বিএনপি
সরকারের অধীনে নির্বাচনে ভোটারের প্রয়োজন নেই: রিজভী
আপনার (শেখ হাসিনা) অধীনে নির্বাচন কী সেটা আমরা জানি। সেই নির্বাচনে ভোটারের দরকার নেই, দেশের জনগণের দরকার নেই, বিরোধীদলেরও দরকার নেই। বললেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী।
শুক্রবার (১৩ অক্টোবর) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে জিয়াউর রহমান আর্কাইভ আয়োজিত ফ্যাসিবাদ বিরোধী চিত্রকর্মশালা ও কবিতা পাঠ অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
রিজভী বলেন, এ রাষ্ট্র আর রাষ্ট্র নেই। শেখ হাসিনা এ রাষ্ট্রকে অধঃপতিত করেছেন, তার ভয়ংকর অত্যাচারিত শাসনের মধ্য দিয়ে। তিনি এখন কী করতে চান। তিনি কি ২০১৪ ও ১৮ নির্বাচনের মতো পুনরাবৃত্তি করবেন? তিনি জনগণের দাবি, শৃঙ্খলিত যে গণতন্ত্র , দম বন্ধ করা পরিস্থিতি থেকে মুক্ত হতে দিতে চান না। তিনি তার মন্ত্রীদেরকে দিয়ে বলাচ্ছেন পৃথিবীর সব দেশ ঠিক হয়ে গেছে। ঠিক হয়ে গেছে মানে আপনার অধীনে নির্বাচন? আর আপনার অধীনে নির্বাচন মানে ২০১৪-১৮ নির্বাচনের মতো। ২০১৪ নির্বাচনে ১৫৩টিতে কোনো প্রতিদ্বন্দ্বী ছিল না। বাকিগুলোতে উপস্থিত ছিল ৫%। আর ২০১৮ নির্বাচন করেছেন রাতে। ভোর হওয়ার আগেই ব্যালট বক্স পূর্ণ হয়ে গেছে।
তিনি বলেন, জনগণের কথা, আন্তর্জাতিক শক্তির কথা কারো কথাই ঠিক না, আপনার কথাই ঠিক? কীসের জন্য? কীসের জন্য এটা তো আমরা বুঝি। পৃথিবীর প্রতিটি স্বৈরশাসক তাই করে। সব সময় তাই করেছে। ফ্লাইওভার, উড়াল সেতু, হাইওয়ে দেখেছে যাতে চোখে পড়ে। কিন্তু সেই দেশের মানুষ একটা ডিম কিনতে পারে না। মানুষের যে হাহাকার-অনাহার এগুলো তাদের চোখে পড়ে না।
তিনি বলেন,বর্তমান সময়ে নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যের দাম লাগামহীনভাবে বাড়ছে। আগে তো নিম্নবিত্ত মানুষ কিনতে পারত না,এখন সেটা মধ্যবিত্ত পর্যন্ত চলে এসেছে। তারা পারছে না কারো কাছে হাত পাততে, পারছে না ভিক্ষা করতে। তাদের যে আয় সে আয় দিয়ে কোন কিছু কিনে খেতে পারছে না। একটি ডিম কিনতে যদি ১৭ টাকা লাগে তাহলে ফ্লাইওভার দেখিয়ে আপনি কী করবেন। পৃথিবীর সমস্ত ফ্যাসিস্টরাই এই ধরনের কাজ করেছে।
২০১৮ সালের নির্বাচনের একটি ঘটনা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ফরিদপুরের নগরকান্দায় আওয়ামী লীগের লোকেরা মাইকিং করে হুমকি দিয়েছে বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের যে আপনারা ভোটকেন্দ্রে যাবেন না। তারা নৌকায়ও ভোট চাচ্ছে না। বিরোধী দলকে হুমকি দিচ্ছে যাতে ভোটকেন্দ্রে না যায়। কোনো নির্বাচনে প্রার্থী বা বিরোধী প্রার্থী থাকলে সেই প্রার্থীর পক্ষে মাইকিং করে বা পোস্টার ছাপায় কিন্তু আওয়ামী লীগের লোকজন সেই নির্বাচনে তাদের প্রার্থীর পক্ষে ভোট চাচ্ছে না। তারা ভোটারদের এবং বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের ভোটকেন্দ্রে না যাওয়ার জন্য মাইকিং করছে। তার কারণ শেখ হাসিনা কোন ভোট চান না।
তিনি বলেন, শেখ হাসিনা ও তার নেতাকর্মীরা বলেন, আমরা সংবিধানের বাইরে যাব না। আপনারা কি সংবিধানের বাইরে যাননি? ১৯৯৬ সালে যে বিধ্বংসী আন্দোলন করেছেন তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রতিষ্ঠার দাবিতে তখন তো তত্ত্বাবধায়ক সরকার সংবিধানে ছিল না। তখন আপনারা জ্বালাও পোড়াও করেছেন, তত্ত্বাবধায়ক এর দাবি তুলেছেন। তখন সব দল মিলে সংবিধানে তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রতিষ্ঠিত করা হলো। তাহলে আজ যাবেন না কেন? এক মুখে দুই কথা হয় কীভাবে? আজ দেশের অধিকাংশ রাজনৈতিক দল একমত হয়েছে। যারা আপনার হালুয়া রুটি খেয়েছে তাদের ভিন্ন কথা।
