আইন-বিচার
আইনমন্ত্রী আইনের রাজনৈতিক ব্যাখ্যা করছেন
খালেদা জিয়ার বিদেশে গিয়ে চিকিৎসার বিষয়ে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক আইনের রাজনৈতিক ব্যাখ্যা করেছেন। বললেন বিএনপির আইন বিষয়ক সম্পাদক ব্যারিস্টার কায়সার কামাল।
বুধবার (০৪ অক্টোবর) সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণে আইনমন্ত্রীর বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় তিনি এ মন্তব্য করেন।
ব্যারিস্টার কায়সার কামাল বলেন, রাজনৈতিক ব্যাখ্যা এ কারণেই বলব, ফৌজদারি কার্যবিধির ৪০১(১) ধারায় স্পষ্টভাবে দেয়া আছে সরকার চাইলে একজন সাজাপ্রাপ্ত বন্দির সাজা মওকুফ করতে পারে। সাজা কমাতে পারে, সাময়িকভাবে সাজা স্থগিত করতে পারে। শর্তযুক্ত বা শর্তমুক্তভাবে। খালেদা জিয়ার ক্ষেত্রে ওনারা শর্তযুক্ত করে দিয়েছেন। শর্ত তুলে নিলেই খালেদা জিয়া বিদেশে যেতে পারেন।
তিনি আরও বলেন, ৪০১(৬) ধারায় স্পষ্টভাবে বলা আছে, সরকার চাইলে সাধারণ বা বিশেষ নির্বাহী আদেশে যেকোনো বন্দির ক্ষেত্রে যেকোনো সিদ্ধান্ত নিতে পারে।
এক প্রশ্নের জবাবে বিএনপির আইন বিষয়ক সম্পাদক বলেন, খালেদা জিয়াকে বিদেশে পাঠানো হলে তিনি চিকিৎসা শেষে দেশে ফিরে আসবেন। কারণ অন্য একজন নেত্রী দেশ ছেড়ে গেলেও খালেদা জিয়া কখনো দেশ ছেড়ে যাননি।
এর আগে, আজ দুপুরে সচিবালয়ে নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক জানান, বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার বিদেশে গিয়ে চিকিৎসা নেয়ার একটি উপায় আছে। আর সেটা হলো রাষ্ট্রপতির কাছে সাজা মওকুফ চেয়ে আবেদন। তবে এক্ষেত্রে খালেদা জিয়াকে দোষ স্বীকার করতে হবে বলেও জানান মন্ত্রী।
আইন অনুযায়ী খালেদা জিয়ার বিদেশে গিয়ে চিকিৎসা নেয়ার সুযোগ নেই জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, যে কেউ রাষ্ট্রপতির কাছে সাজা মওকুফ চেয়ে আবেদন করতে পারে। এই সুযোগ খালেদা জিয়ারও আছে। এক্ষেত্রে তাকে দোষ স্বীকার করতে হবে।
আইনমন্ত্রী বলেন, সাজাপ্রাপ্ত যেকোনো আসামি তার দণ্ড মওকুফের জন্য মহামান্য রাষ্ট্রপতির কাছে আবেদন করতে পারেন। ইতোমধ্যে শীর্ষ সন্ত্রাসী জোসেফ রাষ্ট্রপতির কাছে নিঃশর্ত ক্ষমা চেয়ে তিনি বিদেশে গেছেন।
নির্বাহী আদেশের বিষয়ে আনিসুল হক বলেন, প্রধানমন্ত্রী নির্বাহী আদেশে ফৌজদারি কার্যবিধির ৪০১ ধারা অনুযায়ী শর্ত যুক্তভাবে খালেদা জিয়ার সাজা স্থগিত করে চিকিৎসার ব্যবস্থা করেছেন, সেটি দ্বিতীয়বার আর করার কোনো সুযোগ নেই।
বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে বিদেশে চিকিৎসা করানোর ব্যাপারে তার পরিবারের আবেদন নিষ্পত্তির পেছনে কোনো রাজনীতি নেই বলে দাবি করেন মন্ত্রী। তিনি বলেন, এই ইস্যুতে বিএনপি মিথ্যাচার করছে। খালেদা জিয়াকে চিকিৎসার জন্য নির্বাচনে অংশগ্রহণের কোনো শর্ত দেয়া হয়নি।
