চট্টগ্রাম
স্বামীর জবাই করা মাথা কোলে নিয়ে চিৎকার করছিলেন স্ত্রী
চাঁদপুরের হাজীগঞ্জে প্রবাস ফেরত যুবককে গলা কেটে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। রোববার (৮ অক্টোবর) সন্ধ্যায় হাজীগঞ্জ বাজারে অতিরিক্ত পুলিশ সুপারের (হাজীগঞ্জ–ফরিদগঞ্জ সার্কেল) অফিসের সামনে একটি ভবনে ওই ঘটনা ঘটে। নিহত এমরান হোসেন ফরিদগঞ্জ উপজেলার ৩ নম্বর সুবিদপুর ইউনিয়নের লক্ষ্মীপুর গ্রামের দালাল বাড়ির আবুল বাসারের ছেলে।
এ ঘটনায় পুলিশ তার স্ত্রী ফারজানা আকতারকে আটক করেছে। আটক ফারজানা ফরিদগঞ্জ উপজেলার ঝাঁকনী গ্রামের খান বাড়ির মেয়ে। নিহত এমরান হোসেনের ৮ বছর বয়সী আফরান নামে একটি ছেলে সন্তান রয়েছে।
ঘটনার পরপরই চিৎকার শুনে ওই বিল্ডিংয়ে ছুটে আসা শাহরাস্তি উপজেলার বলশিদ গ্রামের নাহার জানান, চিৎকার শুনে ওই বিল্ডিংয়ে গিয়ে দেখি ফ্লাটের দরজা খোলা। স্বামী এমরানের মাথা কোলে নিয়ে স্ত্রী চিৎকার করছে। এ সময় তার গলা সাদা কাপড় দিয়ে বাঁধা ছিল।
আরেক প্রত্যক্ষদর্শী প্রতিবেশী জানান, চিৎকার শুনে দৌড়ে এসে দেখি পুরো ফ্লাট রক্তে ভরে আছে। পরে স্থানীয়দের সহযোগিতায় তাকে হাজীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেয়া হয়।
নিহত এমরান হোসেনের বাবা আবুল বাসার হাসপাতালে সংবাদকর্মীদের জানান, এমরানের স্ত্রী ফারাজানার বিরুদ্ধে হাজীগঞ্জ থানায় পরকীয়ার অভিযোগে বিচার হয়েছিল। আমার ছেলে স্ত্রীকে না জানিয়ে গোপনে দেশে এসে হাতে নাতে স্ত্রীর পরকীয়া ধরে। এ ঘটনায় ফারজানা আমার সন্তানকে তালাক দেয়। পরে শিশু সন্তানের কথা চিন্তা করে পুনরায় সংসার শুরু করে।
তিনি আরও বলেন, পরকীয়ার জেরে আমার সন্তানকে স্ত্রীর হাতে জীবন দিতে হলো। এমরানের মা হাসপাতালে বার বার মূর্ছা যাচ্ছিলেন। তিনি ফারজানা ও তার পরকীয়া প্রেমিকের ফাঁসি দাবি করেন।
হাজীগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ মো. আবদুর রশিদ জানান, নিহত এমরানের স্ত্রী ফারজানাকে আটক করা হয়েছে। তার সঙ্গে কি ঘটে ছিল সে বিষয়ে তথ্য নেয়ার চেষ্টা চলছে।
চট্টগ্রাম
কাভার্ডভ্যানের ধাক্কায় প্রাণ হারালেন দুই সাইকেল আরোহী
কর্ণফুলীতে পণ্যবাহী কাভার্ডভ্যানের ধাক্কায় দুই সাইকেল আরোহী নিহত হয়েছেন। কাভার্ডভ্যানটি আটক করা হয়েছে।
বুধবার (৭ আগস্ট) বেলা একটার দিকে চরপাথরঘাটা ইউনিয়নের ইছানগর বাংলাবাজার এলাকায় এই দুর্ঘটনা ঘটে।
নিহতরা হলেন- নওগাঁ জেলার আত্রাই উপজেলার নন্দনালী গ্রামের কামাল মণ্ডলের ছেলে চঞ্চল মণ্ডল (১৮) ও রাজবাড়ী জেলার গোয়ালন্দ উপজেলার ছোট পাগলা গ্রামের মোহাম্মদ আবদুল জলিলের ছেলে জাহিদুল ইসলাম (১৬)। তারা কর্ণফুলী উপজেলার ইছানগর গ্রামে ভাড়া বাসায় থাকতেন।
চরপাথরঘাটার ৮ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মোহাম্মদ আবু তাহের গণমাধ্যমকে বলেন, দুপুরে তারা তিনজন সাইকেল চালিয়ে কর্মস্থলে যাচ্ছিলেন। এ সময় কাভার্ডভ্যানের ধাক্কায় ঘটনাস্থলেই দুজন নিহত হয়। অপরজনকে গুরুতর আহত অবস্থায় হাসপাতালে পাঠানো হয়। কাভার্ডভ্যানটি আটক করা হয়েছে।
এএম/
