আন্তর্জাতিক
ইসরায়েল-গাজা নিয়ে ‘বিশেষ জরুরি সভা’র ডাক ওআইসি’র
ইসরায়েলের চলমান আগ্রাসন নিয়ে সৌদি আরবে বিশেষ জরুরি বৈঠকের ডাক দিয়েছে বিশ্বের মুসলিম দেশগুলোর বৃহত্তম জোট ইসলামিক সহযোগিতা সংস্থা (ওআইসি)। সভায় গাজায় সামরিক সংঘাত বৃদ্ধি ও নিরস্ত্র বেসামরিক নাগরিকদের নিরাপত্তা নিয়ে আলোচনা করবে সংস্থাটি। শনিবার (১৪ অক্টোবর) এক বিবৃতিতে এ আমন্ত্রণ জানায় সংস্থাটি। বর্তমানে ওআইসির সভাপতির দায়িত্বে রয়েছে সৌদি আরব।
রোববার (১৫ অক্টোবর) আন্তর্জাতিক সংবাদ সংস্থা এনডিটিভি’র প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা যায়।
প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, বুধবার (১৮ অক্টোবর) সৌদি আরবের জেদ্দায় অনুষ্ঠিতব্য বৈঠকের জন্য সদস্য দেশগুলোকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
ওআইসির বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়, গাজার ক্রমবর্ধমান সামরিক পরিস্থিতি এবং সেইসঙ্গে অবনতিশীল পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্য সংস্থার কার্যনির্বাহী কমিটি মন্ত্রী পর্যায়ে একটি জরুরী ওপেন-এন্ডেড বিশেষ সভার আহ্বান করেছে। বেসামরিক নাগরিকদের জীবন এবং এই অঞ্চলের সামগ্রিক নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতা নিয়ে সভায় আলোচনা করা হবে।
এনডিটিভির প্রতিবেদনে আরও উল্লেখ করা হয়, ওআইসির জরুরি বৈঠকের ডাক এমন এক দিনে এসেছে যখন সৌদি আরব ইসরায়েলের সাথে সম্পর্ক স্বাভাবিক করার আলোচনা স্থগিত করেছে।
সৌদি-ইসরায়েল সম্পর্ক স্বাভাবিক করার উদ্যোগের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র এএফপিকে বলেছে, ইসরায়েলের সাথে সম্ভাব্য সম্পর্ক স্বাভাবিক করার আলোচনা স্থগিতের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সৌদি আরব। এই বিষয়ে ইতিমধ্যে মার্কিন কর্মকর্তাদের অবগত করেছে দেশটি।
এর আগে ওআইসি এক বিবৃতিতে হামাসের সঙ্গে ইসরায়েলের চলমান তীব্র লড়াইকে ‘ইসরায়েলি সামরিক আগ্রাসন’ হিসেবে উল্লেখ করে এর তীব্র নিন্দা জানিয়েছে। সৌদি আরবভিত্তিক মুসলিম দেশগুলোর এই জোট বলছে, অধিকৃত ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে বিপজ্জনক ইসরায়েলি উত্তেজনা ও সহিংসতা বৃদ্ধির ঘটনায় ওআইসি গভীরভাবে উদ্বিগ্ন।
ইসরায়েলের সামরিক হামলায় শত শত ফিলিস্তিনি নিহত ও আহত হওয়ার ঘটনায় শোক প্রকাশ করেছে ওআইসি। একই সঙ্গে ইসরায়েলি সামরিক আগ্রাসনের নিন্দা জানিয়েছে ৫৭ সদস্যের এই জোট।
গেলো ৭ অক্টোবর ভোরের দিকে ইসরায়েলের দক্ষিণাঞ্চলে ভয়াবহ হামলা চালায় গাজার ক্ষমতাসীনগোষ্ঠী হামাস। এখনো তারা স্বল্প পরিসরে রকেট হামলা চালাচ্ছে। এর জবাবে গাজা উপত্যকায় ব্যাপক হামলা শুরু করে ইসরায়েল। দিনদিন সেই হামলা জোরালো হচ্ছে। উভয়পক্ষের চলমান এই হামলা-পাল্টা হামলার এক সপ্তাহ চলছে আজ।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বলছে, ইসরায়েলি বিমান হামলায় এখন পর্যন্ত ৭২৪ শিশুসহ ২ হাজার ২১৫ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন ৮ হাজার ৭১৪ জন। অন্যদিকে, হামাসের হামলায় ইসরায়েলে এক হাজার ৩০০ জন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন আরও কয়েক হাজার।
আন্তর্জাতিক
যুক্তরাষ্ট্র অন্তর্বর্তী সরকারের সঙ্গে কাজ করতে প্রস্তুত : মার্কিন মুখপাত্র
অন্তর্বর্তী সরকার এবং ড. ইউনূসের সঙ্গে কাজ করতে প্রস্তুত। অন্তর্বর্তী সরকার বাংলাদেশের জনগণের জন্য গণতান্ত্রিক ভবিষ্যৎ নির্ধারণ করবে বলে জানিয়েছেন, মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার।
স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের নিয়মিত সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন তিনি।
