বাংলাদেশ
রাশিয়ার সঙ্গে বৈঠকে বসতে চায় ইউক্রেন
সীমান্তে সেনা মোতায়েনের মাধ্যমে রাশিয়া আসলে কোন পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে চায়— তা স্পষ্টভাবে জানতে রাশিয়া ও ইউরোপের নিরাপত্তা সংস্থার গুরুত্বপূর্ণ সদস্যদের সঙ্গে আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে বৈঠকে বসতে চায় ইউক্রেন।
ইউক্রেনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী দিমিত্র কুলেবা বিবিসিকে এই তথ্য জানিয়ে বলেছেন, এর আগে সীমান্তে সেনা মোতায়েনের ব্যাখ্যা জানতে মস্কোকে আনুষ্ঠানিকভাবে অনুরোধ করেছিল কিয়েভ; কিন্তু মস্কো থেকে সেই অনুরোধের কোনো জবাব আসেনি।
‘তাই পরবর্তী পদক্ষেপ হিসেবে এই বৈঠক আহ্বান করা হয়েছে। আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে আমরা রাশিয়ার পরিকল্পনা সম্পর্কে স্পষ্টভাবে জানতে চাই।’
গত দুই মাসেরও বেশি সময় ধরে ইউক্রেন-রাশিয়া সীমান্তে প্রায় ১ লাখ রুশ সেনা মোতায়েন রেখেছে রাশিয়া। সীমান্তের পাশাপাশি ২০১৫ সালে ইউক্রেনের কাছে থেকে দখল নেওয়া দ্বীপ ক্রিমিয়াতেও সম্প্রতি বাড়ানো হয়েছে সেনা উপস্থিতি; এছাড়া গত সপ্তাহে কৃষ্ণ সাগরে সামরিক মহড়া শুরু করেছে রাশিয়া।
এই পরিস্থিতিতে খুবি স্বাভাবিকভাবেই উদ্বিগ্ন হয়ে উঠেছে ইউক্রেন ও পূর্ব ইউরোপের দেশগুলো। পশ্চিমা দেশগুলোর সামরিক জোট নর্থ আটলান্টিক ট্রিটি অর্গানাইজেশন (ন্যাটো), যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের দেশগুলোর আশঙ্কা, ইউক্রেনে যে কোনো সময় হামলা চালাতে পারে রাশিয়া। তবে এই আশঙ্কা উড়িয়ে দিয়ে মস্কো জানিয়েছে, ইউক্রেনে হামলার কোনো পরিকল্পনা রাশিয়ার নেই।
সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নের অঙ্গরাজ্য ও রাশিয়ার প্রতিবেশীরাষ্ট্র ইউক্রেন কয়েক বছর আগে ন্যাটোর সদস্যপদের জন্য আবেদন করার পর থেকেই উত্তেজনা শুরু হয়েছে রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে। সম্প্রতি ন্যাটো ইউক্রেনকে সদস্যপদ না দিলেও ‘সহযোগী দেশ’ হিসেবে মনোনীত করার পর আরও বেড়েছে এই উত্তেজনা।
১৯৪৯ সালে গঠিত ন্যাটোকে রাশিয়া বরাবরই পাশ্চাত্য শক্তিসমূহের আধিপত্য বিস্তারের হাতিয়ার হিসেবে মনে করে; এবং ঐতিহাসিকভাবেই বিশ্বের বৃহত্তম দেশ রাশিয়া পাশ্চাত্য আধিপিত্যবাদের বিরোধী।
এদিকে, লন্ডনে নিযুক্ত ইউক্রেনের রাষ্ট্রদূত ভ্যাদিম প্রিসতাইকো বিবিসিকে গতকাল জানিয়েছেন, রাশিয়ার সঙ্গে যুদ্ধ এড়াতে ইউক্রেন ন্যাটোর সদস্যপদের আবেদন প্রত্যাহার করার বিষয়টি বিবেচনা করতে প্রস্তুত; কিন্তু একই সঙ্গে তিনি বলেন, একটি স্বাধীন ও সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে ন্যাটোর সদস্যপদের জন্য আবেদন করা ইউক্রেনের সাংবিধানিক অধিকার।
সোমবার বিবিসিকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে ইউক্রেনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী দিমিত্র কুলেবা জানান, ইউরোপের দেশগুলোর প্রতিরক্ষা ও নিরাপত্তা বিষয়ক সংস্থা অর্গানাইজেশন ফর সিকিউরিটি অ্যান্ড কোঅপারেশন ইন ইউরোপ (ওএসসিই) মাধ্যমে রাশিয়াকে বৈঠকের আহ্বান জানানো হবে।
ওএসসিইর সদস্য রাষ্ট্ররা পরস্পরের সামরিক তৎপরতা নিয়ে একে অন্যকে প্রশ্ন করতে পারে। রাশিয়া নিজেও এই সংস্থার সদস্য।
বিবিসিকে কুলেবা বলেন, ‘রাশিয়া যদি সত্যিই ওসসিইকে গুরুত্ব দিয়ে থাকে, তাহলে অবশ্যই সংস্থার নিয়ম অনুযায়ী সীমান্তে সেনা মোতায়েনের কারণ স্পষ্টভাবে ব্যাখ্যা করবে মস্কো।’
