চলের ডিজিগুইবোম্বো গ্রামে এই হামলার ঘটনা ঘটে।
ব্যাঙ্কাসের মেয়র মৌলেয়ে গুইন্দো বলেছেন, সশস্ত্র লোকেরা গ্রামটি ঘিরে ফেলে লোকজনকে গুলি করতে শুরু করে।
তিনি মৃতের সংখ্যা নির্দিষ্ট করে বলতে পারেননি। তবে দুই স্থানীয় কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেছেন, হামলায় প্রায় ৪০ জন নিহত হয়েছেন।
‘এটি গণহত্যা ছিল’ উল্লেখ করে একজন কর্মকর্তা বলেছেন, ‘হামলার আগে সন্ত্রাসীরা গ্রামটি ঘিরে ফেলে। সেখানে একটি বিয়ের অনুষ্ঠান হচ্ছিল… হামলার ঘটনায় সেখানে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে, কিছু লোক পালিয়ে যেতেও সক্ষম হয়। কিন্তু অনেককে হত্যা করা হয়েছে।’
নিহতদের বেশিরভাগই পুরুষ বলে জানান ওই কর্মকর্তা।
মালির কর্মকর্তারা হামলাকারীদের শনাক্ত করতে পারেননি। এছাড়া কোনো গোষ্ঠী এখনও হামলার দায় স্বীকার করেনি।
টিআর/
আফ্রিকা
নাইরোবিতে ট্যাক্সবিরোধী আন্দোলন, নিহত কয়েকজন
কেনিয়ায় ট্যাক্সবিরোধী আন্দোলন সহিংস আকার ধারণ করেছে। এই বিক্ষোভ থেকে দেশটির সংসদ ভবনে আগুন দেয়া হয়েছে। এ সময় বিক্ষোভকারীদের দমাতে পুলিশ গুলি ছুড়লে বেশ কয়েকজন নিহত হয়েছেন।
মঙ্গলবার (২৫ জুন) কেনিয়ার রাজধানী নাইরোবিতে পুলিশ ও বিক্ষোভকারীদের মধ্যে ব্যাপক সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। দুপক্ষের মধ্যে দীর্ঘ সময় ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া চলতে থাকে। এক পর্যায়ে পুলিশি বাধা টপকে দেশের সংসদ ভবনে আগুন দেন বিক্ষোভকারীরা। কাঁদানে গ্যাস ও জলকামান দিয়ে আন্দোলনকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে ব্যর্থ হলে পুলিশ গুলি চালায়।
বুধবার (২৬ জুন) বার্তাসংস্থা রয়টার্সের দেয়া প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা যায়।
সংসদ ভবনের বাইরে পুলিশের গুলিতে নিহত হয়েছেন এমন পাঁচজন বিক্ষোভকারীর মরদেহ গুণে দেখেছেন রয়টার্সের একজন সাংবাদিক। তবে প্যারামেডিক ভিভিয়ান আচিস্তা বলেছেন, কমপক্ষে ১০ জনকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে।
আরেকজন প্যারামেডিক রিচার্ড এনগুমো বলেছেন, গুলিতে ৫০ জনের বেশি মানুষ আহত হয়েছেন। তিনি সংসদের বাইরে দুজন আহত বিক্ষোভকারীকে একটি অ্যাম্বুলেন্সে তুলে নিয়ে যাচ্ছিলেন।
ডেভিস তাফারি নামে একজন বিক্ষোভকারী রয়টার্সকে বলেন, আমরা সংসদ বন্ধ করে দিতে চাই। প্রত্যেক এমপির পদত্যাগ করা উচিত। আমাদের একটি নতুন সরকার দরকার।
স্থানীয় গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়, কাঁদনে গ্যাস ও গুলি চালিয়ে পুলিশ শেষ পর্যন্ত সংসদ ভবন থেকে বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ করতে পেরেছে। এছাড়া ভূগর্ভস্থ টানেল দিয়ে এমপিদের সরিয়ে নেয়া হয়েছে।
শুধু নাইরোবি নয়, এদিন ট্যাক্স বাড়ানোর প্রতিবাদে দেশের অন্যান্য শহর ও নগরেও বিক্ষোভ ও সংঘর্ষ হয়েছে। এসব বিক্ষোভ থেকে কেনিয়ার প্রেসিডেন্ট উইলিয়াম রুটোর পদত্যাগের দাবি করা হচ্ছে। যদিও আন্দোলন শুরু হয়েছিল ট্যাক্স বৃদ্ধির বিরোধিতা করে।
আফ্রিকার এই দেশের মানুষজন করোনো মহামারির দীর্ঘস্থায়ী প্রভাব, ইউক্রেনের যুদ্ধ, টানা দুই বছরের খরা এবং মুদ্রার অবমূল্যায়নের কারণে সৃষ্ট বেশ কয়েকটি অর্থনৈতিক ধাক্কা সামাল দিতে হিমশিম খাচ্ছে। তাদের এমন অর্থনৈতিক চাপের মধ্যেই রাজস্ব আয় বাড়াতে আরও প্রায় ৩০০ কোটি মার্কিন ডলারের করের বোঝা জনগণের ওপর চাপিয়ে দেয়ার চেষ্টা করছে সরকার।
ইতিমধ্যে নতুন এই অর্থ বিলের অনুমোদন দিয়েছে সংসদ। এখন তৃতীয় বারের মতো এটি আবারও সংসদে উঠবে। এই ধাপে পাস হলে তা স্বাক্ষরের জন্য প্রেসিডেন্টের কাছে পাঠানো হবে। কোনো আপত্তি থাকলে তিনি তা সংসদে ফেরত পাঠাতে পারেন। আর আপত্তি না থাকলে তিনি সই করলেই তা আইনে পরিণত হয়ে যাবে।
মন্তব্য করতে লগিন করুন লগিন