এশিয়া
কিমের সবুজ রঙের রহস্যময় সেই ট্রেন!
বিশ্বের বিভিন্ন গণমাধ্যম থেকে জানা গেছে, সোমবার (১১ সেপ্টেম্বর) ট্রেনে করে রাশিয়ার উদ্দেশ্যে রওনা দিয়েছেন বিশ্বের অন্যতম পারমাণবিক শক্তিধর দেশ উত্তর কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট কিম জং উন।
আর রাশিয়া ভ্রমণ মানেই বাবার কাছ থেকে উত্তরাধিকার সূত্রে পাওয়া ভারী অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত একটি বিলাসবহুল ট্রেনে চেপে বসেন কিম। চার বছর আগে সর্বশেষ বিদেশ সফরে তিনি রাশিয়াতেই গিয়েছিলেন এই ট্রেনে চেপেই।
উত্তর কোরিয়ার অন্য অনেক বিষয়ের মতো কিমের সবুজ রঙের রহস্যময় সেই ট্রেন সম্পর্কেও খুব কমই জানা যায়।
তারপরও ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি এক প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, ট্রেনটির উল্লেখযোগ্য বৈশিষ্ট্য হলো-তার ধীর গতি। ট্রেনটির সর্বোচ্চ গতি ঘণ্টায় ৩৭ মাইল বা ৬০ কিলোমিটার। ধারণা করা হয়, খুব ভারী হওয়ার কারণেই এ ট্রেনের গতি কম।
উত্তর কোরিয়ার রাজধানী পিয়ংইয়ং থেকে ভ্লাদিভস্টক পর্যন্ত দূরত্ব হলো প্রায় ৪৩০ কিলোমিটার। তার মানে সর্বোচ্চ গতিতে চললেও কিমকে নিয়ে গন্তব্যে পৌঁছাতে অন্তত ১১ ঘণ্টা ৪০ মিনিট সময় লাগবে ট্রেনটির। কিন্তু সর্বোচ্চ গতিতে তো আর সব সময় চালানো সম্ভব না। বেশ কিছু পাহাড়ি উপত্যকা আর ধীর গতির লাইন দিয়ে রাশিয়ায় পৌঁছাতে হয় ট্রেনটিকে। ২০১৮ সালে পিয়ংইয়ং থেকে ভ্লাদিভস্টক যেতে কিমের সময় লেগেছিল প্রায় ২০ ঘণ্টা।
দক্ষিণ কোরিয়ার সংবাদপত্র চোসুন ইলবোর ২০০৯ সালের খবর অনুযায়ী, ট্রেনটিতে মোট ৯০টি বগি রয়েছে। আর প্রতিটি বগিই যেন একেকটি ভারী সাঁজোয়া যান। এসব বগিতে অন্যান্য যানও বহন করা হয়। এর মধ্যে কিমের ব্যক্তিগত ব্যবহারের জন্য অস্ত্র সজ্জিত দুটি মার্সিডিজও থাকে।
কিমের ট্রেনে অনেক বিলাসবহুল ব্যবস্থাও রয়েছে। ট্রেনের ভেতর তিনি অনেক চিত্তাকর্ষক সময় কাটান। উত্তর কোরিয়ার রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যমগুলোতে প্রকাশিত বিভিন্ন ছবিতে দেখা গেছে, ট্রেনের ভেতর গোলাপি চামড়ার সোফা এবং মজবুত কাঠের আসবাব ব্যবহার করা হয়েছে। আর ট্রেনে পর্যাপ্ত পরিমাণে মদ সরবরাহেরও ব্যবস্থা আছে। মিটিং করার জন্য রয়েছে লম্বা একটি টেবিল।