প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের শপথ নেয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে মিলার বলেন, বাংলাদেশের জন্য আজ একটি শুভ দিন। নোবেল বিজয়ী অধ্যাপক ইউনূস সবেমাত্র বাংলাদেশ সরকারের প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেছেন।
যুক্তরাষ্ট্র এ সরকারকে অভিননন্দ জানিয়েছে কি না এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের চার্জ ডি’অ্যাফেয়ার্স আজ শপথ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন এবং তারা সাম্প্রতিক সহিংসতা বন্ধের জন্য ড. ইউনুসের আহ্বানকে স্বাগত জানাচ্ছেন।
প্রসঙ্গত, এসময়ে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাংলাদেশের নতুন অন্তর্বর্তী সরকারের যোগাযোগ হয়েছে বলেও জানান ম্যাথিউ মিলার। তবে কোন বিষয়ে যোগাযোগ হয়েছে তিনি সে বিষয়ে বিস্তারিত বলেন নি।
আই/এ
এশিয়া
জাপানে ৭.১ মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্প
জাপানের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় এলাকায় রিখটার স্কেলে ৭ দশমিক ১ মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্প আঘাত হেনেছে।
বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) স্থানীয় সময় বিকেল ৪টা ৪৩ মিনিটের দিকে পশ্চিমাঞ্চলীয় প্রধান দ্বীপ কিয়ুশুর মিয়াজাকি অঞ্চলে ভূমিকম্পটি আঘাত হানে।
জাপানের আবহাওয়া সংস্থার (জেএমএ) বরাত দিয়ে দেশটির রাষ্ট্রায়ত্ত সংবাদমাধ্যম এনএইচকে ওয়ার্ল্ড এ তথ্য জানিয়েছে।
খবরে বলা হয়েছে, ভূমিকম্পের পর দেশটিতে সুনামির সতর্কতা জারি করা হয়েছে। মিয়াজাকিতে সমুদ্রের ঢেউ ইতোমধ্যে ৫০ সেন্টিমিটারে পৌঁছেছে। তবে তাৎক্ষণিকভাবে বড় ধরনের কোনো ক্ষয়ক্ষতি কিংবা হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি।
এ বিষয়ে দেশটির মন্ত্রিপরিষদের মুখ্য সচিব ইয়োশিমাসা হায়াশি গণমাধ্যমকে বলেন, ভূমিকম্পের পর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্ল্যান্টগুলোতে কোনো ধরনের অস্বাভাবিক ঘটনা দেখা যায়নি। সরকার ভূমিকম্পে ক্ষয়ক্ষতি ও হতাহতের বিষয়ে খোঁজখবর নিচ্ছে।
প্রসঙ্গত, জাপানে ভূমিকম্পের ঘটনা একেবারে সাধারণ। বিশ্বে ৬ বা তার চেয়ে বেশি মাত্রার ভূমিকম্পের প্রায় এক-পঞ্চমাংশই এদেশে ঘটে থাকে।
এর আগে, ২০১১ সালের ১১ মার্চ দেশটির উত্তর-পূর্ব উপকূলে ৯ মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্প আঘাত হানে। যেটি ছিলো জাপানের ইতিহাসে সবচেয়ে শক্তিশালী ভূমিকম্প। ওই সময় ভূমিকম্পের পর দেশটিতে বিশাল সুনামি আঘাত হানে।
সূত্র: রয়টার্স
জিএমএম/
আন্তর্জাতিক
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে জনগণের ইচ্ছাকে প্রাধান্য দিতে হবে: যুক্তরাষ্ট্র
বাংলাদেশের পরিস্থিতির উন্নয়নের ব্যাপারটি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করছে। ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার যেনো গণতন্ত্র, আইন ও বাংলাদেশি জনগণের আকাঙ্খা পূরণ করে-এমনটাই চাইছে যুক্তরাষ্ট্র।
স্থানীয় সময় বুধবার (৭ আগস্ট) ওয়াশিংটনে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের নিয়মিত ব্রিফিংয়ে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে যুক্তরাষ্ট্রে এমনটাই আশা করে বলে জানিয়েছেন মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার। এদিন যুক্তরাষ্ট্রপ্রবাসী ইরাকের এক সাংবাদিক জানতে চান, ‘বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান হিসেবে ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। বাংলাদেশে তার বা অন্যদের সঙ্গে আপনাদের যোগাযোগ হয়েছি কী? বাংলাদেশের স্থিতিশীলতা পরিস্থিতিকে আপনি কীভাবে মূল্যায়ন করবেন?’
