আইন-বিচার
সাইবার নিরাপত্তা আইন ৮টি ধারায় অপরাধের সংজ্ঞা ও প্রয়োগ স্পষ্ট করার সুপারিশ বিএফইউজের
সাইবার নিরাপত্তা আইনের খসড়ায় ৮টি ধারায় অপরাধের সংজ্ঞা ও এই আইনের প্রক্রিয়া আরও সুস্পষ্ট করার সুপারিশ করেছে বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন (বিএফইউজে)। ধারাগুলো হলো- ৮, ২১, ২৫, ২৮, ২৯, ৩১, ৩২ ও ৪২।
মঙ্গলবার (৫ সেপ্টেম্বর) আইনমন্ত্রী আনিসুল হকের কাছে বিএফইউজের পক্ষে এ প্রস্তাব করেন জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক মনজুরুল আহসান বুলবুল। জাতীয় প্রেস ক্লাবে আয়োজিত ‘সাইবার নিরাপত্তা আইন বিষয়ে বিএফইউজের উপস্থাপনা’ শীর্ষক আলোচনা সভায় লিখিতভাবে এ পর্যবেক্ষণ ও সুপারিশ তুলে ধরা হয়।
আইনমন্ত্রীর সামনেই সাইবার নিরাপত্তা আইন নিয়ে সাংবাদিক সমাজের পক্ষে বিএফইউজের পর্যবেক্ষণ ও সুপারিশ পড়ে শোনান মনজুরুল আহসান বুলবুল।
৮টি ধারা নিয়ে বিএফইউজের পর্যবেক্ষণ
>> ৮ নং ধারায় উপধারা ২: যদি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নিকট প্রতীয়মান হয় … ‘প্রতীয়মান’ শব্দটি বিপজ্জনক। আইনি প্রক্রিয়ায় কোনো অভিযোগ প্রাপ্তি, তদন্ত বা প্রমাণের আগেই শুধু ‘প্রতীয়মান’ হওয়ার ভিত্তিতে অবারিত ক্ষমতার প্রয়োগ রাখার বিধান বিপজ্জনক পরিস্থিতির সৃষ্টি করবে।
>>> ২১ নং ধারা: মুক্তিযুদ্ধ, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা, জাতির পিতা, জাতীয় সংগীত ও জাতীয় পতাকার বিরুদ্ধে কোনো প্রপাগান্ডা ও প্রচারণার দণ্ড। মুক্তিযুদ্ধের চেতনার বিষয়টি সংজ্ঞায় স্পষ্ট করা হয়েছে। জাতির পিতা, জাতীয় সংগীত ও জাতীয় পতাকার ক্ষেত্রে ‘বিরুদ্ধে’-এর পরিবর্তে আরও সুনির্দিষ্টভাবে বলা উচিত বিদ্বেষ, বিভ্রান্তি ও কুৎসামূলক প্রচারণা চালানো হবে অপরাধ। এসব অভিযোগ এবং এসবের প্রতি সমর্থনের সুনির্দিষ্ট প্রমাণ সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়ার বিধান থাকতে হবে।
>> ২৫ নং ধারা: আক্রমণাত্মক, মিথ্যা ও ভীতি প্রদর্শক, তথ্য-উপাত্ত প্রেরণ প্রকাশ ইত্যাদি। আরও সুনির্দিষ্ট করা দরকার বা এ ধারাটি বাতিল করা দরকার। রজনৈতিক বক্তৃতা তো আক্রমণাত্মক হয়, কোনো মালিক বেতন ভাতা না দিলে তার অফিস ঘেরাও করে ভুক্তভোগী শ্রমিক-কর্মচারীরা যে আন্দোলন করে, সেখানে এইসব উপাদান তো থাকবেই। এসবই কি অপরাধ বলে বিবেচিত হবে?
>> ২৮ নং ধারা: ধর্মীয় মূল্যবোধ বা অনুভূতিতে আঘাত প্রসঙ্গ। এটা আরও সুনির্দিষ্ট করা প্রয়োজন। ধরা যাক, দুই পিরের বা মাজারের সমর্থক দুই গ্রুপ পরস্পরের পির বা বিশ্বাসের প্রতি আক্রমণ করে বক্তব্য দিলো, এটি নিয়ে অভিযোগ আনা হলে এ বিতর্কের অবসান হবে কীভাবে? যেমন সনাতন ধর্ম সংস্কার নিয়ে একপক্ষ কাজ করছে, প্রকাশ্যেই আলোচনা চলছে, আবার অপরপক্ষ মনে করে এটা সনাতন ধর্মের প্রতি আঘাত। এ নিয়ে কোনো মামলা কি এ আইনের আওতায় আসবে?
