ময়মনসিংহ
স্ত্রীকে পিটিয়ে মুখে বিষ ঢেলে হত্যা করে পালাল স্বামী
আবারও যৌতুকের বলি হলেন এক গৃহবধূ। বিদেশে যাওয়ার টাকা না দেয়ায় অনামিকা আক্তার আপন (১৮) নামে সেই গৃহবধূকে নির্যাতন করে মুখে বিষ ঢেলে হত্যার অভিযোগ ওঠেছে তার স্বামীর বিরুদ্ধে। ঘটনাটি ঘটেছে শেরপুরের শ্রীবরদীর ঝগড়ারচর তিনআনীপাড়া গ্রামে।
সোমবার (৪ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় নিহত গৃহবধূর লাশ তার নিজ বাড়িতে দাফন করা হয়েছে।
এর আগে রোববার (৩ সেপ্টেম্বর) বিকালে আপনের স্বামী মামুন মিয়ার বাড়িতে ওই ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় পুলিশ নিহতের শাশুড়ি রওশন আরা বেগমকে গ্রেপ্তার করেছে।
নিহতের স্বজনরা জানায়, নিহত অনামিকা আক্তার আপন জামালপুরের বকশীগঞ্জের নিলক্ষিয়া দক্ষিণপাড়া গ্রামের আকিবুর রহমান আকিবের মেয়ে। ২০২০ সালে আনুষ্ঠানিকভাবে শ্রীবরদীর তিনআনীপাড়া গ্রামের এরশাদ আলীর ছেলে মামুন মিয়ার সঙ্গে আপনের বিয়ে হয়। তাদের দাম্পত্য জীবনে এক কন্যা সন্তান রয়েছে। বিয়ের পর থেকেই যৌতুকের টাকার জন্য মামুন তার স্ত্রীকে নির্যাতন করে আসছিল। সম্প্রতি বিদেশে যাওয়ার জন্য মামুন তার শ্বশুর-শাশুড়ির কাছে মোটা অংকের টাকা দাবি করে। এই টাকা দিতে অস্বীকার করায় মামুন আপনের ওপর অমানুষিক নির্যাতন চালায়।
সবশেষ রোববার দুপুরে আপনকে নির্যাতন করার একপর্যায়ে মুখে বিষ ঢেলে দেয় মামুন। পরে তার অবস্থার অবনতি হলে আপনকে জেলা সদর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে তার অবস্থা আশঙ্কাজনক দেখে দায়িত্বরত চিকিৎসকরা তাকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার করেন। এ সময় হাসপাতালে নেয়ার পথে মারা যায় আপন। ওই সময় লাশ ফেলে তার স্বামীর বাড়ির লোকজন গা ঢাকা দেয়। পরে খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে লাশ উদ্ধার করে।
এ ঘটনায় নিহত আপনের মা আসনাত বেগম বাদী হয়ে নিহতের স্বামী মামুনসহ চারজনকে আসামিসহ অজ্ঞাত আরো ৩-৪ জনকে আসামি করে থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। পরে পুলিশ অভিযান চালিয়ে আপনের শাশুড়ি রৌশনারা বেগমকে গ্রেপ্তার করে।
আপনের মা আসনাত বেগম বলেন, আমার মেয়েকে বিয়ের পর থেকেই তার স্বামী মামুন ও শাশুড়ি রৌশনারাসহ বাড়ির অন্য লোকজন তাকে নির্যাতন করে আসছে। ঘটনার কয়েকদিন আগে স্থানীয় সাবেক ইউপি সদস্য কমল দায়িত্ব নিয়ে আমার মেয়েকে নিয়ে যায়। রোববার নির্যাতন করে তার মুখে বিষ ঢেলে দিয়ে আপনকে হত্যা করা হয়। আমরা এর বিচার চাই।
অন্যদিকে সরেজমিনে আপনের স্বামীর বাড়িতে গিয়ে কাউকে পাওয়া যায়নি। শ্রীবরদী থানার এসআই সাইফুল মালেক বলেন, আপনকে নির্যাতনের কিছু তথ্য পাওয়া গেছে। আসামিদের গ্রেপ্তার করতে অভিযান শুরু হয়েছে।
ময়মনসিংহ
বন্ধুদের নিয়ে নববধূকে ধর্ষণ,স্বামীসহ গ্রেপ্তার ২
টাঙ্গাইলে স্বামীর সহযোগিতায় বাসর রাতে বন্ধুদের নিয়ে নববধূকে ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় অভিযুক্ত স্বামী আব্দুল বাছেদ (২৫) ও বন্ধু জহুরুল ইসলামকে (২৮) গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। অপর বন্ধুকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
গেলো বৃহস্পতিবার (২৫ জুলাই) অভিযুক্ত দু আসামিকে পুলিশ গ্রেপ্তার করে বলে গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন কালিহাতী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কামরুল ফারুক।
মামলা সূত্রে জানা যায়, সম্প্রতি বিয়ে করে ওই নববধূকে নিজের বাড়িতে তোলেন আব্দুল বাছেদ। বাসর রাতে প্রবেশের পর বাছেদের সহযোগিতায় তার দুই বন্ধু কৌশলে ভুক্তভোগী নববধূকে ধর্ষণ করেন। পরে ভুক্তভোগী ভূঞাপুর উপজেলার নিকলা পাড়া গ্রামে বাবার বাড়িতে গিয়ে বিষয়টি জানান।