গুরুতর অসুস্থ হয়ে রাজধানীর একটি হাসপাতালে প্রায় দেড় মাস ধরে চিকিৎসাধীন বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়াকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে নেয়ার পরামর্শ দিয়েছেন চিকিৎসকরা। তার পরিবারের পক্ষ থেকে সরকারের কাছে খালেদা জিয়াকে বিদেশে নিয়ে চিকিৎসার আবেদন করা হয়।
তবে আইন মন্ত্রণালয় এই আবেদন নাকচ করে দিয়ে জানিয়েছে, দুর্নীতি মামলায় দণ্ডিত খালেদা জিয়ার সাজা নির্বাহী আদেশে মওকুফ আছে। এই অবস্থায় তার বিদেশে গিয়ে চিকিৎসার সুযোগ নেই। তাকে বিদেশে চিকিৎসা করাতে হলে আবার কারাগারে গিয়ে আদালতে আবেদন করতে হবে।
বিএনপির পক্ষ থেকে দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সংবাদ সম্মেলন করে অভিযোগ করেছেন, খালেদা জিয়াকে আগামী নির্বাচনে অংশ নেয়ার শর্ত দেয়া হয়েছিল। তিনি শর্ত মেনে বিদেশে চিকিৎসা নেবেন না।
ফখরুলের সেই অভিযোগের জবাব দিতে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন আইনমন্ত্রী। তিনি জানান, আইন অনুযায়ী খালেদা জিয়ার বিদেশে গিয়ে চিকিৎসা নেয়ার সুযোগ নেই। তাকে কোনো শর্ত দেয়া হয়নি। এই ইস্যুতে বিএনপি মিথ্যাচার করছে।
সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি মহাসচিবের অভিযোগের জবাবে আইনমন্ত্রী বলেন, গতকাল মির্জা ফখরুল বলেছেন, আইনমন্ত্রী একসময় বলেছিলেন যে, দণ্ড স্থগিত করে বাসায় থাকতে দেয়ার ক্ষমতা সরকারের নেই, এটা পারে শুধু আদালত। অথচ তার কিছুদিন পরেই সরকারের নির্বাহী আদেশে দেশনেত্রী বাসায় এসেছিলেন। ফখরুল ইসলাম সাহেবের এই বক্তব্য সর্বৈব মিথ্যা ও ভিত্তিহীন। কারণ আমি এমন কথা বলিনি। আমার বক্তব্য সবসময় রেকর্ড করা থাকে। ২০১৬ থেকে আজ পর্যন্ত কী বক্তব্য দিয়েছি সেগুলো চেক করেছি। এমন কথা কোথাও নাই। আমি একজন আইনজীবী। আমি বাংলাদেশের সংবিধান এবং ফৌজদারি আইন-কানুন জানি। তাই আমার পক্ষে এ কথা বলা সম্ভব নয়।
এটি রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত নয় দাবি করে আনিসুল হক বলেন, বেগম জিয়ার পরিবার দরখাস্ত করেছিলেন, সেই দরখাস্ত নিষ্পত্তি করা হয়েছে। আইনে কোথাও তাকে বিদেশে নেয়ার কথা বলা নেই।
আইন-বিচার
নতুন অ্যাটর্নি জেনারেল অ্যাডভোকেট আসাদুজ্জামান
রাষ্ট্রের প্রধান আইন কর্মকর্তা অ্যাটর্নি জেনারেল হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মো. আসাদুজ্জামান।
বৃহস্পতিবার (০৮ আগস্ট) রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন তাকে এ নিয়োগ দেন।
রাষ্ট্রপতির কার্যালয়ের সচিব মো. গোলাম সারওয়ার স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
এতে বলা হয়েছে, ‘রাষ্ট্রপতি বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের সিনিয় আইনজীবী মো. আসাদুজ্জামানকে পুনরাদেশ না দেয়া পর্যন্ত অ্যাটর্নি জেনারেল পদে নিয়োগ প্রদান করলেন।’
উল্লেখ্য, আ.লীগ সরকারের পতনের পর পদত্যাগ করেছেন অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন। বুধবার (০৭ আগস্ট) রাষ্ট্রপতির কাছে পদত্যাগপত্র জমা দেন তিনি। তার স্থলাভিষিক্ত হচ্ছেন মো. আসাদুজ্জামান।
