চট্টগ্রাম
কুমিল্লায় গাছের সঙ্গে হাত-পা ঝুলিয়ে যুবককে নির্যাতন
কুমিল্লার মেঘনায় নলকূপ চুরির অভিযোগে রাসেল (২৭) নামের এক যুবককে গাছের সঙ্গে হাত-পা ঝুলিয়ে নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে শাহ আলমের নামের এক ইউপি সদস্যের বিরুদ্ধে। এক মিনিটের ৮ সেকেন্ডের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। এ ঘটনায় জেলাজুড়ে তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (৭ সেপ্টেম্বর) সকালে উপজেলার বড়কান্দা ইউনিয়নের বড়কান্দা গ্রামের মনির হোসেন মৃধার বাড়িতে নির্যাতনের এ ঘটনা ঘটে। নির্যাতনে শিকার রাসেল পার্শ্ববর্তী হোমনা উপজেলার বাবরকান্দি গ্রামের কুদ্দুস মিয়ার ছেলে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, কয়েকদিন বড়কান্দা গ্রামের বিভিন্ন বাড়ি থেকে নলকূপের মাথা চুরি হচ্ছিল। এরই ধারাবাহিকতায় বৃহস্পতিবার বেলা ১১টার দিকে মনির হোসেন মৃধার বাড়িতে একটি নলকূপের ওপরের অংশ চুরি করে পালিয়ে যাওয়ার সময় স্থানীয়রা রাসেলকে আটক করে। পরে তার সঙ্গে থাকা ব্যাগ তল্লাশি করে নলকূপের মাথাটি উদ্ধার করা হয়। খবর পেয়ে ইউপি সদস্য শাহ আলম ঘটনাস্থলে পৌঁছে স্থানীয় কয়েকজনসহ রাসেলকে রশি দিয়ে হাত-পা বেঁধে একটি গাছের সঙ্গে ঝোলানো হয়। এক পর্যায়ে শাহ আলম মেম্বার একটি লাঠি দিয়ে তাকে ব্যাপক মারধর করেন। এ ঘটনার কিছুক্ষণ পর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এক মিনিট ৮ সেকেন্ডের নির্যাতনের একটি ভিডিও ফুটেজ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। খবর পেয়ে মেঘনা থানা পুলিশ দুপুর ১২টার দিকে ঘটনাস্থলে পৌঁছে রাসেলকে থানায় নিয়ে যায়।
এ বিষয়ে জানতে অভিযুক্ত ইউপি সদস্য শাহ আলমকে একাধিকবার ফোন করা হলেও তার ব্যবহৃত নম্বরটি বন্ধ পাওয়া যায়।
বড়কান্দা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো. ফারুক হোসেন রিপন বলেন, নলকূপ চুরি করে পালিয়ে যাওয়ার সময় একজনকে স্থানীয়রা আটক করেছে শুনেছি। তবে গাছের সঙ্গে ঝুলিয়ে নির্যাতন করা ঠিক হয়নি। দেশের প্রচলিত আইনে এর বিচার হতে পারতো।
মেঘনা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. দেলোয়ার হোসেন বলেন, বড়কান্দা গ্রামে একজনকে আটক করা হয়েছে। খবর পেয়ে সেখান থেকে তাকে থানায় নিয়ে আসা হয়। পরে তাকে নির্যাতনের একটি ভিডিও ফুটেজ আমাদের নজরে আসে। এ ঘটনায় অভিযুক্ত শাহ আলম মেম্বারের বিরুদ্ধ আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।
এর আগে গত ২৬ আগস্ট সকালে কুমিল্লার বরুড়া উপজেলার ভাউকসার ইউনিয়নের নূরুল ইসলাম মার্কেটের সামনে আবদুল হান্নান (৩২) নামে এক যুবককে চুরির অভিযোগে গাছের সঙ্গে পা ঝুলিয়ে নির্যাতন করেন ভাউকসার ইউনিয়নের ইউপি সদস্য জহিরুল ইসলাম। পরে এ ঘটনার ৫৯ মিনিটের একটি ভিডিও ফুটেজ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ভাইরালে অভিযুক্ত ইউপি সদস্যকে গ্রেফতার করে থানা পুলিশ।
চট্টগ্রাম
কাভার্ডভ্যানের ধাক্কায় প্রাণ হারালেন দুই সাইকেল আরোহী
কর্ণফুলীতে পণ্যবাহী কাভার্ডভ্যানের ধাক্কায় দুই সাইকেল আরোহী নিহত হয়েছেন। কাভার্ডভ্যানটি আটক করা হয়েছে।
বুধবার (৭ আগস্ট) বেলা একটার দিকে চরপাথরঘাটা ইউনিয়নের ইছানগর বাংলাবাজার এলাকায় এই দুর্ঘটনা ঘটে।
নিহতরা হলেন- নওগাঁ জেলার আত্রাই উপজেলার নন্দনালী গ্রামের কামাল মণ্ডলের ছেলে চঞ্চল মণ্ডল (১৮) ও রাজবাড়ী জেলার গোয়ালন্দ উপজেলার ছোট পাগলা গ্রামের মোহাম্মদ আবদুল জলিলের ছেলে জাহিদুল ইসলাম (১৬)। তারা কর্ণফুলী উপজেলার ইছানগর গ্রামে ভাড়া বাসায় থাকতেন।
