খেলাধুলা
এবার সত্যিই চলে গেলেন হিথ স্ট্রিক
কয়েকদিন আগেই বাংলাদেশ জাতীয় দলের সাবেক বোলিং কোচ ও জিম্বাবুয়ের সাবেক অধিনায়ক হিথ স্ট্রিকের মৃত্যুর খবর ছড়িয়েছিল। এরপর খবরটি ভুয়া বলে নিজেই জানান স্ট্রিক। তবে এবার সত্যিই চলে গেলেন তিনি।
রোববার (৩ সেপ্টেম্বর) সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এ ক্রিকেটারের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেন তার তার স্ত্রী নাদিনে।
ফেসবুক পোস্টে তার স্ত্রী জানিয়েছেন, ২০২৩ সালে ৩ সেপ্টেম্বর (আজ) ভোরে আমার জীবনের সর্বশ্রেষ্ঠ ভালোবাসা এবং আমার সুন্দর সন্তানদের বাবাকে ফেরেশতাদের সঙ্গে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। যেখানে তিনি নিজ পরিবার ও স্বজনদের সঙ্গে শেষ দিনগুলো কাটাতে চেয়েছিলেন। তিনি প্রেম এবং শান্তিতে আচ্ছাদিত ছিলেন এবং একা পার্কে হাঁটেননি। আমাদের আত্মা অনন্তকালের জন্য আবদ্ধ, স্ট্রিকি। যতক্ষণ না আমি আবারও তোমাকে আঁকড়ে ধরি।
অনেক দিন ধরেই ক্যানসারের সঙ্গে যুদ্ধ করছিলেন ৪৯ বছর বয়সী এই ক্রিকেটার। তবে চলতি বছরের শুরুতেই বিষয়টি প্রকাশ্যে আসে। শেষ পর্যন্ত মরণব্যাধি ক্যানসারের কাছে হারই মানলেন তিনি।
২০০০-২০০৪ সাল পর্যন্ত জিম্বাবুয়ের অধিনায়ক ছিলেন স্ট্রিক। জিম্বাবুয়ের হয়ে ৬৫টি টেস্টের সঙ্গে ১৮৯টি ওয়ানডে খেলেছেন দেশটির ইতিহাসের অন্যতম সেরা এই অলরাউন্ডার। তিনি জিম্বাবুয়ের হয়ে টেস্টে ১০০ উইকেট নেওয়া একমাত্র বোলার। জিম্বাবুয়ের জার্সিতে সর্বোচ্চ উইকেট দখলের কীর্তিও তারই। ৪৫৩ উইকেট নিয়ে সবার ওপরেই আছেন তিনি। একা হাতেই দেশের ক্রিকেটকে এগিয়ে নিতে এক যুগের বেশি সময় কাজ করেছেন।
ব্যাট হাতেও দারুণ অবদান রেখেছেন স্ট্রিক। টেস্টে এক হাজার ৯৯০ ও ওয়ানডেতে ২ হাজার ৯৪৩ রান করেছেন তিনি। সাদা পোশাকে হারারেতে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে প্রথম তিনিই সেঞ্চুরি করেছিলেন।
কাউন্টি ক্রিকেটে হ্যাম্পশায়ারের হয়ে খেলেছেন। আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে অবসর নেওয়ার পর ২০০৫ সালে কাউন্টিতে ওয়ার্কশায়ারের অধিনায়ক হিসেবে দুই বছরের চুক্তি করেন তিনি। ছিলেন ক্লাবটির অধিনায়কের দায়িত্বে।
তবে ২০০৭ মৌসুমে এক খেলায় অধিনায়কত্ব করার পর ওই বছরের ২৫ এপ্রিল ওয়ার্কশায়ারের অধিনায়কত্ব থেকে পদত্যাগ করেন। এরপর ২০০৭ সালে ইন্ডিয়ান ক্রিকেট লিগ (আইএসএলে) নাম লেখানোর পরই কার্যত ইতি ঘটে তার ক্যারিয়ারের।
কোচিং ক্যারিয়ারে জিম্বাবুয়ে, স্কটল্যান্ড, গুজরাট টাইটানস, কলকাতা নাইট রাইডার্সের মতো দলগুলোর সঙ্গে কাজ করেছেন তিনি। ২০১৪ সালের মে মাসে বাংলাদেশ জাতীয় দলের বোলিং কোচ হিসেবে নিয়োগ পান তিনি। ২০১৬ সাল পর্যন্ত এই দায়িত্ব পালন করেন তিনি।
মোস্তাফিজুর রহমান এবং তাসকিন আহমেদকে বিশ্বমঞ্চে নিয়ে আসার অন্যতম কারিগরও তিনি। এছাড়া দুই দফায় (২০০৯-১৩ এবং ২০১৬-১৮) জিম্বাবুয়ের কোচ ছিলেন তিনি।
তবে কিংবদন্তি এই অলরাউন্ডারের শেষটা সুখকর ছিল না। ২০২১ সালে ম্যাচ গড়াপেটার অভিযোগে তাকে ৮ বছরের জন্য নিষিদ্ধ করে আইসিসি। শেষ পর্যন্ত অভিযোগের ভার মাথায় নিয়েই চলে গেলেন জিম্বাবুয়াইয়ান এই কিংবদন্তি।
ফুটবল
ফুটবলকে বিদায় জানালেন পেপে
সব ধরনের ফুটবল থেকে বিদায় নিলেন পর্তুগালের ডিফেন্ডার পেপে। বৃহস্পতিবার এই সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছেন তিনি।
সর্বশেষ ইউরোর কোয়ার্টার ফাইনালে ফ্রান্সের বিপক্ষে পর্তুগালের ম্যাচটাই হয়ে রইল ৪১ বছর বয়সী এই ফুটবলারের ক্যারিয়ারের শেষ ম্যাচ।