পুলিশ জানায়, এ ঘটনায় গেলো ২৭ জুলাই ভুক্তভোগীর মা বাদী হয়ে কালিহাতী থানায় গ্রেপাত দুই আসামিসহ বর্তময়ানে পলাতক রবিন মিয়াকে (২৬) আসামি করে মামলা দায়ের করেছেন। পুলিশ অভিযুক্ত স্বামী ও তার বন্ধুকে টাঙ্গাইল আদালতে পাঠিয়েছে।
প্রসঙ্গত, এ ঘটনায় নববধূর শারীরিক পরীক্ষার জন্য টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
আই/এ
জনদুর্ভোগ
বন্যার পানিতে গোসলে নেমে ৪ জনের মৃত্যু
জামালপুরের মেলান্দহ উপজেলার শ্যামপুর ইউনিয়নের দক্ষিণ বালুচর এলাকায় বন্যার পানিতে গোসল করতে নেমে চারজনের মৃত্যু হয়েছে। খবর পেয়ে লোকজন গিয়ে দেখেন মরদেহ পানিতে ভেসে উঠেছে। এ সময় বেঁচে ফেরেন মারিয়া (১২) নামের এক শিশু।
রোববার (১৪ জুলাই) বিকেল ৫টায় এ ঘটনা ঘটে। মেলান্দহ থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রাজু আহমেদ বিষয়টি গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন।
নিহতরা হলেন- দক্ষিণ বালুচর এলাকার দিশা আক্তার (১৭), সাদিয়া (১০), খাদিজা (১০) ও রোকশানা (২৫)।
স্থানীয়রা জানান, রোববার বিকেলে দক্ষিণ বালুচর এলাকার পাশাপাশি বাড়ির তিন শিশু, এক কিশোরী ও এক গৃহবধূ ফসলি জমিতে বন্যার পানিতে গোসল করতে যান। গোসল করার একপর্যায়ে হঠাৎ করেই চারজন পানিতে তলিয়ে যেতে থাকেন। এ সময় দূরে থাকা এক কিশোরী তাদের তলিয়ে যাওয়া দেখে দৌড়ে বাড়িতে এসে খবর দেন।
স্থানীয়দের বরাতে (ওসি) রাজু বলেন, এলাকার লোকজন বলছেন, অল্প পানিতেই সবাই গোসল করতে গিয়েছিল। এই পানিতে ডুবে মারা যাওয়ার ঘটনাতে সবাই হতবাক। এর মধ্যে আগামী শুক্রবার দিশার বিয়ে হওয়ার কথা ছিল।
এ ব্যাপারে স্থানীয় ইউপি সদস্য আজাদ আলী বলেন, দুপুরে এমন খবর পেয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে যাই। এমন ঘটনায় এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
এএম/
ময়মনসিংহ
বন্যায় টাঙ্গাইলে ফসলের ব্যাপক ক্ষতি
টাঙ্গাইলে যমুনা নদীর পানি কমলেও এখনো বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এতে কিছু এলাকায় বন্যা পরিস্থিতি অপরিবর্তিত থাকলেও, কিছু এলাকায় পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে। যমুনা নদীর পানি লোকালয়ে প্রবেশ করায় অনেক নতুন এলাকা প্লাবিত হয়েছে।এর ফলে প্রায় ছয়টি উপজেলার ১১ হাজার পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন। পানিবন্দি হওয়ার পাশাপাশি কৃষিজমি তলিয়ে যাওয়ায় ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে।
মঙ্গলবার (৯ জুলাই)টাঙ্গাইলে যমুনা নদীর পানি ৯ সেন্টিমিটার কমে বিপৎসীমার ২৪ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে বলে জানায় জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো)।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর জানান, বন্যার পানিতে জেলার বিভিন্ন উপজেলার প্রায় ৪০ হাজার ৬৬ হেক্টর জমির ফসল পানিতে ডুবে রয়েছে। তবে লোকালয়ে পানি প্রবেশ করায় নতুন এলাকার ফসলি জমি বন্যাকবলিত হচ্ছে।
জেলা প্রশাসন জানায়, জেলার ভূঞাপুর, নাগরপুর, কালিহাতী, টাঙ্গাইল সদর, গোপালপুর, বাসাইল উপজেলার ৪৭ হাজার মানুষ পানিবন্দি রয়েছে। এতে তারা মানবেতর জীবনযাপন করছেন। এ ছাড়া যমুনাসহ তিনটি নদীর পানি কমতে শুরু করলেও নদীর তীরবর্তী নিম্নাঞ্চলের পানিবন্দি মানুষদের দুর্ভোগ কমেনি। বর্তমানে বিশুদ্ধ খাবার পানি ও গোখাদ্যের অভাব দেখা দিয়েছে।
প্রসঙ্গত, এ বছর বন্যায় যেসকল মানুষ পানিবন্দি রয়েছেন তাদের জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সার্বিক সহযোগিতা করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন জেলা প্রশাসক মো. কায়ছারুল ইসলাম।
জেড/এস