>> ২৯ নং ধারা: মানহানিকর তথ্য প্রকাশ। এ বিষয়ে দণ্ডবিধি ১৮৬০ এর ৪৫ ধারার ৪৯৯ সেকশনে যেহেতু স্পষ্টীকরণ করা আছে, সেহেতু এ ধারা নতুন করে সাইবার নিরাপত্তা আইনের আওতায় আনার প্রয়োজনীয়তা আছে বলে মনে করি না।
>> ৩১ নং ধারা: আইনশৃঙ্খলার অবনতি ঘটানো। এ ধারাটি এতই ব্যাপক যে রাজনীতি ও পেশাজীবী আন্দোলনের যেকোন কর্মসূচি পালনের পর যে কাউকে এ ধারায় অপরাধী সাব্যস্ত করা যাবে। ‘ঘটনা ঘটায় বা ঘটিবার উপক্রম হয়’, বিষয়টি এতটা অস্পষ্ট এবং প্রয়োগের ক্ষমতা এতটা ব্যাপক যে একটা ভয়ের পরিবেশ তৈরি করবে।
>> ৩২ নং ধারা: অফিসিয়াল সিক্রেটস আইনকে নতুন জীবন দেওয়ার বিরুদ্ধে আমরা। এ ধারা পুরোটা বাতিলের দাবি জানাচ্ছে সাংবাদিক সমাজ।
>> ৪২ নং ধারা: পরোয়না ছাড়া তল্লাশি, জব্দ ও গ্রেফতার। এ ধারায় এসআইয়ের নিচে নয় এমন পদমর্যাদার পুলিশ কর্মকর্তাকে পরোয়ানা ছাড়া তল্লাশি, জব্দ ও গ্রেফতারের ক্ষমতা ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মতই রাখা হয়েছে। এটিই হচ্ছে আইনটির মিস ইউজ ও অ্যাবিউজের মূল শক্তি।
এ ধারাটি অক্ষুণ্ন রেখে আইনের অপব্যবহার হবে না বিষয়টি কোনোভাবেই নিশ্চিত করা যাবে না। সংবাদকর্মীরা এর খপ্পরে আগেও যেমন পড়েছেন, এবারও রেহাই মিলবে না। আমাদের সুস্পষ্ট প্রস্তাব, সাংবাদিকদের বেলায় এ ধারা রহিত করতে হবে। কোনোভাবেই এ ধারায় সাংবাদিক বা সংবাদকর্মীকে পেশাগত কোনো কাজের জন্য গ্রেফতার করা যাবে না। কোনো কাজে আপত্তি থাকলে সমন জারি করে আদালতে হাজির হতে বলা যাবে, যোগ করেন মনজুরুল আহসান বুলবুল।
পরে অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি আইনমন্ত্রী আনিসুল হক তার বক্তব্যে বিএফইউজের প্রস্তাবগুলো গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনার আশ্বাস দেন।
আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন বিএফইউজের সভাপতি ওমর ফারুক। বিএফইউজের মহাসচিব দ্বীপ আজাদের সঞ্চালনায় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন প্রধানমন্ত্রীর সাবেক তথ্য উপদেষ্টা ইকবাল সোবহান চৌধুরী, বিএফইউজের সাবেক মহাসচিব আব্দুল জলিল ভূইয়া, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সাবেক সভাপতি কুদ্দুস আফ্রাদ, বর্তমান সভাপতি সোহেল হায়দার চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক আকতার হোসেন প্রমুখ।
আইন-বিচার
নতুন অ্যাটর্নি জেনারেল অ্যাডভোকেট আসাদুজ্জামান
রাষ্ট্রের প্রধান আইন কর্মকর্তা অ্যাটর্নি জেনারেল হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মো. আসাদুজ্জামান।
বৃহস্পতিবার (০৮ আগস্ট) রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন তাকে এ নিয়োগ দেন।
রাষ্ট্রপতির কার্যালয়ের সচিব মো. গোলাম সারওয়ার স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
এতে বলা হয়েছে, ‘রাষ্ট্রপতি বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের সিনিয় আইনজীবী মো. আসাদুজ্জামানকে পুনরাদেশ না দেয়া পর্যন্ত অ্যাটর্নি জেনারেল পদে নিয়োগ প্রদান করলেন।’
