আইন-বিচার
দুর্নীতির তথ্য পেলে গণমাধ্যম রিপোর্ট করবে সেটাই স্বাভাবিক
দুর্নীতির তথ্য পেলে গণমাধ্যম রিপোর্ট করবে সেটাই স্বাভাবিক। এখানে নিষেধাজ্ঞা দেয়ার সুযোগ কোথায়? তবে প্রকাশিত রিপোর্ট সত্য না মিথ্যা কিংবা উদ্দেশ্যপ্রণোদিত কিনা সেটা বিচার করার জন্য সুনির্দিষ্ট আইন রয়েছে। বলেছেন আপিল বিভাগের বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিম।
বৃহস্পতিবার (১৪ সেপ্টেম্বর) চট্টগ্রাম ভিত্তিক এস আলম গ্রুপের মালিক মোহাম্মদ সাইফুল আলম ও তার স্ত্রী ফারজানা পারভীনের বিদেশে সম্পদের বিষয়ে সংবাদ, বিবৃতি, মতামত ও অনলাইনে কোনো রিপোর্ট ও ভিডিও প্রচারের বিষয়ে নিষেধাজ্ঞা চেয়ে করা আবেদনের শুনানি নিয়ে তিনি এ মন্তব্য করেন।
ইনায়েতুর রহিম বলেন, গণমাধ্যম কি রিপোর্ট করবে, কি রিপোর্ট করবে না সেক্ষেত্রে কি কোন নিষেধাজ্ঞা দেয়া যায়, যায় না। তবে সবারই নীতিমালা মেনে চলা উচিত।
এস আলমের কৌসুলি ব্যারিস্টার আজমালুল হোসেন কেসি আদালতে বলেন, এস. আলমের বিষয়ে একটা অভিযোগ এসেছে। যেটা একটা বিরোধপূর্ণ বিষয়। আমাদের মনে হচ্ছে এস. আলম নিয়ে একটা মিডিয়া ট্রায়াল হচ্ছে। এখন আমার বক্তব্য হলো, মিডিয়া ট্রায়াল চলবে না কোর্টের ট্রায়াল চলবে।
এ পর্যায়ে বিচারপতি ইনায়েতুর রহিম বলেন, সবাই আমরা মিডিয়া ট্রায়ালের শিকার। রায় পক্ষে গেলে ঐতিহাসিক, বিপক্ষে গেলে ফরমায়েশি এমনটাই দেখে আসছি। কোন রায় বা আদেশ দিলে একেক পক্ষে একেক রকম ব্যাখা দিয়ে থাকেন বিভিন্ন মাধ্যমে। এই সমস্ত বিষয় নিয়ে আমরা অসহায় অবস্থার মধ্যে আছি। এ কারণে আইনজীবীদের লক্ষ্য রাখা উচিত যাতে আদালতের মর্যাদা অক্ষুন্ন থাকে। কোনভাবেই সেটা ক্ষুন্ন না হয়। এটা রক্ষার দায়িত্বও বারের আইনজীবীদের।
গেলো ৪ আগস্ট ইংরেজি দৈনিক দ্য ডেইলি স্টার-এ “এস আলমস আলাদিনস ল্যাম্প” (এস আলমের আলাদিনের চেরাগ) শিরোনামে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। প্রতিবেদনে অনুমতি ছাড়া বিদেশে বিনিয়োগ বা অর্থ স্থানান্তর নিয়ে এস আলম গ্রুপের মালিক ও তার স্ত্রীর বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ অনুসন্ধান করে দুই মাসের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে রুল জারি করে হাইকোর্ট।
গেলো ৬ আগস্ট দেয়া ওই আদেশের বিরুদ্ধে এস আলম ও তার স্ত্রী আপিল বিভাগে লিভ টু আপিল করেন। ২৩ আগস্ট আপিল বিভাগের চেম্বার আদালত বিষয়বস্তু সম্পর্কে সব পক্ষকে স্থিতাবস্থা বজায় রাখতে আদেশ দেন এবং আপিল বিভাগের নিয়মিত বেঞ্চে লিভ টু আপিল শুনানির জন্য আগামী বছরের ৮ জানুয়ারি দিন ধার্য করে দেয়। ওই দিনই চেম্বার আদালতের আদেশ নিয়ে গণমাধ্যমে বক্তব্য রাখেন সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন। যিনি ডেইলি স্টারের রিপোর্টটি ৪ আগস্ট হাইকোর্টের নজরে আনেন।
