বাংলাদেশ
ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের কারণ কী
বিশ্বজুড়ে এখন আলোচনার বিষয় ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ। আজ বৃহস্পতিবার (২৪ ফেব্রুয়ারি)মস্কোর স্থানীয় সময় ভোর ৫টা ৫৫ মিনিটে ভ্লাদিমির পুতিন ইউক্রেনে সেনা অভিযান চালানোর ঘোষণা দেন।
এর কয়েক মিনিট পরেই ইউক্রেনে বোমা এবং মিসাইল হামলা শুরু হয় বলে খবর প্রকাশিত হয়।
ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভে জরুরি সাইরেন বাজানো হয় এবং বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত ছবিতে দেখা যায় যে মহাসড়কগুলোতে শহর ছেড়ে যেতে চাওয়া মানুষের গাড়ির ভিড়।
কিন্তু কেন এ ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ। এ যুদ্ধের কারণ কি। সেটা জেনে নেয়া যাক।
যদি সাম্প্রতিক ইতিহাসের কথা বলতে হয়, তাহলে বলতে হবে ২০১৪ সালে – যদিও এই সংকটের আসল কারণ বুঝতে হলে যেতে হবে আরও পেছনে সোভিয়েত আমলে, যখন ইউক্রেন সোভিয়েত ইউনিয়নের অংশ ছিল।
পূর্ব ইউরোপের আর কিছু কমিউনিস্ট দেশ এবং সাবেক সোভিয়েত প্রজাতন্ত্রের মতো, ইউক্রেনেও দুটি রাজনৈতিক ধারা বেশ স্পষ্ট।
একটি অংশ চায়, পশ্চিম ইউরোপের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ হতে, ইউরোপীয় ইউনিয়নে যোগ দিতে এবং নিজেদের প্রতিরক্ষার জন্য নেটো সামরিক জোটের সদস্য হতে। অপর অংশ রুশ প্রভাব বলয়ে থাকার পক্ষপাতী, কারণ ইউক্রেনের জনসংখ্যার বিরাট অংশ রুশ ভাষাভাষী, তারা জাতিগতভাবেও রুশ। রাশিয়ার সঙ্গে তাদের রয়েছে ঘনিষ্ঠ সাংস্কৃতিক এবং সামাজিক যোগাযোগ।
২০১৪ সালে ইউক্রেনের রুশ-পন্থী প্রেসিডেন্ট ভিক্টর ইয়ানুকোভিচ ক্ষমতাচ্যুত হয়েছিলেন বিক্ষোভের মুখে। এরপর তাকে দেশ ছেড়ে পালাতে হয়।
প্রেসিডেন্ট ভিক্টর ইয়ানুকোভিচ দুই নৌকায় পা দিয়ে চলতে চেয়েছিলেন। তিনি পশ্চিমা দেশগুলোর সঙ্গে মাখামাখি করছিলেন, কিন্তু আবার মস্কোকেও ভক্তি-শ্রদ্ধা দেখিয়ে চলেছিলেন। কিন্তু তারপরও প্রেসিডেন্ট পুতিন তাকে সহ্য করেছেন।
কিন্তু যখন ভিক্টর ইয়ানুকোভিচ ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে এক বিশাল বাণিজ্য চুক্তি করতে চাইলেন- যা প্রকারান্তরে ইউরোপীয় ইউনিয়নের সদস্যপদ পাওয়ার পথে কয়েক ধাপ এগিয়ে যাওয়া- তখন প্রেসিডেন্ট পুতিন ইউক্রেনের ওপর চাপ বাড়াতে শুরু করলেন।
এরপর যখন ভিক্টর ইয়ানুকোভিচ ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে বাণিজ্য চুক্তির আলোচনা ভেঙ্গে বেরিয়ে এলেন, তখন তার বিরুদ্ধে গণবিক্ষোভ শুরু হয়। তার পতনের পর যারা ক্ষমতায় আসে, তারা এমন কিছু পদক্ষেপ নেয়, যা প্রেসিডেন্ট পুতিনকে ক্ষুব্ধ করে।
ইউক্রেনের ভেতরে যে রুশ অধ্যুষিত অঞ্চল, সেখানে সশস্ত্র বিদ্রোহ শুরু হলে মস্কো তাদের সমর্থন দেয়। এই বিদ্রোহীদের সমর্থনে এরপর রুশ সৈন্যরা হস্তক্ষেপ করে, এক পর্যায়ে রাশিয়া ক্রাইমিয়া অঞ্চল দখল করে সেটি নিজেদের দেশের অংশ বলে ঘোষণা করে।
ইউক্রেন এখনও নেটোর সদস্য নয়। তবে তাদের সঙ্গে নেটোর সখ্যতা আছে। ভবিষ্যতে কোন একদিন তারা নেটো জোটের সদস্য হবে, এরকম একটা বোঝাপড়া আছে। তবে রাশিয়া পশ্চিমা দেশগুলোর কাছ থেকে এরকম একটা নিশ্চয়তা চায়, যেন এটা কখনওই না ঘটে।
কিন্তু পশ্চিমা দেশগুলো এরকম নিশ্চয়তা দিতে রাজী নয়।