উল্লেখ্য, আ.লীগ সরকারের পতনের পর পদত্যাগ করেছেন অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন। বুধবার (০৭ আগস্ট) রাষ্ট্রপতির কাছে পদত্যাগপত্র জমা দেন তিনি। তার স্থলাভিষিক্ত হচ্ছেন মো. আসাদুজ্জামান।
২০২০ সালের ৮ অক্টোবর রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ এ এম আমিন উদ্দিনকে অ্যাটর্নি জেনারেল হিসেবে নিয়োগ প্রদান করেন। এর আগে তিনি ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন।
এসি//
আইন-বিচার
পদত্যাগ করেছেন অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল এস এম মুনীর
পদত্যাগ করেছেন অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল এস এম মুনীর। বৃহস্পতিবার (০৮ আগস্ট) অ্যাটর্নি জেনারেল অফিসে তিনি পদত্যাগপত্র জমা দেন।
পদত্যাগ করার বিষয়টি এস এম মুনীর নিজেই গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন।
এর আগে অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন ও আরেক অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল শেখ মো. মোরসেদ পদত্যাগ করেন।
২০২০ সালের ১ সেপ্টেম্বর সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সাবেক সম্পাদক এবং জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এস এম মুনীরকে অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয়।
প্রসঙ্গত, ছাত্র-জনতার চূড়ান্ত আন্দোলনের মুখে প্রধানমন্ত্রীর পদ ছেড়ে দেশত্যাগ করেন শেখ হাসিনা। গেলো ৫ আগস্ট দুপুর আড়াইটায় বঙ্গভবন থেকে একটি সামরিক হেলিকপ্টার তাকে নিয়ে ভারতের উদ্দেশ্যে যাত্রা করে। এ সময় তার সঙ্গে তার ছোট বোন শেখ রেহানা ছিলেন। ভারতে যাওয়ার আগে রাষ্ট্রপতির কাছে পদত্যাগপত্র দেন শেখ হাসিনা।
শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর থেকে বড় বড় পদে নিয়োগ পাওয়া কর্মকর্তাদের দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দেয়া হচ্ছে। আবার অনেকেই স্বেচ্ছায় পদত্যাগ করছেন।
এসি//
আইন-বিচার
সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণের সেই ভাস্কর্যটি উপড়ে ফেলা হয়েছে
সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণে হাইকোর্ট এনেক্স ভবনের সামনে থাকা গ্রিক দেবী থেমিসের ভাস্কর্যটি ভাঙচুরের পর উপড়ে ফেলা হয়েছে।তবে কে বা কারা ভাস্কর্যটি ভেঙেছে তা জানা যায়নি।
বুধবার (৭ আগস্ট) দুপুরে ভাস্কর্যটি মাটিতে পরে থাকতে দেখা যায়। এর আগে,গেলো মঙ্গলবার সকালে ইস্পাতের তৈরি ভাস্কর্যটির হাত ও দাঁড়িপাল্লা ধরে থাকা হাত ভাঙা অবস্থায় দেখা গিয়েছিলো।
সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসনের একাধিক কর্মকর্তা জানান, গ্রিক দেবী থেমিসের আদলে ন্যায়বিচারের প্রতীক হিসেবে গড়ে তোলা ভাস্কর্যটি ভেঙে ফেলা হয়েছে। তবে কে বা কারা এটি করেছেন, তা তাদের জানা নেই।
এর আগে ২০১৬ সালের ডিসেম্বরের তৃতীয় সপ্তাহে সুপ্রিম কোর্টে প্রবেশের মূল ফটকের বরাবর থাকা লিলি ফোয়ারায় প্রথমে ভাস্কর্যটি বসানো হয়। হেফাজতসহ কয়েকটি ইসলামি সংগঠনের দাবির মুখে ২০১৭ সালের মে মাসে ভাস্কর্যটি সরিয়ে এনেক্স ভবনের সামনে স্থাপন করা হয়।
আই/এ