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদমির জেলেনস্কি অবশ্য জানিয়েছেন, আসছে দিনগুলোতে রাশিয়া ইউক্রেনে হামলা চালাতে পারে- এমন কোনো প্রমাণ তিনি পাননি।
রোববার জেলেনস্কির সঙ্গে প্রায় ১ ঘণ্টা টেলিফোনে কথা বলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। এ সময় ইউক্রেনের প্রতি ‘অটুট সমর্থনের’ প্রতিশ্রুতি দেন তিনি।
জবাবে জেলেনস্কি ধন্যবাদ জানিয়ে বাইডেনকে ইউক্রেন সফরের আমন্ত্রণ জানান। তবে মার্কিন প্রেসিডেন্ট সেই আবেদন গ্রহণ করেছেন কিনা— সে বিষয়ে এখনও কিছু বলেনি হোয়াইট হাউস।
এসআই/
জাতীয়
শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা জানালেন অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টারা
শপথ নেয়ার পরের দিন ভাষা শহীদদের স্মরণে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা নিবেদন করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টারা।
শুক্রবার (৯ আগস্ট) বেলা ১১টার দিকে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ১৩ জন উপদেষ্টা নিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।
এর আগে, সাভারে জাতীয় স্মৃতিসৌধে মহান মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান ও অন্য উপদেষ্টারা।
গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান হিসেবে শপথ নেন ড. মুহাম্মদ ইউনূস। দায়িত্ব নেওয়ার পর তিনি এক নতুন বাংলাদেশ উপহার দেওয়ার অঙ্গীকার করেন।
আই/এ
জাতীয়
উপদেষ্টা পরিষদকে অভিনন্দন জানালেন জাসদ
জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল—জাসদের সভাপতি হাসানুল হক ইনু ও সাধারণ সম্পাদক শিরীন আখতার অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মোহাম্মদ ইউনুস এবং অন্য উপদেষ্টাদেরকে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়েছেন
বৃহস্পতিবার ( ৮ আগস্ট ) রাতে দলের পক্ষ থেকে পাঠানো এক বিবৃতিতে এ অভিনন্দন জানান তারা।
বিবৃতিতে জানানো হয়, “অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দায়িত্ব গ্রহণ করার পর দেশে আর একটিও প্রাণহানি, হামলা ও সম্পদ ধ্বংসের ঘটনা যেন না ঘটে তা নিশ্চিত হবে।”
বিবৃতিতে আরও বলেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার রাষ্ট্রীয় চার মূলনীতিসহ সংবিধানকে সমুন্নত রেখে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন এবং রাজনৈতিক ও সামাজিক শক্তির সাথে আলোচনা করে সরকারের কর্ম পরিকল্পনার রূপরেখা দ্রুত প্রকাশ করে বিদ্যমান অনিশ্চয়তা ও অস্থিরতা প্রশমিত করবেন।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রাথমিক ও প্রধান কাজ হিসেবে অনতিবিলম্বে দেশে আইনশৃঙ্খলা পুনঃপ্রতিষ্ঠা করার এবং জনগণের জানমালের নিরাপত্তা নিশ্চিত করে জনজীবনে স্বাভাবিকতা ও শান্তি ফিরিয়ে আনতে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানিয়েছেন।
জাসদ নেতৃবৃন্দ অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নিহত শিক্ষার্থী, সাধারণ মানুষ, সাংবাদিক পুলিশ বাহিনীর সদস্যসহ প্রতিটি হত্যাকাণ্ডের সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার নিশ্চিত করার আহ্বান জানান।