প্রেসিডেন্ট পুতিন মনে করেন, পশ্চিমা শক্তি আসলে নেটো জোটকে ব্যবহার করে চারিদিক থেকে রাশিয়াকে ঘিরে ফেলছে। তিনি চান নেটো যেন পূর্ব ইউরোপে তাদের সামরিক তৎপরতা কমিয়ে আনে।
তিনি বহুদিন ধরে অভিযোগ করে যাচ্ছেন যে ১৯৯০ সালে যুক্তরাষ্ট্র নেটো জোটকে পূর্বদিকে সম্প্রসারণ করা হবে না বলে যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল, সেটি তারা রাখেনি। তবে নেটো রাশিয়ার এই কথা প্রত্যাখ্যান করেছে।
জাতীয়
শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা জানালেন অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টারা
শপথ নেয়ার পরের দিন ভাষা শহীদদের স্মরণে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা নিবেদন করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টারা।
শুক্রবার (৯ আগস্ট) বেলা ১১টার দিকে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ১৩ জন উপদেষ্টা নিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।
এর আগে, সাভারে জাতীয় স্মৃতিসৌধে মহান মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান ও অন্য উপদেষ্টারা।
গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান হিসেবে শপথ নেন ড. মুহাম্মদ ইউনূস। দায়িত্ব নেওয়ার পর তিনি এক নতুন বাংলাদেশ উপহার দেওয়ার অঙ্গীকার করেন।
আই/এ
জাতীয়
উপদেষ্টা পরিষদকে অভিনন্দন জানালেন জাসদ
জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল—জাসদের সভাপতি হাসানুল হক ইনু ও সাধারণ সম্পাদক শিরীন আখতার অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মোহাম্মদ ইউনুস এবং অন্য উপদেষ্টাদেরকে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়েছেন
বৃহস্পতিবার ( ৮ আগস্ট ) রাতে দলের পক্ষ থেকে পাঠানো এক বিবৃতিতে এ অভিনন্দন জানান তারা।
বিবৃতিতে জানানো হয়, “অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দায়িত্ব গ্রহণ করার পর দেশে আর একটিও প্রাণহানি, হামলা ও সম্পদ ধ্বংসের ঘটনা যেন না ঘটে তা নিশ্চিত হবে।”
বিবৃতিতে আরও বলেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার রাষ্ট্রীয় চার মূলনীতিসহ সংবিধানকে সমুন্নত রেখে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন এবং রাজনৈতিক ও সামাজিক শক্তির সাথে আলোচনা করে সরকারের কর্ম পরিকল্পনার রূপরেখা দ্রুত প্রকাশ করে বিদ্যমান অনিশ্চয়তা ও অস্থিরতা প্রশমিত করবেন।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রাথমিক ও প্রধান কাজ হিসেবে অনতিবিলম্বে দেশে আইনশৃঙ্খলা পুনঃপ্রতিষ্ঠা করার এবং জনগণের জানমালের নিরাপত্তা নিশ্চিত করে জনজীবনে স্বাভাবিকতা ও শান্তি ফিরিয়ে আনতে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানিয়েছেন।
জাসদ নেতৃবৃন্দ অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নিহত শিক্ষার্থী, সাধারণ মানুষ, সাংবাদিক পুলিশ বাহিনীর সদস্যসহ প্রতিটি হত্যাকাণ্ডের সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার নিশ্চিত করার আহ্বান জানান।