বিএনপি
অন্তর্বর্তী সরকারকে অভিনন্দন জানালেন তারেক রহমান
বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের জন্য অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস এবং তার সহযোগী উপদেষ্টাদের অভিনন্দন জানিয়েছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপাসন তারেক রহমান। বাংলাদেশ সময় বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) দিবাগত রাত ১২টা ১২ মিনিটে নিজের ফেরিফায়েড ফেসবুক প্রোফাইলে দেওয়া এক স্ট্যাটাসে তিনি এ অভিনন্দন জানান।
অভিনন্দন বার্তায় তারেক রহমান লিখেছেন, বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের জন্য অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস এবং তার সহযোগী উপদেষ্টাদের অভিনন্দন। যদি পেছনে ফিরে তাকাই গেলো ১৬ বছর ধরে শেখ হাসিনার স্বৈরাচারী শাসনামলে বাংলাদেশের মানুষ ব্যাপক অধিকার লঙ্ঘন ও অবিচারের সম্মুখীন হওয়ার পর এই মুহুর্তটি এসেছে। আমাদের সাহসী ছাত্র-শিক্ষক, কর্মী, রিকশাচালক থেকে শুরু করে গৃহিণী, সাধারণ নাগরিক এবং রাজনৈতিক কর্মী- সমস্ত গণতন্ত্রপ্রেমী মানুষ ব্যাপকভাবে কোটা আন্দোলনে অংশগ্রহণ করেছে
তিনি বলেন, এই বিক্ষোভ শুধু কোটা সংস্কার নিয়ে নয়, নজিরবিহীন দুর্নীতি, মূল্যস্ফীতি, বেকারত্ব, মতপ্রকাশের স্বাধীনতা দমন-পীড়ন এবং মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ অবস্থান। আওয়ামী লীগের শাসনামলে অন্যায়ের মাত্রা ভয়াবহ আকার ধারণ করেছিল।
নতুন সরকারের কাছে জনগণের প্রত্যাশার কথা তুলে ধরে বিএনপির এই নেতা বলেন, সেই শাসনের পতনের সাথে সাথে বাংলাদেশের জনগণ অর্ন্তবর্তীকালীন সরকারের কাছে সুষ্ঠু ও বিশ্বাসযোগ্য জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য স্বাধীনভাবে ভোটাধিকারের প্রত্যাশা করে যেন তারা তাদের গণতান্ত্রিক আকাঙ্খার প্রতিফলন ঘটাতে পারে।
বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিবেশে বিএনপির অবস্থা তুলে ধরে তিনি আরও বলেন, বিএনপি একটি পাবলিক ম্যান্ডেটসহ একটি নির্বাচিত সরকার গঠন এবং জনগণের সেবা করে একটি জবাবদিহিমূলক সংসদ, জনগণের অধিকার ও স্বাধীনতা পুনরুদ্ধার এবং এর ফলে আইনের শাসন ও সুশাসন প্রতিষ্ঠাকে সমর্থন করে।
উল্লেখ্য, নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে ১৭ জনকে নিয়ে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন করা হয়েছে। বঙ্গভবনের দরবার হলে বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) রাতে শপথ নিয়েছেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উপদেষ্টারা। প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে প্রথমে ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে শপথ পাঠ করান রাষ্ট্রপতি মোঃ সাহাবুদ্দিন। এরপর বাকি ১৬ উপদেষ্টার মধ্যে ১৩ জন শপথ পাঠ করেন। ঢাকার বাইরে থাকায় তিন উপদেষ্টা ফারুক-ই-আযম, বিধান রঞ্জন রায় এবং সুপ্রদীপ চাকমা শপথ অনুষ্ঠানে উপস্থিত হতে পারেননি।
সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ছাড়া অন্যান্য উপদেষ্টারা হলেন- ১. সালেহ উদ্দিন আহমেদ ২. ড. আসিফ নজরুল ৩. আদিলুর রহমান খান ৪. হাসান আরিফ ৫. তৌহিদ হোসেন ৬. সৈয়দা রেজওয়ানা হাসান ৭. মো. নাহিদ ইসলাম ৮. আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া ৯. ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এম সাখাওয়াত হোসেন ১০. সুপ্রদীপ চাকমা ১১. ফরিদা আখতার ১২. বিধান রঞ্জন রায় ১৩. আ.ফ.ম খালিদ হাসান ১৪. নুরজাহান বেগম ১৫. শারমিন মুরশিদ ১৬. ফারুকী আযম।