চট্টগ্রাম
রাতেও ট্রাফিক সামলাচ্ছেন ছাত্রীরা
সরকার পতনের পরে চট্রগ্রামে নগরীর থানাগুলো ফাঁকা পড়ে আছে। এ অবস্থায় নগরীর রাস্তায় নেই কোন ট্রাফিক পুলিশ। দিনভর রাস্তায় ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণ করেন সরকার পতনের আন্দোলন করা শিক্ষার্থীরা। তবে দিন পেরিয়ে রাত হলেও, রাস্তায় ছাত্রদের পাশপাশি ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণ করতে দেখা যায় ছাত্রীদেরও।
মঙ্গলবার (৬ আগস্ট) চট্টগ্রাম নগরীর চকবাজার অলী খা মসজিদ মোড় এলাকায় এমন চিত্র দেখতে পায় গণমাধ্যম।
নগরীর অলী খা মসজিদ মোড়ে শৃঙ্খলা রক্ষার কাজ করা বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ফাইজা তাবাসসুম বলেন, দেশে ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থান হয়েছে। এখন দেশকে এগিয়ে নিতে সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে। নিজের দায়িত্ববোধের জায়গা থেকে এখানে আসা। সকালে শুনেছি সড়কে ট্রাফিক পুলিশ নেই। তাই তারা কাজ করতে এসেছেন।
আসিফুর রহমান নামে আরেক বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী জানান, শিফট সিস্টেম করে ছাত্ররা কাজ করছে। এখন তিনি দায়িত্ব পালন করছেন। নিজেদের ইচ্ছায় তারা এখানে এসেছেন।
আই/এ
চট্টগ্রাম
‘বালুখেকো’ চেয়ারম্যান সেলিম ও তার ছেলে গণপিটুনিতে নিহত
চাঁদপুর সদর উপজেলার লক্ষ্মীপুর মডেল ইউনিয়ন পরিষদের আলোচিত ‘বালুখেকো’ খ্যাত চেয়ারম্যান সেলিম খান ও তার ছেলে নায়ক শান্ত খান গনপিটুনিতে নিহত হয়েছেন।
সোমবার (৫ আগস্ট) শেখ হাসিনা পদত্যাগ করার পর নিজ এলাকা থেকে পালিয়ে যাওয়ার সময় বালিয়া ইউনিয়নের ফরক্কাবাদ বাজারে এসে জনগণের তোপের মুখে পড়েন তারা। এরপর সেখানে নিজের পিস্তল থেকে গুলি করে উদ্ধার হয়ে আসতে পারলেও পার্শ্ববর্তী বাগাড়া বাজারে এসে জনতার মুখোমুখি হয়। তারপর সেখানে জনগণের পিটুনিতে নিহত হোন সেলিম খান ও তার ছেলে শান্ত খান।
চাঁদপুর সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শেখ মুহসীন আলম গণমাধ্যমে বলেন, তাদের মৃত্যুর বিষয় জেনেছি। তবে কেউ খবর দেয়নি। আর জানমালের নিরাপত্তার কারণে সেখানে কাউকে পাঠানো হয়নি।
প্রসঙ্গত, আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে সেলিম খান চাঁদপুর নৌ-সীমানায় পদ্মা-মেঘনা নদীতে শত শত ড্রেজার দিয়ে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করে কোটি কোটি টাকার মালিক বনে যান। এসব ঘটনায় সে কারাভোগ করেন এবং দুদকে তার বিরুদ্ধে মামলা চলমান রয়েছে। সেলিম খান একজন আলোচিত প্রযোজকও। তিনি প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান শাপলা মিডিয়ার কর্ণধার।
এছাড়া সেলিম খানকে পদ্মা-মেঘনার চর থেকে বিভিন্ন সময় বালু তোলাসহ নানা কারণে চাঁদপুর সদর উপজেলার লক্ষ্মীপুর মডেল ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান পদ থেকে আজীবন বহিষ্কার করে আওয়ামী লীগ। ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতির দায়িত্ব পালন করছিলেন তিনি।
এএম/