২০২০ সালের ৮ অক্টোবর রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ এ এম আমিন উদ্দিনকে অ্যাটর্নি জেনারেল হিসেবে নিয়োগ প্রদান করেন। এর আগে তিনি ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন।
এসি//
আইন-বিচার
পদত্যাগ করেছেন অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল এস এম মুনীর
পদত্যাগ করেছেন অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল এস এম মুনীর। বৃহস্পতিবার (০৮ আগস্ট) অ্যাটর্নি জেনারেল অফিসে তিনি পদত্যাগপত্র জমা দেন।
পদত্যাগ করার বিষয়টি এস এম মুনীর নিজেই গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন।
এর আগে অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন ও আরেক অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল শেখ মো. মোরসেদ পদত্যাগ করেন।
২০২০ সালের ১ সেপ্টেম্বর সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সাবেক সম্পাদক এবং জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এস এম মুনীরকে অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয়।
প্রসঙ্গত, ছাত্র-জনতার চূড়ান্ত আন্দোলনের মুখে প্রধানমন্ত্রীর পদ ছেড়ে দেশত্যাগ করেন শেখ হাসিনা। গেলো ৫ আগস্ট দুপুর আড়াইটায় বঙ্গভবন থেকে একটি সামরিক হেলিকপ্টার তাকে নিয়ে ভারতের উদ্দেশ্যে যাত্রা করে। এ সময় তার সঙ্গে তার ছোট বোন শেখ রেহানা ছিলেন। ভারতে যাওয়ার আগে রাষ্ট্রপতির কাছে পদত্যাগপত্র দেন শেখ হাসিনা।
শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর থেকে বড় বড় পদে নিয়োগ পাওয়া কর্মকর্তাদের দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দেয়া হচ্ছে। আবার অনেকেই স্বেচ্ছায় পদত্যাগ করছেন।
এসি//
আইন-বিচার
সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণের সেই ভাস্কর্যটি উপড়ে ফেলা হয়েছে
সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণে হাইকোর্ট এনেক্স ভবনের সামনে থাকা গ্রিক দেবী থেমিসের ভাস্কর্যটি ভাঙচুরের পর উপড়ে ফেলা হয়েছে।তবে কে বা কারা ভাস্কর্যটি ভেঙেছে তা জানা যায়নি।
বুধবার (৭ আগস্ট) দুপুরে ভাস্কর্যটি মাটিতে পরে থাকতে দেখা যায়। এর আগে,গেলো মঙ্গলবার সকালে ইস্পাতের তৈরি ভাস্কর্যটির হাত ও দাঁড়িপাল্লা ধরে থাকা হাত ভাঙা অবস্থায় দেখা গিয়েছিলো।
সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসনের একাধিক কর্মকর্তা জানান, গ্রিক দেবী থেমিসের আদলে ন্যায়বিচারের প্রতীক হিসেবে গড়ে তোলা ভাস্কর্যটি ভেঙে ফেলা হয়েছে। তবে কে বা কারা এটি করেছেন, তা তাদের জানা নেই।
এর আগে ২০১৬ সালের ডিসেম্বরের তৃতীয় সপ্তাহে সুপ্রিম কোর্টে প্রবেশের মূল ফটকের বরাবর থাকা লিলি ফোয়ারায় প্রথমে ভাস্কর্যটি বসানো হয়। হেফাজতসহ কয়েকটি ইসলামি সংগঠনের দাবির মুখে ২০১৭ সালের মে মাসে ভাস্কর্যটি সরিয়ে এনেক্স ভবনের সামনে স্থাপন করা হয়।
আই/এ