ট্রেনটির সবচেয়ে বিশদ বর্ণনাগুলোর মধ্যে একটি এসেছে কনস্ট্যান্টিন পুলিকভস্কির কাছ থেকে। তিনি একজন রুশ কর্মকর্তা এবং কিমের বাবা কিম জং ইলের সঙ্গে এই ট্রেনে চড়েছিলেন। ‘ওরিয়েন্ট এক্সপ্রেস’ নামে একটি বইয়ে ইলের সঙ্গে রাশিয়ার দূরপ্রাচ্যে ভ্রমণের স্মৃতিচারণ করেছেন পুলিকভস্কি। ট্রেনের মধ্যে সরবরাহ করা খাবারের বর্ণনা দিতে গিয়ে তিনি লিখেছিলেন—রাশিয়ান, চায়নিজ, কোরিয়ান, জাপানি এবং ফরাসি খাবারের যে কোনো ডিশ সেখানে অর্ডার করা সম্ভব। এছাড়া এতে ফ্রান্স থেকে আনা ওয়াইনও ছিল।
পুলিকভস্কি আরও জানান, ট্রেনের সম্মানিত যাত্রীদের বিনোদনের জন্য বেশ কিছু তরুণী গায়িকা ছিলেন। যাদেরকে ‘লেডি কন্ডাক্টর’ হিসাবে পরিচয় করিয়ে দেওয়া হয়েছিল।
এ সামরিক কর্মকর্তা তার আত্মজীবনীতে এমনকি বলেছিলেন, ‘পুতিনের ব্যক্তিগত ট্রেনেও এসব সুযোগ-সুবিধা নেই যা এ ট্রেনে আছে।’
রাশিয়ার অপর এক কূটনীতিক, জর্জি তোলোরায়া, ২০১৯ সালে এক লেখনিতে ২০০১ সালে ট্রেনটিতে চড়ার অভিজ্ঞতা সম্পর্কে জানিয়েছিলেন। তিনি বলেছিলেন, ট্রেনটির ভেতর সুস্বাদু গাধার মাংস এবং এক ধরনের ঝিনুক ছিল। এছাড়া রাশিয়ান মদও ছিল এতে।
এই দুইজনেরই লেখা থেকে জানা গেছে, ট্রেনের যাত্রীদের বিনোদনের জন্য সঙ্গীত শিল্পীসহ আরও অনেক ব্যবস্থা ছিল।
উত্তর কোরিয়ার রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম জানিয়েছিল, ২০১১ সালে এই ট্রেনের ভেতরই হার্টঅ্যাটাক করে মারা গিয়েছিলেন কিম জং দুই।
২০০৯ সালে দক্ষিণ কোরিয়ার সংবাদমাধ্যম ডেইলি কোসুন এক প্রতিবেদনে জানিয়েছিল, এই ট্রেনটিতে ৯০টির মতো বগি আছে। সবুজ রঙ ও হলুদ রঙের ডোরা কাটা এই ট্রেনটির ভেতর কনফারেন্স রুম, অডিয়েন্স চেম্মার এবং বেডরুম রয়েছে। এছাড়া এতে স্যাটেলাইট ফোন এবং বড় আকারের টেলিভিশনের পর্দা আছে।
এছাড়া ট্রেনটির প্রকাশিত কয়েকটি ছবিতে দেখা গেছে এতে চামড়ার তৈরি চেয়ার রয়েছে।
কিমের নিরাপত্তা দিতে ট্রেনটির মধ্যে একটি বাহিনীও রয়েছে। এই বাহিনী অন্যান্য প্রেসিডেন্টকে নিরাপত্তা দেওয়া বাহিনীর তুলনায় অনেকাংশেই বড়।
দক্ষিণ কোরিয়ার চোসুন ইলবো পত্রিকায় বলা হয়েছে, সম্ভাব্য হুমকি খতিয়ে দেখতে অন্তত ১০০ জনের একটি নিরাপত্তা এজেন্টের দল ট্রেনটি পৌঁছানোর আগেই সামনের স্টেশনগুলোতে পৌঁছে যায়। এ ছাড়া এটি যেসব স্টেশনের মধ্য দিয়ে যায় সেখানে বিদ্যুৎ বন্ধ করে দেয়া হয় যেন, অন্যান্য রেল রুটগুলো দিয়ে অন্য কোনো ট্রেন চলাচল করতে না পারে।
সোভিয়েত নির্মিত দুটি সামরিক হেলিকপ্টার ট্রেনের যাত্রাপথে টহল দিয়ে বেড়ায়। ট্র্যাকগুলো নিরাপদ কি-না তা নিশ্চিত করতে কিমের আগে আরেকটি ট্রেন থাকে। শুধু তাই নয়, কিমের ট্রেনের পেছনে থাকে তৃতীয় আরেকটি ট্রেন। এই ট্রেনে মূলত বিভিন্ন কর্মী এবং দেহরক্ষীরা থাকেন। পাশাপাশি কোনও সম্ভাব্য আক্রমণের দিকেও তারা নজর রাখেন।
