এশিয়া
দিল্লি ঘোষণাপত্রে যেসব বিষয়ে ঐকমত্য হলেন বিশ্বনেতারা
ভারতের নয়াদিল্লিতে জি-২০ শীর্ষ সম্মেলনে মতৈক্যের ভিত্তিতে ঘোষণাপত্র জারি করা হয়েছে। রাশিয়া-ইউক্রেন নিয়েও সেখানে অনেক বিষয় তুলে ধরা হয়েছে।
জি-২০ সম্মেলন নিয়ে সবচেয়ে বড় প্রশ্নটা ছিল, এখানে কোনো ঘোষণাপত্র জারি করা যাবে কি না? কারণটা হলো—ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়ে মতবিরোধ। পশ্চিমা দেশগুলো ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রাসনের তীব্র নিন্দা করার পক্ষে ছিল। কিন্তু রাশিয়া, চীন তা মানতে রাজি ছিল না। ভারত এ যুদ্ধে কারো পক্ষই নেয়নি। ফলে তারা এমন একটা অবস্থান নিতে চাইছিল, যাতে সর্বসম্মতভাবে বিষয়টি নিয়ে এগোনো যায়। আর এটাই ছিল ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও কূটনীতিকদের পরীক্ষা ও চ্যালেঞ্জ। শেষপর্যন্ত সেই পরীক্ষায় তারা সফল হয়েছেন। সবার সম্মতিতে ঘোষণাপত্র গৃহীত হয়েছে।
ঘোষণাপত্রে কী বলা হয়েছে?
ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়ে দিল্লি ঘোষণাপত্রে মোট সাতটি পয়েন্ট আছে। দিল্লি ঘোষণাপত্রে বলা হয়েছে, ‘বিশ্বে যুদ্ধ ও অন্য সংঘাতের বিরূপ প্রতিক্রিয়া হচ্ছে। মানুষের কষ্ট বাড়ছে বলে আমরা উদ্বেগের সঙ্গে লক্ষ্য করছি। ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়ে আমরা বালিতে যে আলোচনা করেছিলাম, তা মনে করিয়ে দিয়ে আবার বলতে চাই—আমরা আমাদের জাতীয় অবস্থানের কথা বলেছি এবং জাতিসংঘের সাধারণ সভা ও নিরাপত্তা পরিষদে যে প্রস্তাব নেয়া হয়েছিল, সেগুলোর কথা বলেছি। সেখানে বলা হয়েছে, কোনো দেশ যেন জোর করে অন্য দেশের জমি অধিকার এবং আঞ্চলিক অখণ্ডতা, সার্বভৌমত্ব ও রাজনৈতিক স্বাধীনতা খর্ব করার চেষ্টা না করে। পরমাণু অস্ত্র ব্যবহারের হুমকি একেবারেই মানা যায় না।’
ঘোষণাপত্রে উল্লেখ করা হয়, ‘জি-২০ হলো আন্তর্জাতিক আর্থিক সহযোগিতার মঞ্চ। এটা কোনো ভূ-রাজনৈতিক ও নিরাপত্তা সংক্রান্ত সমস্যা সমাধানের মঞ্চ নয়। কিন্তু আমরা বিশ্বাস করি, এ বিষয়গুলোর একটা বড় প্রভাব বিশ্বের অর্থনীতির ওপর পড়ে।’
দিল্লি ঘোষণাপত্রে স্পষ্ট বলা হয়েছে, ‘ইউক্রেন যুদ্ধের নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে বিশ্বের খাদ্য ও জ্বালানি নিরাপত্তায়, সরবরাহ শৃঙ্খলা, মুদ্রাস্ফীতি ও বৃদ্ধির ওপর। কম উন্নত ও উন্নয়নশীল দেশগুলো এখনও কোভিড ১৯-এর ধাক্কা সামলে উঠতে পারেনি, তারা আরও চাপের মধ্যে পড়েছে।’
তুরস্কের প্রয়াসের প্রশংসা করে বলা হয়, ‘রাশিয়া ও জাতিসংঘের সচিবালয়ের মধ্যে যে ইস্তাম্বুল সমঝোতা চুক্তি হয়েছিল, তাতে রাশিয়ার খাদ্যসামগ্রী ও সার যাতে বিশ্ববাজারে আসে এবং ইউক্রেনের বন্দর থেকে খাদ্যশস্য যাতে বাইরে আসতে পারে তা নিয়ে সমঝোতা হয়। আমরা চাই, রাশিয়া ও ইউক্রেন থেকে খাদ্যশস্য ও সার যেন সময়মতো বিশ্ববাজারে আসতে পারে, তা নিশ্চিত করতে হবে। এটা আফ্রিকার উন্নয়নশীল ও কম উন্নত দেশের চাহিদা।’