যার প্রেক্ষিতে হাইকোর্ট এস. আলমের বিষয়ে অনুসন্ধানের নির্দেশ দেয়।
সম্প্রতি এস.আলমের উপর গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশের উপর নিষেধাজ্ঞা চেয়ে আবেদন দেয়। আজ এই আবেদনের শুনানিতে আজমালুল হোসেন কেসি বলেন, এভাবে এস. আলম সম্পর্কে বক্তব্য প্রদান কতটা সঠিক। আমি হাইকোর্টে যেতে পারছি না, কারণ চেম্বার আদালতের স্থিতিবস্থা আছে। সালাম মুর্শেদীর মামলায় গণমাধ্যমের ওপর সংবাদ প্রকাশে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে হাইকোর্ট। একই আদেশ আমরা প্রার্থনা করছি।
দুদক কৌসুলি খুরশীদ আলম বলেন, গণমাধ্যমের রিপোর্ট হলো আমাদের অন্যতম সোর্স। কমপক্ষে ৫০ ভাগ মিডিয়া রিপোর্টের ওপর ভিত্তি করে আমরা অনুসন্ধান করে থাকি। এখন মিডিয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা দেয়া হলে আমরা এই তথ্য-উপাত্ত পাব না।
এ পর্যায়ে বিচারপতি ইনায়েতুর রহিম বলেন, চেম্বার আদালতের স্থিতাবস্থার আদেশের পর তো কোন সংবাদ প্রকাশ করেনি। বিচারকে প্রভাবিত করে এমন কোন প্রতিবেদনও তো দেখতে পাচ্ছি না। নতুন করে যদি কিছু প্রকাশ করে তাহলে আপনার সংক্ষুব্ধ হওয়ার সুযোগ ছিলো। সংবাদ প্রকাশের ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞার দেয়ার মত কোন প্রাথমিক উপাদান দেখতে পাচ্ছি না।
তিনি বলেন, কেউ যদি যা ইচ্ছে তাই লিখে সেজন্য সুনির্দিষ্ট আইনে প্রতিকারের বিধান রয়েছে।
শুনানি শেষে আপিল বিভাগের চেম্বার বিচারপতি গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশের ওপর নিষেধাজ্ঞার আবেদনটি নথিভুক্তের আদেশ দেন। তবে আবেদনকারী চাইলে ৮ জানুয়ারি লিভ টু আপিলের সঙ্গে এ আবেদন শুনানির জন্য প্রধান বিচারপতির বেঞ্চে পেশ করার সুযোগ থাকবে। এ সময় এস. আলম গ্রুপের পক্ষে সিনিয়র আইনজীবী ব্যারিস্টার রোকন উদ্দিন মাহমুদ উপস্থিত ছিলেন।
আইন-বিচার
নতুন অ্যাটর্নি জেনারেল অ্যাডভোকেট আসাদুজ্জামান
রাষ্ট্রের প্রধান আইন কর্মকর্তা অ্যাটর্নি জেনারেল হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মো. আসাদুজ্জামান।
বৃহস্পতিবার (০৮ আগস্ট) রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন তাকে এ নিয়োগ দেন।
রাষ্ট্রপতির কার্যালয়ের সচিব মো. গোলাম সারওয়ার স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
এতে বলা হয়েছে, ‘রাষ্ট্রপতি বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের সিনিয় আইনজীবী মো. আসাদুজ্জামানকে পুনরাদেশ না দেয়া পর্যন্ত অ্যাটর্নি জেনারেল পদে নিয়োগ প্রদান করলেন।’
উল্লেখ্য, আ.লীগ সরকারের পতনের পর পদত্যাগ করেছেন অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন। বুধবার (০৭ আগস্ট) রাষ্ট্রপতির কাছে পদত্যাগপত্র জমা দেন তিনি। তার স্থলাভিষিক্ত হচ্ছেন মো. আসাদুজ্জামান।