জাসদ জোর দাবি জানান, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে পূর্ববর্তী সরকারের পদত্যাগের পর দেশের বিভিন্ন স্থানে চলমান বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও পুলিশ বাহিনীর সদস্যসহ পেশাজীবী ও হিন্দু ও আহমদীয়াসহ ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের ওপর হামলা ও হত্যা করা, মন্দিরসহ ধর্মীয় স্থাপনায় হামলা, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের কার্যালয়ে ও নেতাকর্মীদের বাসাবাড়িতে হামলা-হত্যা-নির্যাতন, ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান ও ঘরবাড়িতে হামলা ও অগ্নিসংযোগ, সংসদ ভবন ও প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় ও গণভবনসহ বিভিন্ন সরকারি স্থাপনায় হামলা, ভাঙচুর, লুটপাট, অগ্নিসংযোগ, ধানমন্ডি ৩২ নম্বরের ঐতিহাসিক বঙ্গবন্ধু ভবন-বঙ্গবন্ধু জাদুঘরে হামলা, লুটপাট, জ্বালিয়ে ছারখার, দেশের বিভিন্ন স্থানে বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য, সাত বীরশ্রেষ্ঠর ভাস্কর্যসহ ভাষা আন্দোলন, স্বাধীনতা সংগ্রাম ও মুক্তিযুদ্ধের স্মারক ভাস্কর্য ও ম্যুরাল ভেঙে ফেলা এবং কুমিল্লার বীরচন্দ্র পাঠাগার, সুনামগঞ্জের ঐতিহ্য জাদুঘর, কুড়িগ্রামের উত্তরবঙ্গে মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর, ময়মনসিংহের ঐতিহাসিক শশীলজের ভেনাস ভাস্কর্য ভেঙে ফেলাসহ অগনিত শিল্পকর্ম ভেঙে ফেলার সব অপরাধ কাণ্ডের সঙ্গে যুক্ত দায়ী ব্যক্তিদের দ্রুত আইনের আওতায় আনার।
জেডএস/
জাতীয়
তদবির থেকে বিরত থাকুন, দেশগঠনে পরামর্শ দিন : আসিফ মাহমুদ
নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে গঠিত হয়েছে ১৭ সদস্যের অন্তবর্তীকালীন সরকার। এ উপদেষ্টা পরিষদে স্থান পেয়েছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের দুইজন প্রতিনিধি। এদের একজন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আসিফ মাহমুদ। তিনি উপদেষ্টা হিসেবে শপথ নেয়ার পর ঘনিষ্ঠজনদের নিজেদের সুবিধার জন্য কোনো আবদার কিংবা তদবির করতে বারণ করেছেন। বরং দেশগঠনে কোনো পরামর্শ থাকলে দেয়ার অনুরোধ করেছেন।
বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) দিবাগত রাতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এক পোস্ট করে এ অনুরোধ করেন।
পোস্টে এই তরুণ উপদেষ্টা লিখেছেন, ব্যক্তিগত লাভের আশায় আবদার, তদবির করা থেকে বিরত থাকুন। এতে করে আমার সাথে আপনার সম্পর্ক নষ্ট হতে পারে। দেশগঠনে পরামর্শ থাকলে জানাবেন।
বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) রাতে নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে ১৭ জনকে নিয়ে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন করা হয়। প্রধান উপদেষ্টা ও অন্য উপদেষ্টাদের শপথ পাঠ করান রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। ঢাকার বাইরে থাকায় তিন উপদেষ্টা ফারুক-ই-আযম, বিধান রঞ্জন রায় এবং সুপ্রদীপ চাকমা শপথ অনুষ্ঠানে উপস্থিত হতে পারেননি।
সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ছাড়া অন্যান্য উপদেষ্টারা হলেন- ১. সালেহ উদ্দিন আহমেদ ২. ড. আসিফ নজরুল ৩. আদিলুর রহমান খান ৪. হাসান আরিফ ৫. তৌহিদ হোসেন ৬. সৈয়দা রেজওয়ানা হাসান ৭. মো. নাহিদ ইসলাম ৮. আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া ৯. ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এম সাখাওয়াত হোসেন ১০. সুপ্রদীপ চাকমা ১১. ফরিদা আখতার ১২. বিধান রঞ্জন রায় ১৩. আ.ফ.ম খালিদ হাসান ১৪. নুরজাহান বেগম ১৫. শারমিন মুরশিদ ১৬. ফারুক-ই-আযম।
জেএইচ