উত্তর কোরিয়ায় অন্তত ২০টি স্টেশন রয়েছে যেগুলো শুধুমাত্র বিশেষ ওই ট্রেনটিই ব্যবহার করে।
জানা যায়, উত্তর কোরিয়ার বর্তমান প্রেসিডেন্ট কিম জং উনের দাদা উত্তর কোরিয়ার প্রতিষ্ঠাতা কিম ইল সাং-এর সময় এ ট্রেনের যাত্রা শুরু হয়। তিনি ট্রেনটিতে করে ভিয়েতনাম এবং পূর্ব ইউরোপের দেশগুলোতে গিয়েছিলেন।
একটি মতবাদ ছিল, কিমের বাবা কিম জং ইল বিমানে চড়তে ভয় পেতেন। তাই কোথাও সফরে গেলে ট্রেনই ছিল তার ভরসা।
এশিয়া
জাপানে ৭.১ মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্প
জাপানের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় এলাকায় রিখটার স্কেলে ৭ দশমিক ১ মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্প আঘাত হেনেছে।
বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) স্থানীয় সময় বিকেল ৪টা ৪৩ মিনিটের দিকে পশ্চিমাঞ্চলীয় প্রধান দ্বীপ কিয়ুশুর মিয়াজাকি অঞ্চলে ভূমিকম্পটি আঘাত হানে।
জাপানের আবহাওয়া সংস্থার (জেএমএ) বরাত দিয়ে দেশটির রাষ্ট্রায়ত্ত সংবাদমাধ্যম এনএইচকে ওয়ার্ল্ড এ তথ্য জানিয়েছে।
খবরে বলা হয়েছে, ভূমিকম্পের পর দেশটিতে সুনামির সতর্কতা জারি করা হয়েছে। মিয়াজাকিতে সমুদ্রের ঢেউ ইতোমধ্যে ৫০ সেন্টিমিটারে পৌঁছেছে। তবে তাৎক্ষণিকভাবে বড় ধরনের কোনো ক্ষয়ক্ষতি কিংবা হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি।
এ বিষয়ে দেশটির মন্ত্রিপরিষদের মুখ্য সচিব ইয়োশিমাসা হায়াশি গণমাধ্যমকে বলেন, ভূমিকম্পের পর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্ল্যান্টগুলোতে কোনো ধরনের অস্বাভাবিক ঘটনা দেখা যায়নি। সরকার ভূমিকম্পে ক্ষয়ক্ষতি ও হতাহতের বিষয়ে খোঁজখবর নিচ্ছে।
প্রসঙ্গত, জাপানে ভূমিকম্পের ঘটনা একেবারে সাধারণ। বিশ্বে ৬ বা তার চেয়ে বেশি মাত্রার ভূমিকম্পের প্রায় এক-পঞ্চমাংশই এদেশে ঘটে থাকে।
এর আগে, ২০১১ সালের ১১ মার্চ দেশটির উত্তর-পূর্ব উপকূলে ৯ মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্প আঘাত হানে। যেটি ছিলো জাপানের ইতিহাসে সবচেয়ে শক্তিশালী ভূমিকম্প। ওই সময় ভূমিকম্পের পর দেশটিতে বিশাল সুনামি আঘাত হানে।
সূত্র: রয়টার্স
জিএমএম/
এশিয়া
শেখ হাসিনা দেশ ছাড়ার পর যা বললেন পুতুল
ছাত্র-জনতার ব্যাপক বিক্ষোভের মুখে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে ক্ষমতাচ্যুত হয়ে ভারতে আশ্রয় নিয়েছেন শেখ হাসিনা। দেশে গঠিত হচ্ছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার।