জেএইচ
বিএনপি
ছাত্র-জনতার সমর্থনেই ড. ইউনূসকে সরকারের প্রধান করা হয়েছে: ফখরুল
ছাত্র-জনতার সমর্থনেই ড. ইউনূসকে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান করা হয়েছে। অন্তর্বর্তী সরকারের দায়িত্ব নিতে যাওয়া নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে দেশে চলমান সহিংসতা ও সংকট কেটে যাবে। বলেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের আন্দোলনে আহত নেতাকর্মীদের দেখতে রাজধানীর পঙ্গু হাসপাতালে গিয়ে তিনি এ কথা বলেন।
এ সময় আবেগপ্লুত মির্জা ফখরুল বলেন, হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আহতদের যে দৃশ্য দেখেছি তা সহ্য করার মতো না।
নতুন সরকার দেশে দ্রুত আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি করবে আশা প্রকাশ করে ফখরুল বলেন, অর্থনীতিকে সচল রাখার দ্রুত উদ্যোগ নিবে সরকার। অন্তবর্তীকালীন সরকার দেশের গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনতে দ্রুত নির্বাচনের ব্যবস্থা করার কথা জানান তিনি।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ছাত্র ও আমাদের মনোনীত ব্যক্তি ড. ইউনূস। তার সফল নেতৃত্বে চলমান সহিংসতা ও সংকট কেটে যাবে বলে বিশ্বাস করি।
এএম/
বিএনপি
নির্বাচন আয়োজনে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে সহায়তা করবে বিএনপি : ফখরুল
অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন করে তিন মাসের মধ্যে নির্বাচনের দাবি জানিয়েছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। এসময়ে নির্বাচন আয়োজনে এ সরকরারকে বিএনপি পূর্ণ সহযোগিতা করবে বলেও জানান তিনি।
বুধবার (৭ আগস্ট) বিকেলে নয়াপল্টনে দলটির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে অনুষ্ঠিত সমাবেশে এ দাবি জানান তিনি।
রাষ্ট্রপতির কাছে দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, কোনো বিলম্ব না করে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন করুন। এই সরকার যারা হবেন, তারা তিন মাসের মধ্যে নির্বাচন করবেন; সেই ব্যবস্থা তারা করবেন এবং এর জন্য পূর্ণ সহযোগিতা বিএনপি তাকে দেবে।
বিএনপি নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্য করে মহাসচিব বলেন, আওয়ামী লীগ সরকারকে পদত্যাগ করে পালিয়ে যেতে হয়েছে। এ বিজয় ছাত্রদের, এ বিজয় আপনাদের। যে বিজয় অর্জিত হয়েছে, এটাকে রক্ষা করতে সবাই সচেতন থাকবেন। চক্রান্তকারীরা নতুন করে চক্রান্ত করতে পারে। তারা বিজয়কে বিলিয়ে দিতে পারে চক্রান্তের মধ্য দিয়ে। সেই সুযোগ যেন তাদের না দেয়া হয়। যারা এসব করছে তারা দেশের শক্র। এরা কোনো আন্দোলনকারী হতে পারে না।
হামলা বা ভাঙচুর হচ্ছে তারা বিএনপির লোক নয় দাবি করে তিনি আরও বলেন, যারা আজকে বিভিন্ন এলাকায়, বিভিন্ন শহরে বন্দরে ভাঙচুর করছে, লুটপাট করছে তারা কেউ বিএনপির লোক নয়। তারা ছাত্রদের কেউ না। তারা দুর্বৃত্ত, দুষ্কৃতকারী। এটা তাদেরই লোক যারা এদেশে গণতন্ত্রকে ধ্বংস করতে চায়। সজাগ থাকবেন, সাবধান থাকবেন। বার বার বিজয় ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা হয়েছে। এ বিজয় যেন ছিনিয়ে নিতে না পারে।
প্রসঙ্গত, সমাবেশে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও দলটির চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া ভার্চুয়ালি যুক্ত হন।
আই/এ