এ প্রসঙ্গ টেনেই খাদ্য ও জ্বালানি সুরক্ষার কথা বলা হয়েছে ঘোষণাপত্রে। সেখানে বলা হয়েছে, ‘আমরা আবেদন জানাই, পরিকাঠামোর ওপর আঘাত যেন না করা হয়। এই সংঘাতের প্রভাব যেভাবে বেসামরিক মানুষের ওপর পড়ছে এবং তার ফলে সামাজিক ও অর্থনৈতিক ভঙ্গুর অবস্থা তৈরি হচ্ছে, তাতে আমরা গভীরভাবে চিন্তিত।’
ঘোষণাপত্রে আরও বলা হয়, ‘আমরা সব দেশের কাছে আবেদন জানাচ্ছি, তারা যেন আন্তর্জাতিক আইন, আঞ্চলিক অখণ্ডতা ও সার্বভৌমত্ব মেনে চলে। শান্তি ও স্থিরতাকে অক্ষুণ্ন রাখে। তারা যেন আলোচনা ও কূটনীতির মাধ্যমে সংঘাতের শান্তিপূর্ণ সমাধান করে। বিশ্বের অর্থনীতির ওপর যুদ্ধের প্রভাবের মোকাবিলায় আমরা ঐক্যবদ্ধ থাকব। ইউক্রেনে দীর্ঘস্থায়ী শান্তির জন্য যেকোনো গঠনমূলক উদ্যোগ আমরা সমর্থন করব। জাতিসংঘের চার্টার মেনে শান্তি, বন্ধুত্ব ও সু-প্রতিবেশীসুলভ সম্পর্ক বাড়ানো এবং এক বিশ্ব, এক পরিবার ও এক ভবিষ্যৎ নীতির পক্ষে থাকব আমরা।’
কী করে মতৈক্য হলো?
ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ‘মতৈক্যের পেছনে অনেক সময় ব্যয় করতে হয়েছে। প্রচুর আলোচনা হয়েছে। সবাই সহযোগিতা করেছে। তারপর ঘোষণাপত্র নিয়ে মতৈক্য হয়েছে। পুরো বিষয়টার মধ্যে স্বচ্ছ্বতা ছিল।’
আর বর্তমানে ভারতের প্রেসিডেন্সিতে জি-২০ শেরপা অমিতাভ কান্ত বলেন, ‘ব্রাজিল, দক্ষিণ আফ্রিকা, ইন্দোনেশিয়ার সঙ্গে এ ব্যাপারে ভারত খুবই ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করেছে। আলোচনা খুবই কঠোর ও সংকল্পবদ্ধ ছিল। অবশেষে বিষয়টি নিয়ে মতৈক্য হয়েছে। আমরা বলেছি—আমাদের নেতারা চান, তাই আমাদের একমত হতেই হবে।’
সূত্র: ডয়চে ভেলে
এশিয়া
জাপানে ৭.১ মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্প
জাপানের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় এলাকায় রিখটার স্কেলে ৭ দশমিক ১ মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্প আঘাত হেনেছে।
বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) স্থানীয় সময় বিকেল ৪টা ৪৩ মিনিটের দিকে পশ্চিমাঞ্চলীয় প্রধান দ্বীপ কিয়ুশুর মিয়াজাকি অঞ্চলে ভূমিকম্পটি আঘাত হানে।
জাপানের আবহাওয়া সংস্থার (জেএমএ) বরাত দিয়ে দেশটির রাষ্ট্রায়ত্ত সংবাদমাধ্যম এনএইচকে ওয়ার্ল্ড এ তথ্য জানিয়েছে।
খবরে বলা হয়েছে, ভূমিকম্পের পর দেশটিতে সুনামির সতর্কতা জারি করা হয়েছে। মিয়াজাকিতে সমুদ্রের ঢেউ ইতোমধ্যে ৫০ সেন্টিমিটারে পৌঁছেছে। তবে তাৎক্ষণিকভাবে বড় ধরনের কোনো ক্ষয়ক্ষতি কিংবা হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি।
এ বিষয়ে দেশটির মন্ত্রিপরিষদের মুখ্য সচিব ইয়োশিমাসা হায়াশি গণমাধ্যমকে বলেন, ভূমিকম্পের পর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্ল্যান্টগুলোতে কোনো ধরনের অস্বাভাবিক ঘটনা দেখা যায়নি। সরকার ভূমিকম্পে ক্ষয়ক্ষতি ও হতাহতের বিষয়ে খোঁজখবর নিচ্ছে।
প্রসঙ্গত, জাপানে ভূমিকম্পের ঘটনা একেবারে সাধারণ। বিশ্বে ৬ বা তার চেয়ে বেশি মাত্রার ভূমিকম্পের প্রায় এক-পঞ্চমাংশই এদেশে ঘটে থাকে।
এর আগে, ২০১১ সালের ১১ মার্চ দেশটির উত্তর-পূর্ব উপকূলে ৯ মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্প আঘাত হানে। যেটি ছিলো জাপানের ইতিহাসে সবচেয়ে শক্তিশালী ভূমিকম্প। ওই সময় ভূমিকম্পের পর দেশটিতে বিশাল সুনামি আঘাত হানে।