সে ম্যাচে টাইব্রেকারে হেরে বিদায় নিয়েছিল পর্তুগাল। ইউরোর মূলপর্বে সবচেয়ে বয়স্ক খেলোয়াড় হিসেবে মাঠে নামার রেকর্ডও গড়েন তিনি।
পর্তুগালের হয়ে ১৪১ ম্যাচ খেলেছেন পেপে। জিতেছেন ২০১৬ ইউরো।
ফুটবল
বাফুফে থেকে পদত্যাগ করলেন সালাম মুর্শেদী
পদত্যাগ করেছেন বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের (বাফুফে) সিনিয়র সহসভাপতি আবদুস সালাম মুর্শেদী। তিনি ২০০৮ সাল থেকে পদটিতে দায়িত্ব পালন করে আসছেন।
এছাড়াও সালাম মুর্শেদী বাফুফের অর্থ কমিটি ও রেফারিজ কমিটির প্রধানও ছিলেন। এই দুটি পদ থেকেও তিনি পদত্যাগ করেছেন।
বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) রাতে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তি দিয়ে সালাম মুর্শেদীর পদত্যাগের কথা জানায় বাফুফে। সালাম মুর্শেদী খুলনা–৪ আসন থেকে আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য ছিলেন।
ফুটবল
চলে গেলেন স্বাধীন বাংলা ফুটবল দলের সংগঠক সাইদুর রহমান প্যাটেল
স্বাধীন বাংলা ফুটবল দলের অন্যতম সংগঠক ও উদ্যেক্তা সাইদুর রহমান প্যাটেল মারা গেছেন। বেশ কিছুদিন ধরেই তিনি ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ছিলেন। হাসপাতালে থাকাকালীন সেসব ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রকাশ করতেন তিনি। অবশেষে ৭৩ বছর বয়সে পৃথিবীর মায়া ত্যাগ করে চলে গেলেন স্বাধীন বাংলা ফুটবল দলের এই গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি।
বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) যুক্তরাষ্ট্রের লস অ্যাঞ্জেলসের একটি হাসপাতালে মৃত্যুবরণ করেন সাইদুর রহমান। তার মৃত্যুতে বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন (বাফুফে) শোক জানিয়েছে।
বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে সাইদুর রহমানের অবদান ছিল অনস্বীকার্য। স্বাধীন বাংলা ফুটবল দল গঠনে তিনি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন সময়ে বিভিন্ন স্থানে তহবিল তুলতেন সাইদুর রহমানরা। তারা ভারতে ঘুরে ঘুরে স্বাধীন বাংলা ফুটবল দলের হয়ে প্রীতি ম্যাচ খেলতেন। সেখান থেকেও তহবিল সংগ্রহ করতো এই দলটি।
একজন ফুটবল খেলোয়াড় হিসেবে মুক্তিযুদ্ধে ভূমিকা রাখার লক্ষ্য নিয়েই স্বাধীন বাংলা ফুটবল দল গঠন করার উদ্যেগ নিয়েছিলেন সাইদুর রহমান প্যাটেলরা। এখানে খেলে যে অর্থ উত্তোলন হবে, তা মুক্তিযুদ্ধের জন্য গঠিত তহবিলে প্রদান করা হবে; এমনই ছিল স্বাধীন বাংলা ফুটবল দলের সেসময়ের ভাবনা।
স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করার ইচ্ছা ছিল সাইদুর রহমানের। সবশেষ সাধারণ নির্বাচনের আগেই অবশ্য চিকিৎসার জন্য যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি জমাতে হয় তাকে। সেখানে লম্বা সময় ধরে চিকিৎসা নেওয়ার পর আর দেশে ফিরতে পারলেন না তিনি। যুক্তরাষ্ট্রের মাটিতেই নিজের জীবনের শেষ সময়টুকু কাটালেন।
সাইদুর রহমানের জন্ম ১৯৫১ সালের ৭ অক্টোবর। তিনি ঢাকার কেরানীগঞ্জের হাসনাবাদে জন্মগ্রহণ করেন। পরে অবশ্য গেন্ডারিয়ায় চলে যায় তার পরিবার। গেন্ডারিয়াতেই বেড়ে উঠেছেন, স্থানীয় পর্যায়ে ফুটবল খেলতে খেলতে শীর্ষ পর্যায়ের ফুটবলেও নিজের জায়গা করে নেন। তিনি ঢাকার ইস্টএন্ডের হয়ে ফুটবল খেলেছেন। দ্বিতীয় বিভাগে ফরাশগঞ্জের হয়ে, প্রথম বিভাগে পিডব্লুডি’র হয়ে খেলেছেন সাইদুর রহমান প্যাটেল।
এম এইচ//