জবাবে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার বলেন, ‘আমরা এখনও যোগাযোগ করেনি। আমরা বাংলাদেশের পরিস্থিতির উন্নয়ন পর্যবেক্ষণ অব্যাহত রাখছি এবং আমরা এরইমধ্যে দেখেছি অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান হিসেবে ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। আমরা মনে করি তার নেতৃত্বে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার বাংলাদেশে দীর্ঘমেয়াদি শান্তি ও রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা প্রতিষ্ঠায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। আপনি নিশ্চয়ই মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে বলতে শুনেছেন যে. অন্তর্বর্তীকালীন সরকার যে সিদ্ধান্ত নেবে তা যেনো গণতান্ত্রিক নীতিমালাকে, আইনের শাসন এবং সিদ্ধান্তে বাংলাদেশি জনগণের ইচ্ছা প্রতিফলিত হয়।
এসময় যুক্তরাষ্ট্রপ্রবাসী বাংলাদেশি সাংবাদিক মুশফিকুল ফজল আনসারী একটি প্রশ্ন করেন। তার প্রশ্নটি ছিল, আপনি কি জানেন যে স্বৈরশাসক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পুত্র ভার্জিনিয়ায় অবস্থান করে নতুন সরকারকে হুমকি দিচ্ছেন, সহিংসতা উসকে দিচ্ছেন? তিনি সাবেক স্বৈরশাসক শেখ হাসিনার তথ্য ও প্রযুক্তি বিষয়ক উপদেষ্টা ছিলেন যিনি বাংলাদেশে ইন্টারনেট বন্ধ করে দিয়েছিলেন। দয়াকরে তার ব্যাপারে আপনার মন্তব্য জানাবেন কী?’
জবাবে ম্যাথিউ মিলার বলেন, মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র বলেন, ‘একজন সাধারণ নাগরিকের বিবৃতি নিয়ে আমার কোনো মন্তব্য নেই। আমি এরইমধ্যে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কথা বলেছি এবং আমরা দেখতে চাই এই সরকার কী পদক্ষেপ নিয়ে এগিয়ে যায়।
এসময় মুশফিকুল ফজল আনসারী আরও জানতে চান, ‘দেশের শান্তি প্রতিষ্ঠায় এবং একটি অবাধ, নিরপেক্ষ ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের নতুন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে প্রত্যাশা নিয়ে আপনার কী মন্তব্য?
জবাবে ডিপার্টমেন্ট অফ স্টেটের মুখপাত্র বলেন, শনের প্রশ্নের উত্তরে আমি যেমনটি বলেছি – অন্তর্বর্তীকালীন সরকার যখন কোনো সিদ্ধান্ত নেয়, আমরা দেখতে চাই ওই সিদ্ধান্তে যেনো গণতান্ত্রিক নীতি মেনে চলা হয় এবং জনগণের ইচ্ছার প্রতিফলন ঘটে।
মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের নিয়মিত ওই ব্রিফিংয়ে ফিলিস্তিনের গাজা, দক্ষিণ আমেরিকার ভেনিজুয়েলা, ইরাক ও ইরানের পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা হয়।
এমআর//