সূত্র: রয়টার্স
জিএমএম/
এশিয়া
শেখ হাসিনা দেশ ছাড়ার পর যা বললেন পুতুল
ছাত্র-জনতার ব্যাপক বিক্ষোভের মুখে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে ক্ষমতাচ্যুত হয়ে ভারতে আশ্রয় নিয়েছেন শেখ হাসিনা। দেশে গঠিত হচ্ছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার।
রাজনৈতিক পটপরিবর্তনে মায়ের পদত্যাগ ও দেশত্যাগ নিয়ে এবার মুখ খুলেছেন মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ পুতুল। জানিয়েছেন তার প্রতিক্রিয়া।
বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে সরে যেতে বাধ্য হওয়ার পর সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম এক্সে এ বিষয়ে আবেগঘন পোস্ট দিয়েছেন মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ পুতুল।
পোস্টে তিনি লিখেছেন, আমার দেশ বাংলাদেশ যাকে আমি ভালোবাসি, সেখানে প্রাণহানির ঘটনায় হৃদয় ভেঙে গেছে। আরও হৃদয়বিদারক যে, আমি এই কঠিন সময়ে আমার মাকে দেখতে ও আলিঙ্গন করতে পারিনি। আমি আরডি হিসেবে আমার দায়িত্ব পালনের বিষয়ে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ রয়েছি।
প্রসঙ্গত, সায়মা ওয়াজেদ পুতুল বর্তমানে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার আঞ্চলিক পরিচালক হিসেবে দায়িত্বপালন করছেন।
জিএমএম/
এশিয়া
ভারতীয় গণমাধ্যম বাংলাদেশ নিয়ে গুজব ছড়াচ্ছে: পশ্চিমবঙ্গ পুলিশ
বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে ভারতের স্থানীয় গণমাধ্যমে গুজব ছড়ানো হচ্ছে। জানিয়েছে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ পুলিশ। এ ব্যাপারে রাজ্যের বাসিন্দাদের সতর্ক থাকার আহ্বান জানানো হয়েছে।
মঙ্গলবার (৬ আগস্ট) পশ্চিমবঙ্গ পুলিশের ফেসবুক পেজে দেওয়া এক পোস্টে এ আহ্বান জানানো হয়।
পোস্টে বলা হয়, কিছু স্থানীয় টিভি চ্যানেলে বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে যেভাবে রিপোর্টিং হচ্ছে, তা খুবই দৃষ্টিকটুভাবে সাম্প্রদায়িক উস্কানিমূলক এবং ভারতের প্রেস কাউন্সিলের নিয়মাবলীর পরিপন্থী। দর্শকদের অনুরোধ, এই ধরনের কভারেজ দেখার সময় নিজস্ব বিচারবিবেচনা প্রয়োগ করুন এবং মাথায় রাখুন যে, চ্যানেলের দেখানো ফুটেজের সত্যতা কিন্তু কোনও নিরপেক্ষ তৃতীয় সংস্থা দিয়ে যাচাই করা নয়। একতরফা বিদ্বেষমূলক এবং বিভ্রান্তিকর প্রচারের ফাঁদে পা দেবেন না। শান্ত থাকুন, শান্তি বজায় রাখুন।
সোমবার (৫ আগস্ট) পদত্যাগ করে ভারত চলে যান বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এরপর থেকেই ভারতীয় বিভিন্ন গণমাধ্যমে হিন্দুদের বাড়িঘরে হামলার মিথ্যা তথ্য ছড়ানো শুরু করে।
এমনকি বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের খেলোয়াড় লিটন দাসের বাড়িতে হামলা হয়েছে বলে খবর বের হয়। পরে জানা যায়, মাশরাফির বাড়িতে হামলার ভিডিও ব্যবহার করে সেটি লিটন দাসের বাড়ি বলে গুজব ছড়ানো হয়েছে।
জিএমএম/