রাজনৈতিক পটপরিবর্তনে মায়ের পদত্যাগ ও দেশত্যাগ নিয়ে এবার মুখ খুলেছেন মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ পুতুল। জানিয়েছেন তার প্রতিক্রিয়া।
বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে সরে যেতে বাধ্য হওয়ার পর সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম এক্সে এ বিষয়ে আবেগঘন পোস্ট দিয়েছেন মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ পুতুল।
পোস্টে তিনি লিখেছেন, আমার দেশ বাংলাদেশ যাকে আমি ভালোবাসি, সেখানে প্রাণহানির ঘটনায় হৃদয় ভেঙে গেছে। আরও হৃদয়বিদারক যে, আমি এই কঠিন সময়ে আমার মাকে দেখতে ও আলিঙ্গন করতে পারিনি। আমি আরডি হিসেবে আমার দায়িত্ব পালনের বিষয়ে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ রয়েছি।
প্রসঙ্গত, সায়মা ওয়াজেদ পুতুল বর্তমানে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার আঞ্চলিক পরিচালক হিসেবে দায়িত্বপালন করছেন।
জিএমএম/
এশিয়া
ভারতীয় গণমাধ্যম বাংলাদেশ নিয়ে গুজব ছড়াচ্ছে: পশ্চিমবঙ্গ পুলিশ
বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে ভারতের স্থানীয় গণমাধ্যমে গুজব ছড়ানো হচ্ছে। জানিয়েছে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ পুলিশ। এ ব্যাপারে রাজ্যের বাসিন্দাদের সতর্ক থাকার আহ্বান জানানো হয়েছে।
মঙ্গলবার (৬ আগস্ট) পশ্চিমবঙ্গ পুলিশের ফেসবুক পেজে দেওয়া এক পোস্টে এ আহ্বান জানানো হয়।
পোস্টে বলা হয়, কিছু স্থানীয় টিভি চ্যানেলে বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে যেভাবে রিপোর্টিং হচ্ছে, তা খুবই দৃষ্টিকটুভাবে সাম্প্রদায়িক উস্কানিমূলক এবং ভারতের প্রেস কাউন্সিলের নিয়মাবলীর পরিপন্থী। দর্শকদের অনুরোধ, এই ধরনের কভারেজ দেখার সময় নিজস্ব বিচারবিবেচনা প্রয়োগ করুন এবং মাথায় রাখুন যে, চ্যানেলের দেখানো ফুটেজের সত্যতা কিন্তু কোনও নিরপেক্ষ তৃতীয় সংস্থা দিয়ে যাচাই করা নয়। একতরফা বিদ্বেষমূলক এবং বিভ্রান্তিকর প্রচারের ফাঁদে পা দেবেন না। শান্ত থাকুন, শান্তি বজায় রাখুন।
সোমবার (৫ আগস্ট) পদত্যাগ করে ভারত চলে যান বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এরপর থেকেই ভারতীয় বিভিন্ন গণমাধ্যমে হিন্দুদের বাড়িঘরে হামলার মিথ্যা তথ্য ছড়ানো শুরু করে।
এমনকি বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের খেলোয়াড় লিটন দাসের বাড়িতে হামলা হয়েছে বলে খবর বের হয়। পরে জানা যায়, মাশরাফির বাড়িতে হামলার ভিডিও ব্যবহার করে সেটি লিটন দাসের বাড়ি বলে গুজব ছড়ানো হয়েছে।
জিএমএম/