জাসদ জোর দাবি জানান, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে পূর্ববর্তী সরকারের পদত্যাগের পর দেশের বিভিন্ন স্থানে চলমান বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও পুলিশ বাহিনীর সদস্যসহ পেশাজীবী ও হিন্দু ও আহমদীয়াসহ ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের ওপর হামলা ও হত্যা করা, মন্দিরসহ ধর্মীয় স্থাপনায় হামলা, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের কার্যালয়ে ও নেতাকর্মীদের বাসাবাড়িতে হামলা-হত্যা-নির্যাতন, ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান ও ঘরবাড়িতে হামলা ও অগ্নিসংযোগ, সংসদ ভবন ও প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় ও গণভবনসহ বিভিন্ন সরকারি স্থাপনায় হামলা, ভাঙচুর, লুটপাট, অগ্নিসংযোগ, ধানমন্ডি ৩২ নম্বরের ঐতিহাসিক বঙ্গবন্ধু ভবন-বঙ্গবন্ধু জাদুঘরে হামলা, লুটপাট, জ্বালিয়ে ছারখার, দেশের বিভিন্ন স্থানে বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য, সাত বীরশ্রেষ্ঠর ভাস্কর্যসহ ভাষা আন্দোলন, স্বাধীনতা সংগ্রাম ও মুক্তিযুদ্ধের স্মারক ভাস্কর্য ও ম্যুরাল ভেঙে ফেলা এবং কুমিল্লার বীরচন্দ্র পাঠাগার, সুনামগঞ্জের ঐতিহ্য জাদুঘর, কুড়িগ্রামের উত্তরবঙ্গে মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর, ময়মনসিংহের ঐতিহাসিক শশীলজের ভেনাস ভাস্কর্য ভেঙে ফেলাসহ অগনিত শিল্পকর্ম ভেঙে ফেলার সব অপরাধ কাণ্ডের সঙ্গে যুক্ত দায়ী ব্যক্তিদের দ্রুত আইনের আওতায় আনার।
জেডএস/
জাতীয়
তদবির থেকে বিরত থাকুন, দেশগঠনে পরামর্শ দিন : আসিফ মাহমুদ
নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে গঠিত হয়েছে ১৭ সদস্যের অন্তবর্তীকালীন সরকার। এ উপদেষ্টা পরিষদে স্থান পেয়েছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের দুইজন প্রতিনিধি। এদের একজন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আসিফ মাহমুদ। তিনি উপদেষ্টা হিসেবে শপথ নেয়ার পর ঘনিষ্ঠজনদের নিজেদের সুবিধার জন্য কোনো আবদার কিংবা তদবির করতে বারণ করেছেন। বরং দেশগঠনে কোনো পরামর্শ থাকলে দেয়ার অনুরোধ করেছেন।
বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) দিবাগত রাতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এক পোস্ট করে এ অনুরোধ করেন।
পোস্টে এই তরুণ উপদেষ্টা লিখেছেন, ব্যক্তিগত লাভের আশায় আবদার, তদবির করা থেকে বিরত থাকুন। এতে করে আমার সাথে আপনার সম্পর্ক নষ্ট হতে পারে। দেশগঠনে পরামর্শ থাকলে জানাবেন।
বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) রাতে নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে ১৭ জনকে নিয়ে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন করা হয়। প্রধান উপদেষ্টা ও অন্য উপদেষ্টাদের শপথ পাঠ করান রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। ঢাকার বাইরে থাকায় তিন উপদেষ্টা ফারুক-ই-আযম, বিধান রঞ্জন রায় এবং সুপ্রদীপ চাকমা শপথ অনুষ্ঠানে উপস্থিত হতে পারেননি।
সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ছাড়া অন্যান্য উপদেষ্টারা হলেন- ১. সালেহ উদ্দিন আহমেদ ২. ড. আসিফ নজরুল ৩. আদিলুর রহমান খান ৪. হাসান আরিফ ৫. তৌহিদ হোসেন ৬. সৈয়দা রেজওয়ানা হাসান ৭. মো. নাহিদ ইসলাম ৮. আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া ৯. ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এম সাখাওয়াত হোসেন ১০. সুপ্রদীপ চাকমা ১১. ফরিদা আখতার ১২. বিধান রঞ্জন রায় ১৩. আ.ফ.ম খালিদ হাসান ১৪. নুরজাহান বেগম ১৫. শারমিন মুরশিদ ১৬. ফারুক-ই-আযম।
জেএইচ