চরপাথরঘাটার ৮ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মোহাম্মদ আবু তাহের গণমাধ্যমকে বলেন, দুপুরে তারা তিনজন সাইকেল চালিয়ে কর্মস্থলে যাচ্ছিলেন। এ সময় কাভার্ডভ্যানের ধাক্কায় ঘটনাস্থলেই দুজন নিহত হয়। অপরজনকে গুরুতর আহত অবস্থায় হাসপাতালে পাঠানো হয়। কাভার্ডভ্যানটি আটক করা হয়েছে।
এএম/
চট্টগ্রাম
রাতেও ট্রাফিক সামলাচ্ছেন ছাত্রীরা
সরকার পতনের পরে চট্রগ্রামে নগরীর থানাগুলো ফাঁকা পড়ে আছে। এ অবস্থায় নগরীর রাস্তায় নেই কোন ট্রাফিক পুলিশ। দিনভর রাস্তায় ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণ করেন সরকার পতনের আন্দোলন করা শিক্ষার্থীরা। তবে দিন পেরিয়ে রাত হলেও, রাস্তায় ছাত্রদের পাশপাশি ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণ করতে দেখা যায় ছাত্রীদেরও।
মঙ্গলবার (৬ আগস্ট) চট্টগ্রাম নগরীর চকবাজার অলী খা মসজিদ মোড় এলাকায় এমন চিত্র দেখতে পায় গণমাধ্যম।
নগরীর অলী খা মসজিদ মোড়ে শৃঙ্খলা রক্ষার কাজ করা বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ফাইজা তাবাসসুম বলেন, দেশে ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থান হয়েছে। এখন দেশকে এগিয়ে নিতে সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে। নিজের দায়িত্ববোধের জায়গা থেকে এখানে আসা। সকালে শুনেছি সড়কে ট্রাফিক পুলিশ নেই। তাই তারা কাজ করতে এসেছেন।
আসিফুর রহমান নামে আরেক বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী জানান, শিফট সিস্টেম করে ছাত্ররা কাজ করছে। এখন তিনি দায়িত্ব পালন করছেন। নিজেদের ইচ্ছায় তারা এখানে এসেছেন।
আই/এ
চট্টগ্রাম
‘বালুখেকো’ চেয়ারম্যান সেলিম ও তার ছেলে গণপিটুনিতে নিহত
চাঁদপুর সদর উপজেলার লক্ষ্মীপুর মডেল ইউনিয়ন পরিষদের আলোচিত ‘বালুখেকো’ খ্যাত চেয়ারম্যান সেলিম খান ও তার ছেলে নায়ক শান্ত খান গনপিটুনিতে নিহত হয়েছেন।
সোমবার (৫ আগস্ট) শেখ হাসিনা পদত্যাগ করার পর নিজ এলাকা থেকে পালিয়ে যাওয়ার সময় বালিয়া ইউনিয়নের ফরক্কাবাদ বাজারে এসে জনগণের তোপের মুখে পড়েন তারা। এরপর সেখানে নিজের পিস্তল থেকে গুলি করে উদ্ধার হয়ে আসতে পারলেও পার্শ্ববর্তী বাগাড়া বাজারে এসে জনতার মুখোমুখি হয়। তারপর সেখানে জনগণের পিটুনিতে নিহত হোন সেলিম খান ও তার ছেলে শান্ত খান।
চাঁদপুর সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শেখ মুহসীন আলম গণমাধ্যমে বলেন, তাদের মৃত্যুর বিষয় জেনেছি। তবে কেউ খবর দেয়নি। আর জানমালের নিরাপত্তার কারণে সেখানে কাউকে পাঠানো হয়নি।
প্রসঙ্গত, আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে সেলিম খান চাঁদপুর নৌ-সীমানায় পদ্মা-মেঘনা নদীতে শত শত ড্রেজার দিয়ে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করে কোটি কোটি টাকার মালিক বনে যান। এসব ঘটনায় সে কারাভোগ করেন এবং দুদকে তার বিরুদ্ধে মামলা চলমান রয়েছে। সেলিম খান একজন আলোচিত প্রযোজকও। তিনি প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান শাপলা মিডিয়ার কর্ণধার।
এছাড়া সেলিম খানকে পদ্মা-মেঘনার চর থেকে বিভিন্ন সময় বালু তোলাসহ নানা কারণে চাঁদপুর সদর উপজেলার লক্ষ্মীপুর মডেল ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান পদ থেকে আজীবন বহিষ্কার করে আওয়ামী লীগ। ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতির দায়িত্ব পালন করছিলেন তিনি।
এএম/