২০২০ সালের ৮ অক্টোবর রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ এ এম আমিন উদ্দিনকে অ্যাটর্নি জেনারেল হিসেবে নিয়োগ প্রদান করেন। এর আগে তিনি ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন।
এসি//
আইন-বিচার
পদত্যাগ করেছেন অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল এস এম মুনীর
পদত্যাগ করেছেন অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল এস এম মুনীর। বৃহস্পতিবার (০৮ আগস্ট) অ্যাটর্নি জেনারেল অফিসে তিনি পদত্যাগপত্র জমা দেন।
পদত্যাগ করার বিষয়টি এস এম মুনীর নিজেই গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন।
এর আগে অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন ও আরেক অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল শেখ মো. মোরসেদ পদত্যাগ করেন।
২০২০ সালের ১ সেপ্টেম্বর সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সাবেক সম্পাদক এবং জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এস এম মুনীরকে অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয়।
প্রসঙ্গত, ছাত্র-জনতার চূড়ান্ত আন্দোলনের মুখে প্রধানমন্ত্রীর পদ ছেড়ে দেশত্যাগ করেন শেখ হাসিনা। গেলো ৫ আগস্ট দুপুর আড়াইটায় বঙ্গভবন থেকে একটি সামরিক হেলিকপ্টার তাকে নিয়ে ভারতের উদ্দেশ্যে যাত্রা করে। এ সময় তার সঙ্গে তার ছোট বোন শেখ রেহানা ছিলেন। ভারতে যাওয়ার আগে রাষ্ট্রপতির কাছে পদত্যাগপত্র দেন শেখ হাসিনা।
শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর থেকে বড় বড় পদে নিয়োগ পাওয়া কর্মকর্তাদের দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দেয়া হচ্ছে। আবার অনেকেই স্বেচ্ছায় পদত্যাগ করছেন।
এসি//
আইন-বিচার
সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণের সেই ভাস্কর্যটি উপড়ে ফেলা হয়েছে
সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণে হাইকোর্ট এনেক্স ভবনের সামনে থাকা গ্রিক দেবী থেমিসের ভাস্কর্যটি ভাঙচুরের পর উপড়ে ফেলা হয়েছে।তবে কে বা কারা ভাস্কর্যটি ভেঙেছে তা জানা যায়নি।
বুধবার (৭ আগস্ট) দুপুরে ভাস্কর্যটি মাটিতে পরে থাকতে দেখা যায়। এর আগে,গেলো মঙ্গলবার সকালে ইস্পাতের তৈরি ভাস্কর্যটির হাত ও দাঁড়িপাল্লা ধরে থাকা হাত ভাঙা অবস্থায় দেখা গিয়েছিলো।
সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসনের একাধিক কর্মকর্তা জানান, গ্রিক দেবী থেমিসের আদলে ন্যায়বিচারের প্রতীক হিসেবে গড়ে তোলা ভাস্কর্যটি ভেঙে ফেলা হয়েছে। তবে কে বা কারা এটি করেছেন, তা তাদের জানা নেই।
এর আগে ২০১৬ সালের ডিসেম্বরের তৃতীয় সপ্তাহে সুপ্রিম কোর্টে প্রবেশের মূল ফটকের বরাবর থাকা লিলি ফোয়ারায় প্রথমে ভাস্কর্যটি বসানো হয়। হেফাজতসহ কয়েকটি ইসলামি সংগঠনের দাবির মুখে ২০১৭ সালের মে মাসে ভাস্কর্যটি সরিয়ে এনেক্স ভবনের সামনে স্থাপন করা হয়।
আই/এ